মেয়ের আবদার রক্ষা করা।

in আমার বাংলা ব্লগlast year

কেমন আছেন আমার বাংলা ব্লগের বন্ধুরা? আমি ভালো আছি। আশাকরি আপনারা ও ভালো আছেন।


গত দুদিন আমি বাড়িতে একাই ছিলাম। গতকাল আমার স্ত্রী এবং মেয়ে বাড়িতে ফিরেছে। বাড়িতে একা থাকতে আমার কাছে একেবারেই ভালো লাগেনা। যখন পরিবার কাছে থাকে না তখন তাদের কথা বারবার মনে পড়ে। বিশেষ করে আমি আমার মেয়েকে ছাড়া একেবারেই থাকতে পারিনা। গতকালকে মেয়ে বাসায় ফিরতেই দেখতে পেলাম তার চোখটা বেশ লাল হয়েছে। সাথে চোখে কিছুটা ময়লা ও জমেছে। বুঝতে পারলাম তার চোখে হয়তো ভাইরাসের আক্রমণ হয়েছে। আমরা যেটাকে বলি চোখ ওঠা। ব্যাপারটা দেখে আমার কাছে বেশ অস্বস্তি লাগছিল।

IMG_20230216_174048.jpg

আমি চিন্তা করতে লাগলাম যে তাকে আজকে ডাক্তারের কাছে নিয়ে যাব নাকি দু একদিন দেখবো। পরে সিদ্ধান্ত নিলাম একটি দিন দেখি। তারপর ডাক্তারের কাছে নিয়ে যাওয়া যাবে। পরদিন সকাল হতেই দেখলাম তার অবস্থার যথেষ্ট উন্নতি হয়েছে। তখন বুঝতে পারলাম এটা খুব স্বাভাবিক ভাইরাসের আক্রমণের ফলে হয়েছে। গতকালকে সে বাসায় ফেরার পর থেকেই ফুচকা খাওয়ার আবদার করেছিলো। তার শরীরের অবস্থা দেখে বলেছিলাম আগামীকাল নিয়ে যাব। আজকে সকাল থেকেই সে আমাকে বারবার মনে করিয়ে দিচ্ছিল তার ফুচকা খাওয়ার কথা। তবে আমি চিন্তা করছিলাম তার শরীরটা ভালো হলে তারপর তাকে নিয়ে বাইরে যাবো।

IMG_20230216_172047.jpg

কিন্তু বিকাল হতেই সে অস্থির হয়ে গেলো। শেষ পর্যন্ত চিন্তা করলাম এখন আর না গিয়ে উপায় নেই। তাই আমার স্ত্রীকে বললাম আমি আসরের নামাজ পড়তে যাচ্ছি। আমি আসার আগেই তোমরা তৈরি হয়ে থেকো। আমি নামাজ পড়ে এসে সবাই মিলে ফুচকা খেতে যাবো। তবে সে আজকে যেতে চাচ্ছিল না। গত কদিন ধরেই তার মনটা বেশ খারাপ। তাই আমি চিন্তা করলাম যদি একটু বাইরে থেকে ঘুরে আসা যায়। তাহলে হয়তো মনটা ভালো হতে পারে। সেজন্য আমি তাকে একরকম জোর করে রাজি করালাম বাইরে যাওয়ার জন্য। তাছাড়া সে ফুচকা খেতেও অনেক পছন্দ করে।

IMG_20230216_173607.jpg

ফরিদপুর শহরে একটি ফুচকার দোকান আছে। যে দোকানটি আমাদের সকলের কাছেই বেশ পছন্দের জায়গা। পছন্দ হওয়ার অন্যতম কারণ হচ্ছে তাদের ফুচকার স্বাদ অন্য দোকানের ফুচকা থেকে অনেকটা আলাদা। তাছাড়া তাদের একটা আইটেম আছে যেটার নাম বেশ অদ্ভুত। কিন্তু সেটা খেতে খুবই মজার। যদিও আমি সেই খাবারটির কথা আগে কয়েকটি পোস্টে শেয়ার করেছি। যাইহোক আমি নামাজ পড়ে এসে দেখি তারা তখনও তৈরি হতে পারেনি। কিছুক্ষণ অপেক্ষা করার পর মা মেয়ে দুজনেই তৈরি হয়ে গেল। তারপর আমরা তিনজন রওনা দিলাম সেই ফুচকার দোকানের উদ্দেশ্যে।

ফুচকার দোকানের নাম হট দ্যা ফুচকা। বাসা থেকে সেই ফুচকার দোকানে দূরত্ব ৩/৪ কিলোমিটার মতো হবে। আমরা একটি রিকশা করে অল্প সময়ে সেই ফুচকার দোকানে পৌঁছে গেলাম। আপনারা তো জানেন আজকাল শহরে বেশিরভাগ রিক্সা ইঞ্জিন চালিত। যার ফলে কোথাও যেতে তাদের সময় লাগে খুবই কম। আমরা সেই ফুচকার দোকানে পৌঁছে সেখানে বেশ ভিড় দেখতে পেলাম। স্কুল পড়ুয়া বেশ কিছু মেয়েকে দেখতে পেলাম রীতিমতো হৈ-হুল্লোড় করছে। আমরা ভিড় এড়িয়ে ভেতরের দিকে একটি টেবিলে গিয়ে বসলাম।

এই দোকানের সিস্টেম হচ্ছে পে ফার্স্ট। আমি প্রথমে ফুচকার অর্ডার দিয়ে বিল মিটিয়ে টেবিলে এসে বসলাম। টেবিলে বসার মিনিট দশেকের ভেতরে আমাদের সামনে খাবার সার্ভ করল। তবে আমরা কিন্তু ফুচকা নিয়েছিলাম না। আমরা নিয়েছিলাম আমাদের সকলের পছন্দের আইটেম ভাংচুর। এই আইটেমের সাথে ইন্ডিয়ান পাপড়ি চাটের অনেকটা মিল আছে। আমরা দু প্লেট ভাঙচুর অর্ডার করেছিলাম। সাধারণত অন্যান্য দিন এই রেস্টুরেন্টে খাবার সার্ভ করতে অনেক সময় নেয়। তবে আজকে মোটামুটি বেশ কম সময়ে আমাদের সামনে খাবার পরিবেশন করেছিলো। এত মজাদার খাবার সামনে আসতেই ছবি তোলার কথা বেমালুম ভুলে গেলাম। সাথে সাথে সকলে খাওয়া শুরু করলাম। খাওয়া যখন প্রায় শেষের দিকে তখন মনে পড়লো আরে ছবি তুলতে তো ভুলে গিয়েছি। ততক্ষণে প্লেটে খাবার প্রায় শেষ হয়ে এসেছে।

তারপরেও সেই খাবারের একটি ছবি তুলে নিলাম যাতে আপনাদের সাথে শেয়ার করতে পারি। খাবারটি যেহেতু আমাদের সকলেরই পছন্দের তাই শেষ হতে খুব একটা সময় লাগলো না। তবে এর ভেতর দেখতে পেলাম আমার মেয়ে ঝালে কিছুটা কাহিল হয়ে পড়েছে। যদিও খাবারটা মোটেও ঝাল ছিল না। কিন্তু সেই খাবারের ভেতর অল্প কিছু কাঁচা মরিচ দেয়া ছিল। আমার মনে হল সে সম্ভবত কাঁচা মরিচে কামড় দিয়েছিল। সাথে সাথে আমাকে বলল একটি কোলড্রিংস আনার জন্য। আমি কাউন্টারে গিয়ে তার জন্য একটি মিরিন্ডা নিয়ে আসলাম। তার কিছুক্ষণ পরেই আমরা খাওয়া শেষ করে বাড়ির দিকে রওনা দিলাম। বিল যেহেতু আগেই পরিশোধ করেছি তাই নতুন করে আর বিল পরিশোধ করার কোন ঝামেলা ছিল না।

আজকের মত এখানেই শেষ করছি। পরবর্তীতে আপনাদের সাথে দেখা হবে অন্য কোন নতুন লেখা নিয়ে। সে পর্যন্ত সবাই ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন।


ফটোগ্রাফির জন্য ব্যবহৃত ডিভাইসহুয়াই নোভা 2i
ফটোগ্রাফার@rupok
স্থানতেঁতুল তলা মোড়

logo.png

Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power

250 SP500 SP1000 SP2000 SP5000 SP

Heroism_3rd.png

standard_Discord_Zip.gif


break .png

Support @Bangla.Witness by Casting your witness vote


VOTE @bangla.witness as witness


witness_vote.png

OR

SET @rme as your proxy

witness_proxy_vote.png



🇧🇩🇧🇩ধন্যবাদ🇧🇩🇧🇩


@rupok

Sort:  
 last year 

ভাইয়া আশাকরি ভাল আছেন।মেয়ের চোখের সমস্যা ও দ্রুত সেরে যাবে দোয়া রইলো। মেয়ের আবদারে ফুচকা খেতে হট দ্যা ফুচকা দোকানটিতে গেলেন।আর আপনাদের পছন্দের আইটেম ভাংচুর অর্ডার করলেন।যদিও আগেই বিল দিয়ে দিতে হয়। যাক ভাল লাগলো দেখে।আসলে ছবি তোলার কথা সব সময় মাথায় থাকেনা।আশাকরি পরিবার নিয়ে খুব সুন্দর সময় কাটিয়েছেন। মেয়েরও খুব ভাল লেগেছে আশাকরি।ধন্যবাদ ভাইয়া সুন্দর অনুভূতি গুলো শেয়ার করার জন্য।

 last year 

আমি খেতে প্রচন্ড ভালোবাসি। এই জন্য খাবার সামনে পেলে আর ছবি তোলার কথা মনে থাকে না। হা হা হা

 last year 

ও তাইতো বলি সারাদিন মক্কেলের কোন খবর নাই কেন। ঐ দোকানটা আসলেই অনেক ভালো বিশেষ করে অন্য কোন দোকান থেকে ফুচকা খেয়ে আসার পর ব্যাপারটা ফিল করা যায়। যাইহোক মেয়ের যে চোখ উঠেনি শুকরিয়া আদায় কর।

 last year 

ঠিকই বলেছো। ওদের ফুচকাটা আসলেই ভালো। তুমি ফিরে আসো দুজন মিলে আবার ওখানে যাব ফুচকা খেতে।

 last year 

প্রথমে আপনার সন্তানের জন্য দোয়া রইল ভাই। আশা করি মেয়ে খুব দ্রুতই সুস্থ হয়ে উঠবে।মেয়েরা যদি বাবার কাছে আবদার করে তাহলে সেই বাবা সেটা না দিয়ে পারে না। কারন আমার জানামতে ছেলেদের থেকেও মেয়েরা বাবাকে বেশি ভালোবাসে। মেয়ের ভালোবাসার জন্য বাবাকে ছুটতে হবে। ঠিক তেমনি ফুচকা খেতে হট্ দ্যা ফুচকা দোকানে গেলেন। যা তিন থেকে চার কিলোমিটার দূরে ছিল। অবশ্য খাওয়ার আগে বিল পে করতে হবে। সবাই মিলে অনেক মজা করেছেন আপনাদের জন্য শুভকামনা রইল।

 last year 

পরিবারের সাথে এভাবে বাইরে খাওয়া দাওয়া করতে গেলে আসলেই বেশ ভালো লাগে।

 last year 

অনেকদিন পর মেয়ে বাসায় আসায় ,মেয়ের আবদার পুরণ করার জন্য তার পছন্দের ফুচকা খেতে গেলেন হট দ্যা ফুচকা দোকানে। বেশ মজা করে ভাংচুর খেলেন। বেশ সুন্দর কিছু সময় কাটালেন। মাঝে মাঝে পরিবার নিয়ে এভাবে বেড়িয়ে পরলে কাজের শক্তি পাওয়া যায়। অনেক ধন্যবাদ ভাইয়া সুন্দর মুহুর্ত শেয়ার করার জন্য।

 last year 

ঠিক বলেছেন। পরিবারের সাথে কোয়ালিটি টাইম স্পেন্ড করলেমানসিক শক্তি বাড়ে।

 last year 
প্রথমে আপনার মেয়ের জন্য দোয়া রইল ভাইয়া।যাতে সর্বদা সুস্থ থাকে। আসলে অনেক সময় সন্তানের আবদার না রেখে পারা যায় না।বিশেষকরে মেয়েরা ছেলেদের তুলনায় বাবাকে একটু বেশি ভালোবাসে।আর বাবারাও তাই মেয়ের আবদার দ্রুত পুরণ করে থাকেন।সেই হিসেবে আপনিও মেয়ের আবদারে ফুচকা খেতে হট দ্যা ফুচকা দোকানটিতে গিয়েছিলেন।যদিও শুরুতে হট দ্যা ফুচকা খাওয়ার ছবি তুলতে ভুলে গিয়েছিলেন।তারপরও সবাই মিলে অনেক মজা করেছেন যা আপনার ফটোগ্রাফি দেখে বোঝা যাচ্ছে। আপনাদের জন্য শুভকামনা রইল।
 last year 

অসংখ্য ধন্যবাদ আপনার চমৎকার মন্তব্যের জন্য।

Coin Marketplace

STEEM 0.20
TRX 0.12
JST 0.028
BTC 65231.23
ETH 3491.62
USDT 1.00
SBD 2.48