ঐতিহ্যবাহী জসিম পল্লী মেলা ভ্রমণের অভিজ্ঞতা ( ২য় পর্ব)। ১০% সাই-ফক্স।
কয়েকদিন আগে আমি আপনাদের সাথে আমাদের এলাকার ঐতিহ্যবাহী মেলা ভ্রমনের প্রথম পর্ব নিয়ে আলোচনা করেছিলাম। আজ সেই মেলা ভ্রমণের দ্বিতীয় পর্ব নিয়ে হাজির হয়েছি। আগের পোস্টে বলেছি এই মেলাটি অনুষ্ঠিত হয় মূলত পল্লীকবি জসীমউদ্দীনের স্মৃতির উদ্দেশ্যে। যার ফলে এই মেলায় গ্রামীণ আবহের একটি প্রভাব থাকে।
প্রথম দিন মেলায় গিয়েছিলাম বন্ধু ফেরদৌসের সঙ্গে। আমরা প্রথমে মেলায় গিয়ে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান উপভোগ করি। এই পর্বটা বেশ ভালো ছিলো। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের পরিবেশনা ভালো ছিলো। সমস্ত দর্শনার্থীরা খুব উপভোগ করছিলো বিভিন্ন রকম পরিবেশনা। কিছুক্ষণ সেখানে থেকে মেলার অন্য অংশের দিকে রওনা দিলাম। যে কোন মেলায় গিয়ে আমি প্রথমে দেখার চেষ্টা করি সেখানে ব্যতিক্রমধর্মী কি রয়েছে। তবে বর্তমানে বাংলাদেশের মেলাগুলো তাদের বৈশিষ্ট্য অনেকটাই হারিয়েছে। এখন সব মেলাতেই প্রায় একই ধরনের জিনিসপত্র দেখা যায়।
একটা সময় প্রাধান্য পেত হস্তশিল্পজাত পণ্য সামগ্রী। কিন্তু এখন আর সেগুলো তেমন একটা দেখা যায়না। সেই জায়গা দখল করেছে প্লাস্টিকের তৈরি জিনিসপত্র বা খেলনাপাতি। আগে কাঠের এবং মাটির তৈরি বিভিন্ন তৈজসপত্র দেখা যেতো। কিন্তু এখন সে জায়গাটি দখল করে নিয়েছে অ্যালুমিনিয়াম এবং অন্যান্য ধাতু। তারপরেও মেলায় ঘুরে কয়েকটি দোকান পেয়েছিলাম যে সমস্ত জায়গায় হস্তশিল্পজাত পণ্য সামগ্রী পাওয়া যাচ্ছিলো। এই জিনিসপত্রগুলি দেখলে পুরনো স্মৃতি মনে পড়ে যায়।
একটা সময় এগুলোই থাকতো মেলার মূল আকর্ষণ। এখন কালের বিবর্তনে সে সব হারিয়ে যেতে বসেছে। আমরা দুই বন্ধু মিলে মেলার একদম শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত ঘুরতে শুরু করলাম। ছবিও তুলেছিলাম। আমরা যেদিন গিয়েছিলাম সেদিন মেলায় প্রচণ্ড ভিড় ছিলো। যার ফলে চলাফেরা করতে বেশ সমস্যা হচ্ছিলো। এক সময় আমাদের এই মেলায় সার্কাস পুতুল নাচ যাত্রা আরো অনেক কিছু হতো। কিন্তু এখন সেগুলো প্রায় হারিয়ে গিয়েছে। যদিও সার্কাস এখনো রয়েছে।
ছোট বেলায় যখন মেলায় আসতাম তখন প্রধান আকর্ষণ থাকতো এই সার্কাস। সার্কাস না দেখলে মনে হতো মেলার আনন্দ পরিপূর্ণ উদযাপন করতে পারিনি। যদিও আজকালকার সার্কাস শুনেছি তাদের পুরনো জৌলুস অনেকটাই হারিয়েছে। তবে দীর্ঘদিন পর আমাদের শহরে এই ঐতিহ্যবাহী মেলাটি অনুষ্ঠিত হওয়ায় শহরের মানুষের ভেতর এক ধরনের উৎসাহ উদ্দীপনা বিরাজ করছিলো। যার ফলে সকলেই মেলায় এসে ঘোরাফেরা করছিলো।
এই মেলা উপলক্ষে আশেপাশে জেলা থেকেও অনেক মানুষ এখানে আসে। আমরা বিভিন্ন দোকান ঘুরে দেখছিলাম এবং নানারকম জিনিসের দাম শুনছিলাম। একটি জিনিস খেয়াল করে দেখলাম মেলার মাঠে জিনিসপত্রের দাম কিছুটা বেশি। অবশ্য এটা হওয়াটাই স্বাভাবিক। মেলায় ঘুরতে আসলে আরেকটি জিনিস ভালো লাগে। সেটা হচ্ছে অনেক পরিচিত মানুষের সাথে দেখা হয়ে যায়। যাদের সাথে অনেকদিন যাবত দেখা সাক্ষাত হয় না। কিন্তু এই মেলায় আসলে হঠাৎ করেই তাদের অনেকের সাথে দেখা হয়ে যায়। এটা বেশ ভালই লাগে। তবে মেলার মূল আকর্ষণ এর ভেতর আরেকটা জিনিস হচ্ছে বিভিন্ন রকম মুখরোচক খাবার। সেটা নিয়ে পরবর্তী পর্বে আপনাদের সাথে গল্প করবো।
আজকের মতো এখানেই শেষ করছি। পরবর্তীতে আপনাদের সাথে দেখা হবে অন্য কোন নতুন লেখা নিয়ে। সে পর্যন্ত সবাই ভাল থাকুন সুস্থ থাকুন।
ফটোগ্রাফির জন্য ব্যবহৃত ডিভাইস | হুয়াই নোভা 2i |
---|---|
ফটোগ্রাফার | @rupok |
স্থান | অম্বিকাপুর |
Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |
আপনি জসীম পল্লী মেলায় খুব সুন্দর একটা সময় কাটিয়েছেন। মেলায় ঘুরতে আমার কাছে খুবই ভালো লাগে। বিশেষ করে মেলায় যে জিনিসপত্রগুলো উঠে ঘুরে ঘুরে সেগুলো দেখতে কিনতে আমার কাছে খুবই ভালো লাগে। মাটির তৈরি জিনিস তো আমার ভীষণ পছন্দ। আপনাকে ধন্যবাদ ভাইয়া মেলায় কাটানো সুন্দর একটি মুহূর্ত এবং কিছু ফটোগ্রাফি আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য। আপনার জন্য শুভেচ্ছা রইল।
মাটির তৈরি জিনিস আমার কাছেও দেখতে অনেক ভালো লাগে। কিন্তু দিন দিন এগুলো হারিয়ে যেতে বসেছে।
ভাই খুবই চমৎকার চমৎকার ফটোগ্রাফির মধ্যে দিয়ে আপনি জসীমউদ্দীন মেলার দ্বিতীয় পর্বটি আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন। প্রত্যেকটি ফটোগ্রাফি ভাই অসাধারণ ছিল। আপনি এটা ঠিক বলেছেন এই ধরনের মেলায় আসলে অনেক পরিচিত লোকের সাথে দেখা হয় যাদের সাথে অনেকদিন ধরে দেখা হয় না। এটা খুবই ভালো লাগে আর এই ধরনের লোকের সাথে দেখা হলে মনটা ভরে যায় এবং সেই সময় মেলায় সময়টা ভালোই কাটে। অসংখ্য ধন্যবাদ ভাই মেলার আনন্দঘন মুহূর্ত গুলো আমাদের মাঝে এত চমৎকার ভাবে শেয়ার করার জন্য।
এবারও মেলায় আমার এক পরিচিত বড় ভাইয়ের সাথে দেখা হয়েছিলো। বেশ কিছুদিন পর তার সাথে দেখা হলো। এ ব্যাপার গুলো ভালোই লাগে।
আপনি একদম ঠিক বলেছেন ভাই বাংলাদেশের মেলাগুলো তাদের আসল বৈশিষ্ট্য এখন হারিয়ে ফেলেছে। আর আগে যে মানুষের মেলার প্রতি একটা আকর্ষণ ছিলো সেটা কিন্তু এখন আর নেই বললেই চলে। তবে আপনি মেলায় গিয়ে দারুন কিছু ফটোগ্রাফি আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন। আর আপনি মেলায় ভালো সময় কাটিয়েছেন তা আপনার লেখা পড়ে মনে হচ্ছে। অনেক ধন্যবাদ আপনাকে শেয়ার করার জন্য
এই ব্যাপারটি আমাকে কষ্ট দেয়। আমি চাই মেলাগুলো তাদের স্বকীয়তা ধরে রাখুক। নইলে একসময় এই মেলা গুলো জনপ্রিয়তা হারাবে।
আপনি খুবই চমৎকার ভাবে আমাদের মাঝে জসিমউদ্দিন পল্লী মেলা ভ্রমণের অনেক চমৎকার একটি অভিজ্ঞতার গল্প শেয়ার করেছেন ।আপনার অভিজ্ঞতার গল্পের সাথে সাথে আপনি কিছু সুন্দর ফটোগ্রাফি ও আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন সেগুলো দেখে অনেক বেশি ভালো লাগলো। যদি কখনো সময় সুযোগ হয় তাহলে অবশ্যই একদিন জসীমউদ্দীনের এই মেলা থেকে ঘুরে আসবো। শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ
সময় পেলে একবার এই মেলা থেকে ঘুরে যাবেন। ভালো লাগবে।