পছন্দের খাবারের সন্ধানে অভিযান এবং অবশেষে সফলতা । ১০% প্রিয় লাজুক খ্যাঁক এর জন্য।

in আমার বাংলা ব্লগ2 years ago

কেমন আছেন আমার বাংলা ব্লগের বন্ধুরা? আমি ভালো আছি। আশাকরি আপনারা ও ভালো আছেন।


আমি ইউটিউবে মাঝেমাঝেই ফুড ব্লগ দেখি। আমার বেশ কয়েকজন পছন্দের বাংলাদেশি ফুড ব্লগার আছেন। যাদের কনটেন্ট আমার কাছে খুবই ভালো লাগে। বিশেষ করে যেভাবে তারা উপস্থাপন করেন পুরো বিষয়টা সেটা আমার কাছে চমৎকার লাগে। যেহেতু আমি একজন ভোজন রসিক মানুষ। তাই ফুড ব্লগিং দেখতে আমার কাছে খুবই ভালো লাগে।

IMG_20220203_180724.jpg

ফুড ব্লগিং দেখলে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের খাদ্যাভ্যাস এবং খাদ্য সম্বন্ধে একটি ভাল ধারণা পাওয়া যায়। তাছাড়া কোথায় কোথায় মজার খাবার পাওয়া যায় এটাও জানা যায়। আমি একদিন আমার পছন্দের এক ফুড ব্লগারের ভিডিও ইউটিউবে দেখছিলাম। সেখানে তিনি একটি রেস্টুরেন্টে গিয়েছিলেন। যেই রেস্টুরেন্ট নেহারির জন্য বিখ্যাত। আমি নিজেও নেহারি খেতে খুব পছন্দ করি। তার এই ভিডিও দেখার পর আমি মনে মনে ঠিক করে রেখেছিলাম যেভাবেই হোক এই জায়গা থেকে নেহারি আমার খেতে হবে।

IMG_20220203_171344.jpg

শুধু মনে মনে ঠিক করলেই তো হবে না। নেহারি খেতে হলে আমাকে ঢাকায় আসতে হবে। যখন আমি ভিডিওটি দেখি তখন আমি ফরিদপুরে ছিলাম। তার কিছুদিন পর যখন আমি ঢাকায় এলাম তখন সেই রেস্টুরেন্ট থেকে নেহারি খাওয়ার পরিকল্পনা করলাম। প্রথমে যে ভিডিও দেখে এই নেহারির রেস্টুরেন্ট সম্বন্ধে জেনেছিলাম সেখান থেকে তাদের অ্যাড্রেস নিলাম। তারপর রওনা দিলাম সেই রেস্টুরেন্টের উদ্দেশ্যে। কিন্তু সেই অ্যাড্রেসে পৌঁছে আমি চূড়ান্ত হতাশ হলাম। কারণ রেষ্টুরেন্টটি এখান থেকে অন্য কোথাও চলে গিয়েছে। অনেক আশা করে এসেছিলাম নেহারি খেতে। কিন্তু রেস্টুরেন্টটি সেখানে না থাকায় আমার আশা আর পূরণ হলো না।

IMG_20220203_175224.jpg

এর কিছুদিন পর আমি অন্য আরেকজন ফুড ব্লগার এর ভিডিও দেখলাম একই রেস্টুরেন্ট নিয়ে। সাথে সাথে আমি সেই ভিডিও থেকে এই নেহারির রেস্টুরেন্টের নতুন ঠিকানা নিয়ে সেখানে গেলাম নেহারি খাওয়ার জন্য। কিন্তু সেখানে পৌঁছে ও আমি দ্বিতীয়বারের মতো হতাশ হলাম। কারণ তারা এখান থেকে আবার অন্য কোথাও চলে গিয়েছে। তখন মেজাজটা খুবই খারাপ হলো। চিন্তা করলাম এই নেহারি খাওয়ার পরিকল্পনা বাদ।

IMG_20220203_175258.jpg

একদিন হঠাৎ করে মাথায় একটি বুদ্ধি এলো। আমি ফেসবুকে এই রেস্টুরেন্টের নাম দিয়ে সার্চ দিলাম। দিয়ে সেখান থেকে আমি তাদের নতুন ঠিকানা নিলাম। তারপর মনে-মনে পরিকল্পনা করলাম যদি কখনো ওই এলাকার দিকে কোনো কাজে যাওয়া হয় তাহলে সেখান থেকে নেহারি খেয়ে আসবো।

IMG_20220203_175107.jpg

গতকাল আমি পুরাতন ঢাকায় গিয়েছিলাম একটি কাজে। আমার মনে আগে থেকেই ধারণা ছিল রেস্টুরেন্টটি পুরাতন ঢাকার আশেপাশে হবে। কারণ ফেসবুকে রেস্টুরেন্টের যে ঠিকানা দেয়া ছিল সেই জায়গা সম্বন্ধে আমার কোন পরিষ্কার ধারণা ছিল না। গতকাল পুরাতন ঢাকায় আমার কাজ শেষ করার পর। আমি ওই রেস্টুরেন্টের ফেসবুক পেজে ঢুকে সেখান থেকে তাদের লোকেশন লিংকে ক্লিক করে দেখি আমি যেখানে দাড়িঁয়ে আছি সেখান থেকে তাদের রেস্টুরেন্ট মাত্র এক কিলোমিটার দূরে।

আমি গুগল ম্যাপ এর সাহায্য নিয়ে রেস্টুরেন্টে কিছুক্ষণের ভিতরে পৌঁছে গেলাম। গিয়ে দেখলাম রেস্টুরেন্টটি এমন আহামরি কিছু না। মোটামুটি ছিমছাম ভাবে গোছানো ছোট্ট একটি রেস্টুরেন্ট। রেস্টুরেন্টের ভেতরে প্রবেশ করে আমি যখন খাবার অর্ডার করতে গেলাম। তখন তারা জানালো খাবার পরিবেশন করতে তাদের আরও আধা ঘন্টা দেরি হবে। কারণ খাবার তখনও প্রস্তুত হয়নি। এই কথা শুনে আমার মেজাজটা খুবই খারাপ হলো। কারণ তাদের ফেসবুক পেজে রেস্টুরেন্ট খোলার যে সময় দেয়া হয়েছে আমি সেই সময়ের পরেই গিয়েছি। যাহোক কি আর করা যেহেতু এতদূর এসেছি তাই চিন্তা করলাম কিছুটা দেরি হলেও নেহারি খেয়েই এখান থেকে যাব।

তারা আধাঘন্টার কথা বললেও শেষ পর্যন্ত খাবার পরিবেশন করলো ৪০ মিনিট পরে। খাবার সামনে আসার সাথেই আমি খাওয়া শুরু করলাম। কিছুটা খাওয়ার পর মনে হল আরে ছবি তোলা হয়নি তো।তখন ঝটপট কয়েকটি ছবি তুলে নিলাম খাবারের। এখন আসি খাবারের স্বাদ এবং মান নিয়ে। সেখানে খাবারের স্বাদ মোটামুটি ছিলো। কিন্তু ব্লগারদের থেকে যে ধরনের কথা শুনেছিলাম তার সাথে মোটেও মিল পেলাম না। কারণ খাবারের স্বাদ এমন আহামরি কিছু না। আবার দামও অনেক বেশী। আমি নেহারীর সাথে দুটি নান এবং একটি মিন্ট লেমন ড্রিঙ্কস নিয়ে ছিলাম। আমার খাবারের বিল এসেছিল ৪০০ টাকার কিছু বেশি। শুধু নেহারী খাওয়ার জন্য একজনের জন্য ৪০০ টাকা একটু বেশি হয়ে যায়। যাহোক আমি তাড়াতাড়ি খাবার শেষ করে রেস্টুরেন্ট থেকে বেরিয়ে পড়লাম। কারণ আমাকে আবার দ্রুত বাসায় ফিরতে হবে।

আজকের মতো এখানেই শেষ করছি। পরবর্তীতে আপনাদের সাথে দেখা হবে অন্য কোন নতুন লেখা নিয়ে। সে পর্যন্ত সবাই ভাল থাকুন সুস্থ থাকুন।


ফটোগ্রাফির জন্য ব্যবহৃত ডিভাইসহুয়াই নোভা 2i
ফটোগ্রাফার@rupok
স্থানলিংক

logo.png

Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power

250 SP500 SP1000 SP2000 SP5000 SP

Heroism_3rd.png

standard_Discord_Zip.gif


🇧🇩🇧🇩ধন্যবাদ🇧🇩🇧🇩


@rupok

Sort:  
 2 years ago 

আমার ও নিহারি অসাধারন পছন্দ ।প্রায় খাই ।আপনার ফুড গুলো দেখে লোভ লেগে গেল ।আর রেস্টুরেন্টের খাবার মজাদার হয় ।খেতে ভাল লাগে।ধন্যবাদ ভাই পছন্দেররর খাবারের সন্ধানে আমাদের সাথে রাখার জন্য ।

 2 years ago 

আপনাকে ও অসংখ্য ধন্যবাদ ভাই।

আমিও মাঝে মাঝে ফুড ব্লগার দের ব্লগ দেখি। খাবারের প্রতি আমার একটা আলাদা দুর্বলতা আছে। নেহারি হলে তো আর কথাই নেই। পুরান ঢাকার খাবার বিখ্যাত খাবার। পুরান ঢাকার কাচ্চি বিরিয়ানী এবং নেহারি এই তিনটে জিনিস খুবই বিখ্যাত। এই খাবারগুলোর লোভ কেউ সামলাতে পারবে না।

 2 years ago 

ডাক্তারের নিষেধ এর কথা চিন্তা করে অনেক কষ্টকরে হলেও আমাকে লোভ সামলাতে হচ্ছে। তার পরেও মাঝে মাঝে সমস্ত বাধা নিষেধ ডিঙিয়ে নিজের পছন্দের খাবার খাওয়া শুরু করি।

 2 years ago 

আপনার নেহারি খাওয়ার যুদ্ধ বেশ ভালো মজা পেলাম, এতে করে বোঝা যাচ্ছে আপনি খুব খাদ্য রসিক একজন মানুষ। আমারও বিভিন্ন জায়গায় ঘুরে খাওয়া-দাওয়া করার শখ রয়েছে।
আমিও শীতের শুরু থেকেই ভাবছিলাম কোথাও গিয়ে নেহারি খাব বন্ধুদের সাথে, কিন্তু তা হয়ে উঠছে না। আশা করি কিছুদিনের মধ্যে বন্ধুরা একসাথে ঘুরে আসতে পারবো।

 2 years ago 

আপনাকে একটা পরামর্শ দেই। যদি এই রেস্টুরেন্টে নিহারী খেতে যান। তাহলে সন্ধা সাতটার পরে যাবেন। কারন ততক্ষনে নিহারী আরো একটু জ্বাল দেয়া হবে। তাতে সাদটা আরো বাড়বে।

 2 years ago 

আইডিয়াটি দেওয়ার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ, তাহলে মনে হচ্ছে একদম সন্ধ্যার সময় গেলেই পারফেক্ট নেহারি পাওয়া যাবে।

 2 years ago (edited)
ভাই মাঝে মাঝে আমরা মুভি দেখে বলি এমন হয় নাকি। আসলেই হয় সেটা আপনি প্রমান করে দিলেন। ২ বার না পেয়েও এমন সময় পেলেন ঠিকানা আপনি একদম তার পাশেই। মাত্র ১ কিলো খুব বেশি দূর ছিল না। আর গুগল ম্যাপ তো আছেই। আমার ও খেতে ইচ্ছে করলো ভাই। আপনি এতো দূর থেকে যেহেতু এসেও খেতে পেরেছেন আমিও খাবো।
 2 years ago 

একবার গিয়ে খেয়ে দেখতে পারেন। খুব একটা খারাপ লাগবে না আশা করি। যদিও দামটা একটু বেশি হয়ে যায়।

 2 years ago 

তবে সব থেকে ভাল লাগার বিষয় হচ্ছে ডাক্তারের অনেক রেস্ট্রিকশনের পরও আপনি খাবারের রিভিউ দেখেন এবং বিভিন্ন ধরনের সুস্বাদু খাবারের স্বাদ গ্রহণ করার চেষ্টা করেন। হাতের এক কিলোমিটারের মধ্যে পেয়ে যাওয়া টা অনেক ভাগ্যবান ছিল কিন্তু আসলে রিভিউ যেরকম হয় অনেক সময় সেরকম আহামরি খাবার আমরা পাইনা। অনেক সময় অনলাইনের জন্য খাজনার চেয়ে বাজনা বেশি দেখা যায় কারণ কিছুদিন আগে পিজ্জা কিনতে গিয়ে আমি অনেকটা সেরকম অভিজ্ঞতার মধ্যে পড়েছিলাম। ধন্যবাদ আপনার চমৎকার বর্ণনা ও লেখার জন্য।

 2 years ago 

অসংখ্য ধন্যবাদ ভাই আপনাকে আপনার সুন্দর মন্তব্যের জন্য।

Coin Marketplace

STEEM 0.18
TRX 0.14
JST 0.030
BTC 59238.58
ETH 3176.28
USDT 1.00
SBD 2.45