উদ্দেশ্যহীন ঘোরাফেরা সাথে হালকা খাওয়া দাওয়া। ১০% সাইফক্স।

in আমার বাংলা ব্লগ2 years ago

কেমন আছেন আমার বাংলা ব্লগের বন্ধুরা? আমি ভালো আছি। আশাকরি আপনারা ও ভালো আছেন।


গত কয়েকদিন যাবত খাঁচা মুক্ত পাখির মতো বিভিন্ন জায়গায় ঘুরে বেড়াচ্ছি। সাথে আছে আমার বন্ধু। দুই বন্ধু মিলে শহরের বাইরে বিভিন্ন গ্রামাঞ্চলে ঘুরে বেড়াচ্ছি। কারণ আমরা দুজনেই শহরের কোলাহল থেকে দূরে যেতে পছন্দ করি। গ্রামের শান্ত নিরিবিলি নিস্তব্ধ পরিবেশ আমাদেরকে বরাবরই টানে। তাছাড়া এই সময়ে প্রকৃতি চমৎকার রূপে ধরা দেয় গ্রামের দিকে।

IMG_20220325_162236.jpg

শহরে থাকলে প্রকৃতির রূপ এর এই পরিবর্তনটা বোঝা যায় না। আগে যেমন আমাদের ঘোরার জায়গা অল্প কয়েকটা জায়গার ভেতর সীমাবদ্ধ ছিল। পরিচিত জায়গা গুলিতেই গিয়ে আমার সময় কাটাতাম। তবে এবার আমরা দুজন সিদ্ধান্ত নিয়েছি অচেনা বিভিন্ন এলাকায় আমরা চলে যাবো। তারপর সেই এলাকাটা ঘুরেফিরে দেখবো।

IMG_20220325_171002.jpg

এইভাবে ঘোরার ভিতর একটা অন্যরকম মজা আছে। আমাদের কাছে এমনিতেই গ্রামীণ পরিবেশ অনেক ভালো লাগে। গ্রামের আদিগন্ত বিস্তৃত ফসলের মাঠ ঘন সবুজ রঙে ছেঁয়ে আছে। গাছের পাতাগুলো নতুন উঠেছে। একদম উজ্জ্বল সবুজ রঙের পাতায় প্রতিটি গাছ ভরে আছে। বিভিন্ন ফলের গাছে মুকুল ধরে আছে। ফলের গাছ গুলোর দিকে তাকালেই জানান দিচ্ছে মধুমাস আগত প্রায়।

IMG_20220325_163757.jpg

দুই বন্ধুর বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলাপ করতে করতে এই যে ঘুরে বেড়ানো। এটা আমরা দুজনেই খুব উপভোগ করি। শুধু যে আমরা শহরের আশপাশে গ্রামে ঘুরে বেড়ায় ব্যাপারটা তেমন না। আমরা গত কয়েকদিন যাবত পরিকল্পনা করছিলাম এই বছরে কোথায় কোথায় ঘুরতে যাওয়া যায়। তারপর দুজনে একটি বিষয়ে একমত হয়েছি। যে এবার হাওড় অঞ্চলে ঘুরতে যাব ইনশাআল্লাহ। বর্ষার সময় হাওড়ে ঘোরার মজাই অন্যরকম।

IMG_20220325_171114.jpg

আমাদের এরিয়াতে কোন হাওড় নেই। তাই আমরা ঠিক করেছি কিশোরগঞ্জের মিঠামইনে যাবো ঘুরতে। যদিও সেটা এখনো পরিকল্পনার পর্যায়ে রয়েছে। বাস্তবায়ন আদৌ হবে কিনা সেটা এখনই বলতে পারছি না। কিন্তু বাস্তবে না হলেও আমরা দু'বন্ধু প্রায়ই এমন বিভিন্ন জায়গায় ঘুরতে যাওয়ার পরিকল্পনা করি। এই পরিকল্পনাতেও এক ধরনের মজা আছে।

IMG_20220325_163826.jpg

তবে এখন ঘুরতে যাওয়ার ক্ষেত্রে একটা সমস্যা হচ্ছে সাথে আর তেমন কোনো লোক পাই না। জীবিকার প্রয়োজনে বন্ধুবান্ধব সব দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে। তাই আমরা মাঝে মাঝে হিসাব করতে বসি কোন কোন বন্ধু আমাদের সাথে যেতে পারে। তাছাড়া আরও একটি পরিকল্পনা করছিলাম দুজন মিলে। আমরা আগে প্রায় প্রতিবছরই বর্ষার সময় ট্রলার নিয়ে পদ্মায় ভ্রমণ করতে যেতাম। বন্ধু-বান্ধবদের বড় একটা গ্রুপ থাকতো আমাদের সাথে। তাই আমরা পরিকল্পনা করছিলাম এবার ঈদের পরে যদি সবাই আসে তাহলে আমরা এরকম একটা ট্রলার ভ্রমণের আয়োজন করবো।

এরকম বিভিন্ন রকম পরিকল্পনা করতে করতে আমরা ঘুরছিলাম। ঘুরতে ঘুরতে এক সময় আসরের আযান দিয়ে দিলো। রাস্তার পাশেই একটি মসজিদের ওখানে মোটরসাইকেল থামিয়ে আমার নামাজ পড়ে নিলাম। নামাজ শেষ করে যখন মসজিদ থেকে বাইরে এসেছি। তখন দেখি মৃদু বাতাস বইছে। এত চমৎকার লাগছিলো সেটা। বাতাসে মন জুড়িয়ে যাচ্ছিলো।

IMG_20220325_163040.jpg

এই মৃদুমন্দ বাতাসের ভিতরে মোটরসাইকেল নিয়ে গ্রামের ভিতরে ঘোরার মজাই অন্যরকম। সন্ধ্যা হয়ে গেলে আমি আমার বন্ধুকে চললাম বললাম চলো কাবাব খেয়ে আসি। আমাদের শহরে একটি জায়গা আছে। সেখানকার কাবাব আমাদের খুবই পছন্দ। আমাদের মতে শহরের সবচাইতে ভালো কাবাব এখানে পাওয়া যায়। কাবাবের দোকানটা এমন আহামরি কিছু না খুবই ছোট এবং সাধারন। কিন্তু এখানে খাবারের মান অনেক ভালো।

IMG_20220325_184050.jpg

IMG_20220325_184041.jpg

IMG_20220325_184046.jpg

আমরা সেই কাবাবের দোকান পৌছাতে পৌছাতে সন্ধ্যা হয়ে গেলো। আমি বন্ধু ফেরদৌস কে বললাম তুমি এখানে বস। আমি নামাজ পড়ে আসি। তারপর আমি মাগরিবের নামাজ শেষ করে এসে কাবাব এবং চটপটির অর্ডার দিলাম। চটপটি আমার খুবই প্রিয়। এই দোকানের শুধু কাবাব না চটপটিও অত্যন্ত মজার। চটপটি সামনে আসার সাথে সাথেই খাওয়া শুরু করে দিলাম। যখন চটপটি প্রায় শেষ হয়ে গিয়েছে তখন মনে পড়লো আরে ছবি তুলতে ভুলে গেছি। তারপর সামনে কাবাব ছিল শুধু সেটারই ছবি তুললাম। কাবাব এর সাথে অবশ্য কাবাবের মসলা দিয়ে কয়লায় পোড়ানো একটি বন রুটি ও ছিল। এই বনরুটি দিয়ে কাবাব খেতে খুবই মজা লাগে। খাওয়া-দাওয়া শেষ করে দুজনে বাড়ির দিকে রওনা দিলাম।


আজকের মতো এখানেই শেষ করছি। পরবর্তীতে আপনার সাথে দেখা হবে অন্য কোন নতুন লেখা নিয়ে। সে পর্যন্ত সবাই ভাল থাকুন সুস্থ থাকুন।


ফটোগ্রাফির জন্য ব্যবহৃত ডিভাইসহুয়াই নোভা 2i
ফটোগ্রাফার@rupok
স্থানগেরদা গেরদা, চরকমলাপুর, ফরিদপুর।

logo.png

Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power

250 SP500 SP1000 SP2000 SP5000 SP

Heroism_3rd.png

standard_Discord_Zip.gif


🇧🇩🇧🇩ধন্যবাদ🇧🇩🇧🇩


@rupok

Sort:  
 2 years ago 

আসলেই আপনি যথাযর্থই বলেছেন। আমরা যাঁরা শহরের জীবনে বসবাস করি থাকি তাঁরা সবাই বন্ধী খাচার পাখির মত। আর আমরা যখন গ্রামের খোলা মেলা বাতাস পাই তখন ঘোরাফেরা করতে অনেক পছন্দ বা ভালোই লাগে।
আপনার গ্রামের ঘোরাফেরা গল্পটা আমার কাছে অনেক অনেক ভালো লেগেছে।

 2 years ago 

কয়লায় পোড়ানো বনরুটি,ভারী মজার ব্যাপার তো।তাছাড়া শহরের মানুষ গ্রামে গেলে বুঝতে পারে গ্রাম কতটা নিরিবিলি ও বিশুদ্ধ হাওয়া পাওয়া যায় ,অন্যরকম অনুভূতি।আপনারা দারুণ সময় কাটিয়েছেন, ধন্যবাদ ভাইয়া।

 2 years ago 

শুধু কয়লায় পোড়ানো না। সাথে কাবাবের মসলা মেশানো ছিলো। খেতে খুবই মজা লাগে এটা।

 2 years ago 

উম্ম ভাইয়া এই ধরণের খাবার গুলো কেন যেন নিতে পারিনা। দেখেই খেয়ে নিতে ইচ্ছে করছে ,দিলেন তো লোভ লাগিয়ে। তবে পরিবেশ টা অনেক সুন্দর।বাইকে করে ঘুরে ভালোই মজা পাচ্ছেন মনে হচ্ছে। ধন্যবাদ ভাইয়া।

 2 years ago 

এই কাবাব দেখলে আমার ও মাথা ঠিক থাকে না। যদিও এখন শারীরিক সমস্যার কারণে এ ধরনের কাবাব খুব কম খাই।

 2 years ago 

ভাইয়া আপনি যেমন ভোজনরসিক তেমনি ঘুরার ও রশিক। আমি আমার বাংলা ব্লগে আসার পরে দেখছি আপনি প্রচুর পরিমাণে ঘুরেন। এই শখটা আমার একসময় ছিল, কিন্তু এখন আমার পিছু টান টা বেড়ে যাওয়ার কারণে এখন আর আমার ঘোরা হয় না। আপনার বন্ধুকে নিয়ে ঘোরা এবং বিভিন্ন ধরণের প্ল্যান করা আমাদের সাথে এত সুন্দর করে গুছিয়ে শেয়ার করার জন্য, আপনার প্রতি রইল আন্তরিক অভিনন্দন।

 2 years ago 

সময় পেলেই ঘুরতে বেরিয়ে পড়বেন। দেখবেন মনটা ভালো থাকবে।

 2 years ago 

বনরুটি গুলো প্রথমে দেখে আমি ভাবলাম আলুর চপ। পরে আবার এটাও ভাবলাম যে এতোবড়ো তো আলির চপ হওয়ার কথা না। লিখা পড়ে বুঝলাম যে এটি বনরুটি। বেশ ইন্টারেস্টিং লাগছে দেখতে। আর কাবাব তো খুব ভালই লাগে।

 2 years ago 

এই দোকানের শিক কাবাব খুবই মজার। আমাদের পুরো ফ্রেন্ড সার্কেলের কাছে এই জায়গাটি খুবই পছন্দের।

 2 years ago 

ভাই আপনি তো দেখছি কিছুদিন যাবত শুধু ঘুরে বেড়াচ্ছেন। তবে এভাবে ঘুরে বেড়ানো খুবই ভালো। আমারও মাঝে মাঝে মনে চায় যে কোথাও ঘুরতে যাই। আপনি এই ঘুরতে বেরিয়ে আমাদের সাথে কিছু সুন্দর সুন্দর ফটোগ্রাফি শেয়ার করেছেন এগুলো খুবই ভালো ছিল। আর খাবারের কথা তো নাই বললাম। সেটা তো দেখেই লোভ লেগে গেলো। তবে আপনার পোষ্ট খুবই ভালো ছিল।

 2 years ago 

অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে আপনার চমৎকার মন্তব্যের জন্য।

 2 years ago 

আমি এবং আমার বন্ধু লিখন আমরা দুজন আপনাদের দুই বন্ধুর মতোই। সুযোগ পেলেই ঘুরতে যায়। এবং আমারও শহরের কোলাহল ভালো লাগে না তাই আমিও যায় গ্রামের দিকে ঘুরতে। গ্রামীণ প্রকৃতির মধ্যে আলাদা একটা মায়া টান আছে। কিশোরগঞ্জ মিঠাইন হাওর ফেসবুকে অনেক দেখেছি। পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করে ঘুরে আসেন। আপনার সুবাদে আমরাও দেখতে পাব🙂।

 2 years ago 

গত বছরে ইউটিউবে বিভিন্ন ভিডিও দেখে আমার প্রচন্ড ইচ্ছা হয়েছে মিঠামইন ঘুরতে যাওয়ার। পরিকল্পনা করেছি এখন যদি সব কিছু ঠিক থাকে তাহলে ইনশাআল্লাহ পরিকল্পনা বাস্তবায়ন ও হবে।

 2 years ago 

💖💖💖

 2 years ago 

খাবারের মান ভালো হলেও দাম অনেক বেড়ে গেছে। দামের তুলনায় এখন আর খাবারের মান ঠিক নেই বলেই আমার মনে হচ্ছে। এতগুলো টাকা দিয়ে কোনো ভালোমানের রেস্টুরেন্টে অনায়াসে খাওয়া যেত। যাই হোক ট্রলার ভ্রমণের পরিকল্পনা টা অন্তত বাস্তবায়ন করা যায় কিনা চেষ্টা করে দেখো।

 2 years ago 

সেই পরিকল্পনা মাথায় আছে। দেখা যাক কি হয়?

 2 years ago (edited)

গ্রামে গেলে আমিও ঠিক এই ভাবেই আমার ভাইদের সাথে উদ্দেশ্যহীন ভাবে ঘুরি। মোটরসাইকেল নিয়ে এইভাবে গ্রামের সুন্দর রাস্তা দিয়ে ঘুরতে অসাধারণ লাগে। যা বলে বোঝানো সম্ভব না। আপনার ঘুরে বেড়ানোর আমি নিজে ফিল করতে পারতেছি। দুই বন্ধু মিলে খুব সুন্দর একটি মুহূর্তকাটিয়েছেন দেখে বোঝা যাচ্ছে। প্রিয় দোকানে মাটন শিক কাবাব খেয়েছেন। এরকম একটি সুন্দর মুহূর্ত আমাদের মাঝে শেয়ার করে নেওয়ার জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ। শুভকামনা রইল আপনার জন্য।

 2 years ago 

চাপ না ওটা ছিলো মাটন শিক কাবাব। মুহূর্ত গুলি আসলেই খুব উপভোগ করেছি।

 2 years ago 

ভাইয়া আপনি যে প্রকৃতিপ্রেমী একজন লোক তা আমি আপনার পোস্ট দেখে বুঝতে পেরেছি। আসলে মানুষ সহ জীবিকার তাগিদে শহরে থাকলেও নাড়ির টানে গ্রামে ফিরেই।গ্রাম হলো মানুষের তৃপ্তির প্রাণ। আর তাইতো আপনার গ্রামে ঘোরাফেরার পোস্টটি দেখে খুবই ভালো লাগলো। আপনার বন্ধুকে নিয়ে গ্রামের গাছগাছালি, রাস্তাঘাট ঘোরাফেরা বেশ আনন্দের হয়েছে নিশ্চয়ই। তাছাড়া আপনারা আরো অনেক জায়গায় ঘুরতে যাবেন সেই পরিকল্পনা ও করছেন। আসলেই আমাদের সবারই মাঝে মাঝে কোথাও না কোথাও ঘুরতে যাওয়া দরকার। এতে করে আমাদের মন ভালো থাকে সেই সাথে প্রকৃতির সম্পর্কে অনেক কিছু জানা হয়। আপনাকে অনেক ধন্যবাদ এত চমৎকার একটি পোস্ট আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।

 2 years ago 

ভ্রমণ আপনাকে মানসিকভাবে চাঙ্গা রাখবে।এজন্য যখনই সময় পাবেন চেষ্টা করবেন সেটা দূরে বা কাছে হোক ভ্রমণ করতে।

Coin Marketplace

STEEM 0.17
TRX 0.15
JST 0.028
BTC 58015.02
ETH 2381.83
USDT 1.00
SBD 2.42