বাগাটের ঐতিহ্যবাহী মিষ্টির দোকান।১০% প্রিয় লাজুক খ্যাঁক এর জন্য।
হঠাৎ করে কাজের জন্য গ্রামের বাড়িতে যেতে হয়েছিলো গতকাল । গিয়ে সারাদিন বিভিন্ন রকমের কাজে ব্যস্ত ছিলাম। এলাকার মাদ্রাসার কিছু ছাত্রদের খাওয়া-দাওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছিল। সে আয়োজনে চাচাতো ভাইদের সঙ্গে আমিও যোগ দিয়েছিলাম।
স্থান- লিংক
বেশ কিছুদিন পর চাচাতো ভাইদের সঙ্গে দেখা হওয়ার নানা রকম আড্ডা চলছিলো। একপর্যায়ে জানতে পারলাম বিকালে আমাদের এক আত্নীয়ের বাসায় দাওয়াত আছে সেখানে যেতে হবে। মাংস পিঠার আয়োজন হবে আমাদের জন্য। আমরা দুপুরের ভরপেট খাওয়া-দাওয়া এবং কাজ শেষ করে বিকালের দিকে সেই আত্নীয়ের বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা দিলাম। সেখানে গিয়েও একচোট ভুরিভোজ হলো। সেই আত্মিয়ের বাড়ির পাশে ছিল একটি পেয়ারা বাগান সেখান থেকে বেশকিছু পেয়ারা পেড়ে নিলাম আমরা। তারপর তাদের কাছ থেকে বিদায় নিয়ে মাগুরা শহরে আসলাম।
সেখানে চাচাতো ভাইয়ের কিছু জরুরী কাজ ছিলো। সে কাজগুলো শেষ করতে করতে প্রায় রাত নটা বেজে গেলো। অতঃপর আমরা আবার গ্রামের বাড়িতে ফিরে আসলাম। আমাদের আগে পরিকল্পনা ছিল গ্রামের বাড়িতে এসে রাতে নৌকায় করে নদীতে কিছুক্ষণ ঘোরাফেরা করবো। কিন্তু সব কাজ শেষ করে বাড়িতে ফিরতে ফিরতে অনেক দেরি হয়ে গেলো। যার ফলে নৌকায় ঘোড়ার পরিকল্পনা বাদ দিতে হলো।
চাচাত ভাইয়েরা রাতেই ঢাকা ফিরে যাবে। যাওয়ার পথে আমাকে আমার বাসায় নামিয়ে দিয়ে যাবে। কিন্তু বাড়ি থেকে বের হওয়ার পথে একটি বিষয় নিয়ে আলাপ শুরু হলো। সেটি হচ্ছে মিষ্টি খাওয়া এবং কেনার ব্যাপারে। আমাদের এলাকার পাশের এলাকাটা মিষ্টির জন্য ফরিদপুরের ভেতর খুবই বিখ্যাত।
স্থান লিংক
এলাকাটির নাম বাগাট। বাগাটের দই এবং মিষ্টির নাম পুরো জেলাব্যাপী। আমার চাচাতো ভাইয়েরা আসলেই সেখান থেকে মিষ্টি খাবে। পরিকল্পনা হলো আমরা প্রথমে বাগাটে যাবো সেখান থেকে মিষ্টি কিনব তারপর ঢাকার উদ্দেশ্যে ওরা রওনা দেবে। বাগাট জায়গাটা আমাদের বাড়ি থেকে দশ বারো কিলোমিটার দূরে। সাথে গাড়ি থাকায় অল্প সময়ে আমরা সেখানে পৌঁছে গেলাম। পৌঁছে সবাই মিষ্টি বাছাই করতে ব্যস্ত হয়ে পড়লাম। সামনে হরেক রকম মিষ্টি দেখে আমাদের সাথে থাকা দুজন মিষ্টি খাওয়া শুরু করল।
স্থান লিংক
স্থান লিংক
কিন্তু আমাদের কয়েকজনের পেটভরা থাকার কারণে মিষ্টি খেতে পারলাম না। আমরা যে দোকান থেকে মিষ্টি নিয়েছি দোকানটা খুবই বিখ্যাত একটি দোকান। এই দোকানের মিষ্টি সুনাম সবার মুখে মুখে ছড়িয়ে আছে। এই দোকানের মিষ্টি খুবই মজার।এদের মিষ্টি তৈরির ঐতিহ্য অনেক পুরাতন। প্রায় ২০০ ধরে এই দোকানটা মিষ্টির জন্য বিখ্যাত। যদিও তাদের দোকানের চেহারা আগে এমন ছিলনা। এরা বংশ পরস্পরায় মিষ্টি তৈরির কাজ করে আসছে।
স্থান লিংক
স্থান লিংক
স্থান লিংক
এখন আগের থেকে অনেক বেশি রকমের মিষ্টি তারা বানায়। এদের এখন ফরিদপুর শহরে অনেকগুলি শাখা হয়েছে। কিন্তু আমরা গ্রামে আসলে এদের এই পুরাতন দোকান থেকে মিষ্টি খাওয়ার চেষ্টা করি। এদের ব্যবসা অনেক বড় হলেও দোকানের চেহারা দেখে খুব একটা বোঝার উপায় নেই।
স্থান লিংক
যদিও ফরিদপুর শহরে এদের অনেক বড় এবং সুসজ্জিত একটি মিষ্টির দোকান আছে। যেখানে প্রতিদিন লক্ষাধিক টাকার বেশি মিষ্টি বিক্রি হয়। এদের দোকান থেকেও প্রতিদিন প্রচুর পরিমাণ মিষ্টি বিক্রি করে। আশেপাশের এলাকার লোকজন এবং বিভিন্ন এলাকা থেকে এসেও মানুষ এখান থেকে মিষ্টি কিনে নিয়ে যায়। যারা এখানকার মিষ্টি খায় তারা বারবার ফিরে আসে। দোকানটা একদম হাইওয়ের সাথেই লাগানো।
স্থান লিংক
আমাদের সাথে এই বাগাটের মিষ্টির সম্পর্ক একদম ছোটবেলা থেকে। এখনো মনে পড়ে ছোটবেলাতে আমরা যখন গ্রামের বাড়িতে আসতাম। তখন বাস থেকে নেমে আমাদের একটি মিল ছিল সেখানে গিয়ে বসতাম। পরে আমাদের জন্য এই বাগাটের দই এবং মিষ্টি নেয়া হতো। সেই দই মিষ্টি খাওয়ার পর আমরা বাড়ির দিকে যাত্রা করতাম।
স্থান লিংক
এখন এই দোকানে প্রায় ৫০-৬০ রকমের মিষ্টি তৈরি হয়। এদের দই ও খুব চমৎকার। এখন আবার ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য মিষ্টি ছাড়া এক ধরনের দই তৈরি করে তারা। যার ফলে সবাই এই দোকানের মিষ্টি খেতে পারে। আমার চাচাতো ভাই যারা ঢাকা থেকে এসেছিল ওরা অনেক টাকার মিষ্টি কিনে নিয়েছে এখান থেকে।
স্থান লিংক
যদিও আজকাল অনেক মিষ্টির কারিগর তাদের পৈত্রিক পেশা ছেড়ে অন্য পেশায় যোগ দিচ্ছে। কিন্তু এই মিষ্টির দোকানের মালিকেরা তাদের বংশের ঐতিহ্য ধরে রেখেছে এবং মানসম্মত মিষ্টি তৈরি করে মানুষের আস্থা অর্জন করেছে। এদের মিষ্টির দাম সাধারণত ২০০ টাকা থেকে শুরু সর্বোচ্চ ৭০০ টাকা পর্যন্ত কেজি হয়। এরা শুধু মিষ্টি বিক্রি করে না। এদের তৈরি ঘি ও মানুষের খুবই পছন্দের। বারোশো টাকা কেজি দরে এরা ঘি বিক্রি করে।
স্থান লিংক
আজকের মতো এখানেই শেষ করছি। আশা করছি এই পোস্টটি আপনাদের ভালো লেগেছে। পরবর্তীতে আপনাদের সাথে দেখা হবে অন্য কোন নতুন লেখা নিয়ে। সে পর্যন্ত সবাই ভাল থাকুন সুস্থ থাকুন।
ফটোগ্রাফির জন্য ব্যবহৃত যন্ত্র | হুয়াই নোভা ২আই |
---|
Support @amarbanglablog by delegating STEEM POWER.
100 SP | 250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP |
🇧🇩🇧🇩ধন্যবাদ🇧🇩🇧🇩
আমি রূপক। আমি একজন বাংলাদেশী। আমি বাঙালি। আমি বাংলায় মনের ভাব প্রকাশ করতে ভালোবাসি। আমি আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটিকেও ভালোবাসি।
বাহ,মিষ্টির দোকানটি খুব সুন্দর এবং অনেক ধরনের মিষ্টি থরে থরে সাজানো রয়েছে।বাঙালি মানেই মিষ্টি প্রিয়।ধন্যবাদ ভাইয়া।
ভাইয়া খুব সুন্দর উপস্থাপন করেছেন। মাদ্রাসার ছাত্রদের জন্য খাবার আয়োজন ছিল অসাধারণ। আর ওই দোকানের মিষ্টি গুলো দেখেই বুঝা যাচ্ছে যে কেন এত নাম করা হয়েছে। সব মিলিয়ে বুঝাই যাচ্ছে আপনার সময়টা অনেক ভালো কেটেছে দোয়া করি সব সময় যাতে ঠিক এমন ভালো সময় কাটে আপনার।
ধন্যবাদ ভাই আপনাকে।
ভাই আমার তো লোভ লেগে যাচ্ছে, এত সুন্দর সুন্দর মিষ্টি গুলো দেখে। তবে আমিও শুনেছিলাম যে ফরিদপুরের মিষ্টি গুলো অনেক সুস্বাদু হয় তবে কখনো খেয়ে দেখা হয়নি, তবে ইনশাল্লাহ একদিন গেলে অবশ্যই খেয়ে দেখব। আপনার জন্য শুভকামনা রইল।
চলে আসেন আপনার দাওয়াত রইলো ।
মিষ্টি আমার খুব প্রিয় খাবার আপনি খুব সুন্দর ফটোগ্রাফি করে সেই সাথে সুন্দরভাবে বর্ণনা করেছেন ভাই আপনার পোস্টটা দেখে খুব লোভ হচ্ছিল মিষ্টি খাওয়ার জন্য বিশেষ করে সনদেশ। আপনার জন্য শুভকামনা
সন্দেশ গুলো আসলেই খুব মজার ছিলো। ধন্যবাদ আপনাকে।
খুব ভালো লাগলো আপনার লেখা গুলো পরে। যদিও আমার কখনো বাগেরহাট যাওয়া হয়নি। আর যদি কখনো যাওয়া হয় তাহলে এই মিষ্টির দোকান এর কথা মনে থাকবে। ধন্যবাদ আপনাকে আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য।
আপু এটা বাগেরহাট না।এটা ফরিদপুরেই। এই জায়গার নাম বাগাট বাজার। ধন্যবাদ আপনাকে।
আরে দাদা কি দেখালেন, লোভ লেগে গেলো তো। দুধ চমচম। আহা। কতদিন খাইনা। ২০০ বছরের পুরোনো দোকান তার ঐতিহ্য ধরে রেখেছে, এটা খুবই ভালো খবর। ডায়াবিটিস রোগীর দই খেতে কেমন, জানার বাসনা রইলো।
ওখানকার মিষ্টি গুলো আসলেই অনেক সুস্বাদু। ডায়াবেটিস রোগীদের দই কখনো খেয়ে দেখি নি। কারণ চিনি ছাড়া কোন মিষ্টি কি ভালো লাগে? ধন্যবাদ দাদা।
নানান রকম মিষ্টির সমারোহ দেখেই বোঝা যাচ্ছে এই বাগাট এলাকাটি মিষ্টির জন্য অনেক প্রসিদ্ধ। কখনো ফরিদপুর গেলে এই এলাকার মিষ্টি খেয়ে দেখতে হবে। অনেক ধন্যবাদ খুব চমৎকারভাবে ছবি ও বর্ণনা দেয়ার জন্য
ভাই মিষ্টি খাইতে আমার খুব পছন্দ। আপনার মিষ্টির ফটো গুলো খুব সুন্দর হয়েছে। দেখে তো লোভ লেগে গেলো।ধন্যবাদ ভাই আপনাকে।
আপনাকে ও অসংখ্য ধন্যবাদ ভাই।
ভাইয়া আপনার মিষ্টির ছবিগুলো দেখেই তো মিষ্টি খেতে ইচ্ছে করছে। যদিও আমি মিষ্টি খুব একটা বেশি খাইনা। তবে আমি একদম খাইনা তা না, খাই মোটামোটি। মাদ্রাসার ছাত্রদের জন্য ব্যাপারটি খুব ভালো লেগেছে।
ধন্যবাদ আপু আপনাকে।
মিষ্টির ছবিগুলো খুব সুন্দর ভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন। খেতে ইচ্ছা করছে। ধন্যবাদ আপনাকে।
আপনাকে ও ধন্যবাদ।