দুই বন্ধুর পুরাতন জমিদার বাড়ি দর্শন।
গত বেশ কয়েকদিন হল কোথাও ঘুরতে যাওয়া হয়নি। ফেরদৌস ফরিদপুরে রয়েছে তবুও এতদিন ঘুরতে যাইনি এটা এর আগে হয়নি। তবে এবার নিজের কিছু ব্যক্তিগত সমস্যার কারনে বাইরে যাওয়া হয়নি। আজকে চিন্তা করলাম বাইরে কোন জায়গা থেকে ঘুরে আসি। কয়েকদিন ধরে মনটা এমনিতেই খারাপ। বাইরে ঘোরাফেরা করলে হয়তো মনটা ভালো হবে। সেজন্য বন্ধু ফেরদৌসের সাথে ঘুরতে যাওয়ার পরিকল্পনা করলাম। তবে আমরা বেশিরভাগ সময় শহরের আশেপাশেই ঘোরাফেরা করি। তাই ফেরদৌস আজকে প্রস্তাব দিল চলো একটু দূরে কোথা থেকে ঘুরে আসি।
তখন আমি জিজ্ঞেস করলাম কোথায় যাওয়া যায়? ফেরদৌস বলল বাইশ রশি জমিদার বাড়ি থেকে ঘুরে আসি। ফরিদপুর সদর থানা থেকে সে জায়গাটার দূরত্ব ৩৫ থেকে ৪০ কিলোমিটার মতো। সেখানে অনেক পুরনো একটি বিশাল জমিদার বাড়ি রয়েছে। সেই জমিদার বাড়ি দেখে আমার মনে হয়েছিল এই অঞ্চলের সবচাইতে অবস্থা সম্পন্ন জমিদার সম্ভবত তারাই। কারণ অন্যান্য যে সমস্ত জমিদার বাড়ি দেখেছি সেগুলো দেখে আমার খুব একটা ভালো লাগেনি। কারণ ছোটবেলা থেকেই জমিদার বাড়ি মানে মনে করতাম বিশাল কোন এলাহি কারবার। কয়েক বছর আগে এই জমিদার বাড়িতে একবার আমরা বন্ধু-বান্ধব মিলে গিয়েছিলাম। তখন সেই জমিদার বাড়িটা বেশ ভালোভাবে ঘুরেফিরে দেখেছিলাম।
সেই বাড়িটি দেখে আমার কাছে বেশ ভালো লেগেছিল। যদিও বাড়িটি জীর্ণ দশায় রয়েছে। রক্ষণাবেক্ষণ এর অভাবে রীতিমতো ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। অথচ এই জমিদার বাড়ি সংস্কার করে ভালোভাবে সংরক্ষণ করতে পারলে একটি দর্শনীয় স্থান হতো। যাইহোক কি আর করা? আমাদের দেশে বেশিরভাগ প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন এর প্রায় একই অবস্থা। জমিদার বাড়িটি যে এলাকায় অবস্থিত সেই জায়গাটা আমাদের শহর থেকে যেহেতু অনেকটা দূরে অবস্থিত। তাই আমরা দুই বন্ধু আগেই পরিকল্পনা করেছিলাম আজকে একটু আগে আগে বাড়ি থেকে বের হতে হবে। প্রথমে সময় নির্ধারণ করেছিলাম বেলা আড়াইটা। পরে আমি ১৫ মিনিট পিছিয়ে বেলা পৌনে তিনটায় বাড়ি থেকে বের হওয়ার সময় ঠিক করলাম।
নির্ধারিত সময়ে দুই বন্ধু এক জায়গায় মিলিত হলাম। তারপর সেখান থেকে ফেরদৌসের মোটরসাইকেলে করে রওনা দিলাম বাইশ রশি জমিদার বাড়ির উদ্দেশ্যে। অনেকদিন পর সেই এলাকায় যাচ্ছিলাম। তাই মনে হচ্ছিল পথ সহজে ফুরোচ্ছে না। যাইহোক দুই বন্ধু গল্প করতে করতে আমাদের গন্তব্যের দিকে আগাচ্ছিলাম। অবশ্য সেই এলাকায় পৌঁছে আমরা বুঝতে পারছিলাম না কোন রাস্তা দিয়ে যেতে হবে। কারণ আমরা এর আগে সেখানে মাত্র একবারই গিয়েছি। যার ফলে জমিদার বাড়িতে যাওয়ার রাস্তা কোনটা আমরা চিনতে পারছিলাম না। সেজন্য বিভিন্ন লোকের কাছ থেকে শুনে শুনে আমরা সেই জমিদার বাড়ির দিকে যাচ্ছিলাম।
এভাবে কিছুক্ষণ চলার পরে আমরা সেই জমিদার বাড়িতে পৌঁছে গেলাম। অনেকদিন পর সেখানে পৌঁছে আমাদের সেই আগের টুরের কথা মনে পড়ে গেল। সেবার আমরা প্রায় আট-দশ জন বন্ধুবান্ধব মিলে এসেছিলাম। সবাই মিলে অনেক মজা করেছিলাম। তবে এবার আমরা মাত্র দুজন এসেছি। তাই সেই আগের মতো অনুভূতিটা হচ্ছিল না। যাইহোক তারপরও দুজন জমিদার বাড়িটি ঘুরেফিরে দেখতে লাগলাম আর ছবি তুলতে লাগলাম। তবে এর আগের বার যখন এসেছিলাম তখন আমরা জমিদার বাড়ির ভিতরে ঢুকে খুঁজে খুঁজে সিড়ি দিয়ে ছাদে উঠেছিলাম। তবে এবার আর সে সাহস করিনি। কারণ এই জমিদার বাড়ির ভেতরে ভূতুড়ে পরিবেশ। সেখানে গেলে গা ছমছমে একটা অনুভূতি হয়। আগেরবার আমরা অনেক লোক ছিলাম তাই তেমন কোন সমস্যা হয়নি। সেজন্য এবার ছাদে ওঠার পরিকল্পনা বাদ দিলাম। তাছাড়া ছাদে ওঠার সিঁড়িটা কোন দিকে সেটা আমরা ভুলে গিয়েছিলাম।
জমিদার বাড়িটির সামনে একটি বিশাল দীঘি রয়েছে। সেখানে দুটি ঘাট আছে। তার একটি ঘাট বাড়ির পুরুষ মানুষদের জন্য তৈরি করা হয়েছিল। আর অন্য আরেকটি ঘাট তৈরি করা হয়েছিল বাড়ির মহিলাদের গোসল করার জন্য। মহিলাদের গোসল করার সেই জায়গাটি একটি প্রাচীর দিয়ে ঘিরে দেয়া ছিল। এ ধরনের আয়োজন আমি অন্য কোন পুকুরে দেখিনি। আমরা দুই বন্ধু সেখানে বেশ কিছুক্ষণ সময় কাটালাম আর অনেকগুলো ছবি তুললাম। তারপর সেখান থেকে অন্যদিকে রওনা দিলাম।
আজকের মত এখানেই শেষ করছি। পরবর্তীতে আপনাদের সাথে দেখা হবে অন্য কোন নতুন লেখা নিয়ে। সে পর্যন্ত সবাই ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন।
ফটোগ্রাফির জন্য ব্যবহৃত ডিভাইস | হুয়াই নোভা 2i |
---|---|
ফটোগ্রাফার | @rupok |
স্থান | বাইশরশি জমিদার বাড়ি |
![logo.png](https://steemitimages.com/640x0/https://cdn.steemitimages.com/DQmZEaz6VZmitMY1N8dSXHuT2tfgXFnDKjY8iV7jNGuNwEE/logo.png)
Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |
![Heroism_3rd.png](https://steemitimages.com/640x0/https://cdn.steemitimages.com/DQmRejDSNMUFmRz2tgu4LdFxkyoZYmsyGkCsepm3DPAocEx/Heroism_3rd.png)
![standard_Discord_Zip.gif](https://steemitimages.com/0x0/https://cdn.steemitimages.com/DQmTvJLqN77QCV9hFuEriEWmR4ZPVrcQmYeXC9CjixQi6Xq/standard_Discord_Zip.gif)
Support @Bangla.Witness by Casting your witness vote
Support @Bangla.Witness by Casting your witness vote
VOTE @bangla.witness as witness
![witness_vote.png](https://steemitimages.com/640x0/https://cdn.steemitimages.com/DQmW8HnxaSZVKBJJ9fRD93ELcrH8wXJ4AMNPhrke3iAj5dX/witness_vote.png)
OR
Very good ☺️☺️☺️
পুরনো জমিদার বাড়ির সবচেয়ে যেটা আমার ভালো লাগে ৷ সেটা হলো বাড়ির নকশাঁ গুলো একদম নিখুঁত ৷ আর এ রকম অনেক পুরনো জমিদার বাড়ি আজ ধংশস্তুবে ৷ তবে আমার মনে এগুলো কে কারুকাজ করলে ভালোই হয় ৷
যা হোক আপনি আপনার বন্ধু ফেরদৌস সহ জমিদার বাড়িতে ঘুরতে যাওয়ার মূহুর্ত গুলো অনেক ভালো লাগলো ৷ সেই সাথে ফটোগ্রাফি গুলো ৷
মানুষের জীবনে কখন খারাপ যায় আর কখন ভালো সময় যায় তা কেউই বুঝতে পারে না। কিন্তু আপনি কোথাও ঘোরাঘুরি করলে মনটা খারাপ থাকলে ঘোরাঘুরি করার মাধ্যমে ভালো হয়ে যায়। এইরকম পুরনো জমিদার বাড়ি বিভিন্ন জায়গায় পরিত্যক্ত হিসেবে পড়ে রয়েছে যেগুলো পরিচর্যা করে রাখলে সেখানে মানুষের যাওয়ার আগ্রহটা আরো বেশি হয়তো পোষণ হবে। আসলে সব কিছুই একটা ভালো উদ্যোগ যেটা অনেক দূর নিয়ে যেতে পারে। ফেরদৌস ভাইয়ের তো আমি চিনি তার সাথে অনেকবার কথা হয়েছে ডিসকোডে। তিনি ঘুরাঘুরি করতে খুবই পছন্দ করে আপনার বন্ধু হয় সেটা জানতে পারলাম ভাই।
এমন জায়গায় সবাই মিলে পিকনিক করতে গেলেও অনেক মজা হত। তবে এত সুন্দর একটা স্থাপত্য সংরক্ষনের কোন উদ্যোগই নেয়া হচ্ছেনা কেন বুঝলাম না। মনে হয় এভাবেই এ স্থাপত্যগুলো বিলীন হয়ে যাবে।
আপনি মাঝেমধ্যে বন্ধুদের সাথে করে বিভিন্ন স্থানে ঘুরতে যান, এটা আমি অনেক দিন থেকে লক্ষ্য করি। উদাহরণস্বরূপ অনেক আগে আপনি পদ্মার পাড়ে একবার না একাধিকবার বন্ধুদের সাথে নিয়ে ঘুরতে গিয়েছিলেন, ট্রলারে চড়ে ঘোরার জন্য গিয়েছিলেন এবং তা আমাদের মাঝে তুলে ধরেছিলেন। এছাড়াও একটি পার্কে ঘুরতে গিয়েছিলেন সেটা আমি রিস্টিম করে রেখেছি, মাঝেমধ্যে লক্ষ্য করে থাকি। আজকেও বন্ধুর সাথে জমিদার বাড়ি ঘুরতে গিয়েছেন এমন একটা সুন্দর মুহূর্তের অনুভূতিটা প্রকাশ করেছেন এই পোস্টের মধ্যে এবং যা পড়ে ও ফটোগুলো দেখার মধ্য দিয়ে নতুন একটি বিষয় সম্পর্কে অবগত হতে পারলাম।