মুভি রিভিউ- জিন্দেগি না মিলেগি দোবারা।
আমি এখন পর্যন্ত কখনো কোন রিভিউ পোস্ট লিখিনি। তবে আজ আমার অত্যন্ত প্রিয় একটি সিনেমার রিভিউ পোস্ট লিখব। একটা সময় ছিল যখন আমি প্রচুর সিনেমা দেখতাম। তার বেশির ভাগই ছিল হলিউড এবং বলিউডের সিনেমা। হলিউডের অ্যাকশন মুভি গুলো আমার খুবই পছন্দের। কিন্তু বলিউডের বেশিরভাগ ঘরানার মুভি আমার কাছে খুবই ভালো লাগে। অসংখ্য বলিউডের মুভি দেখেছি আমি। এখন পর্যন্ত সেই মুভি গুলোর ভিতর যে মুভিটা আমার কাছে সবচাইতে বেশি ভালো লেগেছে আজকে সেই মুভিটির রিভিউ দেবো। মুভিটির নাম জিন্দেগি না মিলেগি দোবারা। তাহলে চলুন শুরু করা যাক।
🎞️ 📽️মুভির কিছু তথ্য📽️🎞️
মুভির নাম📽️ | জিন্দেগি না মিলেগি দোবারা |
---|---|
পরিচালক🎬 | জয়া আকতার |
প্রযোজক🎞️ | ফারহান আকতার, রিতেশ সিধওয়ানি |
অভিনয় | ঋত্বিক রোশন, অভয় দেওল, ফারহান আক্তার, ক্যাটরিনা কাইফ, কালকি কোচিন |
সিনেমাটোগ্রাফি | কার্লোস কাতালান |
সংগীত | শংকর,এহসান, লয় |
ছবি মুক্তি | ১৫ জুলাই ২০১১ |
বাজেট | ৪৫ কোটি রুপি |
🎬সংক্ষেপে মুভির কাহিনী বর্ণনা🎬
স্কুল জীবনের তিন বন্ধু কবির, অর্জুন এবং ইমরান। দীর্ঘদিন পর তারা একসাথে মিলিত হয়। তাদের উদ্দেশ্য তিন সপ্তাহের একটা রোড ট্রিপ দেবে। উপলক্ষ ছিল কবিরের বিয়ের আগের ব্যাচেলর ট্রিপ। তিনজনের ভেতরে আবার ইমরানের সাথে অর্জুনের এক ধরনের দূরত্ব তৈরি হয়েছিল একটি মেয়েকে কেন্দ্র করে। এতদিন পর তিনজন একসাথে হওয়ার পরও সেই দূরত্ব টা লক্ষ্য করা যায়। তিন বাল্যবন্ধু দীর্ঘদিন পর একসাথে হয়েছে কিন্তু প্রথম দিকে তাদের ভেতরে কিছুটা আড়ষ্টতা লক্ষ্য করা যায়। যদিও কবির চেষ্টা করে ইমরান এবং অর্জুন এর ভেতরের দূরত্ব দূর করতে। এর ভিতরে তিন বন্ধু নানা রকম স্মৃতিচারণ করতে থাকে। কিন্তু মাঝে মাঝেই অর্জুন এবং ইমরানের সাথে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে ঝামেলা হয়। যদিও ইমরান অর্জুনকে সরি বলেছিলো। তখন অর্জুন ইমরানকে বলে সরি তখনই বলবে যখন সেটা ভিতর থেকে অনুভব করবে।
তিন বন্ধুর জীবনেই কিছু সমস্যা থাকে। কিন্তু প্রথমে তারা কেউ কারো সাথে সেটা শেয়ার করে না। তারা রোড ট্রিপে গিয়েছিল স্পেনে। সেখানে গিয়ে ইমরান তাদের বন্ধুদের কে না জানিয়ে তার বাবাকে খুঁজতে থাকে। যে কিনা তার জন্মের আগেই তার মাকে ছেড়ে চলে গিয়েছিল। তারা একটি পানশালায় গিয়ে ঝামেলায় জড়িয়ে পড়ে পুলিশের কাছে গ্রেফতার হয়। তখন ইমরান তার বাবার সাথে যোগাযোগ করে। তিনি এসে ওদেরকে জেল থেকে ছাড়িয়ে নেন। তারপর তিনি ইমরানের কাছে ব্যাখ্যা দেন কেন তিনি ইমরানের মাকে ছেড়ে চলে এসেছিলেন। তারপর ইমরান তার বন্ধুদেরকে তার বাবার ব্যাপারটা বলে।
তিন বন্ধু ছোটবেলায় ঠিক করেছিলো তারা এমন একটি অ্যাডভেঞ্চার স্পোর্টস এ পার্টিসিপেট করবে যে বিষয়গুলোতে তারা ভয় পায়। যেমন অর্জুন ভয় পায় পানি। তাই অর্জুন কে বলা হয় সে পানির নিচে স্কুবা ডাইভে অংশগ্রহণ করবে। এটা করতে গিয়েই লায়লার সাথে তাদের পরিচয় হয়। লায়লা সেখানে পার্ট টাইম স্কুবা ডাইভ ইন্সট্রাক্টর এর কাজ করছিল। ইমরানের আছে উচ্চতা ভীতি। তাই ইমরান পছন্দ করে তাই স্কাই ডাইভিং। আর শেষ পর্যন্ত তারা তিনজন একটি অ্যাডভেঞ্চার স্পোর্টসে অংশগ্রহণ করে। সেটি হচ্ছে ঐতিহ্যবাহী স্পেনের বুল রান। সেখানে বিশাল দর্শন ষাঁড়েরা মানুষদেরকে তাড়া করে আর মানুষেরা সেই ষাঁড়ের কাছ থেকে বাঁচার চেষ্টা করে। এদিকে কবিরের যার সাথে বিয়ে ঠিক হয়েছিল কবির একটা পর্যায়ে বুঝতে পারে তাদের দুজনের চিন্তা ভাবনার ভেতরে বিস্তর ফারাক। যার ফলে সে বন্ধুদের সাথে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেয় তাকে বিয়ে না করার। এভাবেই চমৎকার ভাবে মুভিটি শেষ হয়।
আমার মতামত
এই মুভির প্রত্যেকটা ব্যাপার আমার কাছে পছন্দ হয়েছে। এই মুভির কাহিনী যেমন চমৎকার। তেমনি প্রত্যেকটা কলা কুশলী চমৎকারভাবে তাদের অভিনয়টা করেছেন। সাথে লোকেশন গুলিও ছিল দুর্দান্ত। তাছাড়া আরো বলতে হয় মুভির মিউজিকের কথা। এক কথায় মিউজিক ছিল অসাধারণ। মুভিটির ডায়লগ লিখেছেন বিখ্যাত স্ক্রিপট রাইটার জাভেদ আক্তার। মুভিটির কয়েকটি দৃশ্যে কিছু কবিতা ব্যবহার করা হয়েছে। যেগুলো আমার কাছে অসম্ভব ভালো লেগেছে। ৪৫ কোটি রুপিতে নির্মিত মুভিটি প্রায় দেড়শ কোটি রুপির ব্যবসা করেছিলো। এ থেকেই বোঝা যায় মুভিটি কতটা জনপ্রিয়তা পেয়েছিল।
মুভির অফিসিয়াল ট্রেইলার
বাদবাকি সবগুলো ছবি মোবাইলের স্ক্রিনশট এর মাধ্যমে নেয়া হয়েছে।
ব্যক্তিগত রেটিং- ৯/১০
আইএমডিবি রেটিং - ৮.২/১০
আজকের মত এখানেই শেষ করছি। পরবর্তীতে আপনাদের সাথে দেখা হবে অন্য কোন নতুন লেখা নিয়ে। সে পর্যন্ত সবাই ভাল থাকুন সুস্থ থাকুন।
Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |
আমার পছন্দের তিন-চারটি সিনেমার মধ্যেও যদি দেখা হয় তবে 'জিন্দেগী না মিলেগি দোবারা' সিনেমা একটি । সত্যিই অসাধারণ একটা সিনেমা। জীবনময়ী ছবি। আমার মনে হয় সকলকে এই ছবি একবার দেখা উচিত।
আসলেই খুবই চমৎকার একটি মুভি।
মুভিটা দেখি নাই।তবে এই মুভির সেনোরিটা গানটা আমার বেশ ভাল্লাগে।মাঝে মাঝেই শুনি।
খুব সুন্দর রিভিউ দিয়েছেন ভাইয়া,শুভ কামনা রইলো।
মুভির মিউজিকের দায়িত্ব ছিলেন অত্যন্ত বিখ্যাত তিনজন। এই মুভির প্রত্যেকটা গানই আমার কাছে ভালো লাগে।
অনেক প্রিয় একটা মুভি।কয়েকবার দেখেছি।কবে যে এভাবে বন্ধুদের নিয়ে একটা ট্যুরে টাকার চিন্তা ছাড়া বের হতে পারব।
আমারও মনে হয় কবে যে বন্ধুদের সঙ্গে এরকম একটা ট্যুর দিতে পারব।
একসময় শুধু টাকার অভাবে হয়নি,এখন সবই আছে কিন্তু কারো সময় হয় না আর ভাই।খুব খারাপ লাগে।
জিন্দেগি না মিলেগি দোবারা এই মুভিটি এখনো দেখা হয়ে উঠেনি। তবে আপনার চমৎকার রিভিউ দেখে অনেক ভালো লাগলো। সময় করে অবশ্যই দেখবো। আপনার জন্য শুভ কামনা রইলো ভালো থাকুন।
মুভিটি দেখতে পারেন। আশা করি ভালো লাগবে।
খুব খুব পছন্দের একটি সিনেমা। বলতে পারি পছন্দের সিনেমা গুলোর মধ্যে একটি।অনেক কিছু শেখার আছে এই সিনেমায়। আমরা খালি বলি পছন্দের, কিন্তু শেখার জিনিস বুঝতে পেরে জীবনে কাজে লাগানো টাই কেও পারেনা। যেটা করা উচিত।
আমারও খুবই প্রিয় একটি মুভি এটি। কতবার যে দেখেছি তা গুনে শেষ করা যাবে না।
এমনিতেই রিত্তিকের মুভি দেখতে আমার অনেক ভালো লাগে ।আপনার মুভিটা পড়ে যা বুঝতে পারলাম ইমরানের জন্মের আগেই তার বাবা তার মাকে ছেড়ে চলে যায় । আর অর্জুন ভয় পায় পানিকে ধন্যবাদ ভাইয়া এত সুন্দর একটি মুভি আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য। সময় পেলে মুভিটা একদিন দেখব।
ঋত্বিক রোশন আমারও প্রিয় একজন অভিনেতা।