রাতের শহর। ১০% প্রিয় লাজুক খ্যাঁক এর জন্য।

in আমার বাংলা ব্লগ3 years ago

কেমন আছেন আমার বাংলা ব্লগের বন্ধুরা? আমি ভালো আছি। আশাকরি আপনারা ও ভালো আছেন।


মাঝে মাঝে মনে হয় আমরা চারপাশের যে দৃশ্য সব সময় দেখি। সেটাকে একটু ভিন্নভাবে দেখলে কেমন হয়। বাড়ির সামনে যে অতি পরিচিত রাস্তা। এই রাস্তা যদি আপনি দিনের বিভিন্ন সময় দেখেন খেয়াল করে দেখবেন প্রত্যেকটা সময় এই রাস্তার আলাদা একটি চেহারা থাকে। খুব ভোরে যখন দেখবেন তখন দেখবেন রাস্তাটা দেখতে আপনার কাছে অন্যরকম লাগছে। একই রাস্তা যদি আপনি দুপুরবেলায় কোলাহলপূর্ণ অবস্থায় দেখেন তখন দেখবেন এই রাস্তার অন্য একটি চেহারা। আবার এই একই রাস্তা যখন রাতের আঁধারে দেখবেন তখন খেয়াল করে দেখবেন রাস্তাটি সম্পূর্ণ অন্যরকম লাগছে।

আমরা আসলে খুব একটা খেয়াল করে দেখি না। যার ফলে এই ব্যাপারগুলি আমাদের চোখে সহজে ধরা পড়ে না। কিন্তু এই অতি সাধারন ব্যাপার গুলি নিয়ে চিন্তা-ভাবনা করলে দেখবেন জীবনের অন্যরকম একটা অর্থ দেখতে পাবেন। আজ আমি আপনাদের সাথে আমার শহরের রাতের কিছু আলোকচিত্র ভাগ করে নেব। কিছুদিন আগে রাতে বাজারের দিকে গিয়েছিলাম। তখন মনে হলো কিছু ছবি তুলি। ছবি তুলতে গেলে খেয়াল করলাম এই আমার অতি পরিচিত জায়গা এখন সম্পূর্ণ অন্যরকম লাগছে। শুধু মানুষজনের পরিমাণ নয়। মানুষজনের এক্সপ্রেশন ও পরিবর্তন হয়ে যায় সময়ের সাথে সাথে।

IMG_20211202_225117.jpg


এই রেস্টুরেন্টটি ফরিদপুর নিউমার্কেটের গেটের একদম পাশেই অবস্থিত। সেই সকাল বেলা থেকে শুরু করে রাত অবধি মানুষের ভীড় এখানে লেগেই। থাকে যদিও রাতের দিকে মানুষের উপস্থিতি কিছুটা কম থাকে। এই রেষ্টুরেন্টের রান্না খুব একটা ভালো না হলেও অবস্থানের কারণে এদের ব্যবসা যথেষ্ট ভালো।

IMG_20211202_200851.jpg

IMG_20220114_081723.jpg

এটি একটি মিষ্টি এবং বেকারি আইটেম এর দোকান। দোকানের ডিসপ্লেতে বিভিন্ন আকৃতির এবং রংয়ের মিষ্টি সাজিয়ে রাখা হয়েছে ক্রেতা আকর্ষণের জন্য। এই দোকানটি আগের রেস্টুরেন্টের ঠিক পাশেই অবস্থিত। কিন্তু এদের বেচাকেনা খুব একটা ভালো নয়।

IMG_20211202_225442.jpg

রাত হয়ে গিয়েছে। চোখেমুখে বাড়ি ফেরার ব্যাকুলতা। তার পরেও যেতে পারছে না এই ব্যবসায়ী। হয়তো তার আজকের দিনে বেচাকেনা ভালো হয়নি। যার ফলে এই রাতেও সে কিছু শাক সামনে নিয়ে বসে আছে। হয়তো শাক গুলো বিক্রি করতে পারলে সেই টাকা দিয়ে বাজার করে নিয়ে তাকে বাড়ি যেতে হবে।

IMG_20211202_200026.jpg

ছোটখাটো ইলেকট্রনিক্স জিনিসপত্র বিক্রি কারি এই হকার। মূলত নিম্নবিত্ত লোকেরাই তার গ্রাহক। সকাল থেকে শুরু করে রাত পর্যন্ত রাস্তার পাশে বসে থেকে বেচাকেনা করে তাদেরকে জীবিকা নির্বাহ করতে হয়। অল্প টাকায় জিনিসপত্র পাওয়া যাওয়ার কারণে নিম্নবিত্ত লোকেরা এই সমস্ত দোকান থেকে জিনিসপত্র কেনে।

IMG_20211202_225702.jpg

এটি একটি পিঠার দোকান। একজন মহিলাকে দেখা যাচ্ছে পিঠা-বানানোর কাজে ব্যস্ত। শীতের সময় শহরে এই ধরনের প্রচুর দোকান দেখা যায় রাস্তার পাশ দিয়ে। আর এই সমস্ত দোকানের বেচা কেনা অনেক ভাল হয়। বাংলাদেশের মানুষ যে পিঠা খেতে খুবই ভালোবাসে সেটা এই দোকান গুলি দেখলে বোঝা যায়।

IMG_20211215_154605.jpg

ছবিতে দেখা যাচ্ছে একজন ডিম বিক্রেতা টাকা গুনছে। সারাদিনের বেচা কেনার পর এখন সে বাড়ি যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে। এই ধরনের ডিমের দোকান এখন সারা দেশেই দেখা যায়। গ্রাম গঞ্জ শহর সবখানেই এ ধরনের দোকানের উপস্থিতি পাওয়া যায়। এই সমস্ত দোকানদারদের বেচাকেনাও নেহায়েত খারাপ নয়।

IMG_20211202_195836.jpg

ছবিতে দেখা যাচ্ছে একজন বৃদ্ধ হকার এবং মুচি পাশাপাশি বসে ব্যবসা করছে। বৃদ্ধ লোকটিকে দেখে মনে হচ্ছে জীবন কতটা কঠিন। এই বয়সেও তাকে কঠোর সংগ্রামের মাধ্যমে জীবনকে এগিয়ে নিতে হচ্ছে।

IMG_20211202_195519.jpg

এই ছবিতে দেখা যাচ্ছে একজন ক্রেতা রাস্তার পাশের হকারের কাছ থেকে স্যান্ডেলের দরদাম করছে। আমাদের শহরে আগে রাস্তায় হকারদের এত উপস্থিতি ছিল না। কিন্তু বিগত কয়েক বছর ধরে দেখছি প্রচুর হকার রাস্তার পাশে জামা কাপড় জুতো স্যান্ডেল বিক্রি করছে। আর নিম্নবিত্ত এবং মধ্যবিত্ত পরিবারের সদস্যরাই তাদের মূল ক্রেতা।

IMG_20211202_194942.jpg

এখানে দেখা যাচ্ছে সেলাই মেশিন নিয়ে বসে আছে কয়েকজন দর্জি। এই সমস্ত লোকজন সাধারণত টুকটাক সেলাই এর কাজ করেন। সারাদিন কাজ শেষে এখন তাদের বাড়ি যাওয়ার সময়।

IMG_20211202_195714.jpg

এই ছবিতে দেখা যাচ্ছে ফুটপাতে শীতের কাপড় চোপড় এর হকার এবং তার ক্রেতাকে। সাধারণত ডিসেম্বর জানুয়ারি মাসে এই ধরনের দোকানের উপস্থিতি লক্ষ করা যায়। কারণ এই দুই মাস বাংলাদেশে সবচাইতে বেশি শীত থাকে।মজার ব্যাপার হচ্ছে সময়ের সাথে সাথে এদের ব্যবসার ধরন ও পরিবর্তন হয়ে যায়।

আজকের মতো এখানেই শেষ করছি। পরবর্তীতে আপনাদের সাথে দেখা হবে অন্য কোন নতুন লেখা নিয়ে। সে পর্যন্ত সবাই ভাল থাকুন সুস্থ থাকুন।


ফটোগ্রাফির জন্য ব্যবহৃত ডিভাইসহুয়াই নোভা ২আই
ফটোগ্রাফার@rupok
স্থানলিংক

logo.png

Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power

250 SP500 SP1000 SP2000 SP5000 SP

Heroism_3rd.png

standard_Discord_Zip.gif

🇧🇩🇧🇩ধন্যবাদ🇧🇩🇧🇩


@rupok


Polish_20211012_184119287.jpg

আমি রূপক। আমি একজন বাংলাদেশী। আমি বাঙালি। আমি বাংলায় মনের ভাব প্রকাশ করতে ভালোবাসি। আমি আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটিকেও ভালোবাসি

Sort:  
 3 years ago 

ওয়াও অসাধারণ হয়েছে ভাইয়া আপনার রাতের শহরের ফটোগ্রাফি গুলো। আপনার ফটোগ্রাফি গুলো দেখে সত্যি আমি মুগ্ধ হয়ে গেলাম। বিশেষ করে মিষ্টির ফটোগ্রাফি টা দেখে আমার তো মিষ্টি খেতে ইচ্ছে করতেছে। কারণ আমি মিষ্টি খেতে খুবই পছন্দ করি। মিষ্টি দেখলে লোভ সামলাইতে পারি না৷ ফটোগ্রাফি গুলো আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ ভাইয়া।

 3 years ago 

একেবারে সঠিক বলেছেন ভাই। আমাদের বাড়ির পাশে রাস্তায় এক এক সময়ে এক এক শ্রেণি পেশার বয়সের শোকের আনোগোনা থাকে। এটা আমি নিজেও কখনো ভেবে দেখিনি। কিন্তু এটা কিন্তু সত্যি।

এবং শুধু ফরিদপুর না পুরো বাংলাদেশেই এইরকম পেশার লোক থাকে। এদের কাছে রাত দিন যেন সমান।

 3 years ago 

এই ব্যাপারটি বেশিরভাগ সময় ই লক্ষ্য করি যে খাবার খারাপ হলেও রেস্তোরার অবস্থানের কারণে ভীড় লেগেই থাকে।
আসলেই বৃদ্ধ মানুষগুলোকে দেখলে খারাপ লাগে।

 3 years ago 

🌹🌹🌹আপনি ঠিকই বলেছেন ভাইয়া সকাল-দুপুর-রাত আসলে তিন সময় তিন ধরনের পরিবেশ বিরাজমান হয় একই জায়গাতে। রাস্তার ধারের ওইসব পিঠা ওয়ালাদের পিঠা কিন্তু আসলে অনেক মজাদার হয় সহজেই কিনে খাওয়া যায়, আর গরিব সেই বৃদ্ধ লোক গুলোকে দেখে খুবই খারাপ লাগলো। ধন‍্যবাদ ভাইয়া 🌹🌹🌹

সুলতানি ভোজের শাখা আছে নীলক্ষেত মার্কেটে ওখানে একদিন গিয়েছিলাম। খাবার+পরিবেশ দুটোই অনেক ভালো ছিলো। আপনার পোস্ট দেখে পুরানো দিনের কথা মনে পড়ে গেলো। আপনি রাতের যেভাবে বর্ণনা দিয়েছেন সেটা আমার কাছে খুব ভালো লেগেছে। ধন্যবাদ ভাই

Coin Marketplace

STEEM 0.16
TRX 0.16
JST 0.030
BTC 58211.91
ETH 2476.26
USDT 1.00
SBD 2.38