শিশুশ্রম নামের অভিশাপ।১০% প্রিয় লাজুক খ্যাঁক এর জন্য।
বারান্দায় বসে দেখছিলাম প্রতিদিনকার মত জুয়েল নামের ছোট্ট ছেলেটি আজ ও কাজে যাচ্ছে। কতই বা বয়স হবে জুয়েলের? নয় অথবা দশ।অথচ এই বয়সেই প্রতিদিন ভোর বেলায় উঠে তাকে কাজে যেতে হয়। কিন্তু তার এই বয়সটা ছিলো শুধুই উপভোগের।
ছবির সোর্স-লিংক
স্কুলে যাবে, লেখাপড়া করবে, বাচ্চাদের সাথে খেলাধুলা করবে। কিন্তু দারিদ্র্যের কষাঘাতে সমস্ত স্বাদ-আহ্লাদ বিসর্জন দিয়ে এই বয়সেই তাকে সংসারের হাল ধরতে হয়েছে। ছোট মানুষ আনমনে রাস্তা দিয়ে হেটে যায় হাতে ধরা থাকে একটি প্লাস্টিকের বাটি। যেটাতে তার দুপুরের খাবার রয়েছে। এগুলি দেখে যে কোন বিবেকবান মানুষের ভেতরে মোচড় দিয়ে উঠবে। এটা কি তার কাজে যাওয়ার বয়স? কিন্তু তার সামনে কোনো পথ খোলা নেই। ঘরে অসুস্থ মা। বাবা থেকেও নেই, অন্য একটা বিয়ে করে জুয়েলদের ফেলে রেখে চলে গেছে। জুয়েলের বড় দুটি ভাই আছে যারা বিয়ে করে যার যার নিজের সংসার নিয়ে ব্যস্ত।
যার ফলে এই ছোট্ট জুয়েলকে প্রতিদিন সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত অমানুষিক পরিশ্রম করতে হয় দুবেলা-দুমুঠো আহারের জন্য। ঘরে অসুস্থ মা তার ওষুধের ব্যবস্থা ও জুয়েলকে করতে হয়। জুয়েলের মা একসময় মানুষের বাড়িতে কাজ করতো। কিন্তু অসুস্থতার কারণে এখন তাও করতে পারে না। এমন অসংখ্য জুয়েল আমার আপনার আশেপাশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে। অথচ সরকারের কিছু পদক্ষেপ এবং সমাজের সামর্থ্যবান মানুষদের একটু এগিয়ে আসা। এই জুয়েলদের জীবনটাকে পরিবর্তন করে দিতে পারে।
সবাই আজকে নিজের আখের গোছানো নিয়ে ব্যস্ত। জুয়েলদের নিয়ে চিন্তা করার মত সময় সমাজে খুব কম মানুষেরই আছে। যারা সামর্থ্যবান তারা কিভাবে জীবনটাকে উপভোগ করবে সব সময় সেই চিন্তায় ব্যস্ত। তারা টাকা খরচ এর ভেতরেই জীবনটাকে উপভোগ করতে চায়। টাকা দিয়ে শান্তি কিনতে চায়, সুখ কিনতে চায়। কিন্তু তারা এটা ভুলে গিয়েছে অন্যের মুখে হাসি ফোটানোর যে সুখ সেই সুখ আপনি কোন কিছুতেই পাবেন না।
সন্তানের জন্মদিনে একটি দামি গাড়ি উপহার না দিয়ে এই টাকায় কয়েকশো জুয়েলকে জীবনের মূল ধারায় ফিরিয়ে আনা যায়। পুরো পরিবার নিয়ে ইউরোপ টুরে যে পরিমাণ টাকা একটি ধনী পরিবার ব্যয় করে সেই টাকায় অনেক পরিবারের স্বপ্ন গড়ে দেয়া সম্ভব। প্রয়োজন শুধু সদিচ্ছার। শুধুমাত্র নিজের ইমেজের বিজ্ঞাপনের জন্য দান না করে সমাজ পরিবর্তনের জন্য দান করা উচিত। সেই দান থেকে আপনি মনে যে অনাবিল শান্তি এবং সুখ লাভ করবেন তা আর কোথাও থেকে পাবেন না।
কাগজে-কলমে সরকারের কিছু প্রকল্প আছে অসহায় দুঃস্থ মানুষদের জন্য। কিন্তু সেই প্রকল্পের সুবিধা কতটুকু এই ধরনের লোকদের কাছে পৌঁছায় সেটা খুবই প্রশ্নসাপেক্ষ। দরকার সত্তিকারের আন্তরিক প্রচেষ্টা। যদি সমাজের সর্বস্তরের লোক মিলে এগিয়ে আসে তাহলে এই ধরনের ছেলেদের জীবনের পরিবর্তন হতে খুব বেশি সময় লাগবে না।
শিশুশ্রম নামের এই অমানবিকতা দেখতে আর ভাল লাগেনা। আপনি যেখানেই যান সর্বত্রই এই শিশুশ্রম দেখতে পাবেন। হোটেল-রেস্তোরাঁ থেকে শুরু করে সাইকেল রিকশার গ্যারেজ যেকোনো জায়গায় দেখবেন এমন অসংখ্য শিশু অমানবিক হাড়ভাঙ্গা খাটুনি তে ব্যস্ত। যারা এই বাচ্চাদেরকে শিশুশ্রমে ব্যবহার করে তারা আবার বলে যে এই বাচ্চাদের উপকারের জন্যই তারা তাদের কে রেখেছে। কিন্তু সত্যি কথা হচ্ছে তারা এই বাচ্চাদের ব্যবহার করে অল্প টাকায় কাজ করিয়ে নিচ্ছে। এই পোস্টটা পড়ার পর যদি আপনি আপনার জায়গা থেকে একটি শিশুর জন্য কিছু করতে পারেন তাহলেই এই পোস্টটা করা সার্থক হবে।
আসুন আমরা সবাই মিলে যার যার অবস্থান থেকে এই ধরনের সুবিধা বঞ্চিত শিশুদের জন্য কিছু করার চেষ্টা করি। আজকের মতো এখানেই শেষ করছি। আশা করছি পোস্টটি আপনাদের ভালো লাগবে। পরবর্তীতে আপনাদের সাথে দেখা হবে অন্য কোন নতুন লেখা নিয়ে। সে পর্যন্ত সবাই ভাল থাকুন সুস্থ থাকুন।
Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |
🇧🇩🇧🇩ধন্যবাদ🇧🇩🇧🇩
আমি রূপক। আমি একজন বাংলাদেশী। আমি বাঙালি। আমি বাংলায় মনের ভাব প্রকাশ করতে ভালোবাসি। আমি আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটিকেও ভালোবাসি।
শিশুশ্রম এর কথা শুনলে আমার মাথা নষ্ট হয়ে যায়।আজকের শিশু আগামী দিনের ভবিষ্যত।আলহামদুলিল্লাহ আগের তুলনায় বাংলাদেশে শিশুশ্রম অনেক কম।আমাদের সকালের উচিত অবহেলিত শিশুদের পাশে দাড়ানো। অপনি সুন্দর একটা শিক্ষা মুলক বিষয় নিয়ে লিখেছেন ভাইয়া আপনার জন্য শুভ কামনা রইলো ♥️
ধন্যবাদ আপনাকে।
শিশুশ্রম আমাদের দেশের জন্য একটি বড় ধরনের অভিশাপ। আমাদের দেশে শিশুশ্রম এর প্রধান কারণ হলো দারিদ্রতা। ভাইয়া আপনি আপনার পোস্টে যথার্থই বলেছেন। আপনার পোস্ট একটি শিক্ষামূলক পোস্ট যা পরে আমি শিশুশ্রম সম্পর্কেঅনেক কিছু বিষয় সম্পর্কে জানতে পারলাম। ভাই আপনার জন্য অনেক অনেক শুভকামনা রইল।
ধন্যবাদ আপনাকে ভাই।
একদমই ঠিক বলেছেন ভাই যেখানেই যাই সেখানেই তাদের কে দেখতে পাওয়া যায়। অনেক গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয় নিয়ে পোস্ট করেছেন। আপনার পোস্ট পড়ে আমার অনেক ভালো লাগলো। অসংখ্য ধন্যবাদ ভাইয়া আপনার জন্য শুভকামনা রইলো।
ধন্যবাদ আপনাকে ভাই।
সত্যি ভাইয়া আজকে কথাটা পড়ে আমি একদম হতভম্ব হয়ে গেছি। একদম বুকে লাগলো। একদম আপনি এত বাস্তবতার কথা তুলে ধরেছেন। অনেক ভাল ছিল আর আসলেই দারিদ্রতার কারণে বয়স কোন মেটার করে না ছোট বয়সে হাল ধরতে হয়। বাবা থেকেও বাবা থাকে না। ঘরে মা অসুস্থ নিজের জন্য না হলেও। ছোট্ট ছেলেটি বুঝে যায় সংসারের হাল কতটা কষ্টদায়ক।এখন ছেলেটির বয়স নিজের আনন্দ-ফুর্তি আনন্দর ভেতর থাকবে সে একটু খাবারের জন্য অনেক দায়িত্ব নিয়ে ফেলছে।তাই আমাদের উচিত এগুলো পথ শিশুদের পাশে দাঁড়ানো।
একদম ঠিক বলেছেন।
৯/১০ বছরের ছোট একটি বাচ্চা ছেলে জুয়েল।এই বয়সে কঠোর পরিশ্রম নিত্যদিন।যে বয়সে তার পড়া শুনা ও খেলাধুলার সময়।সেই বয়সে খাটুনি।কি হবে জুয়েলের মতো হাজারো জুয়েল দেশের আনাচকানাচে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে।থাক না বড় লোক প্রতিবেশি,থাক না মানবতা ও শিশু শ্রম প্রতিরোধ সংস্থা কোন লাভ হবে না।কারণ আমরা নিজেরাই তো ঠিক নই।
যাই হোক অনেক সুন্দর একটি প্রতিবেদন লিখেছেন শিশুশ্রম নিয়ে খুবই ভালো লাগলো।ধন্যবাদ আপনাকে ভাই।
অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে ভাই।
শিশুশ্রম মারাত্মক ভাবে শিশুর মানসিক ও সামাজিক বিকাশ ব্যাঘাত ঘটায়। এটি একটি জঘন্য অপরাধ। এই অপরাধমূলক কাজ সমাজ থেকে দূর করতে হবে। অনেক সুন্দর লিখেছেন ভাই। ধন্যবাদ আপনাকে।
ধন্যবাদ আপনাকে ভাই।
শিশু শ্রম দিনে দিনে বেড়েই চলছে। না খেতে পেয়ে হাজার হাজার শিশু রাস্তায় রাস্তায় কাজের সন্ধানে ঘুরছে। আমাদের সমাজের এমন কিছু মানুষ রয়েছে তারা এই শিশুগুলোকে শ্রমের বিনিময়ে খাদ্য দিচ্ছে। তারা কখনোই শিশুগুলোর মানসিক ও শারীরিক কষ্ট গুলো অনুভব করতে পারছে না বা অনুভব করার চেষ্টা করছেন। তারা যদি সে শিশুগুলোকে নিজের সন্তানের সাথে তুলনা করতো তাহলে হয়তো এরকম হাজারো পথশিশু ভালোভাবে বাঁচতে পারতো। দুবেলা দুমুঠো খাবারের জন্য অন্য হয়ে কাজের সন্ধানে ঘুরে বেড়ানো শিশুর সংখ্যা পৃথিবীতে অনেক। শিশুশ্রম দিনে দিনে অভিশাপে পরিণত হচ্ছে। শিশুদের জীবনের উপর নেমে আসছে অন্ধকার। তারা তাদের সোনালী দিনগুলো কাটিয়ে দিচ্ছে অবহেলায়। ভাইয়া আপনার পোস্টটি পড়ে অনেক ভালো লাগলো আপনার জন্য শুভকামনা রইলো।
ধন্যবাদ আপনাকে আপু।
আমার আব্বুকে যখন আমি বলি আব্বু তুমি আল্লাহর রহমতে অনেক ভালো অবস্থানে আছো তাও তুমি একটুও বিলাশিতা করোনা কেনো। তখন আব্বু বলে আমার বিলাশিতার টাকা অন্যকে দান করলে সে অন্তত খেতে পরতে পারবে।আপনার আজকের লেখাগুলো একদক মন ছুঁয়ে গেলো আমার।
ধন্যবাদ আপনাকে আপু।
আমাদের সমাজের মানুষ বরই কঠিন। নিজের মতো করে চলে। আশে পাশের দিকে তাকাতে চাই না বেশি। আজ যদি তাকাতো তাহলে এতো ছোট বয়সে ছেলেটাকে কাজ করতে হতো না। এই বয়সে তার খেলাধুলা আর পড়াশুনা করার সময়। সেই বয়সে সে পরিবার সামলাচ্ছে। সুন্দর ভাবে আজকের পোষ্টটা উপস্থাপন করেছেন। শুভ কামনা।
ধন্যবাদ আপনাকে।
খুব সুন্দর করে লিখেছেন ভাইয়া। আমাদের দেশে এমন অনেক মানুষ আছে যারা টাকার উপরে ঘুমিয়েও সুখ খুঁজে পাইনা। আর জুয়েলের মতো এমন হাজারো শিশু এভাবে অমানুবিক পরিশ্রম করে তাদের জীবন চালাচ্ছে। আমাদের দেশের টাকাওয়ালাদের চোখে জুয়েলের মতো মানুষ কখনোই পড়ে না। তবে তাদের সামান্য কিছু টাকাই পারে এই মানুষ গুলোর জীবন বদলে দিতে। ধন্যবাদ আপনাকে এত সুন্দর একটি পোস্ট আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য।
ধন্যবাদ আপনাকে আপু।