ভাসমান রেস্টুরেন্টে পরিবারের সাথে কিছুটা সময় কাটানো।
আমার গতকালকের পোস্টটি যারা পড়েছেন। তারা জানেন আমি গতকালকের পোস্টে আপনাদের সাথে পরিবার নিয়ে ঘুরতে বের হওয়ার কিছু চমৎকার অভিজ্ঞতা তুলে ধরেছিলাম। আজ তার পর থেকে শুরু করছি। পরিবার নিয়ে যখন সুইচ গেটে ঘোরাফেরা শেষ হয়ে গিয়েছে। তখন চিন্তা করলাম এখন কি করা যায়? কারণ আমরা ঘুরতে বের হয়েছি মাত্র অল্প কিছুক্ষণ। তার ভেতরেই আমাদের সুইচ গেটে ঘোরাফেরা শেষ। তখন আমার স্ত্রী বলল চলো আমরা পদ্মার পাড়ে সেই ভাসমান রেস্টুরেন্ট থেকে ঘুরে আসি। আমি তার সাথে দুষ্টুমি করে বললাম কথা ছিল তো যে কোন একটি জায়গায় ঘুরতে যাওয়ার। যেটা হয়ে গিয়েছে।
তাহলে চলো এখন বাড়ি ফিরে যাই। সে বলল এত তাড়াতাড়ি বাড়ি ফিরে যাব না। চলো পদ্মার পাড়ের সেই ভাসমান রেস্টুরেন্ট থেকে ঘুরে আসি। মনে মনে আমারও এমনই ইচ্ছা ছিল। কারণ অনেকদিন থেকেই তাদেরকে বলছিলাম তাদেরকে নিয়ে সেই ভাসমান রেস্টুরেন্টে যাবো ঘুরতে। সুইচগেট থেকে পদ্মার পাড়ের দূরত্ব খুবই কম। একটি রিক্সা নিয়ে অল্প কিছুক্ষণের ভেতরেই পদ্মার পাড়ে পৌঁছে গেলাম। পরে রিকশা থেকে নেমে হেঁটে কিছুদূর আগাতে লাগলাম। কারণ সেই ভাসমান রেস্টুরেন্ট পর্যন্ত রিক্সা যায় না। হেঁটেই যেতে হয়। যদিও রাস্তা খুব একটা বেশি নয়। যার ফলে আমরা অল্প কিছুক্ষণের ভেতরে সেই ভাসমান রেস্টুরেন্টে পৌঁছলাম।
সেই ভাসমান রেস্টুরেন্টে ঢুকেই আমার স্ত্রীর জায়গাটি পছন্দ হয়ে গেল। অবশ্য পছন্দ হওয়ার মতই জায়গা। নদীর উপরে ড্রাম এবং লোহার ফ্রেম আর উপরে কাঠ দিয়ে এই রেস্টুরেন্ট তৈরি করা হয়েছে। পানির উপরে ভেসে থাকার কারণে মাঝে মাঝে সামান্য দুলতে থাকে। সে এক চমৎকার অনুভূতি। সেই রেস্টুরেন্টের সামনের দিকে কিছু চেয়ার পেতে রাখা হয়েছে। যে সমস্ত চেয়ার সাধারণত সমুদ্রের পাড়ে দেখা যায়। সেই চেয়ারগুলিতে বসে বসে আপনি নদীর সৌন্দর্য উপভোগ করতে পারবেন। সাথে ইচ্ছা করলে হট কফি বা কোল্ড কফির মগে চুমুক দিতে পারবেন। সাথে আরো বেশ কিছু খাবার-দাবারের ব্যবস্থা আছে।
কিন্তু খাবার খাওয়ার থেকে সেই রেস্টুরেন্টের সবচাইতে পছন্দের ব্যাপারটি হচ্ছে। সেই চেয়ারগুলিতে বসে নদীর সৌন্দর্য উপভোগ করা। আমরা যখন সেই রেস্টুরেন্টে প্রবেশ করলাম। দেখলাম নরমাল চেয়ার টেবিলে খুব একটা লোকজন নেই। কিন্তু সেই চেয়ার গুলিতে লোকজন শুয়ে বসে নদীর সৌন্দর্য উপভোগ করছে। সাথে নিজেদের মাঝে গল্প করছে। সেখানে যাওয়ার আগে আমার মাথায় চিন্তা ঘুরছিল যে সেখানে গিয়ে কোন চেয়ার ফাঁকা পাবো কিনা। তবে ভাগ্য ভালো বলতে হবে। সেখানে গিয়ে একটি চেয়ার ফাঁকা পেয়ে গেলাম। সেখানে আমি আমার স্ত্রী আর মেয়ে বসে পড়লাম। তারপর সেই চেয়ার গুলিতে বসে আমরা গল্প করছিলাম। এর ভেতর আমি আমার মেয়েকে জিজ্ঞেস করলাম তুমি কি খাবে? সে বলল দই ফুচকা। আমার স্ত্রী চাইলো হট কফি আর আমি নিলাম চকলেট কোল্ড কফি।
আমরা যখন নদীর পাড়ে পৌঁছেছি তখন হঠাৎ করে বেশ জোরে বাতাস বইতে শুরু করল। নদীর পাড়ে সময় কাটানোর জন্য চমৎকার একটি পরিবেশ তৈরি হলো। কারণ নদীর পাড়ে যখন বাতাস বইতে থাকে তখন নদীর পাড়ে কাটানো সময়টা উপভোগ্য হয়ে ওঠে। এদিকে আমার মেয়ের দই ফুচকা এক প্লেট খাওয়া শেষ হলে দ্বিতীয় প্লেটের অর্ডার করলো। সাথে সে ড্রিংস হিসেবে নিলো কোক। এই রেস্টুরেন্টের দুটি সেলফি কর্নার রয়েছে। যেখানে মানুষজন ছবি তোলার জন্য রীতিমতো ভিড় জমায়। তবে আমরা যেদিন গিয়েছিলাম সেদিন মঙ্গলবার হওয়ায় লোকসমাগম কিছুটা কম ছিলো। যার ফলে সেই রেস্টুরেন্টটি কিছুটা ফাঁকাই ছিল বলতে হবে। ফাঁকা থাকার কারণে আমরা আরও বেশি মজা পেলাম। কারন সেখানে যদি লোকে লোকারণ্য থাকতো তাহলে আমরা এতটা মজা করতে পারতাম না।
সেখানে বসে আমরা পরিকল্পনা করলাম আমরা সন্ধ্যার পরেও অনেকটা সময় সেখানে বসে থাকবো। কারণ নদীর পাড়ে সন্ধ্যার পরে সময় কাটাতে বেশি মজা লাগে। এর ভিতর টুকিটাকি বিভিন্ন জিনিস খাওয়া চলছিল। এদিকে সন্ধ্যা হয়ে এলে মাগরিবের আজান শুনে আমি আমার স্ত্রী এবং মেয়েকে সেখানে বসিয়ে রেখে চলে গেলাম নামাজ পড়তে। পরিকল্পনা ছিল নামাজ পড়ে এসে আরও বেশ কিছুক্ষণ সময় সেখানে কাটাবো। কিন্তু নামাজ পড়ে ফেরার পর হঠাৎ করে একটি জরুরী কাজ এর কথা মনে হওয়ায় দ্রুত তাদেরকে নিয়ে ফিরে এলাম। অবশ্য ফেরার সময় মনে মনে পরিকল্পনা করেছি। আবার একদিন সেখানে যাবো। সেখানে গিয়ে সন্ধ্যার পরে বেশ খানিকটা সময় কাটিয়ে আসবো। দেখা যাক এখন সেই পরিকল্পনা কবে বাস্তবায়ন করতে পারি।
আজকের মত এখানেই শেষ করছি। পরবর্তীতে আপনাদের সাথে দেখা হবে অন্য কোন নতুন লেখা নিয়ে। সে পর্যন্ত সবাই ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন।
ফটোগ্রাফির জন্য ব্যবহৃত ডিভাইস | হুয়াই নোভা 2i |
---|---|
ফটোগ্রাফার | @rupok |
স্থান | পদ্মার পাড় |
Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |
পদ্মার পাড়ে ভাসমান রেস্টুরেন্ট বেশ চমৎকার। বিশের করে বসার জায়গাগুলোতে খড় দিয়ে ছাতার মতো করে বানিয়ে রেখেছে। আর বসার চেয়ারগুলো ও লম্বা করে বানানো যাতে উপভোগ করা। এরকম জায়গায় এমন ওয়েদারে সত্যি দারুণ আর সাথে যদি হয় কফি তাহলে তো কথাই নেই। আপু ও আপনার মেয়ে তারা নিশ্চয় উপভোগ করেছে সময়টা।
এমন ভাসমান রেস্টুরেন্টে কান্না যেতে মন চায় আর যদি হয় সেটা পদ্মা নদীতে। আপনার মনের ইচ্ছা ঠিক হই আপনার স্ত্রী পূরণ করেছে সেই ভাসমান রেস্টুরেন্টে যাওয়ার ইচ্ছা পোষণ করে। দূর থেকে অনেক কিছুই ঝাপসা মনে হয় কিন্তু কাছে গেলে সেটা আরও বেশি রঙিন হয়ে যায়, আপনার স্ত্রীর সাথেও হয়তো এমনটা হয়েছে। রেস্টুরেন্টের ভেতরের ফটোগ্রাফি গুলা বেশ সুন্দর হয়েছে। এরকম সুন্দর রেস্টুরেন্টে নিজের পরিবারের সাথে সময় কাটানোটা সত্যি অসামান্য। সুন্দর অপরূপ মুহূর্ত গুলো আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ। আমার বাংলা ব্লগে আপনার ব্লগিং জার্নি শুভ হোক।
ভাসমান রেস্টুরেন্টে পরিবারের সাথে কিছুটা সময় কাটানো মুহূর্তগুলো আমার কাছে ভীষণ ভালো লাগলো। নদীর পাড়ে গেলে অনেক সুন্দর বাতাস বইতে থাকে আর ভীষণ ভালো লাগে। পরিবেশ টাও অনেক সুন্দর। খাবার গুলোও ভালো ছিলো। আপনি ঠিকই বলেছেন সন্ধার পরে নদীর পাড়ে সময় কাটাতে আরো বেশি ভালো লাগে। ধন্যবাদ আপনাকে চমৎকার একটি পোস্ট শেয়ার করার জন্য।
আপনার এ পদ্মা নদীতে ভাসমান রেস্টুরেন্টে অনুভূতিটা অনেক ভালো ছিল। তবে সব থেকে ভাল ছিল আপনি যখন বললেন যে হালকা হালকা বাতাস বইছিল আর সাথে সমুদ্রের পাড়ের মতো চেয়ারগুলো। এটা পরে তো আমারও যাওয়ার জন্য মনের ভিতর অনুভূতি হচ্ছে। খুব সুন্দর ভাবে আপনার ভাসমান রেস্টুরেন্টে কাটানোর অনুভূতিটা শেয়ার করেছেন ধন্যবাদ আপনাকে।
ইশ,, ভাইয়া আপনার বর্ননা আর ছবিগুলো দেখে আমার ও বেশ যেতে ইচ্ছে করছে।নদীর ধারে থাকলেই এমনই মন ভালো হয়ে যায়।আর যদি এমন সুন্দর রেস্টুরেন্টে থাকলে তো কোন কথাই নাই।চকলেট কোল্ডকফির ছবি দেখে মনে হচ্ছে খেতে বেশ দারুন হয়েছে। পরিবার নিয়ে এই রকম পরিবেশে ঘুরতে যাওয়া মজাই আলাদা।ভালো লাগলো।ধন্যবাদ
রেস্টুরেন্ট টি অত্যন্ত চমৎকার। এভাবে বসে নদীর সৌন্দর্য উপভোগ করার বিষয়টি চিন্তা করতেই রোমাঞ্চ হচ্ছে।আপনার বর্ণনা পড়ছি আর ভাবছি আমি সেখানে উপস্থিত,সেই বাতাস আমার গায়েও লাগছে।ধন্যবাদ ভাইয়া এত সুন্দর একটি জায়গার সাথে পরিচয় করিয়ে দেওয়ার জন্য।
ভাইয়া ভাসমান রেস্টুরেন্টটি দেখে ভালই লাগলো। জি আপনি ঠিকই বলছেন কাঠের বিছানো চেয়ার গুলো তে বসে সময় কাটানোর মজাই আলাদা। আমারও মনে হয় সন্ধার পরে এখানে বসে সময় কাটাতে অনেক ভালই লাগবে। ধন্যবাদ।
নদী পার ও নদী পাড়ের রেস্টুরেন্ট এমনিতেই ভালো লাগে। কিন্তু আপনারা পদ্মা নদীর উপরে ভাসমান রেস্টুরেন্টে বসে পর্দার অপরূপ সৌন্দর্যকে উপভোগ করেছেন। অসাধারণ ছিল আপনাদের সময় কাটানোর মুহূর্ত গুলো। আপনাদের সকলের জন্য শুভকামনা রইল