বিক্ষিপ্ত মন নিয়ে ঘোরাফেরা।

in আমার বাংলা ব্লগ2 years ago

কেমন আছেন আমার বাংলা ব্লগের বন্ধুরা? আমি ভালো আছি। আশাকরি আপনারা ও ভালো আছেন।


গত বেশ কিছু দিন যাবত মনটা বিক্ষিপ্ত হয়ে আছে। সেটা বিভিন্ন কারণে। দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা চারদিকের দুর্নীতি, অব্যবস্থাপনা। সাথে আছে চূড়ান্ত কষ্টদায়ক আবহাওয়া। গত কিছুদিন যাবত প্রচন্ড গরম পড়ছে। সেই সাথে হচ্ছে লোডশেডিং। হঠাৎ করে বাংলাদেশের মানুষ দেশের অবস্থা দেখে অবাক হয়ে গিয়েছে। এতদিন যে উন্নয়নের গল্প শুনে এসেছি, যে অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির ফাঁকা বুলি শুনেছি।

IMG_20220719_175317.jpg

এখন বুঝতে পারছি তার সবই ছিল মিথ্যা। স্বল্পশিক্ষিত অশিক্ষিত রেমিটেন্স যোদ্ধা আর গার্মেন্টস কর্মীদের পরিশ্রমের উপর এই দেশটা এখনো টিকে রয়েছে। না হলে হয়তো এর ভিতরে দেশের অবস্থা আরো অনেক খারাপ হয়ে যেতো। যদিও পুরো পৃথিবী এখন একটি ভয়ানক সময় পার করছে। দুটো দেশের ভিতরে যুদ্ধ কিভাবে পুরো পৃথিবীর মানুষকে ভোগাতে পারে সেটা পৃথিবীর মানুষ বুঝতে শুরু করেছে। দুর্নীতি, অন্যায়, অনাচার ও অব্যবস্থাপনা, প্রচন্ড গরম এর সাথে আছে দ্রব্যমূল্যের লাগামহীন ঊর্ধ্বগতি। মধ্যবিত্ত এবং নিম্নবিত্ত মানুষের নাভিশ্বাস উঠে গিয়েছে।

IMG_20220719_175320.jpg

এসব নিয়ে চিন্তাভাবনা করেই মনটা বেশ বিক্ষিপ্ত হয়ে আছে কয়েকদিন ধরে। তারপরেও চেষ্টা করছি কাজে কর্মে ডুবে থেকে এসব চিন্তা থেকে দূরে থাকতে। কিন্তু চাইলেই কি আর দূরে থাকা যায়? ঘুরে ফিরে এই বিষয়গুলোই বারবার মাথায় কাজ করছে। আমার যখনই মন অস্থির থাকে তখন আমি চেষ্টা করি বেশি করে ঘোরাফেরা করার। কারণ প্রকৃতির সান্নিধ্যে গেলে মন কিছুটা শান্ত হয়। এই কারণে আজ ও বিকালে বের হয়েছিলাম বাইরে ঘোরাফেরা করতে।

IMG_20220719_175425.jpg

আমার তথ্যপ্রযুক্তির ব্যাপারে সহায়তা করার জন্য এক বড় ভাই আছে। যখনই তথ্যপ্রযুক্তি সংক্রান্ত কোনো সমস্যাই পড়ি তখনই সেই বড় ভাইয়ের শরণাপন্ন হই। আজও তেমন কিছু হয়েছিলো। যার ফলে তাকে খবর দিয়েছিলাম বাসায় আসার জন্য। সে বাসায় আসার পরে আমরা দুজন কিছুক্ষণ আমার সমস্যা নিয়ে কথাবার্তা বলে তারপর বাইরে ঘুরতে বের হলাম। বরাবরের মতে সাথে ছিল আমার বন্ধু ফেরদৌস। প্রথমে আমরা চিন্তা করছিলাম কোথায় যাওয়া যায়। একবার ঠিক করলাম পদ্মার পাড়ে গিয়ে বসে গল্প করি। কিন্তু কিছুক্ষণ পরে মত পাল্টে আমরা সুইস গেটের দিকে গেলাম।

IMG_20220719_175852.jpg

ফরিদপুর শহরে নতুন একটি সুইস গেট হয়েছে। জায়গাটি আমাদের কাছে বেশ পছন্দ। তাই চিন্তা করলাম সেখানে গিয়ে পানি কি পরিমান বেড়েছে সেটা দেখি আর আড্ডা দেই। কিন্তু সেখানে পৌঁছে অল্প কিছুক্ষণ কাটানোর পর ফেরদৌস বলল চলো অন্য কোথাও থেকে ঘুরে আসি। আমরাও রাজি হয়ে গেলাম। তিনজন মোটরসাইকেলে করে যাচ্ছিলাম অজানা গন্তব্যের উদ্দেশ্যে। বেশ কিছুক্ষণ চলার পরে হঠাৎ করে আমাদের সেই বড় ভাই বাঁদিকের একটি রাস্তা দেখিয়ে বলল চলেন আজকে এদিকে যাই। আমরা মাঝে মাঝে অচেনা রাস্তায় ঘুরতে ঘুরতে যাই। এটি আমাদের কাছে নতুন কিছু নয়।

IMG_20220719_175459.jpg

যদিও রাস্তাটি আমাদের সেই বড় ভাইয়ের চেনা ছিলো। কিছুক্ষণ পর সেটা বুঝতে পেরেছি। সেই অচেনা রাস্তা ধরে কিছুদূর এগুলোর উপর উনি বলল সামনে একটি ছোট্ট বাজার আছে। সেখানে বিকালের দিকে সিঙ্গারা ভাজে। সেই সিঙ্গারা খেতে বেশ মজা। চলেন আমরা সেখান থেকে গিয়ে সিঙ্গারা খেয়ে আসি। গরম সুস্বাদু সিঙ্গারার লোভ আমাদেরকে সেখানে টেনে নিয়ে গেলো।

IMG_20220719_175832.jpg

কিন্তু সিঙ্গারা খেতে গিয়ে আমরা খুবই অবাক হলাম। কারণ যেটা খাওয়ার উদ্দেশ্যে এসেছি গিয়ে দেখি সেই ছোট্ট হোটেলটিতে সেই খাবারটি নেই। তারপরেও যেহেতু এতদূর এসেছি তাই কিছু না খেলে কেমন হয়? আমরা খেয়াল করে দেখলাম সেই দোকানে গরম গরম পুরি ভাজা হচ্ছে। আমরা তিনজন বসে গরম পুরির অর্ডার দিলাম। তারপর সেখান থেকে খাওয়া-দাওয়া শেষ হলে আমরা কিছুক্ষণ চা খেতে খেতে গল্প করলাম। এদিকে খেয়াল করে দেখি প্রায় সন্ধ্যা হয়ে৷দ এসেছে। তাই আমরা বাড়ির দিকে রওনা দিলাম।

আজকের মত এখানেই শেষ করছি। পরবর্তীতে আপনাদের সাথে দেখা হবে অন্য কোন নতুন লেখা নিয়ে সে। পর্যন্ত সবাই ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন।


ফটোগ্রাফির জন্য ব্যবহৃত ডিভাইসহুয়াই নোভা 2i
ফটোগ্রাফার@rupok
স্থানলক্ষ্মীপুর

logo.png

Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power

250 SP500 SP1000 SP2000 SP5000 SP

Heroism_3rd.png

standard_Discord_Zip.gif


🇧🇩🇧🇩ধন্যবাদ🇧🇩🇧🇩


@rupok

Sort:  
 2 years ago 

উন্নয়নে জোয়ারে আমাদের এখন ভাসছে😉😉।সামনে যে আরো কত দিন আসবে, আল্লাহ জানে। যাই হোক ছবিগুলো বেশ সুন্দর। অনেক সময় যে জিনিসের উদ্দেশ্য যাওয়া হয়, ঐ জিনিস না পেলে খরাপই লাগে।যাই হোক পুরিতো পেলেন। ভালো ছিলো।ধন্যবাদ

 2 years ago 

ভাসতে ভাসতে শেষ পর্যন্ত বঙ্গোপসাগরে গিয়ে পড়বো মনে হচ্ছে।

 2 years ago 

হ্যাঁ ভাই আমাদের দেশটা এক অশনী সংকেত এর উপর ভর দিয়ে চলছে দেশের কথা ভাবলেই গা শিরশির করে ওঠে। রেমিটেন্স যোদ্ধাদের ওপর বাংলাদেশটা টিকে আছে এ কথা সত্য। পাশাপাশি নাঙ্গা পুঙ্গা গার্মেন্টস শ্রমিকদের কারণে দেশের বেকারত্ব হ্রাস এর পাশাপাশি অর্থনৈতিক চাকা ও ঠিকমত চলছে। অথচ একটি বিষয় খেয়াল করেছেন এই দুটি শ্রেণীকে কিন্তু আমরা কোন মূল্যায়ন করি না তাদেরকে তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করে হ্যায় প্রতিপন্ন করে। মেয়েদের বিয়ে দেয়ার ক্ষেত্রে বিদেশী হলে আমরা নাক সিটকায়। আমাদের এই ধরনের ধারণা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে।

এ ধরনের লেখাগুলো পড়লে আসলে মনটা খারাপ হয়ে যায় কিন্তু কি করা এটাই তো বাস্তবতা। আপনার ফরিদপুরের সুইস গ্যাটটা খুব ভালো লেগেছে। ধন্যবাদ ভাই ভালো থাকবেন।

 2 years ago 

রেমিটেন্স যোদ্ধা এবং গার্মেন্টস কর্মীদের আমাদেরকে আসলে যোগ্য সম্মান দেয়া উচিত।

 2 years ago 

যাক পরিশেষে ঘুরাঘুরির মাধ্যমে আপনার বিক্ষিপ্ত মনটা শান্ত হয়েছে এটাই হচ্ছে সবচেয়ে বড় কথা। তবে হ্যাঁ আপনি এখানে অনেক গুরুত্বপূর্ণ বেশ কিছু কথা উল্লেখ করেছেন আসলে যুদ্ধ কোন সমাধান দিতে পারে না যুদ্ধে খালি ধ্বংস হয়ে যাবে সেটাই পুরো দেশ এখন বুঝতে পারছে। আর উন্নয়নের কথা বললেন না আমাদের এই দুর্নীতিতে ভরা দেশটিতে যত উন্নয়নই করা হোক না কেন কোন লাভ হবে না। আর তাছাড়া যুদ্ধের কারণে আমাদের চাইতে অনেক উন্নত দেশগুলো খুব কঠিন অবস্থায় রয়েছে সেখানে আমরা তো সামান্য কিছু। ধন্যবাদ ভাই আমাদের মাঝে আপনার আজকের এই ব্লগটি শেয়ার করার জন্য।

 2 years ago 

ভাই সমস্যা হচ্ছে ক্রাইসিস শুরু হলে উন্নত বিশ্বের সরকার গুলি তাদের জনগণের পাশে দাঁড়াবে। কিন্তু আমাদের দেশে আমরা সরকারের কাছ থেকে কোনরকম সাহায্য পাবো না।

 2 years ago 

বিক্ষিপ্ত মন কথাটা সত্যিই বলেছেন ভাই। আপনজন অসুস্থ হলে যেমন খুব কষ্ট হয় ঠিক তেমনি দেশের এই অবস্থায় খুব খারাপ লাগছে। এই পরিস্থিতিতে আমরা সরাসরি কিছু করতে পারবো না হয়তো।তবে আল্লাহর কাছে চাই যেন খুব দ্রুতই এমন সংকট মোকাবেলা হয়। আপনার ঘোরার মুহূর্তগুলোও সুন্দর ছিল। ফটোগুলোও চমৎকার হয়েছে। ধন্যবাদ আপনাকে এত সুন্দর মুহূর্ত আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য।

 2 years ago 

এখনই আমাদের সবাইকে সচেতন হতে হবে। আর শুধু সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইটগুলিতে তৎপরতা না দেখিয়ে প্রয়োজন হলে বাস্তবেও তৎপর হতে হবে সবাইকে।

 2 years ago 

আসলে আমাদের দেশের উন্নতির কথা বলার আর কিছু নেই। দেশ এখন অনেকটাই তলা বিহীন ঝুরির মত অবস্থা হয়ে দাঁড়িয়েছে। উপরে উপরে শুধু উন্নতির লম্বা লম্বা বুলি কিন্তু নিচে কিছুই নেই। শুধুমাত্র কিছু ভন্ড রাজনীতিবিদ আর দুর্নীতিবাজদের কারণে দেশের আজ এই অবস্থা। উপরওয়ালাই জানে শেষ পর্যন্ত কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে আমাদের এই মাতৃভূমি।

 2 years ago 

সেই টেনশনেই আছি। তবে অবস্থা খারাপ হলে তোমার আমার সবাইকেই ভুগতে হবে।

 2 years ago 

ঘুরা ঘুরি র মুহূর্তগুলো সুন্দর কাটিয়েছেন যদি আপনার মন ভালো নেই। আপনার ফটোগ্রাফি গুলো বেশ দুর্দান্ত হয়েছে। আসলে বর্তমানে দেশের কথা বলে বা, ভেবে কোন লাভ নেই। দেশ অন্ধকারের দিকে ধাবিত হচ্ছে । এত চমৎকার পোস্ট আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য আপনাকে অন্তরে অন্তর থেকে অন্তরের ধন্যবাদ জানাই। ভালো থাকবেন ভাইয়া।

 2 years ago 

ভুল কথা বললেন। এখনই দেশের কথা বেশি করে চিন্তা করতে হবে। আর শুধু চিন্তার ভেতর সীমাবদ্ধ থাকলে হবে না। প্রয়োজন হলে সবাইকে রাজপথে নামতে হবে।

 2 years ago (edited)

দেশের অবস্থা যে কোন দিকে যাচ্ছে এটা ভাবতে বসলে নিজেকে হারিয়ে ফেলতে হবে ভাই। ক্ষমতার অপব্যবহার আর দুর্নীতিতে চারদিকে ছেয়ে গেছে। অনেকটা যেন,, সর্বাঙ্গে ব্যথা ওষুধ দেবো কোথা। যাই হোক ভালো একটা সময় কাটিয়েছেন। নদীর পাড়ে গেলে মন এমনিতেই অনেক ভালো হয়ে যায়। সবশেষ গরম পুরির কথা শুনে জিভটা কেমন যেন চুলকে উঠলো 🤪।

 2 years ago 

এইসব দুর্নীতি সহ্য করতে করতে আমরা খাদে কিনারায় চলে এসেছি। এখন আর পেছানোর পথ নেই। এখন সবাইকে সঙ্ঘবদ্ধভাবে ঘুরে দাঁড়াতে হবে।

Coin Marketplace

STEEM 0.20
TRX 0.13
JST 0.030
BTC 64689.90
ETH 3450.92
USDT 1.00
SBD 2.50