বন্ধুর সাথে দুর্গম পদ্মার চরে ভ্রমণ অভিজ্ঞতা (প্রথম পর্ব)।

in আমার বাংলা ব্লগ2 years ago

কেমন আছেন আমার বাংলা ব্লগের বন্ধুরা? আমি ভালো আছি। আশাকরি আপনারা ও ভালো আছেন।


আমি প্রতিবছর বর্ষার সময় ট্রলারে করে চরের দিকে ঘুরতে যাই। মাঝে মাঝে একা একাই ঘুরতে যায়। এই ট্রলার ভ্রমণটা আমার কাছে বেশ ভালো লাগে। গত বেশ কিছুদিন যাবত আমি পরিকল্পনা করছিলাম চরের দিকে ঘুরতে যাওয়ার। প্রথমে পরিকল্পনা ছিল আমি আর আমার বন্ধু ফেরদৌস দুজন মিলে ঘুরতে যাবো। কিন্তু নানা রকম সমস্যার কারণে এবং আবহাওয়ার কথা বিবেচনা করে আর যাওয়া হচ্ছিল না।

IMG_20220816_100357.jpg

যদিও এর ভেতরে একদিন ঘুরতে যাওয়ার উদ্দেশ্যে বাসা থেকে বের হয়েছিলাম। কিন্তু শেষ পর্যন্ত একটা সমস্যার কারণে আর যাওয়া হয়নি। এদিকে শুনতে পাচ্ছি নদীতে পানি কমে আসার সময় হয়ে গেছে প্রায়। এই ট্রলার ভ্রমণটা যখন নদীতে অনেক পানি থাকে তখনই সবচাইতে বেশি মজা লাগে। সেজন্য গতকাল বিকেলে ফোন দিয়েছিলাম আমার অন্য আরেক বন্ধু প্রদীপকে। তাকে ফোন দিয়ে আমার পরিকল্পনার কথা বললাম। সে পরিকল্পনাটা শুনেই রাজি হয়ে গেলো।

IMG_20220816_091202.jpg

আমরা ঠিক করলাম সকাল দশটার ট্রলারে চরের দিকে যাব। সেখানে বেড়াবো তারপর যখন ইচ্ছা হবে তখন আমরা ফিরে আসবো। এই পরিকল্পনাটা ঠিক করা হলো ঘুরতে যাওয়ার জন্য। আজ সকালে আমি ঘুম থেকে উঠে একটু আগেই বাসা থেকে বেরিয়ে গিয়েছিলাম। আমার উদ্দেশ্য ছিল আমাদের শহরের পুরাতন একটি হোটেল থেকে নাস্তা করা। তারপর ঘুরতে যাওয়া। যেই হোটেলে নাস্তা করতে গিয়েছিলাম সেই হোটেলটির নাম ঠাকুরের হোটেল। একটা সময় এখান থেকে অনেক নাস্তা করেছি। কিন্তু এখন আর সেই হোটেলটিতে তেমন একটা যাওয়া হয় না।

IMG_20220816_101118.jpg

যাই হোক আমি নয়টার দিকে সেই হোটেলে গেলাম। গিয়ে লুচি আর ডাল সাথে মিষ্টি দিয়ে নাস্তা করলাম। সবজি দিয়ে তারা এক ধরনের ডাল রান্না করে। সেই ডাউলের সাদ অতুলনীয়। সেখানকার খাবারের স্বাদ মুখে লেগে থাকার মতো। যার ফলে আমি খেতে খেতে বেশ কয়েকটি লুচি খেয়ে ফেললাম। ভর পেট নাস্তা করে তারপর রওনা দিলাম বন্ধু প্রদীপকে যেখানে থাকতে বলেছি সেই জায়গার উদ্দেশ্যে। পরিকল্পনা মতো আমরা সেখান থেকে একসাথে দুজনে রওনা দেব সি এন্ড বি ঘাটের উদ্দেশ্যে। পরে সেখান থেকে চরের দিকে যাব।

IMG_20220816_105040.jpg

নাস্তা শেষ করে আমি যখন আমাদের পূর্ব নির্ধারিত জায়গায় পৌঁছলাম। দেখি প্রদীপ এখনো সেখানে পৌঁছেনি। তারপর আমি বন্ধু প্রদীপকে ফোন দিয়ে বললাম তুই কোথায়? প্রদীপ আমাকে জিজ্ঞেস করল তুই কি চলে এসেছিস? আমি বললাম হ্যাঁ। প্রদীপ তখন জানালো আমি অল্প কিছুক্ষণের ভিতর চলে আসছি। কয়েক মিনিটের মাথায় প্রদীপ সেখানে এসে হাজির হলো। তারপর দুজন মিলে সিএনবি ঘাটের উদ্দেশ্যে রওনা দিলাম।

IMG_20220816_102624.jpg

অল্পক্ষণেই আমরা সেখানে পৌঁছে গেলাম। কিন্তু সেখানে পৌঁছে এক সমস্যার সম্মুখীন হলাম। আমরা বুঝতে পারছিলাম না কোন ঘাট থেকে যাত্রীবাহী ট্রলারগুলো ছাড়ে। কারণ সিএনবি ঘাট ফরিদপুরের অনেক পুরাতন নৌবন্দর। সেখানে অনেকগুলো ঘাট রয়েছে। যে সমস্ত ঘাটে বিভিন্ন পণ্যবাহী জাহাজগুলো এসে মালপত্র খালাস করে।

IMG_20220816_103144.jpg

সিএনবি ঘাটে পৌঁছেই একটি জিনিস বুঝতে পারলাম আজকে ঘুরতে বের হওয়া ঠিক হয়নি। কারণ রোদের তাপে আমাদের প্রায় গা পুড়ে যাচ্ছিলো। আর যেই ট্রলার গুলিতে করে আমরা চরের উদ্দেশ্যে যাবো। সেই ট্রলার গুলিতে কোন ছাউনি নেই। কিভাবে এতটা সময় এই প্রখর সূর্যের তাপে বসে থাকবো সেটা নিয়ে ভয় পেয়ে গেলাম। কিন্তু এতদূর চলে এসেছি এখনো ফিরে যেতেও ইচ্ছা করছে না। তারপর চিন্তা করলাম যা হবে দেখা যাবে আগে তো রওনা দেই। (চলবে)

ফটোগ্রাফির জন্য ব্যবহৃত ডিভাইসহুয়াই নোভা 2i
ফটোগ্রাফার@rupok
স্থানপদ্মার চর

logo.png

Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power

250 SP500 SP1000 SP2000 SP5000 SP

Heroism_3rd.png

standard_Discord_Zip.gif


🇧🇩🇧🇩ধন্যবাদ🇧🇩🇧🇩


@rupok

Sort:  
 2 years ago 

হঠাৎ করে আজ অবশ্য প্রচন্ড রোদ গরম ছিল। কাল শোক দিবসের সময় আমরা যখন শোক দিবসের ব্যানার-টাঙ্গাচ্ছিলাম তখন প্রচন্ড বাতাস ছিল। কিছুদিন যাবত এমন বাতাস ছিল কিন্তু আজ হঠাৎ করে তার বিপরীত। কোন বাতাস নেই আবার প্রচন্ড রোদ গরম। তবে আমি এটা বলতে পারি, প্রচন্ড রোদ গরমে কষ্ট করেছেন বটে তবে বন্ধুর সাথে পদ্মর বুকে যতক্ষণ ছিলেন সেই সময়টা অবশ্যই আপনার ভালো লাগছিল। কারণ আমি লক্ষ্য করেছি যখন বন্ধু পাশে থাকে চলার পথে কষ্ট হলেও যেন সেই কষ্টটা কিছু মনে হয় না।

 2 years ago 

বন্ধুর পাশে থাকলে আসলেই কষ্ট খুব একটা বোঝা যায় না। তবে তারপরও এবারের ভ্রমণটা বেশ কষ্টদায় ছিলো।

 2 years ago 

টলারে চড়তে আমার অনেক ভালো লাগে। নদীর ভিতরে এরকম টলারে চড়ে ভ্রমণ করলে অনুভূতি থাকে অন্যরকম। আপনি আপনার বন্ধুর সাথে ভালো সময় পার করেছেন। আর আসলে যদি অতিরিক্ত রোদ থাকে তবে নদীর ভিতরে আর রোদ টা বেশি পড়ে। ছাউনি না থাকে তাহলে তো খুবই কষ্ট হয়। ধন্যবাদ আপনাকে সুন্দর ফটোগ্রাফি গুলো এভাবে মুহূর্তগুলো শেয়ার করার জন্য ভাই।

 2 years ago 

ট্রলারে ছাউনি থাকলে এতটা কষ্ট হতো না।

 2 years ago 

রোদ গরম এ কষ্ট হয়েছে বটে, কিন্তু এটাও যে আপনি মজা করেছেন। সময় গুলো এভাবেই মনে থেকে যায়। ভালো খারাপের সাথে।

 2 years ago 

মন্দ বলেননি। সময়গুলো আসলে এভাবেই মনে থেকে যায়।

 2 years ago 

দাদা ভাল লাগলো যে আপনিও আমার মত ঘুরতে পছন্দ করেন। অনেক সুন্দর হয়েছে আপনার পোস্টটি।

 2 years ago 

অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে আপনার সুন্দর মন্তব্যের জন্য। আপনিও যে ঘুরতে পছন্দ করেন এটা জেনে ভালো লাগলো।

 2 years ago 

নৌকা ভ্রমণের জন্য আসলে প্রকৃত সময় বর্ষাকালের শেষের দিকে। ঠিক এই সময়ে বৃষ্টিপাত খুব একটা হয় না আর নদীতেও প্রচুর পানি থাকে। তাই নৌকা ভ্রমণের জন্য সঠিক সময়টাই বেছে নিয়েছেন। কিন্তু এই সময় নৌকা ভ্রমন করার আরেকটি সমস্যা হচ্ছে মাথার উপর প্রখর রোদ। ছাউনী ছাড়া এই নৌকা গুলোতে প্রখর রোদের মধ্যে ভ্রমন করা খুবই কষ্টসাধ্য ব্যাপার। তাই বলে রোদ কে ভয় করে তো ভ্রমণ করার ইচ্ছাটা দমিয়ে রাখা যায় না।
ধন্যবাদ আপনাকে।

 2 years ago 

একদম ঠিক বলেছেন। রোদের ভয়ে তো আর থেমে থাকা যাবে না।

 2 years ago 

থেমে গেলেই তো অনেক কিছু মিস হয়ে যেত।

 2 years ago 

হোটেলটির নাম ঠাকুরের হোটেল।

বাহ,বেশ ভালো নাম তো।মনে হয় নামের পিছনে নিশ্চয়ই কোনো কারন লুকিয়ে আছে।যাইহোক আপনারা দারুণ সময় পার করেছেন,বর্ষাকালে ও রোদের জন্য ছাতা ব্যবহার করতে হচ্ছে এটা খুবই হতাশার ।আমাদের দেশেও ভাইয়া।ধন্যবাদ আপনাকে।

 2 years ago 

হোটেলটির নামের পেছনের কারণটা আমার জানা নেই। তবে ছোটবেলা থেকে এই নামই শুনে আসছি।

 2 years ago 

এখন বাইরে যেমন রোদ সাথে ছাতা ছাড়া কোথাও বেড়ানো যাবে না। ছাতা ছাড়া বাইরে গেলে মনে হয় ঝলসে যাচ্ছি। ভাইয়া আপনি আর আপনার বন্ধু পদ্মার চরে অনেকটা সময় উপভোগ করেছেন কিন্তু রোদের কারণে হয়তো আপনাদের একটু কষ্ট হয়েছে। তাহলেও জায়গাটা অনেক অসাধারণ ছিল ভাইয়া ।এমন ধরনের জায়গাই ঘুরতে পারলে মনটা আসলেই অনেক ভালো হয়ে যায়। ধন্যবাদ ভাইয়া এত সুন্দর একটি পোস্ট আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য আপনার জন্য শুভকামনা রইল।

 2 years ago 

ছাতা নিলে আসলে কষ্ট অনেকটা কম হতো। এরপর থেকে এই ধরনের স্থানে গেলে অবশ্যই ছাতা সাথে নিয়ে যাবো।

 2 years ago 

ভাইয়া শীতের সময় পদ্মার চরে ঘুরে বেড়ানোর অনেক মজা রয়েছে। তবে বর্তমান তীব্র গরম ও তীব্র রোদের তাপে পদ্মার চরে ঘুরে বেড়ানো সত্যি অনেক কঠিন। ভাইয়া আপনার ভ্রমণের পরবর্তী পর্বটি পড়ার অপেক্ষায় রইলাম।

 2 years ago 

শীতের সময় ঘোরার অভিজ্ঞতাও রয়েছে। সেটা আসলেই অনেক মজার অভিজ্ঞতা ছিলো।

 2 years ago 

আবারো অনবদ্য কিছু ফটোগ্রাফি দেখার সুযোগ নদী, নদীর পাড় এসব আমার ভীষণ ভালো লাগে। আর আপনার লেখা হাত বেশ ভালো।

 2 years ago 

অসংখ্য ধন্যবাদ আপনার অনুপ্রেরণাদায়ক মন্তব্যের জন্য।

Coin Marketplace

STEEM 0.17
TRX 0.13
JST 0.028
BTC 59575.00
ETH 2607.14
USDT 1.00
SBD 2.43