স্রোতের বিপরীতে চলা মানুষেরা (প্রথম পর্ব)। ১০% সাইফক্স।

in আমার বাংলা ব্লগ2 years ago (edited)

কেমন আছেন আমার বাংলা ব্লগের বন্ধুরা? আমি ভালো আছি। আশাকরি আপনারা ও ভালো আছেন।


তারেক সাহেব দীর্ঘক্ষন ধরে রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে আছে একটি রিকশার জন্য। সকাল 9 টার ভেতর তাকে অফিসে পৌঁছাতে হয়। সে সবসময় চেষ্টা করে যাতে নটা বাজার ২০ মিনিট আগে হলেও যেন সে অফিসে পৌঁছাতে পারে। সে এইজন্য সে প্রতিদিন বাসা থেকে ৮ টার ভিতরে বের হয়ে যায় বাসা থেকে তার অফিসে যেতে ৩০ থেকে ৪০ মিনিট সময় লাগে। রাস্তায় কখন কি সমস্যা হয় এই কথা চিন্তা করে এসে একটু আগেই বাসা থেকে বের হয় তারেক সাহেব।

20220225_192527_0000.png

অফিসে রিকশায় করে যাতায়াত করে সে।অনেকে তাকে বলেছে একটি মোটরসাইকেল কিনে নিতে। যাতে অল্প সময়ে অফিসে পৌঁছাতে পারে। কিন্তু বেতনের গোনা টাকায় তাকে চলতে হয়। সমস্ত খরচ খরচার পরে মোটরসাইকেল কেনার মত বাড়তি টাকা সংস্থান করার মতো অবস্থা তার নেই। যার ফলে তার ইচ্ছা থাকলেও আর মোটরসাইকেল কেনা হয়ে ওঠেনি।

যদিও তার অফিসে তার নিচের পোস্টের অনেকের গাড়ি বাড়ি সবই আছে। কিন্তু সে যখন চাকরিতে জয়েন করেছে তখন তার মা-বাবা একটা কথাই বলে দিয়েছে। কখনো অন্যায়ের সাথে আপোষ করবেনা আর দুর্নীতি করবে না। তারেক নিজেও একজন নীতিবান মানুষ। অন্যায়ের সাথে আপোষ করে না। যদিও তার চারপাশে প্রতিনিয়ত নানা রকম অন্যায় হয়ে যাচ্ছে।

তারেক ভালো মতই জানে এই অন্যায় ঠেকানোর ক্ষমতা তার নেই। সে যেটা করতে পারে তা হচ্ছে এই অন্যায়ের স্রোতে গা না ভাসিয়ে দেয়া। এজন্য তাকে অনেক কথা শুনতে হয়। আত্মীয়-স্বজনের কাছ থেকে শুনতে হয়। আবার অফিসের সকলের কাছ থেকেও শুনতে হয়। কিন্তু যে যাই বলুক তারেক নিজের প্রতিজ্ঞায় রক্ষায় অবিচল। যদিও স্রোতের বিপরীতে চলতে গিয়ে তাকে নানা রকম সমস্যার মুখোমুখি হতে হয়েছে। কিন্তু তারপরেও সে কখনও অন্যায়ের সাথে আপোষ করেনি। তার কলিগেরা অনেকেই তাকে আকারে ইঙ্গিতে বুঝিয়ে দেয় তারা তারেকের থেকে কত ভালো আছে। তারেক এগুলো শুনে আর মুচকি হাসে। কখনো প্রতি উত্তর দেয় না।

এভাবেই নানারকম সমস্যা নিয়ে তার দিনগুলো কেটে যাচ্ছিল। কিন্তু কিছুদিন আগে তার হাতে একটি তদন্তের দায়িত্ব আসে। তার এলাকায় সরকারি বড় একটি প্রজেক্ট হচ্ছে। সেখানে কিছু লোক অভিযোগ করেছে যে সেখানে ব্যাপক দুর্নীতি হচ্ছে। এই দুর্নীতির তদন্তের ভার পড়েছে তারেকের ঘাড়ে।

এই দায়িত্ব যখন তার কাছে এসে পড়ল। সে তখন মনে মনে প্রতিজ্ঞা করল। এর সাথে যেই জড়িত থাকুক না কেন। কাউকে ছাড় দেয়া হবে না। যদিও সে ভালই বুঝতে পারছিলো এত বড় প্রজেক্ট এর সাথে অবশ্যই সরকারের উপর মহলের লোকজন জড়িত। না হলে এই ধরনের প্রজেক্ট থেকে এত বড় দুর্নীতি করা সম্ভব না।

তদন্তের একপর্যায়ে সে দেখতে পেল সেখানে বিপুল অঙ্কের দুর্নীতি হয়েছে। বলতে গেলে শতকরা ৬০ ভাগ টাকা দুর্নীতির মাধ্যমে লোপাট হয়েছে। আর এই কাজে বড় কিছু রাজনৈতিক নেতা যেমন জড়িত। তেমনি কিছু উচ্চপদস্থ আমলারাও জড়িত আছে। তারেক যখন এই তদন্ত কাজ করছিল। তখনই তার কাছে নানারকম হুমকি আসতে থাকে। কেউ সরাসরি হুমকি দেয় আবার কেউবা ঘুরিয়ে পেচিয়ে তার ক্ষতি করার কথা বলে। (চলবে)

logo.png

Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power

250 SP500 SP1000 SP2000 SP5000 SP

Heroism_3rd.png

standard_Discord_Zip.gif


🇧🇩🇧🇩ধন্যবাদ🇧🇩🇧🇩


@rupok

Sort:  
 2 years ago 

আমার কাছে গল্পটি পড়ে খুবই ভালো লাগলো। আসলে পৃথিবীতে ভালো মানুষ অনেক আছে কিন্তু তাদের কোন মূল্য নেই মূল্য থাকলেও মূল্যহীন হয়ে থাকতে হয়। আমি একটা কথাই বলবো সততার জয় সব সময়। পৃথিবীর যত প্রতিকূলতার সম্মুখীনই হোক না কেন একদিন সকল সমস্যার সমাধান হবে ।এত সুন্দর একটি গল্প লিখে শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ ভাই।

 2 years ago 

আসালে কিছু কিছু পর্যায়ের চাকরি করা মানুষ সৎ থাকতে চাইলে সহজ ভাবে সৎ থাকতে পারে না।আজকাল সৎ মানুষের আশেপাশে অনেক শত্রু দাঁড়িয়ে যায়।সৎ ভাবে বেঁচে থাকা অনেক কষ্টকর। ভালো ছিলো গল্পটা।বাস্তবতায় মিল আছে।ধন্যবাদ আপনাকে।

 2 years ago 

স্রোতের বিপরীতে চলা এমন একজন তারিক সাহেবকে দেখার আমার সত্যিই অনেক দিনের শখ। এমন তারেক সাহেবের জন্য আমার সমর্থন চিরকাল থাকবে ইনশাল্লাহ। সম্ভবত সমাজে এখনো এমন দু-একজন মানুষ আছে বলেই সমাজ এখনও টিকে আছে।

Coin Marketplace

STEEM 0.20
TRX 0.14
JST 0.030
BTC 66937.04
ETH 3270.78
USDT 1.00
SBD 2.74