পদ্মাপারে আমার কাটানো কিছু সুন্দর মুহূর্ত।১০% যাবে প্রিয় লাজুক খ্যাঁক এর একাউন্টে।
করণা আক্রান্ত হাওয়ায় দীর্ঘদিন ঘর থেকে খুব একটা বের হওয়া হয় না। অনেকদিন হলো আমার প্রিয় জায়গা পদ্মার পাড়ে যাওয়া হয়না। মনটা উতলা হয়ে উঠেছিলো। তাই চিন্তা করলাম আজ পদ্মার পাড় থেকে ঘুরে আসি।
যেই ভাবা সেই কাজ। আমি প্রতি বছরই এই সময়টাতে প্রায়ই পদ্মার পাড়ে সময় কাটাতে যাই। নদী আমার ভীষণ পছন্দের। বছরের এই সময়টাতে নদী তার পরিপূর্ণ রূপে বিকশিত হয়। কানায় কানায় ভরে যায় পুরো নদী। তখন চরাঞ্চলে মানুষের যোগাযোগের একমাত্র বাহন হয়ে দাঁড়ায় নৌকা। আমার ওই সময়টাতে নৌকায় চড়তে খুবই ভালো লাগে। বিশেষ করে বিকালের দিকে।
স্থান-লিংক
স্থান-লিংক
তো আমি যথারীতি আমার বাসা থেকে বের হয়ে রিকশা নিলাম। রিকশায় কিছুদূর পর্যন্ত গিয়ে তারপর অটোতে উঠলাম। পদ্মার পাড় আমার বাসা থেকে প্রায় ৫ কিলোমিটার দূরে। অটোতে উঠে কিছুক্ষণের ভিতরে পদ্মার পাড়ে পৌঁছে গেলাম। তারপর কিছু ছবি তুললাম। তখন হঠাৎ দেখলাম একটা ট্রলার লোকজন নিয়ে ওপারে যাচ্ছে। আমি ট্রলারটাতে চড়ে বসলাম। সামান্য একটু পথ কিন্তু ভাড়া নিল ৩০ টাকা। যদি ট্রলার ওয়ালা বুঝতে পারে যে স্থানীয় লোক না তাহলে ভাড়া বেশি নেয়। কিছু করার নেই আমি এসেছি প্রকৃতির অপরূপ সৌন্দর্য অবলোকন করতে। শুধু আমি না আমার মত আরও অনেকে এসেছে নদীর সৌন্দর্য অবলোকন করতে।
স্থান-লিংক
ট্রলারে উঠে বসার কিছুক্ষণ পরে ট্রলার ছেড়ে দিলো। ট্রলার ছাড়ার পর মনটা উদাস হয়ে গেলো। অনেকদিন পর নিজের প্রিয় জায়গায় আসার একটা অন্যরকম অনুভূতি মনের ভেতরে কাজ করছিলো। চারপাশের পরিবেশ দেখে মোবাইল দিয়ে বেশ কিছু ছবি তুলে নিলাম। স্টিমিট এ কাজ শুরু করার পর একটা ব্যাপার হয়েছে। আমি আগে ছবি তুলতে মোটেই পছন্দ করতাম না। এখন কোথাও গেলে কোন কিছু পছন্দ হলে তার ছবি তুলে নিই।
স্থান-লিংক
ট্রলার চলতে শুরু করার পর মৃদুমন্দ বাতাস বইছিলো। যখন খোলা নদীর মাঝে গায়ে ফুরফুরে বাতাস লাগছিলো। তখন খুবই চমৎকার লাগছিলো।
স্থান-লিংক
নদীতে প্রচন্ড স্রোত ছিলো। কিছুটা ভয় ভয় ও লাগছিলো। কারণ কিছুদিন আগে এর কাছাকাছি জায়গায় একটা ট্রলার ডুবে গিয়েছে। সেই ট্রলারে হাই স্কুলের শিক্ষকেরা পিকনিকে গিয়েছিলো। ট্রলারডুবির ঘটনায় দুজন শিক্ষক এখন পর্যন্ত নিখোঁজ। ধারণা করা হচ্ছে তারা মারা গিয়েছে। এই ঘটনার কথা মনে পড়ে ভয়টা একটু বেশি কাজ করছিলো। কিছুক্ষনের ভিতরেই নদীর ওপারে পৌঁছে গেলাম।
স্থান-লিংক
তারপর ট্রলার থেকে নেমে চরের রাস্তা ধরে হেঁটে সামনে এগিয়ে গেলাম। একটা সময় আমরা বন্ধুবান্ধবরা মিলে এই চরে প্রায়ই আসতাম। কখনো গোসল করার জন্য কখনোবা শুধুই ঘোরার জন্য। তখন অবশ্য চরে জনবসতি ছিল না বললেই চলে। এখন অনেক লোকজন বাড়িঘর করে ফেলেছে।
চরে পৌঁছে একটা জিনিস দেখে আমার খুব ভালো লাগলো। সেটা হচ্ছে মুজিব শতবর্ষ উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রীর উপহার দেয়া দরিদ্র মানুষের জন্য ঘর। ঘর গুলি দূর থেকে সুন্দর দেখা যায়। যদিও শোনা যাচ্ছে এই কাজে নিয়োজিত লোকজন প্রচুর দুর্নীতি করেছে। ঘরগুলি খুবই নিম্নমানের হয়েছে। কিন্তু এই কাজটা যদি ভাল হতো। তাহলে খুবই চমৎকার একটা ব্যাপার হতো। দরিদ্র অসহায় মানুষেরা পাকা বাড়িতে থাকতে পারতো। খেয়াল করে দেখলাম এই প্রধানমন্ত্রীর উপহার দেয়া ঘরগুলির প্রত্যেকটা ঘরে একটা করে সোলার প্যানেল বসানো আছে। যেহেতু চরাঞ্চলে বিদ্যুৎ নেই। সেহেতু সোলার প্যানেল তাদের একমাত্র ভরসা।
স্থান-লিংক
স্থান-লিংক
আমি চরের রাস্তা ধরে হাঁটতে থাকলাম আর প্রকৃতির সৌন্দর্য দেখতে থাকলাম। চরে বিস্তীর্ণ খোলা মাঠ তাতে পানি জমে বিলের আকৃতি ধারণ করেছে। এই ধরনের গ্রামীণ পরিবেশে আসলে মনটা অনেক শান্ত হয়ে যায়। বুক ভরে বিশুদ্ধ অক্সিজেন নেওয়া যায়। শহরের কোলাহল মুক্ত পরিচ্ছন্ন এই শান্ত পরিবেশে সবাই পছন্দ করে।
স্থান-লিংক
স্থান-লিংক
আমি যে ট্রলারে এসেছিলাম সেই ট্রলারে আরো অনেকেই এসেছিল চরে ঘুরতে। শহরের মানুষের বছরের এই সময়টাতে পদ্মার পাড়ই বিনোদনের একমাত্র জায়গা হয়ে ওঠে। সবাই এসে প্রকৃতির সৌন্দর্যে মুগ্ধ হয়ে গিয়েছিল সবাই ব্যর্থ হয়েছিল যার যার মোবাইলে প্রকৃতির এই সৌন্দর্যকে ধারণ করতে।
স্থান-লিংক
এভাবে চরে ঘুরতে ঘুরতে হঠাৎ করে খেয়াল করে দেখলাম সন্ধ্যা হয়ে আসছে। বাড়িতে যাওয়ার তাড়া অনুভব করলাম। কিছুক্ষণ পর আমাদের নেয়ার জন্য ট্রলারটি আবার হাজির হলো। ট্রলারে উঠে বসার কিছুর পর ট্রলার ছেড়ে দিলো। নদীর প্রচন্ড স্রোতের কারণে এবার ওপারে যেতে অনেক কষ্ট হচ্ছিলো। যাহোক কিছুক্ষণ পর আমরা আমাদের গন্তব্যে পৌঁছে গেলাম। সেখান থেকে আমি বাজারে গেলাম কিছু কেনাকাটা করতে। তারপর বাড়িতে ফিরে আসলাম।
স্থান-লিংক
স্থান-লিংক
স্থান-লিংক
এই ছিল আমার আজকের ঘোরাফেরা। শরীর এখন অনেকটা সুস্থ। তাই ঠিক করেছি দু এক দিনের ভেতরে ট্রলারে করে দূরে কোথাও যাব উদ্দেশ্যহীনভাবে। আশা করি সে যাত্রাও আপনাদের সাথে শেয়ার করতে পারবো। আজকের মতো এখানেই শেষ করছি। পরবর্তীতে আপনাদের সাথে দেখা হবে অন্য কোনো লেখা নিয়ে। সে পর্যন্ত সবাই ভাল থাকুন সুস্থ থাকুন।
Cc- @rme
Cc- @rex-sumon
ফটোগ্রাফির জন্য ব্যবহৃত যন্ত্র | হুয়াই নোভা ২আই |
---|
🇧🇩🇧🇩ধন্যবাদ🇧🇩🇧🇩
আমি রূপক। আমি একজন বাংলাদেশী। আমি বাঙালি। আমি বাংলায় মনের ভাব প্রকাশ করতে ভালোবাসি। আমি আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটিকেও ভালোবাসি।
ফোটোগ্রাফিগুলি দারুণ দাদা।মেঘের সুন্দর দৃশ্য নদীতে পড়ে দ্বিগুন সুন্দর হয়েছে নদীর জল।ভালো লাগলো ছবিগুলি দেখে।ধন্যবাদ আপনাকে।
প্রত্যেকটা ফটোগ্রাফি খুবই সুন্দর হয়েছে । ছবির সাথে সাথে বর্ণনা গুলো পোস্টকে মার্জিত করেছে।অনেক ধন্যবাদ আপনাকে পোস্ট আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য।
ধন্যবাদ ভাই আপনাকে।
ফটোগ্রাফি গুলো অসাধারণ। পদ্মার পারে কাটানো মূহূর্তটা খুবই সুন্দর ছিল আর নদীতপ নৌকা নিয়ে ঘুরতে বেশ মজা লাগে। শুভ কামনা।
ধন্যবাদ আপনাকে।
অসাধারণ ফটোগ্রাফি। মেঘ আর পানির দৃশ্য এক সাথে অনেক সুন্দর দেখাচ্ছে। ফটোর সাথে বর্ণনা আরো সুন্দর করে তুলেছে।
অনেকগুলো সুন্দর সুন্দর ছবি সম্বলিত একটা পোষ্ট লিখেছেন ভাই। ভাল লাগল আপনার এই ছোট ট্যুর এর বর্ণনা শুনে।
তবে অন্যদের তুলনায় আপনার কাছ থেকে ভাড়া বেশী নিল এই পার্ট টা ভাল লাগল না।
ভাল থাকুন।
অসংখ্য ধন্যবাদ ভাই আপনার মন্তব্যের জন্য।