ঈদ পরবর্তী দিনে গ্রামের বাড়িতে ঘুরতে যাওয়ার অভিজ্ঞতা।
বছরের দুটো ঈদ আমাদের জীবনে বেশ কিছু খুশির মুহূর্ত নিয়ে আসে। এজন্য সারা বছর এই ঈদ দুটোর জন্য আমরা অপেক্ষা করি। তবে এই দুটো ঈদের ভেতরে কিছুটা পার্থক্য আছে। রোজার ঈদে যেমন আমরা দিনভর আনন্দ করতে পারি। কুরবানীর ঈদে সেটা সম্ভব হয় না। কারণ কোরবানির ঈদের দিন আমাদের বেশ কিছু কাজ থাকে। সেই কাজগুলো শেষ করতে করতে প্রায় সন্ধ্যা হয়ে যায়। যার ফলে ঈদের দিন আর তেমন একটা ঘোরাফেরা করা হয় না।
আমরা পরিবারের সকলে মিলে ঠিক করেছিলাম ঈদের পরদিন আমরা গ্রামের বাড়িতে যাবো। দীর্ঘদিন সেখানে যাওয়া হয় না। আমাদের আরো দুই চাচার পরিবার সেখানে এসেছে ঈদ করতে। তাই চিন্তা করলাম গ্রামের বাড়িতে গেলে তাদের সাথে দেখা সাক্ষাৎ করা যাবে। এই চিন্তা করে আমরা ঠিক করে রেখেছিলাম ঈদের পরদিন গ্রামের বাড়িতে যাবো। যাই হোক যথারীতি ঈদের পরদিন আমরা গ্রামের বাড়িতে রওনা দিলাম। আমাদের বের হওয়ার কথা ছিল সকাল দশটার ভিতরে। কিন্তু বাসা থেকে বের হতে হতে প্রায় বারোটা বেজে গেলো। এসব ক্ষেত্রে সাধারণত যেটা হয় আরকি।
আমাদের গ্রামের বাড়ি আমাদের শহর থেকে খুব একটা বেশি দূরে নয়। মাত্র ৪০ কিলোমিটার মতো রাস্তা এবং রাস্তাটাও যথেষ্ট ভালো। সেজন্য সেখানে পৌঁছাতে আমাদের খুব একটা সময় লাগেনি। দীর্ঘদিন পর গ্রামের বাড়িতে গিয়ে বেশ ভালই লাগছিলো। কিন্তু গ্রামে প্রবেশ করার পর দেখতে পেলাম এখন এখানে ঈদ উদযাপনের থেকে অন্য একটি বিষয় নিয়ে মানুষের ভেতর খুব উত্তেজনা কাজ করছে। সেটি হচ্ছে গ্রামে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন চলছে। গ্রামের মানুষজন সেই নির্বাচন নিয়েই ব্যস্ত। সেই নির্বাচনের ঢেউ আমাদের বাড়িকেও স্পর্শ করেছিলো। কারণ আমাদের এক আত্মীয় চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন করছে।
আমরা পরিকল্পনা করে গিয়েছিলাম সারাদিন সেখানে কাটিয়ে বিকালের দিকে ফিরে আসবো। কিন্তু গ্রামে পৌঁছানোর পর নির্বাচনী কিছু কাজে যুক্ত হয়ে যাওয়ায় আমার আর সেদিন ফেরা হয়নি। যদিও পরিবারের বাকি সদস্যরা বিকালের দিকে শহরে ফিরে গিয়েছিলো। কিন্তু একটি বিশেষ কাজে আমাকে গ্রামে থেকে যেতে হয়েছিলো। গ্রামের নির্বাচন মানেই একটি উৎসবমুখর পরিবেশ। যদিও বিভিন্ন বিষয় নিয়ে সেখানে চরম উত্তেজনাও কাজ করে। মাঝে মাঝে সেই উত্তেজনা সংঘাতে পর্যন্ত পরিণত হয়।
অবশ্য নির্বাচনী এই পরিস্থিতির সঙ্গে আমার পরিচয় নতুন নয়। কারণ আমাদের পরিবারের অনেক সদস্য এর আগেও নির্বাচন করেছে। যার ফলে এগুলোর সাথে আমি মোটামুটি অভ্যস্তই বলা চলে। গ্রামে গিয়েছিলাম ঈদ পরবর্তী সময় সবার সাথে আনন্দ করতে। কিন্তু সেখানে গিয়ে নির্বাচনের কাজে এতটাই ব্যস্ত ছিলাম যে ঈদ পরবর্তী আনন্দ উদযাপনের কথা ভুলেই গিয়েছিলাম। যদিও সেই ব্যস্ততার ভেতর অন্য ধরনের মজা ছিলো।
গ্রামের বাড়িতে পৌঁছানোর পর বেশিক্ষণ বাড়িতে থাকতে পারিনি। অল্প সময়ের ভেতরেই চাচাতো ভাইদের সঙ্গে বাইরে বেরিয়ে পড়ি নির্বাচনী প্রচারণায় অংশগ্রহণ করতে। মোটরসাইকেলে করে পুরো এলাকা চোষে বেরিয়েছি। নির্বাচনী প্রচারণার জন্য সেই ঘোরাফেরা শেষ হয়েছে প্রায় রাত সাড়ে তিনটার দিকে। দীর্ঘ সময় এরকম ছুটাছুটির ফলে শরীর প্রচন্ড ক্লান্ত হয়ে পড়েছিলো। সাথে প্রচন্ড ক্ষুধাও লেগেছিলো। রাত প্রায় চারটার দিকে খাওয়া-দাওয়া করে তারপর বাড়িতে ফিরি ঘুমানোর জন্য। এভাবেই দেখতে দেখতে দিনটি কেটে যায়। যদিও আমার আর গতরাতে ঘুমানো হয়নি। কারণ বাড়িতে ফেরার পরই শুনি ফজরের আজান দিচ্ছে। তাই আমি নামাজ পড়ে অপেক্ষা করতে থাকি ভোরের আলো ফোটার জন্য। একটু আলো ফুটতেই আমি শহরের উদ্দেশ্যে গ্রামের বাড়ি ছেড়ে বেরিয়ে পড়ি।
আজকের মত এখানেই শেষ করছি। পরবর্তীতে আপনাদের সাথে দেখা হবে অন্য কোন নতুন লেখা নিয়ে। সে পর্যন্ত সবাই ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন।
ফটোগ্রাফির জন্য ব্যবহৃত ডিভাইস | হুয়াই নোভা 2i |
---|---|
ফটোগ্রাফার | @rupok |
স্থান | কামারখালী |
Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |
বাহ গ্রামের বাড়িতে তো ভাই আপনি অনেক ঘোরাফেরা করেছেন রাত্র সাড়ে তিনটা পর্যন্ত hyundai করে ঘুরাফেরা করেছেন অনেক চমৎকার সময় কাটিয়েছেন নিশ্চয়ই। আজকেই আবার লেখা পোস্ট করেছেন আপনার উপর দিয়ে বড় একটা দখল গিয়েছে একটু রেস্ট দরকার আপনার। ধন্যবাদ ভাই ভালো থাকবেন ঈদ পরবর্তী শুভেচ্ছা রইল।
এত দীর্ঘ সময় মোটরসাইকেলে ঘোরাফেরা করতে ভালো লাগেনা। শরীর ব্যথা হয়ে গিয়েছিলো।
হ্যাঁ ভাই মোটরসাইকেলে বেশিক্ষণ বসে থাকা যায় না আমি মাঝে মাঝে ভ্রমণ করি। আর গ্রামের রাস্তা সব সময় ভালো থাকে না তার জন্য কষ্ট আরও বেশি হয়।
ঈদ মানুষকে যেমন আনন্দ প্রদান করে থাকে, ঠিক তেমনি আপনজনদের সাথে একত্রিত হওয়ার সুযোগ করে দেয়। আপনি ৪০ কিলোমিটার শহরের পথ অতিক্রম করে গ্রামে আপনজনদের সাথে দেখা করতে গিয়েছিলেন, আরো বাইরে থাকা চাচারা এসেছিল, সব মিলিয়ে আপনজনদের একটি মিলন স্থান গড়ে দিয়েছে ঈদ।
ঈদের সবচেয়ে মজাই এখানে। প্রিয়জনদেরকে কাছে পাওয়া যায় ঈদের সময়।
ভাইয়া আপনি একদম ঠিক বলেছেন নির্বাচনের সময় একেবারে উৎসবমুখর পরিবেশ তৈরি হয়। একদিকে ঈদের আমেজ অন্যদিকে নির্বাচন সবকিছু মিলে অন্যরকম পরিবেশ তৈরি হয়েছে। আপনি আপনার গ্রামের বাড়িতে গিয়েছেন এবং নির্বাচনের কাজে ব্যস্ত সময় কাটিয়েছেন জেনে ভালো লাগলো। হঠাৎ করে এতটা পরিশ্রম করলে অনেক সময় অসুস্থ হওয়ার সম্ভাবনা থেকে যায়। কারণ বর্তমানে আবহাওয়া খুবই খারাপ। তবে যাই হোক আপনি ভালো আছেন এবং সুস্থভাবে বাসায় ফিরে এসেছেন এটাই আল্লাহর কাছে শুকরিয়া। শুভকামনা ও ভালোবাসা রইলো ভাইয়া।❤️❤️❤️
আপনার শুভ কামনার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
ভাইয়া শহর থেকে আপনার গ্রামের বাড়ি মাত্র 40 কিলোমিটার। তাই মনে হচ্ছে খুব বেশি দূরে নয়। আর গ্রামে গিয়েই আপনি ঈদ আনন্দ ভুলে নির্বাচনের আনন্দে মেতে উঠেছিলেন। সারাদিন অক্লান্ত পরিশ্রম করে ক্ষুধায় ক্লান্ত হয়ে পড়েছিলেন। আবার ভোর হতে হতেই শহরের উদ্দেশ্যে রওনা হয়েছিলেন। সব মিলিয়ে সেদিনের দিনটি আপনি খুবই ব্যস্ততম দিন হিসেবে পার করেছিলেন। আর সেই ব্যস্ততম সময় টুকু আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ।
আসলেই দিনটি প্রচন্ড ব্যস্ততায় কেটেছিলো।
ঈদ পরবর্তী দিনে গ্রামের বাড়িতে ঘুরতে যাওয়ার অনেক চমৎকার একটি মুহূর্তের গল্প আপনি আমাদের মাঝে তুলে ধরেছেন ভাইয়া ।ঈদ মানে আনন্দ এবং খুশি আর এই খুশিটা যদি পরিবারের সকলের সঙ্গে ভাগাভাগি করে নেয়া যায় তাহলে সবথেকে বেশি ভালো লাগে। আপনার সুন্দর এই মুহূর্ত আমাদের সকলের মাঝে শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।
আনন্দ ভাগাভাগি করলে সেটা আরও বেড়ে যায়। এই জন্য আমাদের উচিত আশেপাশের সকলের সাথে আনন্দ ভাগাভাগি করে নেয়া।
ভাই যা গরম পরেছে, আমার তো মনে হয় গ্রামে গিয়ে একটু হলেও যেন স্বস্থি পাওয়া যাবে। গ্রামের চারদিকটা খুব নিরিবিলি লাগলো। ঠান্ডা একটা পরিবেশ। নির্বাচনী প্রচার দেখে বেশ লাগলো ভাই। অনেক মানুষের সাথে দেখা হওয়া, কথা বলা। ভালই ধকল গেছে আপনার ওপর দিয়ে।
গ্রামে শহরের তুলনায় গরম কিছুটা কম দেখেছি। যার ফলে সেখানে সময় কাটাতে ভালোই লাগছিলো।
ঈদ পরবর্তী দিনে গ্রামের বাড়িতে ঘুরতে যাওয়ার অভিজ্ঞতাটি বেশ চমৎকার ছিলো। একদম ঠিক বলেছেন গ্রামের নির্বাচন মানেই উৎসব মুখর পরিবেশ। আপনার ঈদ পরবর্তী দিনে গ্রামের বাড়িতে ঘুরতে যাওয়ার অভিজ্ঞতাটি পরে বেশ ভালো লাগলো।
অনেকদিন পর নির্বাচনী পরিবেশে কিছুক্ষণ কাটালাম।
গতকাল আমিও গ্রামের বাড়িতে গিয়েছিলাম আমার চাচাদের জন্য কিছু ঈদ উপহার নিয়ে। তবে গ্রামে গেলে একটাই সমস্যা বেশি পোহাতে হয় তা হলো নেটওয়ার্ক সমস্যা। যাক তারপরও সারাদিন থেকে চলে এসেছি।
আপনার গ্রামীণ পরিবেশের ছবিগুলো সুন্দর ছিল। নির্বাচনের বেশ আমেজ ছড়িয়েছে বলছিলেন। যাক সবমিলিয়ে দিনটি ভালোই উপভোগ করলেন। দোয়া রইল 🥀
সব গ্রামেই দেখছি একই সমস্যা। আমাদের গ্রামেও মোবাইল নেটওয়ার্কে খুব সমস্যা।
৪০ কিলোমিটার রাস্তা গ্রামের মেঠো পথ ধরে গেলে কখন যে ফুরিয়ে যায় টের পাওয়া যায় না।আপনার গ্রামটি খুব সুন্দর, সবুজ প্রকৃতির মাঝে উৎসব কাটাতে ভালোই লাগে।ধন্যবাদ ভাইয়া।
গ্রামের রাস্তা দিয়ে চলাফেরা করতে অনেক মজা লাগে। কারন দেখা যায় বেশিরভাগ রাস্তা দুপাশ দিয়ে গাছ লাগানো। সেই জন্য রাস্তাগুলো ছায়াময় হয়ে থাকে।
যাক ভালোই হয়েছে ভাই। নির্বাচনের মজাটাও ভালোই লাগে। যদিও ঈদ এর মজা সম্পুর্ণ আলাদা।আমিও গ্রামে এসেছি। তবে ঈদ এর পরের দিন এর পরের দিন।
ঠিকই বলেছেন ঈদের মজা সম্পূর্ণই আলাদা।