দীর্ঘদিন পর বন্ধুর সাথে আড্ডা দেয়া (দ্বিতীয় পর্ব)।
নামাজ শেষ করে তাড়াহুড়া করে বসুন্ধরা সিটির উদ্দেশ্যে রওনা দিলাম। টানা কয়েকদিন ছুটি থাকার কারণে ঢাকার রাস্তাঘাট বেশ ফাঁকা ছিলো। কারণ জীবন ও জীবিকার তাগিদে যারা ঢাকায় এসে থাকে। তারা সময় পেলেই বাড়িতে ফিরে যায়। আবার কিছু সংখ্যক মানুষজন আছে যারা ছুটি পেলেই কোথাও ঘুরতে বেরিয়ে পড়ে। যার ফলে যে কোন বড় ছুটিতে ঢাকার রাস্তাঘাট গুলো ফাঁকা হয়ে যায়। রাস্তা ফাঁকা থাকার ফলে খুব অল্প সময়ে আমি বসুন্ধরা সিটিতে পৌঁছে গেলাম।
বসুন্ধরা সিটি একটি বিশাল মার্কেট। সেখানে প্রবেশ করে কাউকে খুঁজে পাওয়া খুবই মুশকিল। তাই আমি সেখানে প্রবেশ করার আগেই আমার বন্ধুকে ফোন দিয়ে জিজ্ঞেস করলাম সে কোথায় আছে। সে আমাকে জানালো লেভেল সেভেনে সে রয়েছে। তার সাথে কথা শেষ করে আমি মার্কেটে প্রবেশ করলাম। মার্কেটে প্রবেশ করার আগে পরে আমি বেশ কিছু ছবি তুলে নিলাম। তারপর লিফটের জন্য অপেক্ষা করতে লাগলাম। মার্কেটের ভিতরে ঢুকে দেখতে পেলাম প্রচুর লোক সমাগম। বেশিরভাগ অফিস বন্ধ থাকায় লোকজন সম্ভবত ঘুরতে বেরিয়েছে।
আর বসুন্ধরা সিটিতে সবাই শুধু কেনাকাটার জন্য আসে ব্যাপারটা এমন নয়। এখানে বেশ কয়েকটা সিনেমা হল আছে। এখানে বাচ্চাদের খেলাধুলার জন্য চমৎকার আয়োজন আছে। আর আছে লেভেল এইটে ফুড কোর্ট। এই ফুড কোর্টে খাওয়া-দাওয়া করতে অনেক লোকজন এখানে আসে। আমি সরাসরি লেভেল সেভেন এ গিয়ে আমার বন্ধুকে ফোন দিলাম। ফোন দেয়ার কিছু সময় পরেই ওর দেখা পেলাম। দেখা হতেই দুই বন্ধু আড্ডায় মেতে উঠলাম। সেই আড্ডাবাজির সাথে সাথে আমরা বিভিন্ন রকম দোকানপাট ঘুরে দেখছিলাম।
প্রথমেই ঢুকেছিলাম আমরা বাটার একটি শোরুমে। ও বলছিল ওর জুতা কেনা প্রয়োজন। তাই জুতা দেখার জন্য আমরা বাটার শোরুমে গিয়েছিলাম। সেখানে গিয়ে আমরা বেশ কিছুক্ষণ বিভিন্ন রকমের জুতা দেখতে লাগলাম। পরে এক জোড়া জুতা ওর জন্য পছন্দ করা হলো। ও বলল দু-একদিন পরে এই জুতাটা কিনবে। সম্ভবত এখনো মাসের বেতন পায়নি সে। বাটা শোরুম থেকে বের হয়ে আমরা অন্যান্য লেভেল গুলিতে ঘুরতে লাগলাম। আমি যখনই বসুন্ধরা সিটিতে আসি তখনই আমার কাছে মনে হয় আমি এই মার্কেটের অলিগলি গুলো ভালোমতো এখনো চিনতে পারিনি। কারণ মার্কেটটা আসলেই অনেক বড়।
যাইহোক কিছুক্ষণ ঘোরাফেরার পরে আমরা লেভেল এইটে গেলাম। সেখানে গিয়েছিলাম হালকা কিছু খাওয়ার উদ্দেশ্যে। কিন্তু যাওয়ার পর ও জানালো ওর পেটে কোন ক্ষুধা নেই। আমারও একই অবস্থা। তারপরও চিন্তা করলাম যেহেতু এখানে এসেছি তাই হালকা কিছু খাই। আমরা কাউন্টারে গিয়ে স্পেশাল চিকেন ক্যাশোনাট সালাদ অর্ডার করলাম। সাথে অর্ডার করলাম ড্রিংকস। কিন্তু আমাদেরকে হতাশ করে তারা জানালো ক্যাশোনাট সালাদ এখন হবে না। কোন খাবার খেতে ইচ্ছা হলে সেটা না পাওয়া গেলে তখন মেজাজটা খুবই খারাপ লাগে। যাই হোক আমরা শুধু সেখান থেকে ড্রিঙ্কস নিয়ে বের হয়ে আসলাম।
যে জায়গাটায় বসেছিলাম সেটা আমার কাছে বেশ পছন্দ হয়েছিলো। বেশ অনেকটা জায়গা জুড়ে তারা বসার আয়োজন করেছে এবং একই জায়গায় কয়েক কয়েক ধরনের খাবারের ব্যবস্থা তারা রেখেছে। সেখানে যেমন পিজ্জা বার্গার এগুলো ছিলো। পাশাপাশি থাই কুইজিন ও ছিলো। আবার তারই পাশে বিরিয়ানি পাওয়া যাচ্ছিল। সবকিছু মিলিয়ে আয়োজন খারাপ ছিল না। কিন্তু অতিরিক্ত গ্রাহকের চাপে তাদের খাবার আগেই ফুরিয়ে গিয়েছে। যাই হোক আমরা সেখান থেকে বের হয়ে চিন্তা করছিলাম অন্য কোন জায়গা থেকে হালকা কিছু খাই। পরে বিএফসির আউটলেট থেকে আমরা ক্রিসপি ফ্রাইড উইংস নিলাম। বিএফসির বেশ নামডাক শুনেছি। তাদের সম্বন্ধে যেটা শুনেছি সেটা যে মিথ্যা নয় সেটা তাদের খাবার খেয়ে বুঝতে পারলাম।
ক্রিসপি ফ্রাইড উইংস খেতে বেশ ভালোই ছিল। এদিকে খাওয়া-দাওয়া শেষ করতে করতে মাগরিবের আজান দিয়ে দিল। তখন আমি বন্ধু রাসেলকে বললাম একটু অপেক্ষা কর আমি নামাজটা পড়ে নেই। পরে ওকে বসিয়ে রেখে আমি নামাজ পড়তে গেলাম। নামাজ পড়ে এসে দুই বন্ধু আরো কিছুক্ষণ ঘোরাফেরা করলাম। ঘোরাফেরা শেষ করে যখন আমরা বের হতে যাবো। তখন আমার বন্ধু বলল চল মোস্তফা মার্ট থেকে ঘুরে আসি। সে গল্প অন্য আরেকদিন বলবো। (চলবে)
আজকের মত এখানেই শেষ করছি। পরবর্তীতে আপনাদের সাথে দেখা হবে অন্য কোন নতুন লেখা নিয়ে। সে পর্যন্ত সবাই ভাল থাকুন সুস্থ থাকুন।
ফটোগ্রাফির জন্য ব্যবহৃত ডিভাইস | হুয়াই নোভা 2i |
---|---|
ফটোগ্রাফার | @rupok |
স্থান | বসুন্ধরা সিটি শপিং কমপ্লেক্স |
Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |
Support @Bangla.Witness by Casting your witness vote
Support @Bangla.Witness by Casting your witness vote
VOTE @bangla.witness as witness
OR
এইরকম একটা ছুটিতে ঢাকা একেবারেই ফাকা হয়ে যায়। আমার এলাকার কথায় বলি যারা ঢাকা থাকে অধিকাংশ বাড়ি এসে ঘুরে গেল প্রায় ছয়দিনের ছুটি ছিল সবমিলিয়ে। বসুন্ধরা সিটি শপিংমলে আমিও একবার গিয়েছিলাম তবে শপিং করতে না ঘুরতে। বেশ দারুণ লেগছিল। অনেক বড় শপিংমলটা।।
আসলে ঢাকা শহরে যে সমস্ত মানুষ থাকে তারা সবাই জীবন ও জীবিকার তাগিদে এখানে পড়ে থাকে। কিন্তু সবার মন পড়ে থাকে নিজের বাড়িতে।
প্রথম পর্বের পর দ্বিতীয় পর্বের ফটোগ্রাফি দেখে ভালো লাগলো। বন্ধুর সাথে বসুন্ধরা শপিং কমপ্লেক্স আনন্দময় মুহূর্ত উপভোগ করেছেন। সত্যিই এই বসুন্ধরা শপিং কমপ্লেক্স অনেক বড় এখানে আমি একবার গিয়েছিলাম মন মুগ্ধ করার মত শপিং কমপ্লেক্স।
ঠিকই বলেছেন বসুন্ধরা শপিং কমপ্লেক্স আসলেই অনেক বড় একটি জায়গা। খুবই দৃষ্টিনন্দন এই শপিং কমপ্লেক্সটি।
অসাধারণ ভাই। ছুটির মধ্যে বন্ধুর সাথে বসুন্ধরা মার্কেটে জমিয়ে আড্ডা সহ চমৎকার চমৎকার ফটোগ্রাফি করেছেন। আমিও ঢাকাতে গিয়ে একবার গিয়েছিলাম এই মার্কেটে। সত্যি বিশাল মার্কেট। কোন লোক হারিয়ে গেলে তাকে খুঁজে পাওয়া দুষ্কর।
ঠিকই বলেছেন। এখনো এই মার্কেটে ঘুরতে গেলে মনে হয় যে হারিয়ে যাচ্ছি।
বেশ সুন্দর হয়েছে আপনার ফটোগ্রাফি গুলা। অবশ্য আমি কখনো যাইনি বসুন্ধরা শপিংমলে তবে আপনার ফটোগ্রাফি গুলো দেখে বেশ ভালো লাগছে। অনেকদিন পর বন্ধুর সাথে ঘোরাফেরা করেছেন জেনে বেশ ভালো লাগলো। ক্রিসপি ফ্রাইড উইংস খাবারটা নামে অনেক সুন্দর , আবার স্বাদেও অনেক সুন্দর এটা জেনেও খুব ভালো লাগলো। আপনাকে ধন্যবাদ ভাই।
ঢাকা আসলে অবশ্যই চেষ্টা করবেন একবার বসুন্ধরা সিটি শপিং কমপ্লেক্স থেকে ঘুরে যেতে। জায়গাটি আসলেই চমৎকার।
হ্যাঁ ভাই অবশ্যই চেষ্টা করব।