মাকে ফিরে পাওয়া। ১০% প্রিয় লাজুক খ্যাঁক এর জন্য।
আজ আমি অনেক খুশি। কি কারনে সেটা কি কেউ অনুমান করতে পারেন? আড়াই বছর পর আমার মা আজ দেশে এসেছে। আমি যে কতটা খুশি সেটা কেউ চিন্তাও করতে পারবেন না। আমার মা বিদেশ যাওয়ার পর থেকে সব সময় মনে একটা ভয় কাজ করতো। আর বোধহয় কখনো তাকে দেখতে পাবো না। কিন্তু সমস্ত ভীতির অবসান ঘটিয়ে মহান রাব্বুল আলামিনের রহমতে আমার মা আবার আমাদের মাঝে ফিরে এসেছে।
স্থান- লিংক
আমি ছোটো বেলা থেকেই মা অন্ত প্রান। আমার জীবনে আমার মার অবস্থান সবার উপরে। প্রত্যেকটা মানুষের জীবনে তার মায়ের ভূমিকা অপরিসীম থাকে। কিন্তু আমার জীবনে আমার মায়ের ভূমিকা তার থেকেও বেশি। ছোটবেলা থেকেই খেয়াল করেছি তিনি কখনো নিজের সুখ স্বাচ্ছন্দ্যের দিকে তাকাননি। সব সময় তিনি তার সর্বোচ্চটা আমাদের জন্য করেছেন। আমি বাবাকে ছোটবেলা থেকেই ভয় পেতাম। সেজন্য আমার সব আবদার থাকতো আমার মায়ের কাছে।
স্থান-লিংক
মধ্যবিত্ত পরিবারের নানারকম সমস্যা থাকা সত্বেও আমার মা আমাদের জন্য সব সময় তার সাধ্যের বাইরে করার চেষ্টা করেছেন। কখনো চিন্তা করিনি যে জীবিত থাকা অবস্থায় আমি আমার মাকে আড়াই বছর না দেখে থাকবো। কিন্তু করোনার এই ভয়াবহতার কারণে সেই অভিজ্ঞতা ও আমার হয়েছে। আমার জীবনে অনেক ছোট বয়সে একবার আমি আমার মাকে ছাড়া থাকার অভিজ্ঞতা হয়েছিলো। আমি বেশ কয়েক বছর আমার পরিবার থেকে দূরে খুলনায় ছিলাম। সেই বছরগুলি যে আমার কিভাবে কেটেছে সেটা আমি ছাড়া আর কেউ জানে না। যদিও আমার বাবা-মা আমাকে আমার ভালোর জন্যই খুলনায় পাঠিয়েছিলো। যাতে আমার লেখা পড়াটা ভালো হয়। কিন্তু কয়েক বছর থাকার পর আমি আবার বাড়ি ফিরে আসি।
স্থান-লিংক
দীর্ঘদিন বাবা-মাকে ছাড়া থাকার ফলে আমি আর কখনো তাদের থেকে দূরে যেতে চাইতাম না। খুলনায় গিয়ে আমার বাবা মায়ের উপরে অনেক অভিমান হয়েছিল। তখন বয়স কম থাকার ফলে বুঝতে পারিনি যে তারা আমার ভালোর জন্যই আমাকে দূরে পাঠিয়েছিলো। এখন ব্যাপারটা বুঝি।
স্থান-লিংক
গত কয়েকদিন থেকেই আমি অধীর আগ্রহে আজকের দিনটির জন্য অপেক্ষা করছিলাম। গত কালকে রাত থেকে আমি ফ্লাইট ট্র্যাকার অ্যাপস এর মাধ্যমে দেখছিলাম যে আমার মাকে বহনকারী বিমানটি কত দূর এসেছে। আজকে সকালে ঘুম থেকে ওঠার পর থেকে সময় আর যাচ্ছিলোনা। শুধু মনে হচ্ছিলো কখন সেই সময় আসবে? অবশেষে বেলা তিনটার দিকে আমাদের গাড়ি আসলো। সাড়ে তিনটার দিকে আমরা এয়ারপোর্টের দিকে রওনা হলাম।
স্থান-লিংক
এয়ারপোর্ট এর দিকে যাচ্ছিলাম আর অ্যাপসের মাধ্যমে দেখছিলাম যে প্লেন কত দূর এসেছে। আমরা যখন এয়ারপোর্টের কাছাকাছি পৌঁছলাম তখনই প্লেন ল্যান্ড করল। আমাদের দেশের এয়ারপোর্ট চূড়ান্ত অব্যবস্থাপনার মাধ্যমে চলে। আমাদের এয়ারপোর্ট হচ্ছে গিয়ে চোর বাটপারের আড্ডাখানা। এয়ারপোর্টে যে সমস্ত কর্মকর্তা কর্মরত আছেন তারা কেউ প্যাসেঞ্জারদের সুবিধার দিকে খেয়াল করেন না।
আমার মা বয়স্ক মানুষ হওয়ায় তাকে নিয়ে আমি খুবই চিন্তিত ছিলাম। তারপর আবার তার কাছে বাংলাদেশের কোন সিমকার্ড ও ছিলো না। যার ফলে আমার সঙ্গে যোগাযোগ করার কোন উপায় ও তার নেই। যাহোক প্লেন ল্যান্ড করার প্রায় দেড় ঘণ্টা পর আমার মা বাইরে আসলেন। আমি তার কাছে গেলে আমার মা আমাকে জড়িয়ে ধরলো।অবশেষে আমার আড়াই বছরের অপেক্ষার অবসান হলো। তারপর আমি মাকে নিয়ে বাসায় চলে আসলাম।
আজকের মতো এখানেই শেষ করছি। আশা করছি পোস্টটি আপনাদের ভালো লাগবে। পরবর্তীতে আপনাদের সাথে দেখা হবে অন্য কোন নতুন লেখা নিয়ে। সে পর্যন্ত সবাই ভাল থাকুন সুস্থ থাকুন।
ফটোগ্রাফির জন্য ব্যবহৃত যন্ত্র | হুয়াই নোভা ২আই |
---|---|
ফটোগ্রাফার | @rupok |
🇧🇩🇧🇩ধন্যবাদ🇧🇩🇧🇩
আমি রূপক। আমি একজন বাংলাদেশী। আমি বাঙালি। আমি বাংলায় মনের ভাব প্রকাশ করতে ভালোবাসি। আমি আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটিকেও ভালোবাসি।
আড়াই বছর পর আপনার মায়ের সাথে সরাসরি দেখা এবং আপনার পোস্ট পড়ে অনুভূতিগুলো শুনে হৃদয়ে কম্পন দিয়ে উঠেছে এবং সত্যি মায়ের প্রতি আমাদের সবার ভালোবাসা অসীম এবং অকৃত্রিম থাকা উচিত।
ধন্যবাদ ভাই আপনাকে।
মাকে জড়িয়ে ধরার যে ফিলিংস তা আমি ভালোই বুঝতে পারছি ভাইয়া।
আপনাকে প্রাণভরা দোয়া কারণ আপনি মাকে এতোটা বেশি ভালোবাসেন।
মা মানেই তো সন্তানের জন্য জান্নাত। 😍
একদম ঠিক বলেছেন। মা মানেই তো সন্তানের জন্য জান্নাত।
আসলে বাবাকে সবাই ভয় পায়।আবদার গুল সব সময় মায়েরায় শুনে এবং পুরন করেও বটে।ভাই আপনার মা ফিরে এসেছে ভালো লাগলো।আপনার মায়ের জন্য দোয়া রইলো।
আপনার মা ফিরে এসেছে শুনে খুব ভালো লাগলো। মা পারে সব সন্তানের আবদার রাখতে। সবাই বাবাকে একটু ভয় পায়। আপনার আর আপনার মায়ের জন্য দোয়া এবং ভালোবাসা রইল।
অসংখ্য ধন্যবাদ ভাই আপনাকে।
মায়ের মতো আপন কেহ নাই।আসলে পৃথিবীতে যার মা আছে। তার সবই আছে।যার মার নেই, তার কিছুই নেই।আপনার মার সাক্ষাৎ হওয়ার ব্যপারটি খুব খুশি লাগলো।ধন্যবাদ ও শুভকামণা রইল।
ধন্যবাদ ভাই আপনাকে।
আপনার গল্পটা পরে মনটায় ভোরে গেলো। এর থেকে আনন্দের আর কি হতে পারে। আপনি আপনার মাকে অনেক দিন পর পেয়েছেন। আর থেকে খুশির খবর কিছুই হতে পারে না। অনেক ভালো লাগলো পরে। অনেক ধন্যবাদ আপনাকে আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য
ধন্যবাদ আপনাকে আপু।
দীর্ঘদিন পর মায়ের সাথে দেখা হবার মুহুর্ত একটা সেরা মুহুর্ত।মায়ের সাথে অনেক সুন্দর মুহুর্ত উপভোগ করুন।
মা হল পৃথিবীর সব । কারন সব কষ্ট দুখঃ মা এর কাছেই বলা যায়। যাই হোক পৃথিবীর সকল মা ভাল থাকুক তার সন্তান দের নিয়ে। মা এর দিকে খেয়াল রাখবেন। ভাল থাকবেন ।
ধন্যবাদ আপনাকে ভাই।