প্রবাসীর সুখ দুঃখ কান্না হাসি (শেষ পর্ব)।
এখন তোমার আগের স্ত্রী তার বাপের বাড়িতে এসে উঠেছে। আল্লাহপাক তাকে উচিত শিক্ষা দিয়েছে। তার স্ত্রীর পরিণতির কথা শুনে সবুজের কিছুটা ভালো লাগলেও তার সন্তানের কথা মনে করে খুব খারাপ লাগতে লাগলো। সে বুঝতে পারলো তার সন্তানও খুব কষ্টে আছে। সে তার মাকে বলল আমি আমার ছেলেকে দেখতে যেতে চাই। তার মা তখন তাকে বলল পুরনো কথা ভুলে যাও। নতুন জীবন শুরু করেছো। এখানে আর পুরনো কিছুতে জড়ানোর মানে নেই।
কিন্তু সবুজ তারপরও বারবার তার মাকে অনুরোধ করতে থাকে। তার মা তখন বলে দেখি তোমার বাবাকে বলে কোন ব্যবস্থা করা যায় কিনা। তারপর সবুজ তার ঘরে গিয়ে বসে থাকে। তার স্ত্রী জিজ্ঞেস করে তোমার কি হয়েছে ? তখন সবুজ তার স্ত্রীকে সবকিছু খুলে বলে। অবশ্য বিয়ের আগেই সবুজ তার স্ত্রীকে জানিয়েছিল তার আগে একটি বিয়ে হয়েছিলো। সবুজের স্ত্রী তার মনের অবস্থা বুঝতে পারে। তখন সে সবুজকে বলে তুমি যদি তোমার সন্তানকে এখানে এনে রাখতে চাও। আমার তাতে কোন আপত্তি নেই।
এই কথা শুনে সবুজ অবাক হয়ে তার স্ত্রীর মুখের দিকে তাকিয়ে থাকে। সন্তানকে সে বাড়িতে আনতে চাচ্ছে আর তার দ্বিতীয় স্ত্রী সে অনুমতি দিচ্ছে। এতে সবুজ খুবই অবাক হয়ে যায়। শ্রদ্ধা আর ভালোবাসায় তার স্ত্রীর প্রতি মনটা আবিষ্ট হয়ে যায়। সবুজ তার স্ত্রীর দিকে তাকিয়ে বলে সৃষ্টিকর্তা যেন তোমাকে কখনো কষ্ট না দেয়। আমি সেই দোয়া করি তোমার জন্য। তারপর সবুজ তার আগের শ্বশুরের সাথে যোগাযোগ করে তার সন্তানকে তাদের বাড়িতে নিয়ে আসে। তার বর্তমান স্ত্রী তার সন্তানকে নিজে সন্তানের মতই লালন পালন করতে থাকে। এদিকে সবুজের আবার বিদেশ ফেরার সময় হয়ে গিয়েছে।
কিন্তু সবুজের কিছুতেই আর দেশ ছেড়ে যেতে ইচ্ছা করছে না। একবার সে বিদেশে গিয়ে তার পরিবার হারিয়েছে। সেজন্য এবার তার মন কিছুতেই পরিবারকে ছেড়ে যেতে চাইছে না। অনেক দুঃখ কষ্টের পরে তার জীবনে কিছুটা স্বস্তির দেখা মিলেছে। তাই সবুজ এখন প্রায়ই বাইরে বাইরে ঘুরে বেড়ায় দেশে কিছু করা যায় কিনা সেটার খোঁজে। এভাবে ঘুরতে ঘুরতে একদিন তার এক বাল্যবন্ধুর সাথে দেখা হয়ে যায়। তখন তাকে সে সবকিছু খুলে বলে। সেই বন্ধু তাকে পরামর্শ দেয় দেশে ফার্মিং করার।
সে নিজের মাছের প্রজেক্টটা সবুজকে ঘুরিয়ে দেখায়। সবুজ তার বন্ধুর মাছের প্রজেক্ট দেখে বেশ অনুপ্রাণিত হয়। তখন তার বন্ধু তাকে পরামর্শ দেয় তুই তিন মাসের একটা ট্রেনিং কর। তারপর আমার কাছে আর পরামর্শ নিতে হবে না। নিজেই সবকিছু বুঝতে পারবি। সবকিছু ঠিকঠাক হওয়ার পর সবুজ তার পরিবারকে জানায় সে আর বিদেশ যাবে না। এই কথা শুনে তার পরিবারের লোকেরা বেশ নাখোশ হয়। কিন্তু সবুজ তার সিদ্ধান্তে অটল থাকে। তারপর রাত দিন পরিশ্রম করে সবুজ তার মাছের খামারটি দাঁড় করায়। এভাবেই হতাশাগ্রস্ত এক প্রবাসী থেকে সফল খামারিতে পরিণত হয় সবুজ। আর তার পরিবার নিয়ে সুখে শান্তিতে বসবাস করতে থাকে। (সমাপ্ত)
ফটোগ্রাফির জন্য ব্যবহৃত ডিভাইস | হুয়াই নোভা 2i |
---|---|
ফটোগ্রাফার | @rupok |
স্থান |
Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |
Support @Bangla.Witness by Casting your witness vote
Support @Bangla.Witness by Casting your witness vote
VOTE @bangla.witness as witness
OR
সবুজশেষে এসে সঠিক সিদ্ধান্ত নিয়েছে ভাই। সত্যিই প্রবাসী জীবন খুবই কষ্টের। প্রবাসে গিয়ে অনেকে অনেক কিছুই হারাতে হয়। এমনকি অনেকেই নিঃস্ব হয়ে গেছে। সবুজের জন্য অনেক অনেক শুভকামনা রইল।