জীবনের কাছে অসহায় আত্মসমর্পণ (তৃতীয় পর্ব)।

in আমার বাংলা ব্লগ2 years ago

কেমন আছেন আমার বাংলা ব্লগের বন্ধুরা? আমি ভালো আছি। আশাকরি আপনারা ও ভালো আছেন।


Polish_20230105_003636444.jpg

একদিন বিকালে শাহীন তাদের আড্ডা স্থলে গিয়ে বসে ছিলো। সেখানে গিয়ে তাদের সেই মাদক ব্যবসায়ি বন্ধুকে দেখতে পায় সে। ছেলেটির নাম রমিজ। একসময় সে খুবই ভালো ছেলে ছিলো। কিন্তু হঠাৎ করে সঙ্গ দোষে সে বিপথে চলে যায়। তারপর থেকে সে মাদক ব্যবসায় জড়িয়ে পরে। মাঝে মাঝে মাদক নিয়ে ধরা পড়লে কিছুদিনের জন্য তাকে জেল খাটতে হয়। তারপর আবার বেরিয়ে এসে সেই একই ব্যবসায়ী জড়িয়ে পড়ে।

শাহীন রমিজকে দেখে চিন্তা করে সে এখানে বসবে নাকি চলে যাবে? শাহিন যখন ইতস্তত করছিল তখন রমিজ ব্যাপারটা বুঝতে পারে। তখন রমিজ তাকে বলে আরে এখানে আয়। তোর কোন সমস্যা হবে না। তখন শাহিন গিয়ে রমিজের পাশে বসলে রমিজ তাকে বলে তোকে কিছুদিন থেকেই দেখছি বেশ মনমরা হয়ে থাকিস। কোন সমস্যা হয়েছে নাকি। তোর চেহারা দেখলেই বোঝা যাচ্ছে মনটা ভালো নেই। কি হয়েছে আমাকে বলতে পারিস। দেখি আমি তোর কোন সাহায্য করতে পারি কিনা। তারপর শাহিন রমিজকে সবকিছু খুলে বলে।

তখন রমিজ বলে আমি যে কাজ দিতে পারব সেটা তুই করতে পারবি না। আর একবার এই পথে এলে তুই আর ফিরতেও পারবি না।তাই আসলে তোর জন্য কিছু করার ক্ষমতা আমার নেই। থাকলে অবশ্যই করতাম। তবে হ্যাঁ যদি কখনো চিন্তা করিস যে তুই এই পথে আসবি। তাহলে আমার সাথে যোগাযোগ করিস।যদিও আমার পরামর্শ থাকবে এই পথে না আসার।তুই আমার ছোটবেলার বন্ধু। তোর কোন ক্ষতি হোক এটা আমি চাইনা। তবে বাস্তবতা বড়ই নিষ্ঠুর। চেষ্টা করে দেখ কোন চাকরি জোগাড় করতে পারিস কিনা। সেটাই তোর জন্য সবচাইতে ভালো হয়।

তখন শাহিন রমিজকে বলে উঠিরে। এখন বাড়ি যেতে হবে। শাহীন উঠে দাঁড়ালে রমিজ পকেট থেকে কিছু টাকা বের করে শাহিনের হাতে দিয়ে বলে এটা রাখ। তোর কাজে লাগবে। শাহীন রমিজের ব্যবহারে অবাক হয়ে যায়। একজন মাদক ব্যবসায়ী যে এতটা ভালো হতে পারে সে কখনো চিন্তাও করতে পারেনি। শাহীন একটি চাকরির জন্য হন্যে হয়ে ঘুরতে থাকে। কিন্তু কোথাও কোনো ব্যবস্থা হয় না। এদিকে হাতে যে অল্প কিছু টাকা ছিল সে টাকাও সব শেষ হয়ে গিয়েছে। কি করবে শাহীন কিছুই চিন্তা করে বের করতে পারে না।

শাহিন জানে মাস শেষ হয়ে যাওয়াতে এখন অনেক সমস্যা শুরু হবে। বাড়ি ভাড়া দিতে হবে, কারেন্টের বিল, বাচ্চাদের স্কুলের বেতন, প্রাইভেট টিউটরের বেতন আরো হাজারো খরচ। কিন্তু হাতে আর কোনো টাকা নেই। ঘরের বাজারও শেষ হয়ে গিয়েছে। শাহিনের বউ এসে হাতে বাজারের ব্যাগ দিয়ে বলে যেভাবে হোক কিছু টাকা জোগাড় করে বাজার করে নিয়ে এসো। না হলে কিন্তু বাচ্চাদেরকে আজ থেকে না খেয়ে থাকতে হবে। শাহীন তার বউয়ের মুখের দিকে ফ্যালফ্যাল করে তাকিয়ে থাকে। তারপরে মাথাটা নিচু করে বাজারের ব্যাগ নিয়ে বের হয়ে যায়।

বাসা থেকে বের হয়ে শাহিন তার বন্ধুর রমিজকে ফোন দেয়। রমিজকে বলে তুই যেভাবে হোক আমাকে এখনই একটা কাজ দে। আমার ঘরে কোন বাজার নেই। তাছাড়া সংসার চালাতে অনেক টাকা লাগবে। আমাকে যেভাবেই হোক এখন কিছু টাকা ইনকামের ব্যবস্থা করতে হবে। তখন রমিজ শাহীনকে বলে তুই রেললাইনের দিকে চলে আয়। আমি ওখানে আছি। সেখানে গেলে তখন রমিজ শাহীনকে বলে একটা কাজ আছে। কিন্তু খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। ভয়ে কেউ করতে চাচ্ছেনা। শাহীন তখন রমিজকে জিজ্ঞেস করে কি কাজ? তখন রমিজ শাহীনকে বলে দুটো প্যাকেট একটা জায়গায় পৌঁছে দিতে হবে। কিন্তু পথে পুলিশ প্রায় সবাইকে চেক করছে। বিশেষ করে যাদেরকে সন্দেহ হচ্ছে। (চলবে)

ফটোগ্রাফির জন্য ব্যবহৃত ডিভাইসহুয়াই নোভা 2i
ফটোগ্রাফার@rupok

logo.png

Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power

250 SP500 SP1000 SP2000 SP5000 SP

Heroism_3rd.png

standard_Discord_Zip.gif


break .png

Support @Bangla.Witness by Casting your witness vote


VOTE @bangla.witness as witness


witness_vote.png

OR

SET @rme as your proxy

witness_proxy_vote.png



🇧🇩🇧🇩ধন্যবাদ🇧🇩🇧🇩


@rupok

Sort:  
 2 years ago 

কালকের পর্বটা পড়েছিলাম।শাহীনের এমন একটা পরিস্থিতি না পারবে মাদকব্যবসায় যুক্ত হতে আবার না হলে না খেয়ে থাকতে হবে।শহীন কি নিজের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে রমিজের কাজটা করে দিবে।আসলে অভাব যখন আসে নীতি জিনিস গুলো জালানা দিয়ে পালাই।দেখা যাক সামনে পর্বে শাহীন কি করবে। ধন্যবাদ

 2 years ago 

আসসালামু আলাইকুম ভাইয়া। আশাকরি এই শীতে ভাল আছেন।
আজ গল্পটির তৃতীয় পর্ব পড়লাম। শাহীন খুব খারাপ সময় পার করছে। তার এখন অনেক টাকার দরকার।ঘরে বাজার নেই, কিছু টাকা ছিল তাও শেষ।কি করবে এখন শাহীন।শাহিনের বন্ধু রমিজের সাথে দেখা হলো। সে খুব ভাল ছেলে ছিল। সঙ দোষে আজ তার এই অবস্থা। রমিজের দেয়া কাজ শাহিন কি করবে?? যেখানে পুলিশ সন্দেহ হলে চেক করে।দেখা যাক পরের পর্বে কি হয়?? অনেক ধন্যবাদ ভাইয়া গল্পটি শেয়ার করার জন্য। অনেক অভিনন্দন আপনাকে।

 2 years ago 

গল্পটা পরে আমার তো রীতিমত আগ্রহ আরও বেরে গেল। ভাইয়া আমি আপনার গল্পটার আগের পূর্বটিও পড়েছি। আসলে এক্ষেত্রে শাহীনের মত মানুষদের কিছুই করার থাকে না। সমাজের আজ যে অবস্থা তাতে শাহীনদের কোন দোষ আছে বলে আমার মনে হয় না। শাহীনদের কে যারা খারাপ পথে ঠেলে দেয় দায়ী তারাই। জানিনা আগামী পর্বে কি হবে? শাহীন কি রমিজের প্যাকেট গুলো পৌঁছে দিয়ে পরিবারের মুখে আহার তুলে দিবে? নাকি পরিবার কে সততার বলি হয়ে পরিবার কে অভুক্ত রাখবে। অপেক্ষায় রইলাম জানার।

Coin Marketplace

STEEM 0.18
TRX 0.15
JST 0.029
BTC 62647.29
ETH 2439.61
USDT 1.00
SBD 2.66