মুঘল এম্পায়ার রেস্টুরেন্টে কাচ্চি খাওয়ার অভিজ্ঞতা।
আমি খেতে খুবই ভালোবাসি। তবে আমার কাছে বাইরের খাবার সব সময় বেশি ভালো লাগে। ঘরের খাবার যে খারাপ লাগে এমন নয়। কিন্তু বাইরের খাবারের প্রতি একটা অন্যরকম আকর্ষণ কাজ করে। বাঙালি মাত্রই বিরিয়ানি পছন্দ করে। আমিও তাদের থেকে আলাদা নই। সেই বিরিয়ানির ভেতরে আমার সবচাইতে পছন্দ কাচ্চি বিরিয়ানি।
আমি মাঝে মাঝেই ঢাকায় আসি। ঢাকায় আসার আগে আমি ঢাকা গিয়ে কি কি খাবো তার মোটামুটি একটা পরিকল্পনা করে রাখি। সেই তালিকায় অবশ্যই কাচ্চি বিরানি থাকবে। কারণ আমাদের এলাকায় ভালো মানের কাচ্চি বিরিয়ানি পাওয়া যায়না। আগে তো মোটেই পাওয়া যেতো না। এখন কিছু হোটেল-রেস্টুরেন্ট মোটামুটি মানের কাচ্চি বিরিয়ানি তৈরি করে। কিন্তু সেগুলোতে ঢাকার ভালো মানের কাচ্চি বিরিয়ানির স্বাদ পাওয়া যায় না।
আমি এখন ঢাকা আসলে সাধারণত বনশ্রীতে উঠি। এখানকার বেশিরভাগ খাবারের দোকান আমার চেনা হয়ে গেছে। এই এলাকাতে মুঘল এম্পায়ার নামে একটি রেস্টুরেন্ট আছে। সেই রেস্টুরেন্টের খাবার হলো বিভিন্ন রকমের বিরিয়ানি। সেখানে আছে ঢাকাইয়া কাচ্চি মোরগ পোলাও এই ধরনের খাবার। এর আগে যখন ঢাকায় এসেছিলাম তখন আমার ভাগ্নেকে নিয়ে এখানে খেতে এসেছিলাম। কিন্তু তখন আমার কোলেস্টেরল বেশি থাকায় আমি আর বিরানি খেয়ে দেখতে পারিনি।
যার ফলে চিন্তা করলাম এবার সেই বিরিয়ানির চেখে দেখা যাক। কিন্তু ঢাকায় আসলে আপুর বাসায় সব সময় এত খাবারের আয়োজন থাকে যে বাইরে খুব একটা খাওয়ার সুযোগ হয়না। তারপরও গত কালকে সুযোগ বুঝে চলে গিয়েছিলাম মুঘল এম্পায়ারে কাচ্চি খেতে। রেস্টুরেন্টটি আপুর বাসা থেকে খুব একটা দূরে নয়। মোটামুটি কাছেই বলা চলে। কিন্তু এই রেষ্টুরেন্টের একটি সমস্যা হচ্ছে রেস্টুরেন্টটি মূল রাস্তার পাশে হওয়ার পরও বাইরে থেকে রেস্টুরেন্টের অবস্থান খুব একটা বোঝা যায়না। কারণ একটি মার্কেটের গলির ভেতর দিয়ে রেস্টুরেন্টটির প্রবেশপথ। যাই হোক যেহেতু আমার চেনা তাই সেখানে পৌছতে আমার বেগ পেতে হলো না।
আমি সেখানে পৌঁছেই কাচ্চির অর্ডার দিয়ে দিলাম। এর ভেতরে আমি রেস্টুরেন্টের কয়েকটি ছবি তুলে ফেলেছি। তারপর হাত ধুয়ে আমি কাচ্চির জন্য অপেক্ষা করছিলাম। এর ভিতর আমি অর্ডার করেছি বাদামের শরবত। কাচ্চি আসার আগেই তারা শরবতটি টেবিলে দিয়ে গেলো। আমি ছোট্ট করে একটি চুমুক দিলাম। চুমুক দিয়েই সেই পুরনো স্বাদ পেলাম। এখানকার বাদাম শরবত আমার অত্যন্ত পছন্দের একটি পানীয়।
কিছুক্ষণ পরে যখন আমার টেবিলে কাচ্চি পরিবেশন করলো। তখন আমার মনে পড়ল সাথে একটি জালি কাবাব হলে মন্দ হতো না। তখন আমি ওয়েটারকে একটি জালি কাবাব এর অর্ডার দিলাম। ওয়েটার সঙ্গে সঙ্গে সেটা দিয়ে গেলো। খাবার টেবিলে আসার পরেই সাধারণত আমি খাওয়া শুরু করি। তবে এবার আর কোন ভুল করিনি। এবার আগে ছবি তুলে নিয়েছি আপনাদের সাথে শেয়ার করার জন্য। আপনারা হয়তো খেতে পারবেন না ছবি দেখে। তবে ছবি থেকে খাবার সম্বন্ধে কিছুটা ধারণা করতে পারবেন।
যাই হোক কাচ্চি পরিবেশন করার পরে ছবি তোলার পর আমি খাওয়া শুরু করলাম। প্রথমে একটু রাইস মুখে নিয়ে দেখলাম রাইস এর স্বাদ টা বেশ ভালোই ছিলো। সাথে ছিলো একপিস আলু আর ২ পিস মাটন। কাচ্চিটা খেতে ভালোই ছিলো। কিন্তু যে দুই পিস মাংস দিয়েছে সেখানে মাংস বলতে তেমন কিছু ছিলো না। বলতে গেলে পুরোটাই হাড্ডি। যাই হোক মোটামুটি ভাবে খাওয়া শেষ করলাম। তারপর বাদামের শরবতে চুমুক দিচ্ছিলাম। খাওয়া শেষ হওয়ার পর কিছুক্ষণ বিশ্রাম নিয়ে তাদেরকে বললাম বিল দিতে।
ওয়েটার যখন বিল নিয়ে টেবিলে এলো তখন আমাকে জিজ্ঞেস করল স্যার কাচ্চি খেতে কেমন ছিলো। আমি বললাম ভালই ছিল কিন্তু মাংসের জায়গায় দুই পিস পিওর হাড্ডি পেয়েছি। যখন ওয়েটার আমাকে বলল সরি স্যার। তবে আমাদেরকে জানালে আমরা মাংস চেঞ্জ করে দিতাম। এই কথাটা শুনে আমার ভালো লাগলো। যাইহোক তারপর বিল মিটিয়ে পরে সেখান থেকে বেরিয়ে এলাম। চিন্তা করলাম যেহেতু একটু ভারি খাওয়া-দাওয়া হয়েছে তাই এখন কিছুটা হাঁটা দরকার। এই কথা ভেবে আমি হেঁটে বাড়ির দিকে রওনা দিলাম।
এখন আসি রেটিংয়ে
খাবারের স্বাদ-৭/১০
রেস্টুরেন্ট এর পরিবেশ-৮/১০
ওয়েটারের ব্যবহার-৯/১০
আজকের মতো এখানেই শেষ করছি। পরবর্তীতে আপনাদের সাথে দেখা হবে অন্য কোন নতুন লেখা নিয়ে। সে পর্যন্ত সবাই ভাল থাকুন সুস্থ থাকুন।
ফটোগ্রাফির জন্য ব্যবহৃত ডিভাইস | হুয়াই নোভা 2i |
---|---|
ফটোগ্রাফার | @rupok |
স্থান | বনশ্রী |
Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |
চেঞ্জ করে দেওয়ার বিষয়টি ভালো লাগলো। কারণ বেশিরভাগ রেস্তোরাতেই কখনোই এই সার্ভিসটি দেওয়া হয় না। ভাবছি ঢাকা গিয়ে কাচ্চি খেতে হবে একদিন।
আমার কাছেও এদের এই ব্যাপারটা ভালো লেগেছে। যদিও তাদেরকে আমি জানিয়েছি খাওয়া শেষ হয়ে যাওয়ার পর। সময় মত জানালে হয়তো কিছুটা লাভ হতো।
ঠিকই বলেছেন ভাইয়া বাঙালি হওয়া মাত্রই বিরিয়ানি পছন্দ করা। আমিও বিরিয়ানি খেতে ভীষণ পছন্দ করি। আর কাচ্চি বিরিয়ানি হলে তো কোন কথাই নেই। আপনি অনেক সুন্দর একটা রেস্টুরেন্টে গিয়েছেন । এমনকি রেস্টুরেন্টের পরিবেশটা আমার কাছে বেশ ভালো লেগেছে। আর কাচ্চি অর্ডার দেওয়ার পর বাদামের শরবত অর্ডার দিয়েছেন এটা বেশ ভালো লাগলো। তাছাড়া বাদামের শরবত খেতে ভীষণ ভালো লাগে। আর যেটা বলেছেন ছবি দেখে আমরা তো আর খেতে পারব না। কিন্তু আপনি খেয়েছেন এটা দেখেই ভীষণ ভালো লেগেছে। আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ।
বাদামের শরবত টা দুর্দান্ত টেস্টি ছিলো। কখনো ঢাকা আসলে খেয়ে দেখবেন ভালো লাগবে।
মোগল এম্পায়ার এর কাচ্চি বিরানী খাওয়ার অভিজ্ঞতা আমাদের সাথে শেয়ার করলেন। তবে আগে থেকেই জানি আপনি ঢাকায় আসার আগেই পরিকল্পনা করে রাখেন কোথায় কি খাবেন কোথায় যাবেন। তবে আজকের কাচ্ছি বিরানিটি দেখেই বুঝা যাচ্ছে খুবই ভালো হয়েছে। তবে কাচ্ছি বিরানির মাঝে হাড্ডির কথা শুনে একটু অবাক হয়ে গেলাম। তবে ওয়েটারের কথা শুনে তাতেই আপনি সন্তুষ্টি লাভ করেছেন। আমাদের সাথে আপনার কাচ্ছি বিরানি খাওয়ার অনুভূতি গুলো শেয়ার করার জন্য আপনার প্রতি রইল আন্তরিক অভিনন্দন
হাড্ডির কথা শুনে তাদের রেসপন্স টা আমার কাছে ভালো লেগেছে। প্রথমে মনে করছিলাম আর এখানে কাচ্চি খেতে আসা যাবেনা। এখন মনে হচ্ছে আবার যাওয়া যেতে পারে।
খাবার কার না ভালো লাগে, আর যদি সেটা বহিরের ভালো কোন রেস্টুরেন্টের কাচ্চি বিরিয়ানি হয় তাহলে তো কোন কথায় নেই। যাই হোক আমি বিরিয়ানির সাথে মজো অথবা কোকা কোলা খেতে বেশি পছন্দ করি। এতে করে খাওয়ার নেগেটিভ ইসু গুলো দৌরে পালায়। খুব তারা তারি আমি এই স্বাদ গ্রহণ করবো ইনশাআল্লাহ!
খাবারের নেগেটিভ ইস্যু থেকে যদি মুক্ত থাকতে চান তাহলে আপনার উচিত কাচ্চির সঙ্গে বোরহানি খাওয়া।
এর পরে ট্রাই করবো, তবে বোরহানির নামে যে গুলো আমার খাই অতিরিক্ত ভেজাল মনে হয়।
এজন্যই তো বলি দিনে দিনে এত ফুলে যাচ্ছ কেন। তোমার মত আমিও ভালো খাবার দেখলে লোভ সামলাতে পারিনা। তবে তোমার জন্য এখন ঐ সব বাইরের খাবার পুরোপুরি নিষিদ্ধ করা উচিত। তা না হলে যেকোনো সময় বিপদে পড়ে যাবে।
বুঝতে পারছি কিন্তু জীভ কন্ট্রোল করতে পারছি না।
কাচ্চি কথাটি বলতেই একটি লোভনীয় খাবার চোখের সামনে ভেসে ওঠে ।আর স্বাদ বর্ণনার কোন প্রয়োজন হয় না। যাহা সবাই পছন্দ করে থাকে।
ঠিকই বলেছেন কাচ্চির কথা শুনলে বাঙালীর চোখের সামনে একটি লোভনীয় খাবারের চেহারা ভেসে ওঠে। অবশ্য এদের কাচ্চিটা বেশ মজার ছিলো।
🌹