রিভার ভিউ রেস্টুরেন্টে কাটানো কিছু সুন্দর মুহূর্ত। ১০% সাই-ফক্স।

in আমার বাংলা ব্লগ2 years ago

কেমন আছেন আমার বাংলা ব্লগের বন্ধুরা? আমি ভালো আছি। আশাকরি আপনারা ও ভালো আছেন।


গত কিছুদিন থেকেই সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইটগুলোতে আমাদের শহরের একটি রেস্টুরেন্ট নিয়ে বেশ আলোড়ন তৈরি হয়েছে। রেস্টুরেন্টটি তৈরি হয়েছে একদম পদ্মা নদীর পাড়ে। পাড়ে না বলে বলা ভালো পানির উপরে। আগে একটা সময় আমি প্রায়ই পদ্মার পাড়ে যেতাম। তবে গত বেশ কিছুদিন যাবৎ খুব একটা যাওয়া হচ্ছে না।

IMG_20220527_103346.jpg

রেস্টুরেন্টটা যেদিকে হয়েছে ওদিকটাতে আমার যাওয়া হয় না বেশ কিছুদিন হলো। তাই ফেসবুকের পোস্ট দেখে চিন্তা করছিলাম একবার সেখান থেকে ঘুরে আসা দরকার। বেশ কয়েকদিন থেকে প্ল্যান করছিলাম। কিন্তু বিভিন্ন ব্যস্ততার কারণে আর সে পরিকল্পনা বাস্তবায়ন হচ্ছিল না। শেষ পর্যন্ত দুদিন আগে বন্ধু ফেরদৌসকে নিয়ে গিয়েছিলাম সেই রেস্টুরেন্টে।

IMG_20220527_103558.jpg

সেখানে গিয়ে রেস্টুরেন্টটি দেখে ভালই লাগলো। রেস্টুরেন্টটি নদীর পানির উপরে ভাসমান অবস্থায় আছে। এই ধরনের রেস্টুরেন্ট আমাদের এখানে এর আগে দেখিনি। মোটরসাইকেল থেকে নেমে আমরা রেস্টুরেন্টে প্রবেশ করলাম। দেখতে পেলাম বেশ ভালই লোকসমাগম হয়েছে। তবে বেশির ভাগই দেখলাম এসেছে ছবি তোলার জন্য। আজকালকার এই ব্যাপারটি আমার একেবারেই পছন্দ নয়। মানুষ যে কোন জায়গায় গিয়ে সেখানকার সৌন্দর্য উপভোগ করার থেকে ছবি তোলায় মেতে ওঠে। যার ফলে ভালোভাবে সেখানকার সৌন্দর্য উপভোগ করতে পারে না।

IMG_20220525_175100.jpg

রেস্টুরেন্ট তৈরি হয়েছে মূলত লোহার ফ্রেমের উপর কাঠ দিয়ে একটি পাটাতন তৈরি করা হয়েছে। তার নিচে ড্রাম দিয়ে পাটাতনটা ভাসিয়ে রাখার ব্যবস্থা করা হয়েছে। রেস্টুরেন্টটি দেখে আমার কাছে খুব একটা শক্তপোক্ত মনে হয়নি। এখানে পাঠাতনে যে কাঠ গুলো ব্যবহার করা হয়েছে সেখানকার কিছু কাঠ ইতিমধ্যে বাঁকা হয়ে গিয়েছে। তবে রেস্টুরেন্টের একটা জিনিস আমার কাছে খুবই ভালো লেগেছে। রেস্টুরেন্টের একদম সামনের দিকে পানির খুব কাছাকাছি কয়েকটি চেয়ার রাখা হয়েছে। যেখানে বসে আপনি নদীর সৌন্দর্য উপভোগ করতে পারবেন। আপনার সামনে আর কোনো বাধা থাকবে না।

IMG_20220525_175118.jpg

জায়গাটি দেখে মনে হল এখানে বসে বা শুয়ে কফির কাপে চুমুক দিতে দিতে নদীর সৌন্দর্য অবলোকন করা আসলেই চমৎকার একটি ব্যাপার হবে। আমরা দুজন একটি খালি চেয়ার দেখে সেখানে বসে পড়লাম। চেয়ার গুলি সমুদ্র বিচে যে ধরনের চেয়ার দেখা যায় ঠিক সেই ধরনের। এখানে দেখলাম বেশিরভাগই লোক এসেছে জুটি হিসেবে। তবে আমাদের মত বন্ধুবান্ধব নিয়ে কয়েকটি গ্রুপও এসেছে।

IMG_20220525_182854.jpg

আমরা বসে নদীর সৌন্দর্য উপভোগ করছিলাম। অনুভূতিটা ছিল চমৎকার। এর ভিতর সেখানে এক টিকটকারের উপদ্রব শুরু হলো। এগুলো এক নতুন যন্ত্রণার নাম হয়েছে। যেখানে-সেখানে পরিবেশে তোয়াক্কা না করেই এরা টিকটকের ভিডিও শুট করতে শুরু করে। আমরা সেখানে কিছুক্ষণ বসে থাকার পর চিন্তা করলাম এটি যেহেতু রেস্টুরেন্ট কিছু না খেলে খারাপ দেখা যায়। যদিও এখানকার খাবারের মান কেমন হবে সেটা নিয়ে আমাদের যথেষ্ট সন্দেহ ছিলো।

IMG_20220527_103444.jpg

পরে আমরা দুজন চিকেন নুডুলস এবং কফি অর্ডার করলাম। কিছুক্ষনের ভিতর আমাদের হাতে চিকেন নুডুলস এর প্লেট দিয়ে গেলো। নুডুলস মুখে দিয়ে বুঝতে পারলাম অনেকক্ষণ আগে রান্না করা হয়েছে। একদম ঠান্ডা হয়ে আছে। নুডুলস এর সাদ যে খুব একটা খারাপ ছিল তা বলব না। কিন্তু ঠান্ডা হওয়ার জন্য খেতে খুব একটা ভালো লাগেনি। নুডুলস শেষ করে আমরা কফির জন্য অপেক্ষা করছিলাম। এর ভেতর কয়েকটি ইঞ্জিন চালিত ট্রলার রেস্টুরেন্টের সামনে দিয়ে চলে গেলো। সেই ট্রলার যাওয়ার পরে পানিতে যে আলোড়ন তৈরি হয় সেই আলোড়নে রেস্টুরেন্ট দুলে উঠলো। ব্যাপারটি বেশ উপভোগ করলাম।

IMG_20220525_174910.jpg

কিছুক্ষণ পর আমাদের কফি দিয়ে গেলো। কফির কাপে চুমুক দিতে দিতে দুই বন্ধু পরিকল্পনা করছিলাম একদিন সন্ধ্যার পরে এখানে এসে রাত্রে বেশ খানিকটা সময় কাটাতে হবে। এই চেয়ারে বসে কফির কাপে চুমুক দিতে দিতে রাতের নদীর সৌন্দর্য অবলোকন করা একটি চমৎকার অভিজ্ঞতা হবে। কফি শেষ করতে করতে দেখি ইতিমধ্যে প্রায় সন্ধ্যা হয়ে গিয়েছে। তারপর আমরা দু'বন্ধু বাড়ির সেখান থেকে বেরিয়ে বাড়ির পথে রওনা দিলাম।

আজকের মতো এখানেই শেষ করছি। পরবর্তীতে আপনাদের সাথে দেখা হবে অন্য কোন নতুন লেখা নিয়ে। সে পর্যন্ত সবাই ভাল থাকুন সুস্থ থাকুন।

ফটোগ্রাফির জন্য ব্যবহৃত ডিভাইসহুয়াই নভা 2i
ফটোগ্রাফার@rupok
স্থানপদ্মার পাড়, ফরিদপুর

logo.png

Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power

250 SP500 SP1000 SP2000 SP5000 SP

Heroism_3rd.png

standard_Discord_Zip.gif


🇧🇩🇧🇩ধন্যবাদ🇧🇩🇧🇩


@rupok

Sort:  
 2 years ago 

তোমার নামে তো মামলা হবে। মালিক কে না জিজ্ঞেস করেই রেস্টুরেন্টের নাম দিয়ে দিলা। আবার দেখি কোন লোকের একটা ছবিও দিয়ে দিয়েছ। এরা যদি তোমার নামে মামলা করে তখন কি হবে🤔

 2 years ago 

বাজি ধরে বলতে পারি এই রেষ্টুরেন্টের নাম এটাই হবে। আমি আসলে ওই জায়গাটার ছবি তুলতে যাচ্ছিলাম। কিন্তু খেয়াল করে দেখলাম লোকটা কিছুতেই সেখান থেকে নড়ছে না। অগত্যা কি আর করা। হা হা হা

 2 years ago 

যে এটা তৈরি করছে তার বুদ্ধি আছে। পানির উপর ভাসমান রেস্টুরেন্ট এককথায় দারুণ। অনেক লোকের সমাগম হবে। এবং এটা উপভোগ করার মতোই জায়গা দেখছি। তবে পানি বৃদ্ধি পেলে একটু অসুবিধা হতে পারে। চিকেন নুডলস আর চা এই পরিবেশে দারুণ। খুব চমৎকার সময় কাটিয়েছেন জায়গা টাই।।

 2 years ago 

পানি বৃদ্ধি পেলে সমস্যা হবেনা। কারণ পানি বৃদ্ধি পাওয়ার সাথে সাথে রেস্টুরেন্টও উপরের দিকে উঠতে থাকবে।

 2 years ago 

ভাইয়া ছবিনগুলো দেখেই তো ভাসমান রেস্টুরেন্টে যেতে ইচ্ছে করছে।বেশ ভালো সময় কাটাবে ঐখানে গেলে।যাই হোক ভালো ছিলো।বেশ কোয়ালিটি সময় কাটিয়েছেন বন্ধুর সাথে।ধন্যবাদ

 2 years ago 

সময়টা আসলেই অনেক উপভোগ করেছি।

 2 years ago 

দারুন, দূর থেকে এতটা ভালো না লাগলেও ভিতরের পরিবেশ টা কিন্তু খুবই সুন্দর। আসলে এই ধরনের রেস্টুরেন্টগুলোতে বসার মজাই আলাদা। হালকা নদীর বাতাস আর হাতে গরম গরম কফির কাপ বাহ জমে যেতো একদম। ভালোই উপভোগ করেছেন বোঝাই যাচ্ছে।

 2 years ago 

একদম ঠিক বলেছেন। নদীর খোলা হাওয়ায় ১ মগ কফি হাতে বসে সময়টা উপভোগ করার জন্য একদম পারফেক্ট জায়গা।

 2 years ago 

ভাইয়া,পানির মধ্যে এতো সুন্দর একটি রেস্টুরেন্ট তৈরি করেছে দেখে আমি অবাক। রেস্টুরেন্টের ফটোগ্রাফি গুলো দেখে আমি মুগ্ধ হয়ে গেছি।পরবর্তীতে আপনার লেখাগুলো পড়ে বুঝতে পারলাম রেস্টুরেন্টে সুন্দর করা হয়েছে কিন্তু রেস্টুরেন্টের পাটাতন গুলো খুবই নড়বড়ে। রেস্টুরেন্টে গ্রাহকদের আকৃষ্ট করার জন্য যে কোন রেস্টুরেন্টের মালিকরা এই বৃদ্ধি করে থাকে।ভাইয়া, খারাপ লেগেছে রেস্টুরেন্টে যাওয়ার পর তরতাজা খাবার না দিয়ে ঠান্ডা খাবার দিয়েছে গরম গর চিকেন নুডুলস খেলে হয়তো বেশ মজা লাগত।

এর ভিতর সেখানে এক টিকটকারের উপদ্রব শুরু হলো। এগুলো এক নতুন যন্ত্রণার নাম হয়েছে।

লেখাটি একদম ঠিক লিখেছেন কোন পর্যটন এলাকায় গেলে এই টিকটকারদের জন্য শান্তিতে কিছু করা যায় না। এদের একটা রোগ হয়ে গিয়েছে।যাইহোক ভাইয়া, আপনার পোস্টটা পড়ে কিন্তু বেশ ভাল লেগেছে বিশেষ করে ফটোগ্রাফি গুলো দেখে খুব ভাল লেগেছে।ধন্যবাদ ভাইয়া।।

 2 years ago 

টিকটকারদের ব্যাপারটি আসলেই এখন সহ্যের বাইরে চলে গিয়েছে। এদের দেখলেই এখন বিরক্ত লাগে।

 2 years ago 

কি সুন্দর রেস্টুরেন্ট দাদা! একেবারেই নদীর ওপরে তো! ভালো সময় কাটাচ্ছেন আপনি। দেখেই বোঝা যাচ্ছে এই রেস্টুরেন্টে বসলে মন-প্রাণ শান্ত হয়ে যাবে মুহূর্তের মধ্যে। এমন একটা রেস্টুরেন্টের মধ্যে সময় কাটাতে আমারও ইচ্ছা করে। খুব ভালো লাগলো।

Coin Marketplace

STEEM 0.20
TRX 0.14
JST 0.030
BTC 66937.04
ETH 3270.78
USDT 1.00
SBD 2.74