ওয়াটার বাসে ছোট্ট ভ্রমণ।
ঢাকা আসার পর থেকে প্রায় একই রুটিনে চলছি। তো দুদিন আগে হঠাৎ করে সেই রুটিনের কিছুটা ব্যত্যয় ঘটলো। আম্মা বলল একটি জরুরী কাজে গুলশান যেতে হবে। কাজটি হচ্ছে কিছু ডলার ভাঙাতে হবে। আমরা যে এলাকায় থাকি এর আশেপাশে কোন মানি এক্সচেঞ্জ এর প্রতিষ্ঠান নেই। সেজন্য আমাকে গুলশান যেতে হবে। কারণ গুলশান ১ এ বেশ কয়েকটি মানি এক্সচেঞ্জের প্রতিষ্ঠান রয়েছে। যখন বুঝতে পারলাম যে গুলশান যেতে হবে তখন চিন্তা করতে শুরু করলাম কিভাবে গুলশান যাবো। কারণ বনশ্রী থেকে গুলশানের দূরত্ব খুব একটা বেশি নয়। কিন্তু বনশ্রী থেকে গুলশান যাওয়ার যে রাস্তা সে রাস্তাটাতে বেশিরভাগ সময় প্রচন্ড জ্যাম থাকে। যার ফলে অল্প রাস্তা হলেও যেতে অনেকটা সময় লাগবে।
আমি চিন্তা করছিলাম শর্টকাটে কিভাবে যাওয়া যায়। হঠাৎ করে মনে পড়লো আমি তো হাতিরঝিল গিয়ে সেখান থেকে ওয়াটার বাসে করে গুলশান যেতে পারি খুব অল্প সময়ে। বনশ্রী থেকে হাতিরঝিল পৌঁছাতে আমার সর্বোচ্চ ১৫ মিনিট সময় লাগবে। তাই চিন্তা করলাম এটাই সবচাইতে ভালো উপায় হবে। যাই হোক ঝটপট তৈরি হয়ে আমি গুলশান ১ এর উদ্দেশ্যে বেরিয়ে গেলাম। অল্প সময়ে হাতিরঝিল ওয়াটার বাস টার্মিনালে পৌঁছে গেলাম। সেখানে পৌঁছে টিকেট কেটে ওয়াটার বাসের জন্য অপেক্ষা করতে লাগলাম। অপেক্ষা করতে করতে চারপাশে বৃষ্টি বুলিয়ে নিচ্ছিলাম। কারণ আপনারা জানেন এই হাতিরঝিল প্রকল্পটি আমার খুবই পছন্দের একটি জায়গা। সেই সাথে ওয়াটার বাসের রাইড টাও আমার খুবই প্রিয় একটি রাইড।
অল্প কিছুক্ষণ অপেক্ষা করার পরেই গুলশানগামী ওয়াটার বাসটি এসে পৌঁছল। আমি সেটিতে উঠে বসলাম। উঠে বসার কিছুক্ষণ পরেই ওয়াটার বাসটি চলতে শুরু করল। ওয়াটার বাসটি চলছিল আর আমি চিন্তা করছিলাম। এখন যদি আমি রাস্তায় থাকতাম তাহলে কি ভয়ঙ্কর পরিস্থিতিতে থাকতাম। হয়তো কোথাও ট্রাফিক জ্যামে আমাকে গাড়ির ভেতরে গরমের ভিতর বসে থাকতে হতো। অথচ এখন এই ওয়াটার বাসের কল্যাণে চমৎকার হাওয়া খেতে খেতে আমি বাধাহীন ভাবে গন্তব্যের দিকে এগিয়ে যেতে পারছি।
এক চমৎকার অনুভূতি হয় হাতির ঝিলের এই প্রকল্পের এখানে আসলে। আমার কাছে শুধু মনে হয় পুরো ঢাকা শহরকে যদি এইভাবে পানিপথে কানেক্ট করা যেতো। তাহলে কত চমৎকার হতো। রাস্তার উপরে চাপ অনেকটাই কমে যেতো। মানুষ মনের আনন্দে এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় যেতে পারতো। অথচ অবৈধ দখলদারদের জন্য আজ ঢাকার সমস্ত খাল বিল গুলো গায়েব হয়ে গিয়েছে। সব দখল করে সেখানে বড় বড় বিল্ডিং গড়ে তুলেছে। কিন্তু আজ যদি সেই খাল বিলগুলো থাকতো। তাহলে পুরো ঢাকা শহরের মানুষজন অনেক শান্তিতে চলাফেরা করতে পারতো।
কিছুদিন আগেই শুনেছিলাম সরকার দখল হয়ে যাওয়া খাল গুলো পুনরায় উদ্ধারের জন্য চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। কিছুদিন বেশ তোড়জোর দেখতে পেলাম। কিন্তু অল্প কিছুদিন পরেই সবকিছু আবার থেমে গিয়েছে। যে সমস্ত জায়গা ভূমিদস্যুদের কবল থেকে উদ্ধার করা হয়েছিল সেগুলো আবার তারা পুনরায় দখল করে নিয়েছে। মনে যে আসার সঞ্চার হয়েছিল সেটা আবার নিভে গেলো। গুলশানে যেতে যেতে চিন্তা করছিলাম একদিন সময় করে ওয়াটার বাসে করে বিভিন্ন দিকে ঘুরতে বের হবো। এই ওয়াটার বাসগুলো যেদিকে যায় সেই পথগুলোর শেষ সীমানা পর্যন্ত যাব আবার ফিরে আসবো। এভাবে সারাটা দিন কাটাবো।
যদিও কবে ব্যস্ততা থেকে মুক্ত হতে পারবো সেটা এখনো জানিনা। প্রচন্ড ব্যস্ততায় দম বন্ধ হয়ে আসছিল। তবে হাতিরঝিলের এই ওয়াটার বাসের ছোট্ট ভ্রমণটা মনে এক ধরনের প্রশান্তি নিয়ে এলো। যাইহোক গুলশান ১ এ পৌঁছে অল্প কিছুক্ষণে আমার কাজ শেষ হয়ে গেলো। তারপর যেভাবে ওয়াটার বাসে করে গুলশান গিয়েছিলাম সেভাবেই আবার ওয়াটার বাসে করে গুলশান থেকে ফিরে এলাম।
আজকের মত এখানেই শেষ করছি। পরবর্তীতে আপনাদের সাথে দেখা হবে অন্য কোন নতুন লেখা নিয়ে। সে পর্যন্ত সবাই ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন।
ফটোগ্রাফির জন্য ব্যবহৃত ডিভাইস | হুয়াই নোভা 2i |
---|---|
ফটোগ্রাফার | @rupok |
স্থান | হাতিরঝিল |
![logo.png](https://steemitimages.com/640x0/https://cdn.steemitimages.com/DQmZEaz6VZmitMY1N8dSXHuT2tfgXFnDKjY8iV7jNGuNwEE/logo.png)
Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |
![Heroism_3rd.png](https://steemitimages.com/640x0/https://cdn.steemitimages.com/DQmRejDSNMUFmRz2tgu4LdFxkyoZYmsyGkCsepm3DPAocEx/Heroism_3rd.png)
![standard_Discord_Zip.gif](https://steemitimages.com/0x0/https://cdn.steemitimages.com/DQmTvJLqN77QCV9hFuEriEWmR4ZPVrcQmYeXC9CjixQi6Xq/standard_Discord_Zip.gif)
Support @Bangla.Witness by Casting your witness vote
Support @Bangla.Witness by Casting your witness vote
VOTE @bangla.witness as witness
![witness_vote.png](https://steemitimages.com/640x0/https://cdn.steemitimages.com/DQmW8HnxaSZVKBJJ9fRD93ELcrH8wXJ4AMNPhrke3iAj5dX/witness_vote.png)
OR
ঢাকা শহর জ্যাম খুব সেটি আমিও শুনেছি।আপনার মাধ্যমে হাতিরঝিল প্রকল্পটির প্রশংসা ও ছবিতে দেখেছি ভাইয়া।অনেক ভালো লাগে জায়গাটি দেখতে,পানিপথ মানেই প্রশান্তির হাওয়া, আমার ও অনেক ভালো লাগে নদীর শীতল হাওয়া।আপনার ভ্রমন বেশ আনন্দের ছিল আশা করি,ধন্যবাদ ভাইয়া।
আপনার এই ওয়াটার বাসে ভ্রমণটা পড়ে ভালই লাগলো। আসলেই শহর এলাকায় রাস্তায় যে পরিমাণ জ্যাম থাকে চলাফেলায় মুশকিল হয়ে যায়। তবে শহরের এই জ্যামে বাদ দিয়ে নিরিবিলি পানিপথে চলাফেরা করলে আসলে একটা ভালো অনুভূতি পাওয়া যায়।
সরকার যে কোন কাজ প্রথমে খুব ভালোভাবে উদ্যোগ নিলেও শেষ পর্যন্ত সবসময় সব কাজ ভালোভাবে শেষ করতে পারে না। যেমনটি হয়েছিল সরকারের দখল হয়ে যাওয়া খাল গুলোর ব্যাপারে। যাইহোক ভাই আপনি খুব বুদ্ধিমানার একটি কাজ করেছেন বাসে করে না গিয়ে ওয়াটার বাসে করে আপনি গুলশান গিয়েছেন,। যদি আপনি রাস্তায় করে যেতেন তাহলে অবশ্যই ভয়ংকর পরিস্থিতির শিকার হতেন, কারণ জ্যাম তো লেগেই থাকে।
আসলেই বাড্ডার এই দিকে অনেক জ্যাম লেগে থাকে।তবে আমি গুলশান থেকে একবার বোর্ডে উঠেছিলাম ফ্রেন্ডদের সাথে অনেক আগে যদিও অনেক ভয়ে ভয়ে ছিলাম তবে বেশ ভালো লেগেছে।এখন মানুষ যাতায়াতের জন্য ওয়াটার বাসে আছে যদিও কখনও এই বাসে উঠা হয়নি।ভালো লাগলো।ধন্যবাদ
আসলে ভাইয়া জ্যামে পড়লে সত্যিই অনেক বিরক্ত লাগে সাথে সময় নষ্ট ৷ এতে একটা ভালো বুদ্ধি পেয়েছে ৷ রাস্তায় জ্যামে আটকে না থেকে ওয়াটার বাসে নদী ভ্রমনের সাথে মুক্ত বাতাসে সুন্দর একটি পরিবেশে গুলশানে চলে গেছেন ৷ এতে ভালো একটা অনুভুতিও অনুভব করেছেন ৷ ভালো লাগলো আপনার ওয়াটার বাসে ছোট্ট ভ্রমন কাহিনী পড়ে ৷ ধন্যবাদ ভাইয়া শেয়ার করার জন্য ৷
ভাইয়া আপনার ভ্রমণ টা ছিল অসাধারণ। একমাত্র আপনার উপস্থিত বুদ্ধির কারণে ছোট্ট ভ্রমণটা অল্প সময়ে করে ফেললেন। নয়তো আপনাকে ওয়াটার বাসে না গিয়ে জ্যামে মধ্যেই পড়তে হতো। যদিও ঢাকায় এসেছি বহু বছর কিন্তু জ্যামের কারণে ঢাকা তেমন একটা যাওয়া হয় না। আশেপাশেই এলাকাতে রয়ে গেছি, যানজট বিহীন, বেশ ভালোই আছি, খুব বেশি প্রয়োজন না হলে ঢাকার ভিতরে যাওয়া হয় না। আর ঢাকায় কোথায় কি আছে তাও তৈমন কিছু জানা নেই। হাতিরঝিল থেকে গুলশানে ওয়াটার বাসের গল্পটা আজকে আপনার থেকেই জানলাম। আপনার জন্য রইল অফুরন্ত ভালোবাসা।
ওয়াটার বাসে চড়ে নতুন একটা অভিজ্ঞতার সঞ্চয় করলেন। একদিকে সময় ও বাঁচলো অপরদিকে স্বাচ্ছন্দ্যবোধে শহরের জ্যাম অতিক্রম করে শালীনতার সাথে কাজটিও সম্পূর্ণ করলেন। আপনার জন্য অনেক অনেক শুভকামনা রইল।