খোঁড়াখুঁড়ির বিড়ম্বনায় পন্ড আমাদের ভ্রমণ।১০% প্রিয় লাজুক খ্যাঁক এর জন্য।
কয়েকদিন বোনের বাসায় থাকার পর আজ চিন্তা করলাম বন্ধুদের সাথে বাইরে থেকে একটু ঘুরে আসি। আমি আবার ঘোরাফেরা করতে খুবই ভালোবাসি। ঘরের ভিতরে বন্দী থাকতে আমার মোটেই ভাল লাগেনা। আর সেই ঘোরাফেরাটা যদি হয় বন্ধুদের সাথে তাহলে তো কথাই নেই। বন্ধুদের সাথে ঘোরাফেরার পরিকল্পনা যখন মাথায় আসলো তখনই তাদের সাথে ফোনে যোগাযোগ করলাম।
লোকেশন- লিংক
ঠিক করলাম বিকালে ঘুরতে বের হবো। কিন্তু গতকাল রাতে একটি সমস্যার কারণে ঘুম না হওয়ায় সেই পরিকল্পনা বাতিল করে দিলাম। পরবর্তী পরিকল্পনা হলো সন্ধ্যার পরে ঘুরতে বের হবো। তাতে সুবিধা হবে আমার যে বন্ধুদের সাথে ঘুরতে যাব তারা দুজনই চাকরিজীবী। যার ফলে তারা অফিস শেষ করে তারপর ঘুরতে যেতে পারবে নিশ্চিন্তে। যথারীতি সন্ধ্যার পরে আমি আমার বোনের গাড়ি নিয়ে বের হলাম।
লোকেশন- লিংক
কথা ছিল আমার এক বন্ধুকে আমি মহাখালী থেকে গাড়িতে তুলে নেবো। আরেক বন্ধু তার থেকে আরেকটু সামনে থাকবে। কিন্তু সন্ধ্যার পর বের হয়ে বুঝলাম বিরাট ভুল করে ফেলেছি। ঢাকা শহরের কুখ্যাত জ্যামে দীর্ঘক্ষন বিভিন্ন জায়গায় আটকে থাকতে হলো। দীর্ঘক্ষণ পর আমি মহাখালী পৌঁছলাম। কিন্তু সেখানে আরেক সমস্যা। আমার যে বন্ধুর মহাখালী থেকে আমাদের সাথে যোগ দেয়ার কথা ছিল সে তখনও অফিস থেকে বাসায় পৌঁছতে পারেনি জ্যামের জন্য।
লোকেশন- লিংক
যার ফলে পরিকল্পনা পরিবর্তন করে চিন্তা করলাম যাকে পরে আনতে যাওয়ার কথা আগে তাকে নিয়ে আসি। তারপর আবার ঘুরে এসে এই বন্ধুকে গাড়িতে তুলে নেব। যথারীতি তাই করলাম। তিনবন্ধু গাড়িতে এক হওয়ার পর চিন্তা করতে লাগলাম কোথায় যাওয়া যায়। আমি ওদের আগেই বলছিলাম ৩০০ ফিট যাবো। ওরা প্রথমে খুব একটা রাজি ছিল না। পরে ওরা ও রাজি হলো।
লোকেশন- লিংক
তারপর রওনা দিলাম তিনশ ফিট এর উদ্দেশ্যে। কিন্তু সেখানে গিয়ে চক্ষু চড়কগাছ। ৩০০ ফিটের রাস্তার অনেক সুনাম শুনেছিলাম। এর আগে আমি সেখানে গিয়েছিও। তখন প্রশস্ত রাস্তা ছিল। সেখানে গাড়িতে ঘুরে অন্যরকম একটা মজা ছিল। কিন্তু এবার গিয়ে দেখি ৩০০ ফিটের রাস্তাকে মনে হচ্ছে গ্রামের কোন ফসলের ক্ষেত। যেটা চাষাবাদের জন্য প্রস্তুত করা হচ্ছে। ধুলোবালিতে পুরো এলাকা অন্ধকার হয়ে আছে। আমার বন্ধু দুজন ও অবাক। ওরা বলল আমরা অনেক দিন পর এখানে এসেছি। অবস্থা যে এতটা খারাপ তা জানতাম না।
প্রায় আট দশ কিলোমিটার এমন রাস্তায় যাওয়ার পর আমরা সিদ্ধান্ত নিলাম আর সামনে যাবোনা। এখন ফিরে যাব। সেখান থেকে ফিরে আমরা যখন বাড়ির দিকে যাওয়ার চিন্তা করছি। তখন আমাদের আরেক বন্ধু একটা রাস্তা দেখিয়ে বলল এই রাস্তাদিয়ে সামনে গেলে অনেক খোলামেলা পরিবেশ এবং সুন্দর রাস্তা। আমাদের ড্রাইভার ও তার কথায় সায় দিল। সেও জানালো এই রাস্তাটা আসলেই সুন্দর। ঘোরার জন্য ভালো জায়গা। আমরা তখন বললাম তাহলে চলো এদিক থেকে ঘুরে আসি।
গিয়ে দেখি সেখানে ও প্রায় একই অবস্থা। রাস্তার দুপাশে বিস্তীর্ণ এলাকায় খোঁড়াখুঁড়ি চলছে। ধুলোবালিতে পুরো এলাকা একাকার। কিছুক্ষণ পর সেখান থেকে ও ফিরে আসলাম। আপাতত ঢাকা শহরে ঘোরাফেরার চিন্তা বাদ দিলাম। প্রচন্ড বিরক্ত লাগছিল। চিন্তা করেছিলাম বন্ধুদের নিয়ে খুব সুন্দর একটি সময় কাটাবো।
কিন্তু অপদার্থদের দ্বারা চালানো এই দেশে আমাদের কোনো পরিকল্পনাই শেষ পর্যন্ত বাস্তবায়ন হয় না। কোথাও কোনো সমন্বয় নেই। আজ একটা রাস্তা করছে তো আবার অন্য কোন সংস্থা এসে সেটা ভেঙে ফেলছে। এর সমস্ত প্রভাব এসে পড়ছে জনগণের জীবনে। কিছুদিন আগেই এত টাকা খরচ করে করা এই রাস্তাটা যে আবার নতুন করে করতে হচ্ছে। এই দায়ভার কে নেবে? এই বাড়তি খরচের বোঝা জনগণকেই বহন করতে হবে। ইতিমধ্যে রাত ও হয়ে গেছে অনেক। তখন আমার বন্ধুদেরকে ওদের এলাকায় নামিয়ে দেয়ার জন্য ড্রাইভারকে বললাম। ড্রাইভার সে দিকে রওনা দিলো। বন্ধুদেরকে তাদের এলাকায় নামিয়ে আমি বাসায় ফিরে এলাম। এর ভিতর অবশ্য খাওয়া-দাওয়ার একটা পর্ব ছিল। যেটা আমি পরবর্তী পর্বে আপনাদের সাথে শেয়ার করব। এই ছিল আমার আজকের ঘোরাফেরা।
আজকের মতো এখানেই শেষ করছি। আশা করছি এই পোস্টটি আপনাদের ভালো লাগবে। পরবর্তীতে আপনাদের সাথে দেখা হবে অন্য কোন নতুন লেখা নিয়ে। সে পর্যন্ত সবাই ভাল থাকুন সুস্থ থাকুন।
ফটোগ্রাফির জন্য ব্যবহৃত যন্ত্র | হুয়াই নোভা ২আই |
---|---|
ফটোগ্রাফার | @rupok |
![logo.png](https://steemitimages.com/640x0/https://cdn.steemitimages.com/DQmZEaz6VZmitMY1N8dSXHuT2tfgXFnDKjY8iV7jNGuNwEE/logo.png)
Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |
![Heroism_3rd.png](https://steemitimages.com/640x0/https://cdn.steemitimages.com/DQmRejDSNMUFmRz2tgu4LdFxkyoZYmsyGkCsepm3DPAocEx/Heroism_3rd.png)
🇧🇩🇧🇩ধন্যবাদ🇧🇩🇧🇩
আমি রূপক। আমি একজন বাংলাদেশী। আমি বাঙালি। আমি বাংলায় মনের ভাব প্রকাশ করতে ভালোবাসি। আমি আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটিকেও ভালোবাসি।
খুব ভালো একটি যায়গাতে যাওয়ার উদ্যোগ নিয়েছিলেন ।কিন্তু আমাদের দেশের রাস্তা ঘাট এমনি তাই আগে থেকে একটু খবর নিয়ে গেলে দুর্ভোগ হতোনা আর তখন কেমন যে লাগে মনটা খুব খারাপ লাগে ।এজন্য ভাই আবার ভালো রাস্তা হলে যাবেন ।আপনার জন্য শুভ কামনা ভাই।
ধন্যবাদ আপনাকে ভাই।
এই কারণে আমি কোথাও যাওয়ার আগে একটু সোশ্যাল মিডিয়াতে ঘাটাঘাটি করেনি যে রাস্তাঘাট ঠিক আছে কিনা। কারন আমাদের দেশে এই ঘটনাটি একেবারেই পুরনো এবং একেবারেই স্বাভাবিক হয়ে গেছে আজকাল। কারণ এমন ভাবে খোঁড়াখুঁড়ি করে যেন এগুলো তাদের পার্সোনাল প্রোপার্টি। এ বিষয়গুলো আসলে আমাদের সরকার দেখেও কি চুপ থাকে! না কি দেখে না আসলে বুঝবার উপায় নেই। আর এই টাকা গুলা আসলেই তো আমাদের ঘাড়ের উপর দিয়েই যায়।
ভাইয়া 300 ফিট অনেক সুন্দর এবং মনমুগ্ধকর একটা জায়গা ছিল আমার জন্য। বিশেষ করে বিকেলের পরিবেশটা অনেক সুন্দর । এখন কি অবস্থা অবশ্যই বলতে পারবোনা । অনেকদিন যাওয়া হয়না । রাতের পরিবেশে অবশ্যই কখনো যায়নি । কিছু কিছু জায়গায় একটু বেশি ডিসকাস্টিং রাস্তার কাজ চলতেছে প্রচুর ধুলাবালি ।
সত্যি ভাই এমন একটা সিচুয়েশনে যে কেমন লাগে তা যারা একবার এই পরিস্থিতিতে অপ্রেছে তারাই বুঝে ।
আর বাংলাদেশে মর্তমানে মেট্রোরেল এর কাজের জন্যই মূলত এই অবস্থা রাস্তার
তবে মেট্রোরেল একবার তৈরী হয়ে গেলে চলাচলের সুবিধা হবে আশা করছি
সেই আশায় আছি। ধন্যবাদ ভাইয়া।
এখন ভাই সারা বাংলাদেশের একই অবস্থা খোঁড়াখুঁড়ি চলতে থাকে।বাসা থেকে বাইরে কোথাও গেলে এই ভয়ে যাইতে ইচ্ছে করে না।সব জায়গায় একই অবস্থা নতুন একটা রাস্তা করে দুই দিন পর এসে ঐখান খোঁড়াখুঁড়ি শুরু করে। অনেক সুন্দর একটি পোস্ট আমাদের মাঝে শেয়ার করলেন অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।
ধন্যবাদ আপনাকে ভাই।
ভাই আর ভয় দিয়েন না। এমনিতেই ঢাকা যেতে মনে চায় না তার ওপর আপনি যে জ্যামের কথা শুরু করছেন তাতে আরো যাওয়া হবে না। সবার প্রিয় এই দেশটাকে আরও সুন্দর করতে প্রত্যেককেই যার যার জায়গা থেকে চেষ্টা করতে হবে।
আপনি দারুণ একটি মেসেজ দিয়েছেন ভাইয়া।আমি ও এই সমস্যাটি দেখেছি ,হয়ে যাওয়া রাস্তা বারবার ভেঙে পুনরায় তৈরি করা হয়।এতে সরকারেরই আর্থিকভাবে সমস্যার সম্মুখীন হতে হচ্ছে।ধন্যবাদ আপনাকে।
ধন্যবাদ আপনাকে দিদি।
আমি ৩০০ ফিট গিয়েছিলাম ছিলাম প্রায় ৫মাস আগে , তখন এ দেখেছি রাস্তার কাজ চলছে ,এখন বুধয় আরো বাজে অবস্থা যা আপনার কথা শুনে বুঝতে পারলাম ,তবে ভাইয়া কোথাও গেলে যদি রাস্তা ঘাট এমনটা থাকে তবে সত্যি খুব খারাপ লাগার বিষয় ,অনেক সুন্দর করে আপনি পুরোটা পোস্ট গুছিয়ে লিখেছেন , অনেক ভালো লেগেছে ,অনেক ধন্যবাদ আপনাকে।
ধন্যবাদ আপনাকে আপু।
ভাইয়া, সন্ধ্যার পর শহরের রাস্তা গুলোর মহাবিপদের নাম হচ্ছে ট্রাফিক জ্যাম।ট্রাফিক জ্যামের কারণে আমরা প্রতিনিয়ত কষ্ট করছি।সন্ধ্যা হলেই ট্রাফিক জ্যাম জটলা বেঁধে যায় রাস্তা গুলোতে। ভাইয়া,আপনি ঠিক বলেছেন দেশ চালনা করছে অপদার্থ দ্বারা। প্রতিনিয়ত রাস্তা ঠিক করেছে, আবার নতুন রাস্তা দুদিন যেতে না যেতে ঠিক করতে হচ্ছে।এইগুলো কাদের অর্থ দিয়ে কোথা থেকে আসছে। সত্যি কথা বলতে কি এগুলো সব জনগণের অর্থ দিয়ে।আমরা নিরুপায় তাই কোন প্রতিবাদ করতে পারছিনা।
ধন্যবাদ ভাইয়া, খোঁড়াখুঁড়ির বিড়ম্বনায় পন্ড আমাদের ভ্রমণ পোস্টটি আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন।
ধন্যবাদ আপনাকে আপু।
অপরিকল্পিত নগরায়ন এবং ইচ্ছামতো খোড়াখুড়ি করা এটা হচ্ছে একটা বড় ধরনের সমস্যা আমাদের শহর গুলোতে। যারা এসব কনস্ট্রাকশনের কাজ পান তারা কেবলমাত্র নিজেদের কাজটাই চিন্তা করেন মানুষের ভোগান্তি তা কখনোই চিন্তা করেন না এবং কাজকে দীর্ঘায়িত করে থাকেন অথচ যেখানে মানুষের ভোগান্তি সেখানে কাজকে দ্রুত শেষ করাটা অনেক বেশি জরুরী। 300 ফিট আগে অনেক ভাল রাস্তা ছিল কিন্তু ইদানিং যাওয়া হয়নি তাই জানিনা কিন্তু আপনার অভিজ্ঞতা শুনে মনে হচ্ছে ব্যাপারটা একেবারেই তিক্ত।