আদরের ভাগ্নেকে নিয়ে ঘোরাঘুরি। ১০% প্রিয় লাজুক খ্যাঁক এর জন্য
বেশ কিছুদিন থেকেই চিন্তা করছিলাম ভাগ্নেকে নিয়ে কোথাও ঘুরতে যাবো। নানা রকম সমস্যার কারণে আর তা হয়ে উঠছিল না। একের পর এক সমস্যার মুখোমুখি হতে হচ্ছিল। অবশেষে গতকাল বিকেলে দেখলাম সবকিছু মোটামুটি ঠিকঠাক আছে। নিজের শরীরটা বেশ ভালো লাগছে। তাছাড়া সারাদিন কোথাও যাইনি। ঘরেই বসে ছিলাম। তাই চিন্তা করলাম ভাগ্নেকে নিয়ে আশেপাশে কোথা থেকে ঘুরে আসি।
কোথায় যাব তাই চিন্তা করছিলাম। হঠাৎ মনে হল কাছেই আছে হাতিরঝিল সেখানেই যাই। হাতিরঝিল সময় কাটানোর জন্য একটি সুন্দর জায়গা। যদিও এখন পানি কমে যাওয়ার কারণে সৌন্দর্যের কিছুটা ঘাটতি হয়েছে। তাও চিন্তা করলাম দুরে কোথাও যাওয়ার থেকে হাতিরঝিল যাওয়াই ভালো হবে। আমি আমার ভাগ্নেকে বললাম দ্রুত তৈরী হয়ে নাও। আমরা দুই মামা ভাগ্নে ঘুরতে যাব। সেও খুব খুশি। দ্রুত সে তৈরি হয়ে নিল। আসরের নামাজ পড়ে আমরা রওনা দিলাম।
হাতিরঝিল বাসা থেকে খুব কাছেই। রিকশাতে যাওয়া যায়। আমরা একটা রিক্সা নিলাম। রিক্সায় উঠার কিছুক্ষণ পরেই আমরা হাতিরঝিল পৌঁছে গেলাম। হাতিরঝিল পৌঁছানোর পর চিন্তা করছিলাম যে কি। করব পাড় দিয়ে হেটে বেড়াবো নাকি ওয়াটার বাসের চড়বো। আমার ভাগ্নে আবদার করল সে ওয়াটার বাসের চড়বে। ভাগ্নের আবদার তো আর মামা ফেলতে পারেনা। তাই দুজনের দুটো টিকিট কেটে নিলাম জলদি।টিকেট কেটে ওয়াটার বাসে চেপে বসলাম। যদিও আমি প্রথমে একটু অরাজি ছিলাম। কারণ পানি কমে গেলে হাতিরঝিলের পানিতে অনেক গন্ধ হয়।
সেজন্য আমি সবসময় ওয়াটার বাস এড়িয়ে চলি। কিন্তু আজ ওয়াটার বাসে ওঠার পর তেমন কোনো গন্ধ পেলাম না। আমরা ওঠার কিছুক্ষণ পর ওয়াটার বাস চলতে শুরু করল। বেশ ভালই লাগছিল। যদি পানি আরো পরিস্কার থাকতো তাহলে ভ্রমণটা আরো মজার হতো। দুই মামা ভাগ্নে গল্প করতে করতে যাচ্ছিলাম। দুজনই খুব খুশি ছিলাম। আমার এই ভাগ্নেটা আমার খুবই প্রিয়। সে প্রচন্ড দুষ্টু। সেজন্য তাকে মাঝে মাঝে একটু শাসন ও করি। ভাগ্নে আমার পাশে বসে মাঝে মাঝে আমাকে বিভিন্ন প্রশ্ন জিজ্ঞেস করছিল। আমিও ভাগ্নের প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছিলাম। সময়টা খুব উপভোগ করছিলাম।
এভাবে কিছুক্ষন চলার পর ওয়াটার বাস একটি স্থানে পৌঁছলো। সেখানে ঘাটে ভেড়ার পর আমি নামতে গেলাম। ওয়াটার বাসের ড্রাইভার আমাকে বলল আপনি গুলশানের টিকেট কেটেছেন না? আমি বললাম হ্যা। তখন সে বলল তাহলে এখানে নামছেন কেন? গুলশান আরো সামনে। তখন আমি নিজের ভুল বুঝতে পারলাম। কিছুটা লজ্জিত হলাম। কারণ গুলশান আমি ভালোই চিনি। পরে আবার বসে পড়লাম। তারপর ওয়াটার বাস চলতে শুরু করল।
আমাদের বাসা থেকে বের হতে একটু দেরি হয়ে গিয়েছিল। যার ফলে প্রায় সন্ধ্যা হয়ে যাচ্ছিল। ওয়াটার বাস আর কিছুক্ষণ চলার পর আমরা গুলশান ঘাটে পৌঁছলাম। তারপর সেখান থেকে নেমে আমরা সামনে এগিয়ে চললাম। আমার মাথায় তখন একটু টেনশন কাজ করছে মাগরিবের নামাজ কোথায় পড়বো। যাই হোক শেষ পর্যন্ত একটি জায়গা খুঁজে পেলাম নামাজ পড়ার। সেখানে নামাজ পড়ে তারপর আমরা আবার সেই ঘাটে ফিরে আসলাম।
আমরা দুজনেই একটু টেনশনে পরেছিলাম যে ওয়াটার বাস আর পাব কিনা। গিয়ে দেখি ঘাটে একটি ওয়াটার বাস দাঁড়ানো আছে। পরে যথারীতি টিকেট কেটে সেখানে গিয়ে চেপে বসলাম। কিছুক্ষণ পর ওয়াটার বাস আমাদের গন্তব্যের উদ্দেশ্যে রওনা দিল। অল্প সময়ের ভেতরে আমরা আমাদের গন্তব্যে পৌঁছে গেলাম। আমাদের আবার তাড়াতাড়ি বাড়িতে ফিরতে হবে। কারণ ভাগ্নের টিচার আসবে তাকে পড়াতে। আমার বোন বলে দিয়েছে টিচার আসার আগেই যেন ফিরে আসি। সেই জন্য তাড়াহুড়া করে আমরা বাসায় ফিরে আসলাম। যদিও এর ভেতরে আরো কিছু ঘটনা আছে। আজকের ঘোরাফেরা শুধু ঘোরাফেরার সীমাবদ্ধ ছিল না। আজকে ভাগ্নের একচোট হেভি খাওয়া-দাওয়া হয়েছে। সে খুবই ভোজন রসিক মানুষ। সে গল্প অন্য আরেকদিন করব।
আজকের মতো এখানেই শেষ করছি।
আশা করি পোস্টটি আপনাদের ভালো লাগবে।
পরবর্তীতে আপনাদের সাথে দেখা হবে অন্য কোন নতুন লেখা নিয়ে। সে পর্যন্ত সবাই ভাল থাকুন সুস্থ থাকুন।
ছবি তোলার জন্য ব্যবহৃত যন্ত্র | হুয়াই নোভা ২আই |
---|---|
ফটোগ্রাফার | @rupok |
স্থান | লিংক লিংক |
Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |
🇧🇩🇧🇩ধন্যবাদ🇧🇩🇧🇩
আমি রূপক। আমি একজন বাংলাদেশী। আমি বাঙালি। আমি বাংলায় মনের ভাব প্রকাশ করতে ভালোবাসি। আমি আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটিকেও ভালোবাসি।
আমি কখনোই হাতির ঝিল দেখিনি। তবে অনেক নাম শুনেছি এই হাতিরঝিল এর। অবশ্য কখনো ঢাকাই যাইনি, আমি ছবি দেখিনি তাই বললাম।
ভাগ্নের সাথে আপনি খুব সুন্দর মূহুর্ত কাটিয়েছেন যা দেখে ভালো লেগেছে ভাইয়া।
বাহ, ভাইয়া অনেক সুন্দর একটি সময় কাটিয়েছেন তাহলে। ঢাকার আশেপাশে এই জায়গাটা খুবই ফেমাস, হাতিরঝিল আমি বহু বার গিয়েছি, খুবই ভালো লাগে জায়গাটা, বিশেষ করে রাতের বেলা। চারদিকে সুন্দর লাইটিং করা থাকে যা দেখতে অসাধারণ লাগে, যাইহোক জেনে ভালো লাগলো আপনি অনেক সুস্থ আছেন,,, আপনার জন্য শুভকামনা রইল।
ধন্যবাদ আপনাকে আপু।
আমার ভাগ্নে গুলাও এই রকম ভাই। এইটা নাইলে ওইটা প্রশ্ন করতেই থাকে, করতেই থাকে। যতক্ষণ পর্যন্ত আমি একটা ছোট করে ধমক দিবোনা ততোক্ষণ পর্যন্ত আমার ভাগ্নে গুলা শান্তি হয় না।জানি প্রশ্নের উত্তরে ধমকানো ভালো না কিন্তু একটা সময়ে মাথা ব্যথা করে কিন্তু আবার এইগুলাকে ছাড়া থাকতেও পারিনা। অনেকদিন পর হাতিরঝিল দেখলাম।
ধন্যবাদ আপনাকে ভাই।
ঢাকা শহরে আমার প্রিয় জায়গা গুলোর মধ্যে হাতিরঝিল একটি। কয়েক বছর আগেও হাতিরঝিলে প্রচুর সময় কাটিয়েছি। ঝিলের পানি দূষণ মুক্ত করতে পারলে জায়গাটা আরো অনেক উপভোগ্য হত। মনে হচ্ছে মামা-ভাগ্নের সময় টা ভালই কেটেছে।
হাতিরঝিলের পানির সেই ময়লা গন্ধটা তাহলে একটু কমে এসেছে। অনেক উপভোগ করেছেন এবং এরকম মাঝে মাঝে অবশ্যই ঘুরতে যাওয়া উচিত।
হ্যাঁ ভাই এখন তেমন গন্ধ নেই। ধন্যবাদ আপনাকে।
ভাই আপনার ভাগ্নেকে নিয়ে আপনার ঘোরাঘুরি বিষয়ের পোস্টটি পড়ে আমার খুবই ভালো লাগলো। ফটোগ্রাফি গুলো অসাধারণ হয়েছে ভাইয়া। আপনার এবং আপনার ভাগ্নের জন্য অনেক অনেক শুভকামনা রইল।
ধন্যবাদ আপনাকে।
এরকম মুহূর্ত, আপনি ভাগ্নের সাথে সুখী বোধ করেন, এটি আরও মজার বোধ করে, ভাগ করার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ, আপনার জন্য শুভকামনা
ধন্যবাদ আপনাকে।