পরিবারের সাথে কিছু চমৎকার সময় কাটানো।
গত পোস্টে আপনারা জানতে পেরেছেন যে আমি দীর্ঘদিন পর বাড়িতে ফিরে গিয়েছি। যদিও সেটা মাত্র ২-৩ দিনের জন্য। ২-৩ দিনের জন্য বাড়িতে যাওয়ার মূল উদ্দেশ্য ছিল পরিবারের সাথে কিছু সময় কাটানো। দীর্ঘদিন পর বাড়িতে ফেরার কারণে আপনজনদের সান্নিধ্য খুবই উপভোগ করছিলাম। কমেন্ট মনিটরিং এর কাজটা ছাড়া হাতে তেমন কোন কাজ ছিলো না। তাই চিন্তা করছিলাম বিকালে একবার বাইরে থেকে ঘুরে আসি। কিন্তু প্রথম দিন আর বাড়ি থেকে বের হওয়া হয়নি। তাই পরিকল্পনা করলাম দ্বিতীয় দিন বিকালে আমরা ঘুরতে বেরোবো।
আমরা বলতে আসলে আমার স্ত্রী কন্যা এবং আমি। অনেকদিন ধরেই আমার স্ত্রী এবং কন্যা বায়না ধরে ছিল তারা পদ্মার পাড়ে একটি ভাসমান রেস্টুরেন্ট আছে সেখানে যাবে। আমিও তাদেরকে কথা দিয়েছিলাম একসময় তাদেরকে নিয়ে যাব। কিন্তু বিভিন্ন কারণে আর তাদেরকে সেখানে নিয়ে যাওয়া হয়নি। তাই যখন ঘোরার প্রসঙ্গ এলো তখন তাদেরকে জিজ্ঞেস করলাম কোথায় যেতে চাও? দুটো জায়গা আছে ঘোরার মতো। একটি হচ্ছে নতুন সুইচ গেট। যেখানে কিছু ছেলেপেলে মিলে বিকালের একটি ভাসমান রেস্টুরেন্ট তৈরি করেছে। বিকালের দিকে নাকি সেখানে এখন বেশ লোকসমাগম হয়।
আরেকটি আছে পদ্মার পাড়ে সেই ভাসমান রেস্টুরেন্টটি। যেটি বেশ কয়েক মাস হল চালু হয়েছে। কিছুক্ষণ চিন্তাভাবনা করে আমার স্ত্রী জানালো পদ্মার পাড়ে তো অনেকবার গিয়েছি। দীর্ঘদিন সুইচগেটের ওই দিকে যাওয়া হয় না। তাই চলো আজকে সুইচগেটের ওখান থেকে ঘুরে আসি। সেখানে গেলে ভাসমান রেস্টুরেন্ট থেকে কিছু খাওয়া-দাওয়া করা যাবে। আমি বললাম তোমরা যেখানে যেতে চাও আমার কোন সমস্যা নেই। ঠিক করলাম বিকালের দিকে আমরা ঘুরতে বের হব। তবে এখনকার সময়ের একটা সমস্যা হচ্ছে সকাল থেকে শুরু করে সূর্য অস্ত যাওয়ার আগ পর্যন্ত প্রায় একই রকম গরম থাকে। তাই এখন বিকালের দিকেও ঘোরাফেরা করে খুব একটা মজা নেই। শুধু সন্ধ্যার একটু আগ দিয়ে পরিবেশ কিছুটা শীতল হয়।
যাইহোক বেলা সাড়ে চারটার দিকে আমরা ঘুরতে বের হলাম। আমাদের বাসা থেকে সেই সুইচগেটের দূরত্ব খুব বেশি নয়। চার পাঁচ কিলোমিটার মত রাস্তা হবে সর্বোচ্চ। যার ফলে অল্প সময়ে আমরা সেখানে পৌঁছে গেলাম। কিন্তু সেখানে গিয়ে দেখতে পেলাম নতুন সুইচগেটটি এখনো চালু হয়নি। যার ফলে এখনো সেখানে লোকজন খুব একটা আসেনি। একটু দূরেই সেই ভাসমান রেস্তোরাঁটি দেখতে পেলাম। ছোট্ট একটি নৌকাকে তারা রেস্তোরাঁর আদলে গড়ে তুলেছে। কিন্তু আমার স্ত্রী এবং কন্যার রেস্টুরেনটটি দেখে খুব একটা পছন্দ হলো না।
সেই নতুন সুইচগেটের পাশেই ছিল পুরাতন সুইচগেট। যেখান দিয়ে এখনও প্রবল বেগে পানি শহরে প্রবেশ করছে। আমার স্ত্রী বলল চলো সেখান থেকে ঘুরে আসি। আমরা অল্প কয়েক মিনিট হেঁটেই পুরাতন সুইচগেট এর কাছে পৌঁছে গেলাম। সেখানে পৌঁছতেই পানির প্রচন্ড গর্জন শুনতে পেলাম। পুরাতন এই সুইচগেট এর কাছে আসলে অনেক পুরনো স্মৃতি মনে পড়ে যায়। একটা সময় ছিল বর্ষা মৌসুমে এখানে প্রায়ই আসা হতো সময় কাটাতে। কারণ তখন শহরের অনেক লোকজন এখানে ঘুরতে আসত। কিন্তু এখন সময় পরিবর্তনের কারণে মানুষজন আর এখানে আসে না।
এখন মানুষের সময় কাটানোর প্রিয় জায়গা হয়েছে পদ্মার পাড়। যাই হোক আমরা পুরাতন সুইচগেট এর কাছে কিছুক্ষণ সময় কাটালাম। সেখান থেকে বেশ কিছু ছবিও তুললাম। সুইচগেট এর আশেপাশে তাকিয়ে মনে হল আমার কাছে গোসল করার জন্য জায়গাটা মন্দ না। আমি মনে মনে পরিকল্পনা করতে লাগলাম এর পরের বার ফরিদপুর এসে বন্ধু ফেরদৌসকে সাথে নিয়ে এখানে গোসল করতে আসবো। যদিও আমার স্ত্রী পরিকল্পনাটি শুনে খুব একটা পছন্দ করলো না। সেখানে কিছুক্ষণ কাটানোর পর আমার স্ত্রী বলল চলো আমরা পদ্মারপাড় থেকে ঘুরে আসি। আমি কপোট রাগ দেখিয়ে তাকে বললাম এমনটা তো কথা ছিল না। কথা ছিল যে কোন একটি জায়গায় ঘুরতে যাবো।
আজকের মত এখানেই শেষ করছি। পরবর্তীতে আপনাদের সাথে দেখা হবে অন্য কোন নতুন লেখা নিয়ে। সে পর্যন্ত সবাই ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন।
ফটোগ্রাফির জন্য ব্যবহৃত ডিভাইস | হুয়াই নোভা 2i |
---|---|
ফটোগ্রাফার | @rupok |
স্থান | পুরাতন সুইচ গেট |
Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |
আপু যখন সুযোগ পেয়েছে তাই সুযোগগুলোকে কাজে লাগানোর চেষ্টা করেছে 😃। ভাইয়া আপনি আপনার পরিবার নিয়ে নিজের বাড়িতে গিয়েছেন জেনে ভালো লাগলো। আর পদ্মার পাড়ে যাওয়ার সৌভাগ্য কখনো হবে কিনা জানিনা তবে যাওয়ার খুব ইচ্ছা আছে। সুইচগেট দেখেছি অনেকবার। যখন নদীতে পানি বেশি থাকে তখন দেখতে খুবই ভয়ঙ্কর লাগে। নিচের দিকে তাকালেই মনে হয় যেন অথৈ পানিতে নিজেকে হারিয়ে ফেলছি। ভাইয়া আপনার জন্য এবং আপনার পরিবারের জন্য শুভকামনা রইল।
শহর থেকে বাড়িতে গিয়ে নিজের পরিবারের সাথে ঘুরে বেড়ানোর মজাটা সত্যিই অসাধারণ।আপনার ফটোগ্রাফি গুলাও বেশ সুন্দর হয়েছে। ভাসমান রেস্টুরেন্টে আমার কাছে বেশ ভালই লাগছে। সুইজগেট খোলা থাকলে এর উপর থেকে দেখতে তো একটু ভয়ই করে কারণ নিজের প্রচন্ড জোরে জল প্রবাহিত হয়। সুন্দর মুহূর্তগুলো আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।
জায়গা পুরানো হলে কেউই গুরুত্ব দেয় না সবাই ভুলে যায়। যেমনটা আপনার পুরাতন সুইচ গেটের ক্ষেএে হয়েছে। আপনাদের গোসল করার বুদ্ধি টা কিন্তু আমার ভালো লেগেছে। যদিও শেষমেশ আপু আবার পদ্মার পাড়ে যেতে চেয়েছে এটা সত্যি কেমন।। বার বার সিদ্ধান্ত পরিবর্তন।।
জেনে খুশি হলাম যে দুইটা দিনের জন্য হলে তো বাড়িতে ফিরে গেছেন। আর বাইরে থেকে আসলে প্রথম দিন ঘুরতে যাওয়া সম্ভব হয় না পরিবার পরিজনের সাথে আলাপ-আলোচনা করতে যেয়ে। আরেকটি বিষয় আপনি যখন ঘোরাঘুরি বিষয়ে কোনো পোস্ট করেন সেটা আমার পড়তে খুব ভালো লাগে কারো নতুন কিছু সম্পর্কে ধারণা পেতে পারি। ইতিপূর্বে অনেকগুলো পদ্মা নদী নিয়ে পোস্ট করেছিলেন,মনোযোগ সহকারে পড়েছি ভালো লাগতো আর কি এটা পড়ে বেশ ভালো লাগলো।
পুরাতন সুইচগেটের প্রবল স্রোতের দৃশ্য দেখে ভাইয়া আমারও ইচ্ছে করছে ওরকম জায়গায় গোসল করতে। তবে ভাইয়া আপনার গোসল করার পরিকল্পনাটি আমার কাছে খুবই ভালো লেগেছে। সময় পেলে এরকম জায়গায় একবার হলেও গোসল করবেন। পরিবার সাথে নিয়ে কাটানো সুন্দর একটি মুহূর্তের কথাগুলো আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।
মাঝে মাঝে পরিবারের সাথে সময় কাটাতে ভালোই লাগে।এর আগেও আপনি ভাসমান রেস্টুরেন্টে এর ছবি দিয়েছেন।তবে মনে করতে পারছি না পুরাতন ছিলো নাকি নতুন।আর আসলেই এখন অনেক সময় অব্দি রোদ থাকে যার কার বেশ গরম পরে।যাই হোক রেগে গেলেন তো হেরে গেলেন😜😜
ভাইয়া ভাবির তো নতুন পুরাতন কোন সুইচ গেইটই পছন্দ হয়নি। তাই এখন পদ্মার পাড় যেতে বায়না ধরেছে। নিয়ে যান আর আমরাও পদ্মা পাড়টা দেখি। ধন্যবাদ।