মানুষ আমি আমার কেনো পাখির মতো মন। ১০% লাজুক খ্যাক এর।

in আমার বাংলা ব্লগ3 years ago (edited)

কেমন আছেন আমার বাংলা ব্লগের বন্ধুরা? আমি ভালো আছি। আশাকরি আপনারা ও ভালো আছেন।


অনেক ছোটবেলা থেকেই আমার সব সময় ঘুরে বেড়াতে ভালো লাগতো। বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ঘুরার ইচ্ছা টাও বাড়ছিলো। মনে হতো সব সময় যদি আমি পাখির মত ডানা মেলে মুক্ত আকাশে ঘুরতে পারতাম। কিন্তু ছোটবেলায় মানুষ ইচ্ছা থাকলেও সব কিছু করতে পারে না। যখন একটু বড় হলাম তখন নিজের ইচ্ছাটা কে বাস্তবে রূপ দেয়ার একটা সুযোগ পেলাম। একটা সময় ছিল যখন অনার্সে পড়ছিলাম। তখন কিছুদিন পরপরই আমাদের বন্ধু-বান্ধবদের গ্রামে যাওয়ার ইচ্ছা হতো। আমাদের বন্ধু বান্ধবের সার্কেলটা অনেক বড় ছিলো। কিন্তু আমরা ৪/৫ জন ছিলাম যাদের কাছে গ্রামটা অন্য রকমের এক আকর্ষণের বিষয় ছিলো। তো কিছুদিন পরপরই আমাদের গ্রামে ঘুরতে যেতে ইচ্ছা করতো। কিন্তু আমাদের সবারই গ্রামের বাড়ি একটু দূরে। সেজন্য আমরা নির্ভর করতাম আমাদের এক বন্ধুর উপর। যে পড়ালেখার জন্য শহরে থাকে। কিন্তু শহর থেকে মাত্র ৮ কিলোমিটার দূরে তার বাড়ি।

IMG_20210909_163830.jpg

স্থান-লিংক


IMG_20210909_163933.jpg

স্থান-লিংক


IMG_20210909_163851.jpg

স্থান-লিংক


IMG_20210909_163914.jpg

স্থান-লিংক


ওর বাড়ির এলাকায় একদম গ্রামীণ পরিবেশ। যেমনটা আমরা পছন্দ করি। এই জন্য আমরা কিছুদিন পরপরই ওর বাড়িতে বেড়াতে যেতাম। যেতে যেতে পড়ে এমন একটা অবস্থা হয়ে গেলো। যে ওদের বাড়িটা আমাদের কাছে নিজের বাড়ির মত লাগতে লাগলো। ওদের বাড়িতে আমরা সব সময় তিন চারজন একসঙ্গে যেতাম। গ্রামীণ পরিবেশে গিয়ে আমরা সবাই খুব মজার সময় কাটাতাম।


IMG_20210909_172333.jpg

স্থান-লিংক


IMG_20210909_172409.jpg

স্থান-লিংক


গাছের ছায়ায় বসে আড্ডা দেয়া। নদীতে গোসল করা, পুকুর থেকে মাছ ধরা, গাছ থেকে ফল পেড়ে খাওয়া, আর রাতের বেলায় কার্ড খেলা। মোটকথা প্রতিটা মুহূর্ত আমরা খুবই উপভোগ করতাম। এভাবে গ্রামীণ পরিবেশে দু-এক দিন কাটিয়ে আবার বাড়িতে ফিরে আসতাম। এই রুটিন চলেছে দীর্ঘদিন। এমনকি পড়ালেখা শেষ করে যারা আমরা আমাদের এলাকাতেই চাকরি করছিলাম। মাঝেমাঝেই বৃহস্পতিবার রাতে ওদের বাড়িতে চলে যেতাম কয়েকজন মিলে। গিয়ে সারারাত আড্ডা চলতো। পরদিন যথারীতি সারাদিন বিভিন্ন মজার কর্মকাণ্ডে ব্যস্ত থাকতাম। তারপর সন্ধ্যা হলে ফিরে চলে আসতাম। কিন্তু ওর বিয়ে হয়ে যাওয়ায় আমাদের এই গ্রামীণ পরিবেশে যাওয়াটা বন্ধ হয়ে গেলো।


তারপরেও আমরা এখনো মাঝে মাঝে সময় পেলে ওর এলাকায় যাই। ও এখন এলাকায় ব্যবসা করে। টেলিভিশন, ফ্রিজ, হোম এপ্লায়েন্স এর শোরুম দিয়েছে। ভালোই ব্যবসা করছে। আমরা বন্ধু-বান্ধব যারা আছি তারা একটু অবাক হয়েছি ওর এই পাকা ব্যবসায়ীর আচরণে। কারণ আমরা আগে মনে করতাম ও কিছুটা বাউন্ডুলে স্বভাবের। কিন্তু মানুষ সময়ের সাথে অনেক পরিবর্তন হয়। ওর ও পরিবর্তন হয়েছে। ওদের এলাকায় যাওয়ার একটা অন্যতম কারণ হচ্ছে ওদের এলাকাটা খুবই সুন্দর। ওদের বাড়ির এলাকা একদম পুরোপুরি খাঁটি গ্রাম। কিন্তু ওদের বাড়ি থেকে বাজারের দূরত্ব বেশি না। বাজারের এলাকাটা আবার অনেকটা শহুরে চেহারা পেয়েছে। যার ফলে ওদের এলাকায় গেলে গ্রাম এবং শহর একটা মিশ্রন পাওয়া যায়।

IMG_20210909_174451.jpg

স্থান-লিংক


IMG_20210909_172855.jpg

স্থান-লিংক


আমি আমার যে বন্ধুর সঙ্গে সব সময় ঘুরে বেড়াই। ও আজ দুপুরে আমাকে ফোন দিয়ে বলল রাফসানদের এলাকায় যাবি? আমি বললাম যাওয়া যায়। তখন আমরা একটা সময় ঠিক করে এক জায়গায় দেখা করলাম। সেখান থেকে আমরা আমার বন্ধুর এলাকার উদ্দেশ্যে রওনা দিলাম। স্টিমিট এ কাজ শুরু করার পর আমার একটা অভ্যাস দাঁড়িয়ে গিয়েছে। কোথাও গেলে ছবি তোলা শুরু করি। আজকেও আমি যখন আমার বন্ধুর জন্য অপেক্ষা করছিলাম। তখন কাছেই ছিল একটি বাজার। সেই বাজারে গিয়ে আমি কিছু ছবি তুললাম। কয়েকটা ছবি তোলার পর আমার বন্ধু আমাকে ফোন দিয়ে বলল তুই কোথায়। আমি বললাম বাজারের এখানে এসেছি। পরে আমার ঐ বন্ধু মোটরসাইকেল নিয়ে বাজারের ওইখানে আসলে আমরা আমাদের ওই গ্রামীণ বন্ধুর উদ্দেশ্যে রওনা দেই।

IMG_20210909_171405.jpg

স্থান-লিংক


IMG_20210909_171357.jpg

স্থান-লিংক


IMG_20210909_171414.jpg

স্থান-লিংক


IMG_20210909_184355.jpg

স্থান-লিংক


IMG_20210909_185329.jpg

স্থান-লিংক


আমরা এখন আর ওই বন্ধুর বাড়িতে যাই না। এখন সরাসরি ওর দোকানে যাই। দোকানে গিয়ে ওর সঙ্গে কিছুক্ষণ আড্ডা দিলাম। তারপর ওর বাড়ির কাছেই একটা জায়গা আছে। আমাদের খুবই পছন্দের জায়গাটা। সেখানে গিয়ে কিছুক্ষণ বসে থাকি। তারপর আবার ওর দোকানে ফিরে আসি। তারপর চা, সিঙ্গারা, সমুচা আর দই খেলাম। তার কিছুক্ষণ পর আমরা ওর কাছ থেকে বিদায় নিয়ে বাড়ি ফিরে আসলাম। এভাবেই আমার আজকের ভ্রমণ শেষ হলো।

আজ এখানেই শেষ করছি।

আশা করি পোস্টটি আপনাদের ভালো লেগেছে। পরবর্তীতে আপনাদের সাথে দেখা হবে অন্য কোনো লেখা নিয়ে।

সে পর্যন্ত সবাই ভাল থাকুন সুস্থ থাকুন।


logo.png

Support @amarbanglablog by delegating STEEM POWER.
100 SP250 SP500 SP1000 SP2000 SP


🇧🇩🇧🇩ধন্যবাদ🇧🇩🇧🇩


@rupok


আমি রূপক। আমি একজন বাংলাদেশী। আমি বাঙালি। আমি বাংলায় মনের ভাব প্রকাশ করতে ভালোবাসি। আমি আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটিকেও ভালোবাসি।

Sort:  
 3 years ago 

ভালো লেগেছে আপনার এই ভ্রমন মূলক পোস্ট। আমার ঘুরে বেড়াতে খুব ভালো লাগে কিন্তু সময় স্বল্পতার কারণে একটি গন্ডির মাঝে বাধা পড়ছি। কিন্তু স্বপ্ন রয়েছে একটি সময় বের করে ঘুরবো। আপনার জন্য শুভকামনা রইল 💗

 3 years ago 

সময় ম্যানেজ করে ফেলুন ভাই। নিজের জন্য কিছু সময় সব সময় বরাদ্দ রাখবেন। ধন্যবাদ আপনাকে।

 3 years ago 

জি ভাই 💗
সময় বের করবোই আজ নয়ত কাল।
দোয়া রাখবেন।

 3 years ago 

খুব সুন্দর ছবি গুলো । ভাই তো ভাল ফটোগ্রাফি করেন । চালিয়ে যান । ধন্যবাদ আপনার এত সুন্দর পোষ্ট এর জন্য ।

 3 years ago 

অসংখ্য ধন্যবাদ ভাইয়া।সুন্দর ভাবে গুছিয়ে আপনি আপনার মনের ভাব প্রকাশ করেছেন।ঘুরতে আমিও খুব পছন্দ করি ভাবি সত্যি যদি আমি পাখি হতাম।

 3 years ago 

অসংখ্য ধন্যবাদ ভাই আপনাকে।

 3 years ago 

আপনার ঐ বন্ধুর গ্রামটি অনেক সুন্দর।প্রাকৃতিক পরিবেশটা একদম মনোমুগ্ধকর।এত সুন্দর গ্রামীণ পরিবেশের অভিজ্ঞতা আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।

 3 years ago 

আসলেই গ্রামটি সুন্দর। ধন্যবাদ আপনাকে।

বন্ধুদের সাথে কাটানো মুহূর্ত গুলো কখনো ভোলা যায় না।

গাছের ছায়ায় বসে আড্ডা দেয়া। নদীতে গোসল করা, পুকুর থেকে মাছ ধরা, গাছ থেকে ফল পেড়ে খাওয়া, আর রাতের বেলায় কার্ড খেলা। মোটকথা প্রতিটা মুহূর্ত আমরা খুবই উপভোগ করতাম।

সময় গুলো জীবন স্মৃতির খাতায় যেন স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকে।অনেক সুন্দর লিখেছেন ভাই, ফটোগ্রাফি গুলো খুবই ভালো ছিল।

 3 years ago 

যখন এগুলো লিখছিলাম। তখন সেই পুরনো স্মৃতিগুলো মনে পড়ছিল। ধন্যবাদ আপনাকে।

 3 years ago 

ঘুরতে পছন্দ করে না এমন মানুষ খুব কমই খুঁজে পাওয়া যাবে। আপনার বন্ধুদের সাথে ঘুরতে যাওয়ার বিষয়টা অনেক চমৎকার লেগেছে। আপনার গ্রাম ঘুরার গল্পটা অসাধারণ ছিল ভাই।

 3 years ago 

ধন্যবাদ ভাই আপনাকে।

 3 years ago 
গাছের ছায়ায় বসে আড্ডা দেয়া। নদীতে গোসল করা, পুকুর থেকে মাছ ধরা, গাছ থেকে ফল পেড়ে খাওয়া, আর রাতের বেলায় কার্ড খেলা

গ্রামের ছেলেরা এভাবেই তাদের কৈশোর অতিবাহিত করে থাকে। এটি প্রায় সকল গ্রামের ছেলেদের ক্ষেএেই প্রযোজ‍্য। আমি নিজেও এখন এভাবে অতিবাহিত করছি সময়গুলো।

এবং ভাই শিরোনাম টা আমার কাছে অসাধারণ লাগছে। এটা একটা গানের লাইন
মানুষ আমি আমার কেন পাখির মত মন

 3 years ago 

আমি নিজেকে অনেক ভাগ্যবান মনে করি। কারণ শহরে বাস করা সত্ত্বেও ছোটবেলায় এই ব্যাপারগুলি আমার জীবনে ঘটেছে। ধন্যবাদ আপনাকে।

 3 years ago 

🙂🙂

 3 years ago 

প্রাকৃতিক সৌন্দর্য এর ছবিগুলো খুব সুন্দর।প্রতিটি চলমান প্রাণশক্তি জীবদেরই পাখির মতো মন হয় বলে আমার মনে হয়।কারণ তারা স্থান পরিবর্তন হতে পারে।সেটা যেকোনো জীব হতে পারে।আমরা ও একধরনের পাখি।ধন্যবাদ ভাইয়া, সুন্দর ব্যাখ্যা দেওয়ার জন্য।

 3 years ago 

আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য।

 3 years ago 

আমরা মানুষ হয়েও আমাদের ইচ্ছাগুলো আসলেই পাখির মতো,সুন্দর একটা উদাহরণ দিয়েছেন ভাইয়া এটা। আমার ও একই অবস্থা,একদম বাড়িতে বসে থাকতে ইচ্ছা করেনা। খালি ঘুরাঘুরি করি। তবে আপনার ফ্রেন্ডদের সাথে ঘুরাঘুরি করার কাহিনীটা সুন্দর বেশ, আর আপনার গ্রাম যে কতটা সুন্দর তা তো আর বলার অপেক্ষাই রাখেনা। আর আপনার লিখার ধরণটাও এক্কেবারেই সহজ ভাষায় সুন্দর উপস্থাপনা।

 3 years ago 

অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে আপু।

 3 years ago 

সময় অনেক কিছু বদলে দেয়। সেই বন্ধু আজকে ব্যবসায়ী। প্রয়োজনের তাগিদে আসলে অনেককেই পরিবর্তিত হতে হয়। তারপরও আপনাদের দিনগুলো খুব আনন্দের ছিল যেমনটি বর্ণনা করেছেন রুটিন শুনে বুঝতে পারলাম। বিয়ে হয়েছে তাতে কি এখনো আবার চাইলেই মাঝেমাঝে এ রকম উপভোগ করতেই পারেন।

 3 years ago 

ঠিক বলেছেন ভাই। অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।

Coin Marketplace

STEEM 0.27
TRX 0.13
JST 0.032
BTC 62900.77
ETH 2949.76
USDT 1.00
SBD 3.59