হাতিরঝিলে কিছুটা সময়।
আমি এর আগে বিভিন্ন পোস্টে বলেছি ঢাকা শহর আমার কাছে মোটেই ভাল লাগেনা। ইট-কাঠের এই জঙ্গলে সবুজের ছোঁয়া বলতে গেলে প্রায় নেই। তবে এই শহরের অল্প কয়েকটি জায়গায় গেলে সেই সবুজের স্পর্শ দেখা যায়। সেই জায়গাগুলো আমার কাছে বেশ ভালো লাগে। সেই জায়গাগুলোতে গেলে আমার মনে হয় স্বাভাবিকভাবে নিঃশ্বাস নিতে পারি।
সেই জায়গাগুলো ভেতর একটি হচ্ছে হাতিরঝিল। যখনই ঢাকায় আসি তখনই চেষ্টা করি একবার হলেও হাতিরঝিল থেকে ঘুরে যাওয়ার। হাতিরঝিল প্রজেক্টটাকে দেখে আমার মনে হয়েছে গত ২০ বছরের ভিতর ঢাকা শহরে যতগুলো ভালো কাজ হয়েছে তার ভেতর সবচাইতে ভালো প্রজেক্ট হচ্ছে এই হাতিরঝিল। প্রতিদিন বিকালে হাজার হাজার মানুষ এখানে ঘুরতে আসেন। তাছাড়া সকালেও দেখা যায় অনেক মানুষ শরীরচর্চার জন্য এখানে আসেন।
মানুষের যাতায়াতের জন্য অনেক সুবিধা হয়েছে এই প্রজেক্টটির কারণে। সেই সাথে মানুষের চলাচলের জন্য এই হাতিরঝিলে চালু হয়েছে ওয়াটার বাস। যেটি যাতায়াতের জন্য খুবই আরামদায়ক এবং সময় সাশ্রয়ী একটি মাধ্যম হয়েছে। গতকালকে যখন আমার আম্মাকে নিয়ে এয়ারপোর্ট থেকে বাসায় ফিরছিলাম তখন দেখেছিলাম হাতিরঝিলের ওইখানে আতশবাজির চমৎকার প্রদর্শনী হচ্ছে পদ্মা সেতুর উদ্বোধন উপলক্ষে। কিন্তু তখন ঝামেলার ভেতর থাকায় আর সেই আতশবাজির প্রদর্শনী দেখা হয়নি। তখনই চিন্তা করেছিলাম আগামীকাল হাতিরঝিলে ঘুরতে যাবো।
আজকে সারাদিন প্রায় ঘরেই ছিলাম। বিকালের দিকে একটি কাজে বের হয়েছিলাম। তখন চিন্তা করলাম হাতিরঝিল থেকে ঘুরে আসি। বনশ্রী থেকে হাতিরঝিল একেবারেই কাছে। যার ফলে সেখানে হেঁটেই গেলাম। তাতে আমার একই সাথে দুটো কাজ হয়ে গেলো। দিনের হাঁটাটাও হয়ে গেলো আবার হাতিরঝিল ঘুরে ফিরে দেখতে পারলাম। ইচ্ছা ছিল হাতিরঝিল পৌঁছে ওয়াটার ট্যাক্সিতে করে কোথা থেকে ঘুরে আসবো। কিন্তু আমার সেখানে পৌঁছাতে একটু দেরী হয়ে যাওয়ায় আর ওয়াটার বাসে ওঠা হয়নি। কারণ তখন যদি ওয়াটার বাসে উঠতাম তাহলে হয়তো মাগরিবের নামাজটা মিস হয়ে যেতো।
সেজন্য আমি হাতিরঝিল দিয়ে বেশ কিছুক্ষণ ঘোরাফেরা করলাম। সাথে বেশ কিছু ছবিও তুলেছি। এই জায়গাটাতে আসলে মন এমনিতেই ভালো হয়ে যায়। প্রচুর মানুষ দেখা যায় এখানে। কেউ এসেছে বন্ধু-বান্ধবের সঙ্গে, কেউ আবার এসেছে এসেছে পরিবারের সঙ্গে, কেউবা এসেছে প্রিয়জনকে নিয়ে। সবাই এসে এখানে চমৎকার প্রাকৃতিক পরিবেশ উপভোগ করছে। ওয়াটার বাসগুলোতে কেউ কাজের জন্য যাচ্ছে আবার কেউ নিছক বিনোদনের জন্যেও চড়ছে।
মানুষের ভিড় যেখানে থাকবে সেখানে হকার ও থাকবে এটাই স্বাভাবিক। এখানে বিভিন্ন রকম হকার দেখা যাচ্ছিলো। যদিও তারা সংখ্যায় খুব বেশি ছিলো না। কেউ সেখানে হাওয়াই মিঠাই বিক্রি করছিলো, কেউ বাদাম আবার কেউ বসেছিল ওজন মাপার যন্ত্র নিয়ে। কেউ আবার ভিক্ষা করার জন্য সেখানে ঘুরছিলো। প্রচুর মানুষ থাকা সত্তেও জায়গাটা খারাপ লাগছিল না। আমি বেশ কিছুক্ষণ সেখানে ঘোরাফেরা করলাম। তারপর সন্ধ্যার ঠিক আগে সেখান থেকে ফিরে এলাম।
আজকের মতো এখানে শেষ করছি। পরবর্তীতে আপনাদের সাথে দেখা হবে অন্য কোনো নতুন লেখা নিয়ে। সে পর্যন্ত সবাই ভাল থাকুন সুস্থ থাকুন।
ফটোগ্রাফির জন্য ব্যবহৃত ডিভাইস | হুয়াই নোভা 2i |
---|---|
ফটোগ্রাফার | @rupok |
স্থান | হাতিরঝিল |
Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |
হাতিরঝিল জায়গাটা আমার ভীষণ ভালো লাগে। মাঝে মধ্যেই ওখানে ঘুরতে যাই। আপনি এসে ঘুরে গেলেন আমাদের তো বলতে পারতেন ভাইয়া। ফটোগ্রাফি গুলো দেখে ভীষণ ভালো লাগলো। আপনার জন্য শুভ কামনা রইলো ভালো থাকুন।
হয়তো কোন একদিন এমনিতেই আমাদের দেখা হয়ে যাবে।
হাতিরঝিল অনেকবার যাওয়া হয়েছে। জায়গাটা আসলে খুবই ভালো লাগে। আপনি তো এখানে ঘুমিয়ে দারুণ কিছু ফটোগ্রাফি করেছেন। চমৎকার লাগছে ফটোগ্রাফি গুলো। ধন্যবাদ প্রিয় ভাই
জায়গাটা এত সুন্দর যে এখানকার ছবিগুলোও ভালো আসে।
হাতিরঝিল আমার ফেভারিট একটি জায়গা একসময় মাঝেমধ্যেই বিকেলে সময়টা পার করতাম হাতিরঝিলে এখন অবশ্য তেমন একটা সময় হয়ে ওঠে না হঠাৎ মাঝেমধ্যে যাওয়া হয়। আপনার সুন্দর ফটোগ্রাফির মাধ্যমে অনেকদিন পর দেখতে পেয়ে খুবই ভালো লাগলো।
আপনার মত আমারও অত্যন্ত পছন্দের একটি জায়গা এই হাতিরঝিল।
কলেজ জীবনে ক্লাস ফাকি দিয়ে অনেক আড্ডা দিয়েছি হাতিরঝিলে, কত রাগ, ঝগড়া, অভিমান, বন্ধু, স্মৃতি জড়িয়ে আছে এই হাতিরঝিলে। তবে এখন আর সেই অনুভূতি পাইনা হাতিরঝিলে গেলে, পরিবেশটা আগের মত নেই, তবে খুবই ভালো লাগলো পুরোনো কিছু স্মৃতি মনে পড়ে গেল আপনার ফটোগ্রাফি দেখার কারণে, এই জায়গাগুলোতে আমরা অনেক আড্ডা দিয়েছি।
তার পরেও এই অঞ্চলের মানুষের কাছে এটাই সময় কাটানোর সবচাইতে ভালো জায়গা।
আগে প্রায় সপ্তাহেই হাতিরঝিল যাওয়া হতো। তবে এখন আর খুব একটা যাওয়া হয় না। সত্যি বলতে হাতিরঝিল রাতের বেলা আমার কাছে বেশি ভালো লাগে। আপনি বেশ কিছু ফটোগ্রাফি করেছেন এর মধ্যে সূর্য ডুবার আগ মুহুর্তের ছবিটা পারফেক্ট ছিলো ভাই। আপনি খুব সুন্দর সময় কাটিয়েছেন বুঝাই যাচ্ছে। ভালো থাকবেন ভাই।
হাতিরঝিল আমার কাছে সব সময়ই ভালো লাগে। তবে সবচাইতে বেশি ভালো লাগে ভোর বেলায়। যখন লোকজন খুব কম থাকে একদম নিরিবিলি পরিবেশ থাকে তখন।
হাতিরঝিল জায়গাটি খুবই সুন্দর।প্রত্যেকটি ছবি দেখে মন ছুঁয়ে গেল।আমার মনে হয় হাতিরা এখানে স্নান করতো বা জল খেত এইজন্য এর এইরকম নাম।আশা করি দারুণ সময় কাটিয়েছেন এবং সবুজের স্পর্শ পেয়েছেন।ধন্যবাদ ভাইয়া।
জায়গাটির নাম এরকম হওয়ার কারণ আমার মনে হয় আপনি যেটা বলেছেন সেটাই হবে।
দীর্ঘ বছর ঢাকাতে থাকার পরও কখনও হাতির ঝিল যাওয়া হয়নি। মূলত আমি অফিস টু বাসা এভাবেই কাটিয়েছি দিন। যা হোক যখন মানুষের মন রিফ্রেশ করার দরকার হয় তখন এমন জায়গার গুরুত্ব বোঝা যায়। ওজন মাপার যন্ত্র কিংবা ফুল বিক্রেতা এমন জায়গুলোতে বেশী দেখা যায়। সময় ভাল কাটুক এই প্রার্থনা করি। ভাল থাকবেন।
এরপরে ঢাকা গেলে চেষ্টা করবেন হাতিরঝিলে অবশ্যই কিছুটা সময় কাটানোর।
নিঃসন্দেহে !! আপনি একদম যথার্থই বলেছেন গত বিশ বছরে ঢাকা শহরে যত কাজ হয়েছে তার মধ্যে হাতিরঝিলে প্রজেক্টটি অন্যতম। জায়গাটা এতটাই সুন্দর সেখানে গেলে আর আসতে ইচ্ছা করেন। অনায়াসেই বেশ কিছুটা সময় কাটানো যায়। বিশেষ করে আপনার ফটোগ্রাফিতে হাতিরঝিলের সৌন্দর্য খুব ভালোভাবে ফুটে উঠেছে। ঢাকা শহরের বুকে ওয়াটার বাসে করে বিভিন্ন জায়গায় যাওয়া যায় এটা অকল্পনীয়।
ধন্যবাদ আপনাকে।
ঠিকই বলেছেন। ঢাকা শহরের মানুষ যানবাহনে যে পরিমাণ কষ্ট করে সেই তুলনায় ওয়াটার বাস আসলেই অকল্পনীয়।