মেঘলা আবহাওয়ায় প্রকৃতির সান্নিধ্যে কিছুক্ষণ।

in আমার বাংলা ব্লগ2 years ago

কেমন আছেন আমার বাংলা ব্লগের বন্ধুরা? আমি ভালো আছি। আশাকরি আপনারা ও ভালো আছেন।


গতকাল সকাল থেকেই আকাশটা মেঘলা ছিলো। এই ধরনের মেঘলা আবহাওয়ায় ঘুরে বেড়াতে আমার কাছে খুবই ভালো লাগে। তাই চিন্তা করছিলাম যে বন্ধু ফেরদৌসকে বলবো কিনা বিকালে বের হওয়ার জন্য। কিন্তু সিদ্ধান্ত নিতে পারছিলাম না। শেষ পর্যন্ত বিকালের দিকে ফেরদৌসকে ফোন দিলাম বাইরে ঘুরতে যাওয়ার জন্য। সে জানালো সে ইতিমধ্যে বাইরে বের হয়েছে সাথে এক বড় ভাইকে নিয়ে। আমাকে তখন সে বলল তাহলে তুমিও চলো। তিনজন একসাথে আড্ডা দেয়া যাবে। আমি সানন্দে রাজি হয়ে গেলাম। ফেরদৌস বললো তুমি তৈরি হয়ে বাসার নিচে নামো। আমি তোমার বাসায় আসছি।

IMG_20220803_170732.jpg

IMG_20220803_171129.jpg

আমি অল্প কিছুক্ষণের ভিতর তৈরি হয়ে নিচে নামতে যাচ্ছিলাম। এর ভেতরে ফেরদৌসের ফোন পেলাম যে সে বাসার নিচে এসেছে। আমি তাড়াতাড়ি করে নিচে নামলাম। তখন ফেরদৌস জানালো আমাদের সাথে যে বড় ভাই যাবে তিনিও একটু পরে এখানে আসবেন। তার জন্য আমরা কিছুক্ষণ অপেক্ষা করি। বলতে বলতে দেখি তিনিও এসে হাজির হয়েছেন। তিনি এসে পৌঁছানোর পর আমরা তিনজন রওনা দিলাম। অবশ্য তার আগে ছোট্ট করে নিজেদের ভেতর আলাপ করে নিয়েছি যে কোথায় যাবো। গন্তব্য ঠিক হয়েছিল পল্লী কবি জসীমউদ্দীনের স্মৃতি বিজড়িত রসুলপুর।

IMG_20220803_172206.jpg

IMG_20220803_172223.jpg

রসুলপুরের উদ্দেশ্যে রওনা দেয়ার কিছুক্ষণ পরই এক বিপত্তির সম্মুখীন হলাম। আমরা মোটরসাইকেলে তিনজন বসে ছিলাম। তার ওপর কারো মাথায় ছিল না হেলমেট। কিছুদূর আগানোর পর রাস্তার ভেতর আমাদেরকে দেখে ট্রাফিক পুলিশ সিগন্যাল দিল থামার জন্য। আমরা বুঝতে পারছিলাম থামলেই এখানে বিপদের সম্মুখীন হতে হবে। এই সমস্ত ট্রাফিক পুলিশ প্রচণ্ড ঘুষখোর হয়। তাই আর আমরা তার সিগনালে না থেমে তাকে এড়িয়ে অন্য রাস্তা দিয়ে চলে গেলাম। যেহেতু যাত্রাপথে বাধা পড়েছে তাই চিন্তা করলাম আজকে আর ওই দিকে যাব না। অন্য কোন জায়গা থেকে ঘুরে আসি।

IMG_20220803_180458.jpg

তখন তিনজনে মিলে সিদ্ধান্ত নিলাম আমরা চরের দিকে যাই। সেখানে প্রথমে কোন একটা জায়গায় বসে আড্ডা দেয়া যাবে। তারপর বাদবাকি পরিকল্পনা করব। সেই পরিকল্পনা অনুযায়ী আমরা চরের দিকে রওনা দিলাম। বেশ কিছুক্ষণ চলার পরে আমরা একটি জায়গায় নদীর উপর ব্রিজ দেখতে পেলাম। জায়গাটি আমাদের কাছে খুবই পছন্দ হলো। ব্রিজটি একদমই নিরিবিলি। তেমন কোন লোকজন নেই। আমরা তিনজন ব্রিজের উপর মোটরসাইকেল থামিয়ে ব্রিজের রেলিং এ বসে গল্প করতে লাগলাম। সেই জায়গার আশেপাশের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য আসলেই ছিল মনোমুগ্ধকর। আকাশ ছিল মেঘলা, সাথে মৃদু বাতাস বয়ে যাচ্ছিল। সবকিছু মিলিয়ে সময়টা আমরা খুব ভালোভাবে উপভোগ করছিলাম।

IMG_20220803_180510.jpg

বেশ কিছুক্ষণ আড্ডা দেয়ার পর আমাদের সাথের সেই বড় ভাই বলল চলেন সামনের একটি বাজার থেকে সিঙ্গারা খেয়ে আসি। সেই বাজারে সিঙ্গারা স্বাদ বেশ ভালো। বিকালের সময়টাতে এমনিতেই হালকা নাস্তা হলে মন্দ হয় না। তাই তার প্রস্তাবটা আমাদের কাছে পছন্দ হলো। তৎক্ষণাৎ তিনজন রওনা দিলাম সেই বাজারের উদ্দেশ্যে। সেই বাজারে গিয়ে আমরা একটি হোটেলে বসে সিংগারা খেতে লাগলাম। যদিও আজকে আর গরম সিঙ্গারা পায়নি। যে সিংগারা গুলো আমরা খেয়েছিলাম সেগুলো আগেই ভেজে রাখা ছিলো। যার ফলে খেতে খুব একটা বেশি ভালো লাগেনি। খাওয়া-দাওয়া হলে আমরা রওনা দিলাম অন্য একটি জায়গার উদ্দেশ্যে।

IMG_20220803_180534.jpg

যেখানটাতে আমরা এর আগেও গিয়েছি। জায়গাটির নাম আমার ঠিক মনে নেই। তবে নদীর পাড়ে খুব সুন্দর একটি জায়গা সেটি। সেখানে আমরা গিয়ে দেখি নদীর পানি বেশ বেড়েছে। কারণ আমরা আগে নদীর পাড় পর্যন্ত যেতে পারতাম হেঁটে। কিন্তু এখন সে সমস্ত জায়গা পানির নিচে ডুবে গিয়েছে। বুঝতে পারলাম পদ্মার পানি বাড়া শুরু হয়েছে। সেখানে বেশ কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে নদীর সৌন্দর্য উপভোগ করতে লাগলাম।

IMG_20220803_180518.jpg

এর ভিতরে দেখতে পেলাম একটি মাছ ধরার নৌকা ঘাটে এসে ভিড়লো। আমরা সেই জেলের কাছে জিজ্ঞেস করলাম মাছ আছে কিনা। তিনি জানালেন আছে। তিনি যখন মাছ নিয়ে তার নৌকা থেকে নামলেন মাছগুলো দেখে আমরা খুবই হতাশ হলাম। তিনি জানালেন দুপুর একটা দিকে তিনি বের হয়েছেন আর আমরা যখন তার মাছ দেখছি তখন প্রায় সন্ধ্যার কাছাকাছি সময়। এতটা সময়ে তিনি সামান্য কিছু মাছ পেয়েছেন। তিনি বলতে লাগলেন নদীতে আর আগের মত মাছ পাওয়া যায় না। তারপর সেই জেলে চলে গেলে আমরা আরো কিছুক্ষণ আড্ডা দেওয়ার পর সেই স্থান ত্যাগ করলাম। ইতিমধ্যে প্রায় সন্ধ্যা হয়ে গেছে। তাই আমরা যার যার মত সবাই বাড়ির দিকে রওনা দিলাম।

IMG_20220803_180550.jpg


আজকের মতো এখানেই শেষ করছি। পরবর্তীতে আপনাদের সাথে দেখা হবে অন্য কোন নতুন লেখা নিয়ে। সে পর্যন্ত সবাই ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন।


ফটোগ্রাফির জন্য ব্যবহৃত ডিভাইসহুয়াই নোভা 2i
ফটোগ্রাফার@rupok
স্থাননর্থ চ্যানেল

logo.png

Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power

250 SP500 SP1000 SP2000 SP5000 SP

Heroism_3rd.png

standard_Discord_Zip.gif


🇧🇩🇧🇩ধন্যবাদ🇧🇩🇧🇩


@rupok

Sort:  
 2 years ago 

আমি প্রথমে ভেবেছিলাম আপনার সেয়ার করা ফটোগ্রাফি গুলো পল্লী কবি জসীমউদ্দীনের স্মৃতি বিজড়িত রসুলপুরের। পরে সম্পূর্ন পোষ্ট পড়ে জানতে পারলাম যে আপনা পুলিশের তারা খেয়ে কোন চর এলাকায় গেছেন। যায়হোক ভালই লাগলো। ধন্যবাদ।

 2 years ago 

সেদিন আর রসুলপুরে যাওয়া হয়নি।

 2 years ago 

ভাই আপনি খুব চমৎকার একটি ইউনিক পোষ্ট শেয়ার করেছেন ৷আপনি মেঘলা আবহাওয়ায় প্রকৃতির সান্নিধ্যে বেশ সুন্দর সময় কাটিয়েছেন ৷নদীর পারে ঘুরতে আমাকেও অনেক ভালো লাগে ৷আর আপনি বেশ চমৎকার ছবিও তুলেছেন ৷সব মিল বেশ সুন্দর সময় কাটিয়েছেন ৷
ধন্যবাদ দাদা ভালো থাকবেন

 2 years ago 

নদীর পাড়ে চমৎকার আবহাওয়ায় সময় কাটাতে মনে হয় সবারই ভালো লাগে।

 2 years ago 

ভাইয়া আপনি তো নদীর পাড়ে সময় বেশ ভালই কাটিয়েছেন দেখছি তাও আবার তিন বন্ধু মিলে।বিকেল বেলার সময়টা একটু ঘুরাঘুরি করলে শরীর টা অনেক টা চাঙ্গা হয়। আর আপনার ফটোগ্রাফি গুলো ও বেশ চমৎকার হয়েছে।ধন্যবাদ ভাইয়া শেয়ার করার জন্য

 2 years ago 

ঠিকই বলেছেন বিকেলবেলা ঘোরাঘুরি করলে শরীর মন দুটোই চাঙ্গা হয়ে ওঠে।

 2 years ago 

এই সময় গুলোই প্রকৃতির সান্নিধ্যে না গিয়ে থাকা যায় না। এই ঝিরি ঝিরি বৃষ্টি। গা বাঁচাতে কাছের কোন কুঁড়েঘরে খানিকক্ষণের জন্য আশ্রয় নেওয়া এগুলো খুবই ভালো লাগে বর্ষাকালে।

 2 years ago 

একদম ঠিক বলেছেন। বৃষ্টির সাথে এই লুকোচুরি খেলার ভেতর অন্যরকম মজা আছে।

 2 years ago 

সত্যি কথা বলতে এরকম হঠাৎ করে ঘুরতে যাওয়ার প্ল্যান বেশ ভালই লাগে। আমিও এরকম টুকটাক করি। তবে এক্ষেত্রে আপনার সাথে আমার একটি মিল দেখলাম যে আমার মত আপনিও প্রকৃতির কাছাকাছি থাকতে বেশ ভালোবাসেন। আমিও সময় পেলে বিকেলের দিকে মাঝেমধ্যেই বিভিন্ন চাষের ক্ষেত বা নদীর ধারে ঘুরতে যাই। এরকম জায়গায় কয়েক ঘন্টা কাটানোর পরে মনটা বেশ শান্ত হয়ে যায়।

 2 years ago 

প্রকৃতির কাছাকাছি থাকতে আমি খুবই পছন্দ করি।

 2 years ago 

ভাইয়া আপনার পোস্টটি পড়ে মনে হচ্ছে চরে গিয়ে দারুন এক মনোরম পরিবেশ উপভোগ করেছেন। পাশাপাশি বন্ধুদের সাথে করে নিয়ে হোটেলে সিংগারা খাওয়ায় মজাই আলাদা। আপনার কাটানো দারুণ একটি মুহূর্ত আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।

 2 years ago 

ঠিকই বলেছেন বন্ধুদের নিয়ে হোটেলে গরম গরম সিঙ্গারা খাওয়ার মজাই আলাদা।

Coin Marketplace

STEEM 0.17
TRX 0.13
JST 0.028
BTC 59991.95
ETH 2664.96
USDT 1.00
SBD 2.45