একলা চলো রে-নিঃসঙ্গ ঘোরাঘুরির অভিজ্ঞতা (তৃতীয় পর্ব)।
বিমান বাহিনী জাদুঘরের ভেতরে ঢুকে আমার অবাক হওয়ার কারণ হচ্ছে। আমি প্রথম মনে করেছিলাম এটি সম্ভবত ছোট একটি জায়গার ভেতরে হবে। তবে জাদুঘরের ওই এলাকাতে বিশাল এরিয়া দেখে আমি আসলেই অবাক হয়েছিলাম। ভিতরে সবকিছু চমৎকারভাবে সাজিয়ে গুছিয়ে রাখা ছিলো। গেট দিয়ে ভেতরে ঢুকে কিছুটা আগানোর পরে দেখতে পেলাম বাংলাদেশের সবচাইতে প্রথম দিকের কিছু বিমান এবং হেলিকপ্টার।
সেখানে কিছু ঐতিহাসিক হেলিকপ্টার এবং বিমানও রয়েছে। বাংলাদেশ যখন স্বাধীন হয়েছিল তখন প্রধানমন্ত্রী এবং রাষ্ট্রপতিদের আনা নেয়ার জন্য যে প্লেনটি ব্যবহার করা হতো সেটি দেখতে পেলাম। মাত্র ত্রিশ টাকা টিকিট কেটে আপনি সেই প্লেনের ভেতরটা ঘুরে দেখতে পারবেন। তবে আমি প্রথমে টিকেট না কেটে সিদ্ধান্ত নিলাম পুরো যায়গাটা আগে ঘুরে দেখব। তারপর যেই যেই প্লেন বা হেলিকপ্টারে উঠতে ইচ্ছা করে তখন সেটা দেখা যাবে। এখানে যে প্লেন এবং হেলিকপ্টারগুলো রয়েছে সেগুলোর সামনে ছোট্ট করে তাদের ইতিহাস লেখা।
আমি প্রথমে ঘুরে এই জাদুঘরে রাখা প্রত্যেকটি প্লেন এবং হেলিকপ্টার দেখতে লাগলাম। প্রতিটির সামনে এটি কোন দেশ থেকে আনা এটা কি কি কাজে ব্যবহার করা যায় বিস্তারিত লেখা ছিলো। আমি সেগুলো পড়ছিলাম আর প্লেন এবং হেলিকপ্টার গুলো দেখছিলাম। এখানে যেমন কিছু ফাইটার প্লেন রাখা ছিলো। তেমনি কিছু ট্রেনিংয়ের জন্য ব্যবহৃত প্লেনও রাখা ছিলো। সাথে ছিল কয়েকটি হেলিকপ্টার। যদিও সেগুলো সবই ছিল অনেক পুরনো আমলের। এখানে বিমানবাহিনীর ব্যবহৃত দুটি রাডারও দেখতে পেলাম।
ছোটবেলা থেকেই আমার সামরিক সরঞ্জামের প্রতি ব্যাপক আগ্রহ ছিলো। আজ কাছ থেকে এতগুলো ফাইটার প্লেন এবং আরো অন্যান্য বিমান দেখতে পেয়ে আমার খুবই ভালো লাগলো। আমি একজন বিমান বাহিনীর সদস্যদের কাছ থেকে কয়েকটি প্লেন এবং হেলিকপ্টার সম্বন্ধে কিছু তথ্য জানতে পারলাম। আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধে ব্যবহৃত কয়েকটি প্লেন এবং হেলিকপ্টার এখানে দেখতে পেয়েছি। সেগুলো দেখে মনের ভেতর এক অন্যরকম অনুভূতি কাজ করছিলো।
এগুলো দেখে আমার মনে পড়ে গেলো। আমাদের মুক্তিযোদ্ধারা কিভাবে কয়েকটি প্যাসেঞ্জার বিমানকে মডিফিকেশন এর মাধ্যমে যুদ্ধ বিমানে পরিনত করে শত্রুপক্ষের উপর হামলার কাজে ব্যবহার করেছিলো। কিন্তু আজ এত কাছ থেকে দেখার সুযোগ পেয়ে ঐতিহাসিক এই প্লেনে ওঠার লোভ আর সামলাতে পারলাম না। একটি ফাইটার প্লেনের ককপিটে উঠে বসে পড়লাম। সেখানে বসে খুব কাছ থেকে প্লেনের ড্যাশবোর্ড দেখতে লাগলাম। এইখানে বিমানগুলোর ভেতরে একটি বিমান দেখতে পেলাম। যেটি ভারতের যোধপুর এর মহারাজা ব্যবহার করতো। পরে সেটি ভারত সরকার বাংলাদেশ বিমানবাহিনীকে দিয়ে দেয় তাদের যুদ্ধকালীন কার্যক্রম পরিচালনা করার জন্য। (চলবে)
আজকের মত এখানেই শেষ করছি। পরবর্তীতে আপনাদের সাথে দেখা হবে অন্য কোন নতুন লেখা নিয়ে। সে পর্যন্ত ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন।
ফটোগ্রাফির জন্য ব্যবহৃত ডিভাইস | হুয়াই নোভা 2i |
---|---|
ফটোগ্রাফার | @rupok |
স্থান | আগারগাঁও |
Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |
Support @Bangla.Witness by Casting your witness vote
Support @Bangla.Witness by Casting your witness vote
VOTE @bangla.witness as witness
OR
ভাইয়া আপনার এই পোস্ট পড়ে আপনার খুব সুন্দর অভিজ্ঞতার কথা জানতে পারলাম। আমি অনেক আগে একবার গিয়েছিলাম। আপনার মতো আমিও ভেবেছিলাম এটি হয়তো ছোট জায়গায় অবস্থিত। কিন্তু এর ভিতরে গেলে বোঝা যায় কতটা এরিয়া নিয়ে এই পার্ক অবস্থিত। আপনার পোস্ট দেখে আমারও মুক্তিযুদ্ধাদের কথা মনে পড়ে গেল। ধন্যবাদ আপনার ঘুরাঘুরির সুন্দর একটি পোস্ট আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।
এত সুন্দর লেখা পড়ে পরিপূর্ণ হলাম। খুব খারাপ লাগে যখন এত কষ্ট করে লেখার পরেও কিছু মানুষ পড়েই না লেখাগুলো।যাইহোক যারা পাঠক তারা অবশ্যই পাঠ করবে।আমি রাত্রিবেলাও আপনার তিনটে পোস্টে পড়লাম। প্রথমে এসেছিলাম কমেন্ট করতে। কিন্তু যখন দেখলাম এত ভালো একটা পোস্ট করেছেন, না পড়ে থাকতে পারলাম না। সত্যি প্রত্যেকটা বিমান খুব মন দিয়ে দেখলাম আর তার ইতিহাস ও যেটুকু আপনি লিখেছেন সেটুকু থেকেই জানার চেষ্টা করলাম।যেটুকুই হোক সমৃদ্ধ হলাম।এই সংরক্ষণশালাগুলো যদি না থাকতো, না জানি অগ্রগতির বালি স্তুপ এর নিচে এরকম কত ইতিহাস চাপা পড়ে যেত।
ভালোই তো কোন প্লেন কোন কাজে ব্যবহার হয় তা জেনে আসলেন। বিমান বাহিনীর জাদুঘরে কখনো যাওয়া হয়নি।আপনার পোস্ট পড়ে আমার ও কিভাবে প্যাসেঞ্জার বিমানকে মডিফিকেশন করে যুদ্ধ বিমানে পরিনত করে শত্রুপক্ষের উপর হামলার কাজে ব্যবহার হয়েছিলো,ঐতিহাসিক বিমানটি দেখতে বেশ ইচ্ছে করছে।সব মিলিয়ে বেশ ভালো সময় কাটিয়েছেন। ধন্যবাদ
দাদা আপনার মত আমিও বিমান বাহিনী জাদুঘরে ঘুরে আসছি। জাদুঘরের ভিতরে অনেক সুন্দর। বিশাল জায়গা জুড়ে যাদুকরটি তৈরি করা হয়েছে। সেখানে একটি রেস্টুরেন্ট আছে। যার খাবার অত্যন্ত সুস্বাদু। আমার সুযোগ হয়েছিল দুইবার যাওয়ার। আর জাদুকরের ভিতরে ফাইটার প্লেন গুলো দেখতেও কিন্তু বেশ ভালো লাগছিল। ধন্যবাদ দাদা আমার পুরনো স্মৃতি মনে করে দেয়ার জন্য
অবশেষে বিমান বাহিনীর যাদুঘরের ভেতরটা আপনার পোস্টের মাধ্যমে দেখতে পেলাম। দেখে অনেক ভাল লাগলো। আর জানতে ও পারলাম অনেক কিছু।আমিও আবার যাব সময় জেনে, সময় করে দেখে আসব। 😊 অনেক কিছু তুলে ধরেছেন এজন্য অনেক ধন্যবাদ আপনাকে। অনেক শুভকামনা রইল ভাইয়া আপনার জন্য।