ঐতিহ্যবাহী বেইলিরোড এর কিছু ছবি। ১০% প্রিয় লাজুক খ্যাঁক এর জন্য।
ঢাকায় আমি এসেছি একটি পারিবারিক কাজে। সে কাজের জন্য আমাকে প্রায় প্রতিদিন শান্তিনগর আসতে হয়। শান্তিনগরের খুব কাছেই আছে বেইলিরোড। এই বেইলিরোড বিভিন্ন কারণে অনেক আগে থেকেই ঢাকার মানুষের কাছে খুব জনপ্রিয়। একটা সময় সাংস্কৃতিক অঙ্গনের মানুষের পদচারণায় মুখরিত থাকতো এই এলাকাটা।কারণ এখানে ছিল একটি নাট্যমঞ্চ। যেটাকে মহিলা সমিতির নাট্যমঞ্চ বলা হয়। সেই মহিলা সমিতির নাট্যমঞ্চের ওইখানে এখন অত্যাধুনিক একটি সুরম্য অট্টালিকা তৈরি হয়েছে। কিন্তু এখন আর আগের মতো সাংস্কৃতিক অঙ্গনের লোকজনের আনাগোনা দেখা যায় না। তার পরেও বেলিরোড আশেপাশের এলাকার লোকজনের কাছে খুবই পছন্দের একটি জায়গা।
তার কারণ হচ্ছে এখানে আপনি সব ধরনের ভোগ্য পণ্যের দেখা পাবেন। ঢাকা শহরের নামকরা যতো রেস্টুরেন্ট আছে সবগুলির আউটলেট আপনি এখানে পাবেন। পিৎজা হাট থেকে শুরু করে কেএফসি সবকিছু এখানে আছে। সাথে আছে বেশ কয়েকটি শপিং কমপ্লেক্স। এই এলাকাটি মূলত বিত্তবান শ্রেণীর জন্য উপযুক্ত একটি জায়গা। তাই বলে এটা চিন্তা করবেন না এখানে হকারেরা ব্যবসা করে না। ঢাকা শহরের অন্য আর দশটা জায়গার মতো এখানেও রাস্তার পাশে হকারেরা বিভিন্ন রকম পণ্য সামগ্রী দিয়ে বসে। আজ আমি আপনাদের সাথে বেইলি রোডের কিছু ছবি শেয়ার করব।
প্রথম ছবিতে দেখা যাচ্ছে মহিলা সমিতির নবনির্মিত ভবন। আগে এখানে একটি পুরাতন বিল্ডিং ছিল। সেখানেই ছিল নাট্যমঞ্চ। এখন সরকারের তরফ থেকে একটি নতুন ভবন করে দেয়া হয়েছে। এই ভবনে বিভিন্ন রকম সাংস্কৃতিক কর্মকান্ড হয়। পরের ছবিগুলিতে দেখা যাচ্ছে মহিলা সমিতির আয়োজনে একটি মেলা। এই মেলায় মহিলাদের বিভিন্ন সামগ্রী পাওয়া যায়। তাছাড়া কিছু কাপড়ের দোকান ও আছে। যদিও লোকজনের সমাগম দেখলাম খুবই কম।
ছবিতে দেখা যাচ্ছে দুটি শপিং মল। তার ভেতর একটির নাম হচ্ছে ইনফিনিটি। বর্তমানে বাংলাদেশে ইনফিনিটি খুবই জনপ্রিয়। কারণ এখানকার কাপড়চোপড় এর মান খুবই ভালো। যদিও এর দাম একটু বেশি। এখন শীত মৌসুম শেষের দিকে হওয়ায় শীতের কাপড় চোপড়ের উপর অনেক ডিসকাউন্ট চলছে। অনেকে এই সুযোগে শীতের কাপড় কিনে রাখছে।
এই দোকানটির একটি ইতিহাস আছে। আমি যখন প্রথম এই দোকান থেকে পেঁয়াজু খাই তখন আমার কাছে খুবই ভালো লেগেছিলো। তখন এ দোকানটি ছিল আরো অনেক ছোট। পরে আমি আমার এক চাচাতো ভাইয়ের কাছ থেকে জানতে পেরেছিলাম। পেয়াজুর দোকানের মালিক এই দোকান থেকে বিপুল পরিমান সম্পত্তির মালিক হয়ে গিয়েছে। কারন একটা সময় ছিল যখন মানুষজন লাইন ধরে এই দোকান থেকে পেঁয়াজু কেনার জন্য দাঁড়িয়ে থাকতো। আজ অনেকদিন পর এই দোকানে খেতে গিয়েছিলাম। যদিও তাদের সাদ আর আগের মত নেই আমার কাছে মনে হলো। তারপরও খেতে একদম খারাপ লাগেনি।
উপরের ছবিগুলিতে দেখা যাচ্ছে হকারেরা বিভিন্ন রকম পণ্য সামগ্রী নিয়ে রাস্তার পাশে বসেছে বিক্রির জন্য। এই জিনিসগুলো আমাদের নিত্য ব্যবহার্য পণ্য। পথচলতি মানুষ তাদের কাছ থেকে তাদের প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র কিনে নেয়।
উপরের ছবিতে দেখা যাচ্ছে ঢাকার ঐতিহ্যবাহী এবং বিখ্যাত ফখরুদ্দিন বাবুর্চির কাচ্চির রেস্টুরেন্ট। ফখরুদ্দিন বাবুর্চির কাচ্চি ঢাকার মানুষের কাছে খুবই পরিচিত। একসময় অনেক কদর ছিল এই কাচ্চির। যদিও এখন বিভিন্ন রকম নতুন নতুন কাচ্চির রেস্টুরেন্ট হওয়ায় এদের কদর অনেকটা কমে গিয়েছে।
উপরের ছবিতে আরও কিছু হকারদের পণ্যসামগ্রী দেখা যাচ্ছে। এধরনের বেশকিছু পণ্য সামগ্রী নিয়ে হকাররা রাস্তার দু'পাশ দিয়ে বসে আছে।
এই ছবিতে দেখা যাচ্ছে একজন হকার ভ্যানে করে ভুট্টা পুড়িয়ে বিক্রি করছে। এবার ঢাকায় এসে দেখলাম ভুট্টা ঢাকার লোকজনের কাছে বেশ জনপ্রিয়। যদিও আমার কাছে ভুট্টা খেতে খুব একটা ভালো লাগে না।
এই ছবিতে দেখা যাচ্ছে বেশ কিছু কাপড়চোপড় এর দোকান এক সারিতে। এই দোকানগুলো অনেক পুরাতন। বেইলি রোডের বেশিরভাগ পুরাতন দোকান ভেঙে সেখানে নতুন উচু উচু বিল্ডিং তৈরি হয়েছে। কিন্তু এই দোকান গুলি সেই ভাঙ্গা গড়ার খেলা থেকে এখন পর্যন্ত রক্ষা পেয়েছে।
উপরের ছবিতে দেখা যাচ্ছে আরো কিছু হকারদের পণ্য সামগ্রী। যদিও বেশির ভাগ হকারের কাছে প্রায় একই রকমের পণ্য দেখতে পেলাম। এখানে বেশিরভাগ হকার দেখলাম ঘরের কাজে ব্যবহৃত নিত্যব্যবহার্য পণ্য সামগ্রী বিক্রি করছে সাথে আছে কয়েকজন চুড়ি বিক্রেতা। শেষের ছবিতে দেখা যাচ্ছে একজন হকার কাপড়ের তৈরি ব্যাগ বিক্রি করছে এই হকারের পন্যটা আমার কাছে একটু অন্যরকম মনে হয়েছে।
আজকের মতো এখানেই শেষ করছি। পরবর্তীতে আপনাদের সাথে দেখা হবে অন্য কোনো নতুন লেখা নিয়ে। সে পর্যন্ত সবাই ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন।
ফটোগ্রাফির জন্য ব্যবহৃত ডিভাইস | হুয়াই নোভা 2i |
---|---|
ফটোগ্রাফার | @rupok |
স্থান | লিংক |
Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |
🇧🇩🇧🇩ধন্যবাদ🇧🇩🇧🇩
আমি রূপক। আমি একজন বাংলাদেশী। আমি বাঙালি। আমি বাংলায় মনের ভাব প্রকাশ করতে ভালোবাসি। আমি আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটিকেও ভালোবাসি
ঐতিহ্যবাহী বেইলি রোডের যেসব ফটোগুলি শেয়ার করেছেন খুবই সুন্দর ও ভালো লেগেছে ।
দেখে মনে হচ্ছে অনেক ধরনের ভাইটির জিনিস এখানে পাওয়া যায় । কখনো যাওয়া হয়নি সময় সুযোগ পেলে অবশ্যই যাবো । ফটোগুলো দেখে খুবই ভালো লাগলো । ধন্যবাদ ভাই গুরুত্বপূর্ন একটি বিষয় আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য ।
ভার্সিটি থাকাকালীন এক সময় বেইলিরোডে অনেক আড্ডা দিতাম।ছোট ছোট ফুড বাসের খাবারগুলো অনেক ভালো লাগতো।দামে কম মানে ভালো ছিল।আর পেস্ট্রি শপের তো অভাব ছিল না।অনেক ভালো লাগলো,পুরনো দিনগুলা মনে পরে গেল।
ওয়াও অসাধারণ হয়েছে ভাইয়া ফটোগ্রাফি গুলো৷ আমি বেইলি রোডে গেছিলাম, অনেক সুন্দর সুন্দর জিনিস পাওয়া যায়। বেইলি রোডে পরিবেশ টা অনেক সুন্দর। ভাইয়া আপনার পোস্ট টা দেখে পুরনো দিন গুলো কথা পড়ে গেল। আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ ভাইয়া।
বাহ,কত সুন্দর সুন্দর রকমারি জিনিস দেখলাম ভাইয়া।তাছাড়া অনেকদিন পর কদমা খাবার দেখলাম, যেটি আমাদের এখানে বিলুপ্ত হয়ে গেছে প্রায়।অনেক মিস করি এখন।আজ আপনার ছবিতে দেখে মনে পড়ে গেল।ধন্যবাদ ভাইয়া।
সত্যি আপনার পোস্টটি অসাধারণ অভিজ্ঞতাময় ছিল। পোস্টটি ভাল ভাবে বুঝতে পারলাম সুন্দর সুন্দর কিছু ছবি শেয়ার করবার জন্য। আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।❤️❤️
এই বেইলি রোডের নাম আমি প্রথমে শুনেছিলাম তাহসানের একটি গানে।যেহেতু আমি কখনো যাইনি তাই এভাবেই প্রথম জানা।আজকে একটু দেখলাম ও।
বেইলি রোডের অসাধারণ কিছু ছবি আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন।আবার সুন্দর করে বর্ণনা করেছেন।খুব ভালো লাগলো ভাই।
আমার প্রিয় একটা জায়গা সময় পেলে ওই জায়গাটা থেকে ঘুরে আসি। ফটোগুলো অসাধারণ হয়েছে। অনেক ধন্যবাদ ভাইয়া আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।