অমর একুশে গ্রন্থমেলায় কিছুক্ষণ।
গত ২১ তারিখ শহরের অম্বিকা ময়দানে বইমেলা শুরু হয়েছে। মেলাটির নাম দেয়া হয়েছে অমর একুশে গ্রন্থমেলা। প্রতিবছর ফেব্রুয়ারি মাসের শেষের দিকে এই মেলাটি অনুষ্ঠিত হয়। অন্যান্য বারের ন্যায় এবারও সেই মেলা হচ্ছে। গত কয়েকদিন ধরেই চিন্তা করছিলাম একবার বইমেলা থেকে গিয়ে ঘুরে আসব। প্রথমে ইচ্ছা ছিল পরিবার নিয়ে মেলায় যাওয়ার। কিন্তু আপাতত আমার পরিবার অন্য জায়গাতে থাকায় তাদের নিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা বাদ দিতে হলো। আজকে সকাল থেকে বাসায় একা একাই ছিলাম। তাই সকাল থেকেই পরিকল্পনা ছিল আজ বিকালের দিকে বইমেলায় ঘুরতে যাব।
মেলাটির অবস্থান আমাদের বাসা থেকে একেবারে কাছেই একটি স্থানে। শহরের ছোটখাটো বিভিন্ন রকম মেলা এখন সেখানেই অনুষ্ঠিত হয়। জায়গাটি এখন মেলার মাঠ হিসেবে পরিচিতি পেয়ে গেছে। শুধু পল্লীকবি জসিম উদ্দিনের স্মৃতি রক্ষার্থে যে মেলাটি অনুষ্ঠিত হয় সেটি বাদে বাদবাকি সব মেলায় এখন অম্বিকা ময়দানে অনুষ্ঠিত হয়। জায়গাটি শহরের একেবারে মাঝামাঝি হওয়ায় সেখানে প্রচুর লোকসমাগম হয়। এই জন্য সমস্ত মেলার আয়োজকেরাও এই জায়গাটিকে বেছে নেয় মেলা করার জন্য। যদিও জায়গাটি মেলা করার জন্য যথেষ্ট বড় নয়। একটি মাঝারি আকৃতির চারকোনা মাঠ। তবে এই সমস্ত মেলা একটু ছোট আকারেই হয়ে থাকে মফস্বল শহর গুলিতে। সেজন্য এই বিচিত্র সব মেলার আয়োজন এই মাঠে হয়।
যাই হোক আজকে আসরের নামাজ পড়ে মেলায় যাওয়ার পরিকল্পনা করেছিলাম। তাই বাসা থেকে নামাজ পড়তে যাওয়ার সময় একবারে তৈরি হয়ে বের হয়েছিলাম। নামাজ শেষ করে সরাসরি রিক্সা নিয়ে চলে গিয়েছিলাম মেলার মাঠে। আগেই বলেছি মেলাটির অবস্থান যেহেতু আমাদের বাসা থেকে একেবারেই কাছে। তাই অল্প সময় সেখানে পৌঁছে গিয়েছিলাম। কিন্তু সেখানে পৌঁছে দেখলাম অন্যান্য মেলা থেকে এই মেলায় লোক সমাগম অনেকটা কম। অবশ্য ব্যাপারটা আমাকে মোটেও আশ্চর্য করেনি। কারণ মানুষের বই পড়ার অভ্যাস এখন প্রায় নাই বললেই চলে। এখন সবার চোখ ২৪ ঘন্টা মোবাইল ফোনের স্ক্রিনের দিকে থাকে। শুধু ঘুমানো আর খাওয়ার সময় বাদে বাকি পুরোটা সময় মানুষ মোবাইল স্ক্রিনের দিকে তাকিয়ে কাটায়।
তাদের এখন বই পড়ার মতো সময় নেই। তারপরেও আমি প্রথমে চিন্তা করেছিলাম আমার মেয়ের জন্য কয়েকটি গল্পের বই কিনবো। তবে পরবর্তীতে সেই পরিকল্পনাটা বাতিল করে দিলাম। চিন্তা করলাম মেয়েকে নিয়ে মেলায় আসতে হবে। তাহলে সে মেলায় ঘোরার মজাটা পাবে। আবার গল্পের বই কেনার এক ধরনের আগ্রহ তার ভেতরে তৈরি হবে। বইমেলাতে ঘোরাফেরা করে মনটা খারাপ হয়ে গেলো। একটা সময় ছিল মানুষের ভেতর গল্পের বই পড়ার প্রচুর আগ্রহ ছিলো। তখনো স্মার্টফোন নামের এই সর্বনাশা জিনিসটা মানুষের হাতে এসে পৌঁছায়নি। কিন্তু এই স্মার্টফোন আসার পর থেকে মানুষের শিল্প ও সাহিত্যের প্রতি আগ্রহ একেবারেই কমে গিয়েছে।
সারাদিন তারা টিকটক এর মত মানহীন কনটেন্ট দেখে তাদের সময় কাটায়। অদ্ভুত, অশ্লীল আর বিচিত্র অঙ্গভঙ্গিতে করা সেই ভিডিওগুলি আমাদের পরবর্তী প্রজন্মগুলোকে রীতিমতো ধ্বংস করে দিচ্ছে। যেভাবে মানুষের বই পড়ার আগ্রহ কমছে। তাতে একসময় লেখকেরা লেখার আগ্রহ হারিয়ে ফেলবে। তাতে আমাদের জীবন থেকে অমূল্য কিছু সম্পদ চিরতরে হারিয়ে যাবে। যাইহোক আমি মেলায় বেশ কিছুক্ষণ ঘোরাফেরা করে ঠিক করলাম কয়েক দিনের ভেতরে মেলায় আবার আসতে হবে। আমিও দুই একটি বই কিনব। সাথে মেয়ের জন্য তার পছন্দমত কিছু গল্পের বই কিনব। যদি পরিকল্পনাটা বাস্তবায়ন করতে পারি তাহলে সে গল্প আপনাদের কাছে তুলে ধরবো।
আজকের মত এখানেই শেষ করছি। পরবর্তীতে আপনাদের সাথে দেখা হবে অন্য কোন নতুন লেখা নিয়ে। সে পর্যন্ত সবাই ভাল থাকুন সুস্থ থাকুন।
ফটোগ্রাফির জন্য ব্যবহৃত ডিভাইস | হুয়াই নোভা 2i |
---|---|
ফটোগ্রাফার | @rupok |
স্থান | অম্বিকা ময়দান |
Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |
Support @Bangla.Witness by Casting your witness vote
Support @Bangla.Witness by Casting your witness vote
VOTE @bangla.witness as witness
OR
অমর একুশে গ্রন্থমেলায় বেশ ভালোই সময় কাটিয়েছেন। আসলেই বাচ্চাদেরকে নিয়ে এই ধরনের মেলায় গেলে তাদের বই পড়ার প্রতি কিছুটা হলেও আগ্রহ হবে।এটা ঠিক এখন মানুষ এখন টিকটক নিয়ে মহাব্যস্ত।তাদের এত সময় কই বই পড়ার।কিছু কিছু জিনিস আসলেই হারিয়ে যাচ্ছে। ভালো লাগলো।ধন্যবাদ
ঠিক বলেছেন ভাইয়া এখনকার মানুষ বই খুব কমই পড়ে। বেশিরভাগ মানুষ সারাক্ষণ মোবাইল ,সোশ্যাল মিডিয়া নিয়ে ব্যস্ত থাকে,কেউ কর্মজীবনে ব্যস্ত, অথবা কেউ কোনো প্রয়োজনে গুগল থেকে সার্চ করে বই পড়েন। আগের মত এখন আর বইমেলাতে ভিড় জমে না ,বইমেলার আগ্রহ একেবারেই কমে গেছে। আমার নিজের কথাই বলছি আগে কতশত বই কিনতাম এবং অবসরে বই পড়তাম ।কিন্তু এখন ব্যস্ততার কারণে বই কিনা হয় না, পড়াও হয় না। ঠিক বলেছেন ভাইয়া এসব কারণে আস্তে আস্তে লেখকরা তাদের লেখার আগ্রহ হারিয়ে ফেলবে এবং আমাদের কাছ থেকে অমূল্য সম্পদ হারিয়ে যাবে।
ভাইয়া অমর একুশে বই মেলায় খুব সুন্দর সময় কাটিয়েছেন আশাকরি। এটা ঠিক আজকাল বই খুব কম মানুষ ই পড়ে। স্মার্ট ফোনের কারনে ধীরে ধীরে সব হারিয়ে যাচ্ছে। বাচ্চাদের বই কিনে দিলে তাদের বই পড়ার প্রতি আগ্রহ জন্মে।আপনি আবার বই মেলায় গিয়ে মেয়ের জন্য কিছু গল্পের বই কিনবেন, মেয়ে খুব খুশিই হবে।তখন ধীরে ধীরে তার বই কেনার আগ্রহও জন্মাবে।সুন্দর অনুভূতি গুলো শেয়ার করার জন্য অনেক ধন্যবাদ ভাইয়া আপনাকে।
আজকাল তো অনেকেই গল্পের বই পড়া ভুলেই গেছে। স্মার্টফোনের কারণে সবাই ফোনের মাঝে ডুবে আছে। গল্পের বই কিংবা অন্যান্য বই পড়ার প্রতি আগ্রহ আর কারো নেই। তাইতো বইমেলায় ভিড়ের পরিমাণ অনেকটা কম। আবার অনেকে শুধুমাত্র ঘুরতে যায়। আশা করছি অন্য কোনদিন আপনার মেয়েকে নিয়ে বইমেলায় যাবেন ভাইয়া। আর এভাবে ছোট বাচ্চাদেরকে নিয়ে বইমেলায় ঘুরতে গেলে বই কেনার প্রতি এবং গল্পের বই পড়ার প্রতি তাদের আগ্রহ তৈরি হয়। এভাবে যদি সবাই বই পড়ার আগ্রহ হারিয়ে ফেলে তাহলে আমাদের দেশের সাহিত্যিকরা বই প্রকাশের আগ্রহ হারিয়ে ফেলবে।
ভাইয়া অমর একুশে গ্রন্থমেলায় কিছুক্ষণ ঘুরে বেশি কিছু ফটো আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন। আপনি বর্ণনায় বর্তমানের যুব সমাজের বাস্তব চিত্র তুলে ধরেছেন। সত্যিই আমাদের এখন বই পড়ার মত সময় নেই। এখন সবাই মোবাইল নিয়ে ব্যস্ত থাকে। মোবাইল আমদের যুব সমাজকে ধ্বংস করে দিচ্ছে। বই আমাদের বন্ধু সেটা আমরা ভুলে গেছি। ধন্যবাদ ভাইয়া।