দুই বন্ধুর সিঙ্গারা খাওয়ার অভিযান।
সেদিন মনি কোঠা বাজার থেকে যখন আমাদের ঘোরাফেরা শেষ হল।তখন আমার বেশ ক্ষুধা লেগেছিলো। সেই বাজারে অবশ্য খাওয়ার মত অনেক কিছুই ছিল। কিন্তু ফেরদৌস আমাকে কয়েকদিন আগেই বলেছিল একটি জায়গা আছে যেখানে বেশ মজার সিঙ্গারা পাওয়া যায়। সিঙ্গারা আমার কাছে এমনিতেই খুব পছন্দের একটি খাবার। তার উপর যখন শুনতে পেলাম সেই সিঙ্গারা খুবই সুস্বাদু। তখনই মনে মনে ঠিক করেছিলাম এই সিঙ্গারা একদিন খেতে হবে। একটা সময় আমি প্রচুর সিঙ্গারা খেতাম। কিন্তু এসিডিটির সমস্যা হওয়ার কারণে এখন অতোটা খেতে পারি না।
যেহেতু ফেরদৌসের কাছে সেই সিঙ্গারার অনেক সুনাম শুনেছিলাম তাই মনিকোঠা বাজার থেকে কিছু না খেয়ে ফেরদৌসকে বললাম সরাসরি সেই সিঙ্গারার দোকানে যেতে। ঠিক করলাম সেখানে গিয়ে মজা করে সিঙ্গারা খাওয়া যাবে। ফেরদৌসকে বললাম একটু তাড়াতাড়ি মোটরসাইকেল চালাও। কারণ প্রায় সন্ধ্যা হয়ে আসছে। এদিকে আমার বেশ খুধাও লেগেছে। কিন্তু গ্রামের রাস্তাগুলো দিয়ে দ্রুত মোটরসাইকেল চালানোর উপায় নেই। কারণ একটু পরপর স্পিড ব্রেকার দেয়া। আর তাছাড়া রাস্তাগুলো যথেষ্ট সরু। এজন্য দ্রুত মোটরসাইকেল চালালে দুর্ঘটনা ঘটার সম্ভাবনা থাকে।
তাই আমরা ধীরেসুস্থে সেই সিঙ্গারের দোকানের দিকে আগাতে লাগলাম। বেশ কিছুক্ষণ পর আমরা সেই দোকানের সামনে পৌছালাম। তবে সেই দোকান দেখে আমি কিছুটা হতাশ হলাম। কারণ দোকানটি ছিল একটি গ্রামের ভিতরে একটি জীর্ণ দোকান। দোকান দেখে মনে হচ্ছিল দোকানটার বেশ খারাপ অবস্থা। দোকানের সামনে একটি টেবিলে দেখলাম দুটি ছেলে বসে সিঙ্গারা খাচ্ছিল। যাই হোক আমরা দোকানের ভিতরে একটি বেঞ্চে গিয়ে বসলাম। তারপর তাদেরকে বললাম আমাদেরকে কিছু গরম সিঙ্গারা দিন। যদিও আগে থেকে কিছু ভেজে রাখা ছিল। তবে আমি সবসময় গরম সিঙ্গারা খেতে পছন্দ করি। কারণ গরম সিঙ্গারার সাদ থাকে অনেক বেশি। ঠান্ডা সিঙ্গারা খেতে অতটা ভালো লাগেনা।
আমরা অর্ডার দেয়ার পর দেখতে পেলাম একটি কড়াইতে করে অনেক সিঙ্গারা একসাথে ভাজা হচ্ছে। দোকানের যে মালিক তিনি নিজেই সিঙ্গারা ভাজছেন। তিনি আমাদেরকে বললেন একটু অপেক্ষা করেন। আর কয়েক মিনিটের ভেতরেই এই সিঙ্গারা গুলো ভাজা হয়ে যাবে। এদিকে আমার অনেক ক্ষুধা লেগেছে। তাই অপেক্ষা করতে বেশ কষ্ট হচ্ছিল। আর মনে মনে এটাই চিন্তা করছিলাম যখনই ক্ষুধা লাগে তখন দেখা যায় এই ধরনের পরিস্থিতিতে পড়তে হয়। কিছুক্ষণ পর আমাদের সামনে চলে এলো গরম গরম সিঙ্গারা। সাথে দিয়েছিল পেঁয়াজ আর বিট লবণ। এই দুটো হলে আমার আর কিছু চাই না। সিঙ্গারা গুলো এতটাই গরম ছিল যে তারা ছুরি দিয়ে সিঙ্গারা গুলো কেটে দু'ভাগ করে দিয়েছিল। কিন্তু তার পরেও আমরা সিঙ্গারা ধরতে পারছিলাম না। যাই হোক এভাবে আরও কিছুক্ষণ আমাদেরকে অপেক্ষা করতে হলো।
তারপর যখন প্রথম সিঙ্গারা মুখের ভেতর নিলাম। সেই সিঙ্গারা থেকে চমৎকার একটি স্বাদ পেলাম। বুঝতে পারলাম ফেরদৌস মোটেই বাড়িয়ে বলেনি। সিঙ্গারা গুলো খেতে আসলেই চমৎকার। যদিও সাইজে খুবই ছোট ছিলো সিঙ্গারা গুলো। তাই আমরা একবারে প্রথমে দশটা সিঙ্গারা নিয়েছিলাম দুজনে খাওয়ার জন্য। দেখতে দেখতে অল্প সময় দশটা সিঙ্গারা শেষ হয়ে গেলো। পরে আরো পাঁচটা সিঙ্গারা নিয়েছিলাম। সর্বমোট দুই বন্ধু মিলে পনেরোটা সিঙ্গারা খেয়েছিলাম। তারপরও মনে হচ্ছিল আরো খায়। এর ভেতরে দেখতে পেলাম যে দুটি ছেলে বাইরে বসে সিঙ্গারা খাচ্ছিল। তারা ৩০টি সিঙ্গারা পার্সেল করে দিতে বলল। আমরা বসে থাকতে থাকতে আরও দুটি ছেলে এলো বাইরে থেকে মোটরসাইকেল নিয়ে। তারাও এমন অনেকগুলো সিঙ্গারা পার্সেল নিয়ে নিল। চোখের পলকে পুরো এক কড়াই সিঙ্গারা দেখলাম শেষ হয়ে গেল।
বুঝতে পারলাম ফেরদৌস এদের প্রশংসা এমনি এমনি করেনি। এদের সিঙ্গারা এই এলাকা ও এর আশেপাশের এলাকায় যথেষ্ট জনপ্রিয়। কারণ যারা এখান থেকে সিঙ্গারা নিতে আসছে। তাদের ভেতর অনেকে দূর থেকেও এসেছে। আমাদের সিঙ্গারা খাওয়া শেষ হলে ফেরদৌস আরো পনেরোটা সিঙ্গারা পার্সেল করতে বলল ওর বাসার জন্য। এর ভেতরে দেখলাম দোকানদার সিঙ্গারার দোকানের মালিক যিনি নিজেই সব কাজ করছিলেন। তিনি এক লোকের সাথে গল্প করছেন। তাদের আলাপ-আলোচনা থেকে বুঝতে পারলাম সবকিছুর দাম বেড়ে যাওয়ায় তাদের লাভের পরিমাণ এখন অনেকটা কমে এসেছে। তাই সেই লোকটা দোকানদারকে পরামর্শ দিল তুমি সিঙ্গারার দাম বাড়িয়ে দাও। না হলে তুমি চলবে কিভাবে? আমিও মনে মনে ভাবতে লাগলাম। আসলেই তো এই দুর্মুল্যের বাজারে পাঁচ টাকায় সিঙ্গারা বিক্রি করে পোষানো খুবই কষ্টকর। যাই হোক সিঙ্গারা পার্সেল নিয়ে আমরা দুই বন্ধু রাফসানের দোকানের উদ্দেশ্যে রওনা দিলাম।
আজকের মত এখানেই শেষ করছি। পরবর্তীতে আপনাদের সাথে দেখা হবে অন্য কোন নতুন লেখা নিয়ে। সে পর্যন্ত সবাই ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন।
ফটোগ্রাফির জন্য ব্যবহৃত ডিভাইস | হুয়াই নোভা 2i |
---|---|
ফটোগ্রাফার | @rupok |
স্থান | লোহারটেক |
Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |
Support @Bangla.Witness by Casting your witness vote
Support @Bangla.Witness by Casting your witness vote
VOTE @bangla.witness as witness
OR
আপনার পোস্টটি পড়ে বোঝা যাচ্ছে আপনারা দুই বন্ধু মিলে বেশ সুন্দর একটি সময় কাটিয়েছেন। বন্ধুদের সাথে আড্ডা দিতে দিতে সিঙ্গারা খেতে আসলেই বেশ ভালো লাগে বোঝাই যায় না কখন খাবার ফুরিয়ে গেল। আর সিঙ্গারা গুলো দেখে মনে হচ্ছে খুবই সুস্বাদু ছিল। এমন একটি শুভ কর মুহূর্ত আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।
ভাইয়া বিশেষ করে গরম সিঙ্গারার ছবিগুলো দেখেই খেতে ইচ্ছে করছে। ফেরদৌস ভাইয়ের কথামতো গরম সিঙ্গারার টেস্ট নেওয়ার জন্য গ্রামের সরু রাস্তা হয়ে সেই কাঙ্ক্ষিত সিঙ্গারার দোকানে গিয়ে সিঙ্গারা খেয়েছেন। এরকম আমাদের এলাকাতেও কয়েকটি দোকান আছে আমরা বন্ধুরা মিলে মাঝে মাঝে বাইক নিয়ে সেখানে সিঙ্গারা খেতে যাই অনুভূতিটা ঠিক সেই একই রকম ছিল।
হালকা শীতে গরম গরম সিঙ্গারা খেতে খুবই খুবই ভালো লাগে। সকাল সকাল ঘুম থেকে উঠে আপনার এমন গরম গরম সিঙ্গারার ফটোগ্রাফি দেখে জিভে জল চলে আসলো।।
পোস্টটি পড়ে বুঝতে পারলাম দুই বন্ধু মিলে খুব মজা করে গরম গরম সিঙ্গারা খেয়েছেন।।
ফেরদৌস ভাইয়ের পছন্দের সিঙ্গারা ওলা বলে কথা।
হুম ভাই গ্রামের ছোট্ট জীর্ন দোকান গুলোতে বেশ ভালো খাবার পাওয়া যায় ৷ আর সিঙ্গারা খেতে আমারও অনেক ভালো লাগে ৷ আপনি আপনার বন্ধু ফেরদৌস সহ মোটরবাইক করে মনি কোঠা বাজার গিয়ে গরম গরম সিঙ্গারা খেয়েছেন ৷ অনেক ভালো লাগলো ভাই গরম সিঙ্গারা খাওয়ার অনুভুতি টা ৷
ছোট ছোট সিঙ্গারা খেতে বেশ ভালো লাগে। বড় সিঙ্গারা গুলো থেকে ছোট সিংগারা গুলো স্বাদ একটু বেশি ভালো হয়। সিঙ্গারা গুলো দেখে বেশ খেতে ইচ্ছে করছে।দুপুরের এই সময়টাতে সিঙ্গারা খেতে বেশ ভালো লাগে।ছোট সাইজের সিঙ্গারা গুলো ৫ টাকাই হয়। বড় গুলো দশ টাকা। যাইহোক আপনারা দুই বন্ধু মিলে অনেকগুলো সিঙ্গারা খেয়েছেন এবং পার্সেল নিয়ে নিয়েছেন।বেশ ভালো লেগেছে।
ভাইয়া দুই বন্ধু মিলে খুব সুন্দর ভাবেই সিঙ্গারা খাওয়ার অভিযান সম্পূর্ন করলেন। সিঙ্গারা গুলো দেখেই বুঝা যাচ্ছে যে অনেক মজা হয়েছে। যার ফলে দশটার জাগায় পনেরটা খেলেন। আবার ফেরদৌস ভাইয়া পারসেল করেও নিলো। যেহেতো মানুষ পার্সেল করে এখান থেকে সিঙ্গারা নিয়ে যায় সুতরাং এলাকাতে সিঙ্গারা মামার ভালই স্বনাম আছে। ধন্যবাদ ভাইয়া।
সিঙ্গারা খেতে ভীষণ মজা লাগে। আমি তো সিঙ্গারা খেতে ভীষণ পছন্দ করি। আমি অফিসে প্রতিনিয়ত সকাল ১০টার সময় সিঙ্গারা খাই। দুই বন্ধু মিলে জমিয়ে সিঙ্গারা খেয়েছেন। দেখেই বোঝা যাচ্ছে। ধন্যবাদ আপনাকে ভাইয়া।
দু'বন্ধু মিলে বেশ ঘুরে বেড়ান! নতুন নতুন জায়গায় যান মজার মজার খাবারের খোজ করেন। দুই বন্ধু মিলে বেশ ভাল সময় কাটিয়েছেন তা আপনার পোস্ট পড়ে বোঝা যাচ্ছে। সুন্দর কিছু মহুর্ত্যের অনুভুতি শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ।
ছোট ছোট সিংগারা খেতে খুব ভাল লাগে। আপনারা দুই বন্ধু মিলে অনেক সিংগারা খেয়েছেন আবার পার্সেল করেও নিয়েছেন।মজার অনুভূতি গুলো শেয়ার করার জন্য অনেক ধন্যবাদ ভাইয়া।
ভোর বেলায় জিভে জল চলে আসলো দাদা তোমার এই পোস্টটি দেখে। অনেকদিন হয়ে গেছে সিঙ্গারা খাওয়া হয় না। তোমরা দুই বন্ধু বেশ ভালোই এনজয় করলে সিঙ্গারা খেয়ে। গরম সিঙ্গারা সত্যিই খুব ভালো লাগে আমার কাছে। খুব ছোট সিঙ্গারা গুলো আমার বেশি ভালো লাগে কিন্তু আমাদের এইখানের সব জায়গায় ছোট সিঙ্গারা পাওয়া যায় না। যেগুলো পাওয়া যায় সেগুলো একটু সাইজে বড়। সিঙ্গারা গুলো ছোট হওয়ার কারণেই হয়তো দুই বন্ধু মিলে ১৫ টি সিঙ্গারা খেতে পেরেছো । আমরা বন্ধুরা মিলে কোথাও আড্ডা দিতে গিয়ে সিঙ্গারা খেলে এক এক জন দুটির বেশি সাধারণত খাই না।