কেমিক্যাল মুক্ত আম খাওয়ার অভিযান। ১০% সাই-ফক্স।
চলে এসেছে ফলের রাজা আম এর মৌসুম। আর কয়েকদিন পরেই বাজারে নানা জাতের আম উঠবে। আমি অধীর আগ্রহে সেই সময়ের জন্য অপেক্ষা করছি। যদিও আমি গত কয়েক বছর যাবৎ বাজার থেকে তেমন একটা আম কিনিনি। কারণ আমি গত কয়েক বছর ধরেই চেষ্টা করছি বাগান থেকে আম কেনার। তাতে কয়েকটি সুবিধা পাওয়া যায়।
প্রথম সুবিধা হচ্ছে কেমিক্যাল মুক্ত আম পাওয়া যায়। যদিও সেই আমেও কিছুটা কীটনাশক ব্যবহার করা হয়। দ্বিতীয়ত বাগান থেকে কেনা আম খেতে অনেক সুস্বাদু হয়। কারণ বাগান থেকে আমরা যখন আম কিনি তখন একদম পরিপক্ক আমগুলি কেনা হয়। আর বাজারে যে সমস্ত আম পাওয়া যায় তার ভিতরে অনেক আম এমন থাকে যেগুলো সময়ের আগেই গাছ থেকে পাড়া হয়েছে। যার ফলে সেগুলো সাদ ভালো হয়না। তৃতীয়ত দাম ও মোটামুটি কম থাকে। এভাবে চিন্তা করে দেখলে সব দিক থেকেই লাভ।
যদিও বাগান গুলি আমাদের বাসা থেকে অনেকটা দূরে হওয়ায় আম আনতে কিছুটা সমস্যা পোহাতে হয়। এবার ইতিমধ্যে আমের মৌসুম চলে এসেছে। আমরা গত কয়েকবছর যাবৎ যে বাগান থেকে আম কিনে ছিলাম সেখানে গিয়ে ব্যর্থ মনোরথে ফিরে এসেছি। সে গল্প আপনাদের কাছে এর আগে একদিন করেছি। কারণ সেই বাগানে এই বছরে কোন আম হয়নি। দুদিন আগে ফেসবুকে একজনের পোস্ট দেখে আজকে আমি এবং বন্ধু ফেরদৌস দুজন মিলে বের হয়েছিলাম আমবাগান খুঁজতে।
যে এলাকার কথা ফেসবুক থেকে জেনেছিলাম সেখানে গিয়ে অনেকক্ষণ খোঁজাখুঁজির পর আমরা কয়েকটি আমবাগান দেখতে পেলাম। যদিও সেই গানগুলো খুব একটা বড় ছিল না। কিন্তু তারপরেও না পাওয়ার থেকে কিছু পাওয়া তো ভালো। বাগান দেখে যখন আমরা খানিকটা হতাশ হয়ে ফিরে আসছিলাম। তখন কিছুদূর পেছনে আসার পর হঠাৎ রাস্তার পাশে একটি বড় বাগান দেখতে পেলাম। যদিও আমরা এই একই রাস্তা দিয়ে গিয়েছি। কিন্তু যাওয়ার সময় বাগানটি খেয়াল করিনি।
আমি ফেরদৌসকে মোটরসাইকেল থামাতে বলে মোটরসাইকেল থেকে নেমে দুজন বাগানে প্রবেশ করলাম। দেখলাম এই বাগানটি তুলনামূলক অন্য গান গুলি থেকে একটু বড়। সেখানে আম হয়েছে মোটামুটি ভালোই।আমরা কেবল চিন্তা করছিলাম কার সঙ্গে কথা বলি। এর ভিতরে দেখতে পেলাম একটু দূরে সেই বাগানের মালিক দাঁড়িয়ে। পরে আমরা এগিয়ে তার সঙ্গে কথা বললাম। বাগান সম্বন্ধে তিনি অনেক কথা বললেন। তিনি একজন চাকরিজীবী। চাকরির পাশাপাশি তিনি আমের বাগান করেছেন অনেকটা শখের বশে। যার ফলে চাকরির ফাঁকে ফাঁকে যতটুক সময় পান সেটাই আমবাগানে দেন।
তিনি আরও একটি জিনিস জানালেন তিনি কোনো ক্ষতিকর কীটনাশক গাছে ব্যবহার করেন না। কীটনাশক ছাড়া যে পরিমান আম তার গাছে থাকে সেগুলোই তিনি বিক্রি করেন। ধর্মীয় দিক বিবেচনা করে তিনি কীটনাশক ব্যবহার করা বাদ দিয়েছেন। এই কথাটা শুনে বেশ ভালো লাগলো। আমরা তাঁর কাছে আমের দাম জানতে চাইলে তিনি বললেন এখন তো দাম বলা সম্ভব না। তারপর তিনি জানালেন বাজারদর সম্বন্ধে একটা ধারণা নিয়ে তখন তিনি দাম বলবেন। আমরা তার কাছ থেকে তার মোবাইল নাম্বার নিয়ে তাকে জানালাম যে আমরা কিছুদিন পর আপনার সঙ্গে আবার যোগাযোগ করবো। তিনি বলেন কোন সমস্যা নাই। আপনার ফোন দিয়ে চলে আসবেন। এখানে থেকে যতখুশি আম নিয়ে যেতে পারবেন। মোটামুটি কিছুটা আশ্বস্ত হয়ে তারপর বাড়ির পথে রওনা দিলাম।
আজকের মতো এখানেই শেষ করছি। পরবর্তীতে আপনাদের সাথে দেখা হবে অন্য কোন নতুন লেখা নিয়ে। সে পর্যন্ত সবাই ভাল থাকুন সুস্থ থাকুন।
ফটোগ্রাফির জন্য ব্যবহৃত ডিভাইস | হুয়াই নোভা 2i |
---|---|
ফটোগ্রাফার | @rupok |
স্থান | মাধবদিয়া |
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |
কিছু আম ছাড়া এখন বাগানের প্রায় সব আমই অপরিপক্ক, তাই এখন স্বাদের পাকা আমা খুঁজে পাওয়া কঠিন, আর হয়তো দিন পনেরো লাগবে তার পরেই হিমসাগর, ল্যাংড়া, মল্লিকা এসব আমাগুলো পাকতে শুরু করবে তখন মজা করে খাওয়া যাবে ।
তবে আপনার এই অগ্রিম চেষ্টাকে স্বাগত জানাই । আমি নিজেও চেষ্টা করি সরাসরি বাগান থেকে আম কিনে খাওয়ার ।
আপনার এই আম খাওয়ার অভিযান অভিজ্ঞতা আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ জ্ঞাপন করছি ।
বাগান মালিক ও আমাকে সেই কথাই বলল। এই জন্যই ঠিক করেছি পাকলে তারপর আম খাবো ।
ভাইয়া এর আগে আপনার আম বাগানে যেয়ে হতাশের কাহিনি পড়েছি।যাক আজকের পোস্ট দেখে ভালো লাগল।ভাইয়া আম পেলেএকা একা খাইয়েন না,আমাদের জন্য ও পাঠিয়ে দিয়েন।
আপনি আমাদের বাসায় চলে আসেন। তারপর যতো খুশী আম খেতে পারবেন।
হা হা,বাসায় পাঠিয়ে দেন।😉😉
এবার তাহলে আম পেয়েছেন ভাই ভালো লাগলো। আরেকটি পোস্ট পড়েছিলাম সেখানে হতাশ হয়েছিলেন। আজকে আপনি এই কীটনাশক মুক্ত আম পেয়েছেন ভাই এটা কিন্তু খুবই ভালো লাগলো। আর আপনি ঠিক বলেছেন যে বাগানের থেকে কেনা আমগুলো খুবই মিষ্টি হয় আর খেতেও অনেক বেশি সুস্বাদু হয়।
বাজারের আমের সাথে বাগান থেকে কেনা আমের অনেক ফারাক থাকে।
একদম নিজের গাছের আম ছাড়া কেমিকেলমুক্ত পাওয়া খুবই কষ্টকর। বাজারে যেসব আম আসে এর ৯৫% ভাগী কেমিক্যালযুক্ত। আপনি ফটোগ্রফি গুলো খুবই ভাল হয়েছে ।আপনার জন্য শুভকামনা রইল।
ঠিক বলেছেন। এই জন্যই বাগান থেকে আম কেনার চেষ্টা করি।
কথাটা শুনে আমার কাছেও বেশ ভালো লাগল। আমিও আপনার মতো বাজার থেকে আমি কিনিই না। প্রথমত তারা অপরিপক্ক আম কিটনাশক দিয়ে পাকায় এতে করে সেটা না লাগে কোনো স্বাদ বরং আরও ক্ষতি। আমার এলাকায় বেশ কিছু আমের বাগান আছে। আম প্রয়োজন হলে সেখানে গিয়ে কিনি। আপনার আম কেনার পোস্ট টা ভালো লাগল।
আমাদের এদিকে আম বাগানের সংখ্যা খুবই কম। এখন অবশ্য অনেকেই বাগান করার দিকে ঝুঁকছে ।
লোকটির সুন্দর মানসিকতায় মুগ্ধ হলাম।এভাবে আজকাল কজন ই বা ভাবে!আমাদের এদিক থেকে অনেক দূরে হয় বাগান তাই চাইলেও পারিনা।
লোকটার এই কথাটা আমারও অনেক ভালো লেগেছে।
আমার মতে বাগান এর আম গুলো খাওয়াই ভালো হয়। একটু কীটনাশক থাকলেও ফরমালিন থেকে কিন্তু মুক্ত থাকে আম গুলো। ফরমালিন খুবই ক্ষতিকর আমাদের জন্য। এভাবে আম আনা হয়নি কখনো। তবে এবার বন্ধুরা মিলে ঠিক করেছি রাজশাহী যেয়ে আম নিয়ে আসবো।
খুব ভালো হবে তাহলে। একসাথে রথ দেখা কলা বেচা দুটোই হবে।
সত্যি বলেছেন ভাইয়া বাগান থেকে আম কিনে কিন্তু অনেক সুবিধা পাওয়া যায়। একদম গাছের তরতাজা আমরা খাওয়া যায়। ভাইয়া যখন আম কিনবেন হালকা কাঁচা আম গুলো কিনবেন, যাতে এক সপ্তাহ 10 দিন রেখে রেখে খাওয়া যায়।
ভালো একটা পরামর্শ দিয়েছেন তো। ধন্যবাদ আপনাকে।
মালদায় আমাদের দু-চারটি আমের বাগান এর মধ্যে খাবার জন্য দু একটি গাছ সবসময় রাখা থাকে। যেগুলো কেমিক্যাল বা কোনরকম কীটনাশক দিয়ে স্প্রে করা হয় না। এবং আম গুলো সত্যিই খেতে ভালো লাগে এবং শরীরের দিক থেকেও বেশ উপকারী।
আর এই পোস্টে গোটা কতক ছবি দেখেও মনের তৃপ্তি হলো ধন্যবাদ দাদা।
ব্যক্তিগত বাগান ছাড়া কীটনাশক বা কেমিক্যাল মুক্ত আম খাওয়ার আসলে কোনো সুযোগ নেই। বাণিজ্যিক ভিত্তিতে যারা বাগান করে তারা সবাই কীটনাশক এবং কেমিক্যাল ব্যবহার করেন। তার ভেতর থেকেও বাগান থেকে কিনলে কিছুটা ভালো আম পাওয়া যায়।
হ্যাঁ বাজার পৌঁছনোর আগে অব্দি তাও কিছুটা ভালো থাকে দাদা, ঠিক বলেছেন ।