রাঙ্গামাটিতে দুই বন্ধুর ভোজন পর্ব। ১০% প্রিয় লাজুক খ্যাঁক এর জন্য।
সাজেক এবং রাঙামাটি ভ্রমণের সময়টি আমি খুব উপভোগ করেছিলাম। জায়গা দুটি আসলে ও অত্যন্ত সুন্দর ছিল। এখানকার প্রাকৃতিক দৃশ্য সত্যিই মুগ্ধ করার মত। তবে একটি ব্যাপার নিয়ে আমি কিছুটা হতাশ ছিলাম। যেহেতু আমি একজন ভোজন রসিক মানুষ। তাই খাওয়া-দাওয়াটা ভালো না হলে আমার খুব একটা জমে না। সাজেক এবং রাঙ্গামাটি এই দুটি জায়গারই বেশিরভাগ হোটেলের রান্না আমার কাছে ভাল লাগেনি।
শুধু সাজেক থেকে যখন খাগড়াছড়ি ফিরছিলাম তখন একটি হোটেলে বেশ তৃপ্তি সহকারে খেয়েছিলাম। রাঙ্গামাটি আসার পরও আমরা একেক বেলা একেক হোটেলে খাচ্ছিলাম। কোন হোটেলের রান্না ভালো এটা খোঁজার চেষ্টা করছিলাম। আসলে যেদিন রাঙ্গামাটি পৌঁছলাম সেদিন রাঙ্গামাটি পৌছাতে পৌছাতে সন্ধ্যা হয়ে গিয়েছিল। রাঙ্গামাটি পৌঁছানোর পর হোটেলের রুম ঠিক করে রুমে কিছুক্ষণ রেস্ট নিয়ে আমরা বেরিয়ে পড়েছিলাম শহরটা একটু ঘুরে ফিরে দেখতে। সেইসাথে কোথায় ভালো খাবার পাওয়া যায় সেটাও দেখছিলাম।
গত কয়েকদিন ধরে প্রায় একই রকম খাবার খাচ্ছিলাম। তাই আজ চিন্তা করছিলাম একটু অন্যরকম কিছু খাওয়া যায় কিনা সেই চেষ্টা করছিলাম। খুঁজতে খুঁজতে মাস্টার শেফ নামে একটি চাইনিজ এবং থাই রেস্টুরেন্ট পেলাম। আমি কোথাও গেলে সেখানকার বিভিন্ন রকম খাবার খাওয়ার চেষ্টা করি। আর গত কয়েক দিনের খারাপ মানের খাবার খাওয়ার ফলে মন চাচ্ছিলো একটু ভালো কিছু খেতে। আমি আবার চাইনিজ এবং থাই খাবারের ভক্ত। তাই আমি আর আমার বন্ধু ফেরদৌস মিলে ঠিক করলাম আজ রাতে এই রেষ্টুরেন্টে খাবো।
শহরে কিছুক্ষণ ঘোরাফেরা করে আমরা সেই রেস্টুরেন্টের প্রবেশ করলাম। প্রবেশ করে দেখতে পেলাম রেস্টুরেন্টটি ছোটখাটো হলেও ভেতরে বেশ ছিমছাম করে সাজানো। আমরা দুজন গিয়ে একটি টেবিলে বসার পর ওয়েটার এলো অর্ডার নেয়ার জন্য। আমরা থাই ফ্রাইড রাইস, চিকেন মাসালা কারি এবং চিকেন ফ্রাই অর্ডার করলাম। সাথে ছিলো কোল্ড ড্রিংকস। অর্ডার করে দুজন বসে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে গল্প করছিলাম। এর ভেতর খুদা ও লেগেছিল অনেক।অনেকক্ষণ হয়ে যায় কিন্তু তারা খাবার সার্ভ করছিল না। যখন একজন ওয়েটারকে ডেকে জিজ্ঞেস করলাম আর কত সময় লাগবে। তখন সে জানালো আর মাত্র ৫ মিনিট লাগবে।
আবার অপেক্ষা করতে লাগলাম। অপেক্ষা করতে করতে ১৫ মিনিট পার হয়ে গেল তবুও দেখি খাবার আসে না। এদিকে ক্ষুধা ক্রমে বেড়েই চলেছে। পরে যেই ওয়েটার অর্ডার নিয়েছিল তাকে ডেকে জিজ্ঞেস করলাম এত সময় কেন লাগছে? সে আমাদেরকে জানালে স্যার আমরা কাস্টমারদেরকে একদম ফ্রেশ খাবার সার্ভ করি তাই খাবার দিতে একটু দেরি হয়। আমি বললাম যাইহোক একটু তাড়াতাড়ি করেন। তার অল্প কিছুক্ষণ পরেই আমাদের টেবিলে খাবার চলে এলো। এতো খুদা লেগেছিল যে প্রথমে ছবি তোলার কথা মনে ছিল না। খাবার সামনে আসার সাথেই খাওয়া শুরু করে দিয়েছিলাম। কিছুক্ষণ পর যখন মনে হল ছবি তোলা হয়নি তখন ঝটপট কয়েকটি ছবি তুলে নিলাম। যদিও খাবার ছবি তুলতে আমার কাছে খুব একটা ভালো লাগে না।
এখন আসি খাবারের মান এবং স্বাদ প্রসঙ্গে। এই ধরনের খাবার আমি খুবই পছন্দ করি। কিন্তু সত্যি কথা বলতে এই রেষ্টুরেন্টের রান্না আমার কাছে একদমই ভালো লাগেনি। চিকেন মাসালা যেটা সার্ভ করেছিল সেটাকে মনে হচ্ছিল বাসায় সাধারণভাবে মুরগির মাংস ভুনা করলে যেমন হয় ঠিক তেমনটা। ফ্রাইড রাইসটা ছিল একদম ফ্লেভার ছাড়া। চিকেন ফ্রাইটা মোটামুটি ভাল ছিলো। প্রচন্ড ক্ষুধা লেগে ছিল এইজন্য যদিও সমস্ত খাবার শেষ করেছি। কিন্তু খাবারের সাদটা আমার কাছে মোটেও ভালো লাগেনি।
সেখানে খাওয়া-দাওয়া শেষ করে বিল মিটিয়ে আমরা বেরিয়ে পড়লাম। আমরা যখন শহরের ভিতরে ঘোরাফেরা করছিলাম তখন সেখানে ওয়েল ফুডের একটি দোকান দেখেছিলাম। ওয়েল ফুডের খাবারগুলি আমার কাছে বেশ ভালো লাগে। যেহেতু কেবল খাওয়া-দাওয়া শেষ করেছি তাই চিন্তা করলাম দুজন মিষ্টি কিছু খেয়ে আসি। ওয়েল ফুড এ গিয়ে পেস্ট্রি এবং হাবসি নামে এক ধরনের মিষ্টি অর্ডার করলাম দুজনের জন্য। পেস্ট্রি আমার খুবই পছন্দ। বিশেষ করে ব্ল্যাক ফরেস্ট। তার সাথে যে মিষ্টিটা অর্ডার করেছিলাম সেই মিষ্টিটার সাদ ছিল চমৎকার। সেখান থেকে মিষ্টিমুখ করে আমরা দুজন হোটেলের উদ্দেশ্যে রওনা দিলাম।
আজকের মতো এখানেই শেষ করছি। পরবর্তীতে আপনাদের সাথে দেখা হবে অন্য কোন নতুন লেখা নিয়ে। সে পর্যন্ত সবাই ভাল থাকুন সুস্থ থাকুন।
ফটোগ্রাফির জন্য ব্যবহৃত ডিভাইস | হুয়াই নোভা ২আই |
---|---|
ফটোগ্রাফার | @rupok |
স্থান | লিংক |
![logo.png](https://steemitimages.com/640x0/https://cdn.steemitimages.com/DQmZEaz6VZmitMY1N8dSXHuT2tfgXFnDKjY8iV7jNGuNwEE/logo.png)
Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |
![Heroism_3rd.png](https://steemitimages.com/640x0/https://cdn.steemitimages.com/DQmRejDSNMUFmRz2tgu4LdFxkyoZYmsyGkCsepm3DPAocEx/Heroism_3rd.png)
![standard_Discord_Zip.gif](https://steemitimages.com/0x0/https://cdn.steemitimages.com/DQmTvJLqN77QCV9hFuEriEWmR4ZPVrcQmYeXC9CjixQi6Xq/standard_Discord_Zip.gif)
🇧🇩🇧🇩ধন্যবাদ🇧🇩🇧🇩
আমি রূপক। আমি একজন বাংলাদেশী। আমি বাঙালি। আমি বাংলায় মনের ভাব প্রকাশ করতে ভালোবাসি। আমি আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটিকেও ভালোবাসি
রাঙ্গামাটি যাওয়ার ইচ্ছে আমার অনেক দিনের। রাঙামাটিনাকি অনেক সুন্দর একটা জায়গা রাঙ্গামাটিতে আপনারা দুই বন্ধু অনেক আনন্দ করে ভোজন করেছেন দেখে বোঝা যাচ্ছে। আর আপনাদের খাবার গুলো ও অসাধারণ । ধন্যবাদ ভাইয়া আপনাদের আনন্দ গুলো আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য
ধন্যবাদ আপনাকে ভাই।
ধন্যবাদ আপনাকে ভাই।
ভাইয়া চাইনিজ খাবার দেখে তো লোভ ধরালেন। এখন তো খুব খেতে ইচ্ছা করছে। সত্যি কথা বলতে কি আমি আপনার ভ্রমণ বর্ণনা, খাবারের বিভিন্ন বর্ণনা গুলো আমার খুব ভালো লাগে। আপনি এত সুন্দর ভাবে গুছিয়ে গুছিয়ে সব কিছু খুঁটিনাটি আমাদের মাঝে উপস্থাপন করেন সেটি অতুলনীয়। আপনি সুন্দর একটি খাবারের মাধ্যমে আপনার দিনটি উপভোগ করেছেন বলে মনে করছি।
ধন্যবাদ আপনাকে আপু।
ভাইয়া আপনি ভোজন রসিক সেটা জানি, তবে আপনি ক্ষুধার জ্বালায় যে এত ছটফট করছেন সেটাও বুঝতে বাকি নেই। তবুও প্রতিনিয়ত খুঁজে চলেছেন ভালো খাবার কোথায় পাওয়া যায়। অবশেষে মিললো চাইনিজ রেস্টুরেন্টের দেখা। কিন্তু ক্ষুধার জ্বালায় ভুলে গিয়েছিলেন ফটোগ্রাফি করার কথা। যদি আপনার ফটোগ্রাফি নেওয়ার মতো ইচ্ছে আগে-পরে কখনোই ছিল না। তবুও আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য ফটোগ্রাফি নিয়েছেন। যাই হোক এই ওয়েল ফুড রেস্টুরেন্টের খাবার মানটাও আপনার ভালো লাগেনা। কিন্তু খিদের জ্বালায় খেতে হয়েছে। তবে দুই খাদক বন্ধু একসাথে এভাবে রেস্টুরেন্ট খোঁজা এবং কি এটা মোটামুটি আমার কাছে একটা গল্পের মত মনে হয়েছে। খুব সুন্দর করে সাজিয়ে গুছিয়ে উপস্থাপন করেছেন। আপনার কয়েকটি পর্ব দেখেছি রাঙ্গামাটি এবং সাজেকে ঘুরার। আশা করি বাকি যেগুলো আছে সেগুলো দেখতে পারবো ইনশাল্লাহ। আমাদের সাথে ভাগাভাগি করে নেওয়ার জন্য আপনার প্রতি রইল আন্তরিক শুভেচ্ছা এবং অভিনন্দন।
ধন্যবাদ আপনাকে ভাই।
আমিও একজন ভোজন রসিক তা খাবারের ব্যাপারে আমিও অনেকটাই আপনার মতোন।
ফ্রাইড রাইসটা যে ফ্লেভার ছাড়া তা কিন্তু দেখে বুঝার উপায় ই নেই।
রেস্টুরেন্টে আলো কম ছিলো। যার ফলে খুব একটা বোঝা যাচ্ছে না। ধন্যবাদ আপনাকে।
উফ ভাইয়া আমার সব সুন্দর খাবার আপনি কিনে খেয়ে ফেললেন। আমারতো খাবার গুলো দেখে জিভে জল চলে এসেছে। আপনারা দুই বন্ধু মিলে খুব ভালো সময় কাটিয়েছেন। আপনাদের সুন্দর মুহূর্ত আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ।
ওখানে গিয়ে ভালো স্বাদ পাবেন না যেটা ঢাকায় বা বড় বড় শহরগুলোতে পেয়ে থাকেন। ওখানকার মানুষজন এমনিতেই খুব পরিশ্রম করে জীবন যাপন করেন। হয়তো আস্তে আস্তে পর্যটন যখন আরো বেশি সমৃদ্ধ হবে তখন ভালো ভালো রেস্টুরেন্ট গুলো সেখানে যাবে। ধন্যবাদ আপনার অনুভূতি গুলো ও অভিজ্ঞতা শেয়ার করার জন্য।