বন্ধুদের নিয়ে ঈদ-পরবর্তী নৌ ভ্রমণ (প্রথম পর্ব)। ১০% সাই-ফক্স।
ঈদ পরবর্তী কয়েক দিন প্রত্যেকটা মানুষেরই বিভিন্ন রকম পরিকল্পনা থাকে। আমিও তার ব্যাতিক্রম নই। একটা সময় আমরা বন্ধু-বান্ধব মিলে প্রতিবছর একবার পদ্মা নদীতে ট্রলার ভ্রমণ করতাম। সারা দিন ব্যাপী সেই ভ্রমণ আমরা সকলেই খুবই উপভোগ করতাম। কিন্তু এখন জীবিকার তাগিদে বন্ধুবান্ধবদের প্রায় সবাই দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে ছিটিয়ে গিয়েছে। যার ফলে এখন আর চাইলেও আগের মত সবাই একসাথে হয়ে কোথাও যেতে পারি না।
বেশ কিছুদিন থেকেই চিন্তা করছিলাম এবার ঈদের পরে বন্ধুবান্ধবদের নিয়ে পদ্মা নদীতে নৌ ভ্রমণে যাবো। কিন্তু সংশয়ে ছিলাম যে শেষপর্যন্ত ভ্রমণে যাওয়ার মতো পর্যাপ্ত সংখ্যক বন্ধুবান্ধবকে পাওয়া যাবে কিনা। একটা পর্যায়ে এসে আমরা দু তিনজন মিলে সিদ্ধান্ত নিলাম যদি সব মিলিয়ে ৪/৫ জন হয়ে থাকি। তাহলে সেই কজনই চলে যাবো। কারণ সবারই বয়স বাড়ছে সাথে ব্যস্ততাও বাড়ছে। যার ফলে ভবিষ্যতে আর কখনো এই ধরনের সুযোগ পাবো কিনা জানিনা। তাই এই সুযোগটাকে শেষ সুযোগ হিসেবে নিয়ে আমরা নৌভ্রমণের পরিকল্পনা করেছিলাম।
আগে যখন আমরা নৌভ্রমণে যেতাম তখন আমাদের বন্ধু বান্ধব সংখ্যা হোতো ২০/২৫ জন। আর এখন নৌভ্রমণে দশ জন বন্ধুকে খুঁজে পাইনা। ঈদের দুই-তিনদিন আগে যখন এলাকার বাইরে থেকে বন্ধুবান্ধবরা বাড়িতে ফিরতে শুরু করলো। তখন তাদের সাথে যোগাযোগ করতে থাকলাম। শেষ পর্যন্ত গুনে দেখা গেল ৯থেকে ১০ জন লোক হতে পারে। সবমিলিয়ে আমরা এতেই খুশি।
এই ভ্রমণের মূল আয়োজক ছিলাম আমি। তাই আমাকে এই সমস্ত ব্যাপার নিয়ে বেশি চিন্তা করতে হচ্ছিলো। অবশ্য সাথে বন্ধু ফেরদৌস,রাসেল এবং রাফসান অনেক সহযোগিতা করেছে। বন্ধু-বান্ধবদের সঙ্গে যখন যোগাযোগ শুরু করলাম ট্রলার ভ্রমণের ব্যাপারে। তখন কয়েকজন বিভিন্ন রকম কাজের কথা জানালো। আমি তাদেরকে বললাম যদি এবার আমরা ঘুরতে যেতে না পারি। তাহলে ভবিষ্যতে আর কখনো হবে কিনা সেটা বলা মুশকিল। শেষ পর্যন্ত নয় দশজন মতো রাজি হল নৌ ভ্রমণে যেতে।
শুধু যেতে চাইলেই তো হবে না। সাথে বিভিন্ন রকমের আয়োজন জড়িয়ে আছে। যেমন ট্রলার ঠিক করতে হবে, খাওয়া-দাওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে, আবার সবার কাছ থেকে টাকা পয়সা ওঠাতে হবে। যাইহোক আমি বন্ধু রাসেল আর ফেরদৌসকে নিয়ে গিয়ে ট্রলার ঠিক করলাম। ট্রলার ঠিক করতে গিয়ে সেখানে একটু সমস্যার সম্মুখীন হলাম। প্রথমে যে ট্রলারের সাথে কথা বলেছি তারা তেলের খরচ ছাড়া শুধু ভাড়া চাচ্ছিলো ৫০০০ টাকা। আমরা তাদেরকে জানালাম আমরা আর একটু খুঁজে তারপর আপনাদের সাথে কথা বলবো।
শেষ পর্যন্ত আমরা ঘাটে গিয়ে এক ট্রলার এর মালিকের সাথে কথা বললাম তিনি ৩০০০ টাকায় যেতে রাজি হলো। সাথে তেলের খরচ আমাদের। এর ভেতরে ঘাটের অন্য এক ট্রলারের লোক এসে বাগড়া দিলো। সে আমরা যার সঙ্গে কথা বলেছি তাকে ভাড়া নিতে দেবে না। আমাদেরকে তার ট্রলার বেশি টাকা দিয়ে ভাড়া নিতে হবে। এমন কথাবার্তা সে বলছিলো। পরে আমরা যখন একটু কঠোর অবস্থান নিলাম তখন সে লোক কিছুটা নরম হলো। আমরা বলেছিলাম দরকার হয় ট্রলার ভ্রমণে যাব না। তাও আপনার মতো যারা সিন্ডিকেট করার চেষ্টা করে তাদের ট্রলারে ভ্রমণ করব না। শেষ পর্যন্ত আমরা যে লোকের সাথে কথা বলেছিলাম তার ট্রলারটা ঠিক করলাম। অ্যাডভান্স হিসাবে তাকে ১০০০ টাকা দিয়ে আসলাম। আসার সময় তার নাম্বার আমি নিয়ে এসেছিলাম যোগাযোগ করার জন্য। ট্রলার তো ঠিক হলো।
এখন খাবারের আয়োজন করতে হবে। শহর অঞ্চলে থাকার একটি সমস্যা হচ্ছে এখানে আপনি এই ধরনের আয়োজন হুট করে করতে পারবেন না। যার ফলে আমি বন্ধু রাফসানকে বললাম তুই কোন খাবারের ব্যবস্থা করতে পারিস কিনা। রাফসান জানালো তার শোরুম এর সামনের দিকে কিছু হোটেল আছে। তাদের থেকে ব্যবস্থা করা যাবে। আমরা কিছুটা নিশ্চিন্ত হলাম। আর টাকাপয়সা আগে থেকেই কারো কাছে চাইনি। আমি আর বন্ধু রাসেল ঠিক করেছিলাম যার যা ইচ্ছে দেবে। বাদবাকি টাকা যা থাকবে ওটা আমরা দুজন দেবো। যদিও শেষ পর্যন্ত সবাই বেশ ভালোই চাঁদা দিয়েছিলো।( চলবে)
আজকের মতো এখানেই শেষ করছি। পরবর্তীতে আপনাদের সাথে দেখা হবে এই ভ্রমণ পর্বের পরবর্তী পর্ব নিয়ে। সে পর্যন্ত সবাই ভাল থাকুন সুস্থ থাকুন।
ফটোগ্রাফির জন্য ব্যবহৃত ডিভাইস | হুয়াই নোভা 2i |
---|---|
ফটোগ্রাফার | @rupok |
স্থান | সি এন্ড বি ঘাট |
![logo.png](https://steemitimages.com/640x0/https://cdn.steemitimages.com/DQmZEaz6VZmitMY1N8dSXHuT2tfgXFnDKjY8iV7jNGuNwEE/logo.png)
Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |
![Heroism_3rd.png](https://steemitimages.com/640x0/https://cdn.steemitimages.com/DQmRejDSNMUFmRz2tgu4LdFxkyoZYmsyGkCsepm3DPAocEx/Heroism_3rd.png)
![standard_Discord_Zip.gif](https://steemitimages.com/0x0/https://cdn.steemitimages.com/DQmTvJLqN77QCV9hFuEriEWmR4ZPVrcQmYeXC9CjixQi6Xq/standard_Discord_Zip.gif)
৫০০০ টাকা এত ট্রলার ভাড়া।যাইহোক আপনার মনে হয় নদী একটু বেশিই পছন্দ।আমার ও নদী খুব পছন্দের,বলতে গেলে একপ্রকার শৈশব কেটেছে নদীর কোলেই ।নদীর সঙ্গে আত্মার বন্ধন ও অনেক
স্মৃতি জড়িয়ে আছে আমার।যাইহোক নৌ ভ্রমণ কিন্তু দারুণ মজার, শীতল হওয়ায় জলের কলকল ধ্বনিতে সব দুঃখ কষ্ট যেন জলের সঙ্গে মিশে যায়।যেখানে তাকাবো শুধু জলরাশি ,দারুণ দৃশ্য।আপনারা দারুণ সময় কাটিয়েছেন আশা করি।
ভ্রমণ পর্বের পরবর্তী পর্বের অপেক্ষায় রইলাম ভাইয়া।ধন্যবাদ ভাইয়া।
নদী আমার খুবই পছন্দের। সেজন্য সুযোগ পেলেই নদিতে ছুটে যাই।
ভাইয়া আসলে বন্ধুদের সাথে নিয়ে নৌকা ভ্রমণের মজাটাই অন্যরকম। আপনি খুবই সুন্দর একটি সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। অবশ্য এখন আপনার বন্ধু-বান্ধব অনেক ব্যস্ততার মধ্যে থাকতে হয়। যার কারণে সবাই সময় দিতে পারেন না। তারপরে ৪/৫ জন মিলে একটি সুন্দর ব্যবস্থা নিয়েছিলেন এবং অ্যাডভান্স ১০০০ টাকা দিয়েছিলেন। আসলে নৌকা ভবনের মধ্যে এত আনন্দ আর কোথাও নেই। আমার খুবই ভালো লাগে। আমরাও পরিকল্পনা করেছি নৌকায় ভ্রমণ করব।
ট্রলার ভ্রমণে সবচাইতে মজা লাগে বিকাল থেকে শুরু করে রাত পর্যন্ত। সেই সময় ট্রলারের ছাদে বসে থাকতে খুবই ভালো লাগে।
ভাইয়া অনেক ভালো লাগলো আপনার ভ্রমণ কাহিনীর প্রথম পর্বটি করে। এবার ঈদে আমরাও বন্ধুরা মিলে ঘুরতে গিয়েছে। আসলে বন্ধু-বান্ধব মিলে কোন জায়গায় যাওয়ার মজাই আলাদা। কিন্তু এই মজাগুলো দিন দিন কমে যাচ্ছে। যত সময় যাচ্ছে ততো আগের দিন গুলো হারিয়ে যাচ্ছে। ধন্যবাদ আপনাকে এরকম একটি মুহূর্ত আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য
ব্যস্ত নাগরিক জীবনে অনেক কিছুই আমাদের জীবন থেকে হারিয়ে যাচ্ছে।
আপনার মত নদীতে ঘুরতে আমিও খুবই পছন্দ করি। যেটা বর্ষাকালীন মৌসুমে বন্ধুদের সাথে ঘুরতে যাওয়া হয়। আসলে জীবনের ব্যস্ততার মাঝে বন্ধুরা একত্রিত হয়ে ঘুরাঘুরি করা অনেক কষ্টসাধ্য হয়ে যায়। ঈদের মুহূর্তে সবাই বাড়িতে আসলেই একটু ঘুরাঘুরি করা হয় ।আপনার মত আমরাও অনেক জায়গায় ঘোরাঘুরি করেছি ভাইয়া। আমার কাছে অনেক ভালো লাগলো।
ঈদের সময় আসলে এই ধরনের ঘোরাফেরা বেশি হয়। আমরা যখন ট্রলার নিয়ে নদীতে ঘুরছিলাম। তখন আরও কয়েকটি ট্রলারে বেশ কয়েকটি দলকে দেখেছিলাম ঘুরতে।
নৌকা ভ্রমন এর মজাটাই আলাদা ভাই, আর সেটা যদি হয় বন্ধুদের সাথে এবং ঈদের সময় তাহলে তো কোন কথাই নেই বেশ জমে ওঠে। ধন্যবাদ আপনাকে আপনার নৌকা ভ্রমন অনুভূতিগুলো আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য, এবং পরবর্তী পর্বের জন্য অপেক্ষায় রইলাম।
এই ধরনের ভ্রমনে আসলেই অনেক মজা হয়। সবাই খুব উপভোগ করেছি।
যাক শেষ পর্যন্ত তোমার পীড়াপীড়ীতে ঘুরতে যাওয়া হল এটাই বড় কথা। তবে সত্যি বলতে কি এতকিছুর মধ্যেও আমরা ৯ জনকে একত্রিত করতে পেরেছিলাম এটাও একেবারে কম নয়। আশা করি এই সফলতা সামনে আমাদেরকে আরও উৎসাহ যোগাবে।
এই সফলতা আরও ভ্রমনের উৎসাহ যোগাবে । তৈরি থেকো আরও ভ্রমনের জন্য।
ট্রলার ভ্রমণের জন্য সবাইকে না পেলেও কয়েকজনকে নিয়ে যে টলার ভ্রমণ করতে পেরেছেন এটাই অনেক ।হয়তো তারা তাদের জীবিকার তাগিদে বিভিন্ন কারণে নিজ নিজ অবস্থানে থেকে যায়। কিন্তু পুরনো বন্ধুদের সাথে ঘুরতে যাওয়ার মন মানসিকতা হয়তো অনেকেরই থাকে না। যাই হোক খুব ভালো লাগলো ভাইয়া আপনার আজকের পর্বের ভ্রমণ কাহিনী পড়ে।
এবার প্রতিজ্ঞা করেছিলাম যেভাবে হোক নৌ ভ্রমনে যাবোই । বন্ধুদের সাথে ঘুরতে যাওয়ার মজাই আলাদা।
আপনি জানতেন যে ঈদ উপলক্ষে মাঝিরা তাঁদের যাত্রী খুব সহজেই পেয়ে থাকেন। সেই জন্য আপনারা অগ্রিম টাকা দিয়ে নৌকা ভাড়া করে রেখেছেন।আপনি ঝামেলা পোহাতে চান নাই।আপনার এই অসাধারন উদ্যোগ কে স্বাগত জানাই।বন্ধুরা মিলে নৌকা ভ্রমণ করবেন বলে।আপনার বন্ধু রাসেল ভাই ও ফেরদৌস ভাইসহ ট্রলার ঠিক করলেন।তাঁরপর আপনাদের সাথে ঘাটে ট্রলার ভাড়া সিণ্ডিকেটের ব্যক্তির সাথে হালকা ঝগড়া সব মিলিয়ে আপনাদের পদ্না নদীর ভ্রমণের আগাম গল্পটি খুবই ভালো লাগলো।
ট্রলার ভাড়া করতে আসলেই বেশ খানিকটা ঝামেলা পোহাতে হয়েছে। সব জায়গাতেই সিন্ডিকেট করার একটা চেষ্টা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। তবে আমি এর ঘোর বিরোধী।
সেই ঈদের আগ থেকে আমি প্রতীক্ষায় ছিলাম আপনার এই ট্রলার ভ্রমণের বিষয় টা দেখার জন্য। আজকের আপনি সেই বিষয়টা আমাদের মাঝে উপস্থাপন করেছেন দেখে ভালো লাগলো। তবে একটু খারাপ লাগলো যে ঈদের সময় বলে ভাড়ার পরিমাণটা বেশি ধরেছে আবার তেল খরচ নিয়েছে। অন্যজন এসে কিছুটা ফ্যাসাদ সৃষ্টি করতে চেয়েছিল। আসলে এমন বিষয়গুলো আমাদের মাঝে তুলে ধরে অনেককে সচেতন করে তুলতে পেরেছেন। আশা করি অনেকেই এই সমস্ত বিষয়ে অবগত থাকবে। এত সুন্দর পোস্ট আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য আপনাকে জানাই অসংখ্য ধন্যবাদ ভাইয়া।
আসলে পুরো দেশের একই অবস্থা। সবাই সুযোগ সন্ধানী । পরবর্তী পর্বে ভ্রমনের আরও কিছু জানতে পারবেন।
আসলে বন্ধু গুলো এমনই হয় একটা সময় খুব কাছে থেকে একটা সময় অনেক দূরে চলে যায়।তবে কিছুদিন আগে আপনার একটা পোস্ট দেখছিলাম মনে হয় আপনি আর আপনার একজন বন্ধু ট্রলার এর দাম শুনার জন্য বেরিয়েছিলেন কিন্তু ট্রলার এই খুঁজে পান নি ওইসময়।সম্ভবত ফেরদাউস ভাই এর সাথে।
আর আরেকটি ট্রলার এর লোকটি তো বেশ অদ্ভুদ।ওখানে যদি আপনারা না থেকে কিছু ইয়াং ছেলেপেলে থাকতো তাহলে ও মজাটা বুঝত।আর সাহস দেখেই তো আমি অবাক হয়ে যাই, ওর ট্রলারেই যেতে হবে তাও আবার দাম বেশি দিয়ে😡
যাইহোক পরের পার্ট এর অপেক্ষায়।🖤
সব জায়গায় একই অবস্থা। সবাই মানুষকে জিম্মি করে বেশি মুনাফা করতে চায়। ট্রলারের লোকেরাও সেই কাজ করার চেষ্টা করছিলো।