স্বপ্ন পূরণে ছুটে চলা (প্রথম পর্ব)।
অফিস থেকে আজ সোহেল একটু তাড়াতাড়ি বের হয়েছে। বিশেষ কোনো কাজ না থাকায় সোহেল তার বসের কাছ থেকে বলে অফিস থেকে বেরিয়ে এসেছে। আগামী কাল শুক্রবার তার অফিস ছুটি। তাই অফিস থেকে একটু তাড়াতাড়ি বের হতে পেরে সোহেলের আরো ভালো লাগছিল। মনে হচ্ছিল ছুটিটা একটু বেশি পাওয়া গেলো। এখন বেলা সাড়ে তিনটা বাজে। এই সময়ে রাস্তাঘাটে যানবাহন কিছুটা কম থাকে। তবে রাস্তায় প্রচন্ড গরম।
এতক্ষণ অফিসের শীততাপ নিয়ন্ত্রিত রুমে বসে থেকে সোহেল সেটা বুঝতে পারেনি। অফিস থেকে বের হয়ে সোহেল উবারে মোটরসাইকেল কল করলো বাড়িতে যাওয়ার জন্য। সোহেল বাসা থেকে অফিসে আসা এবং অফিস থেকে বাসায় যাওয়ার জন্য সব সময় উবারের মোটরসাইকেল সার্ভিস ব্যবহার করে। কারণ ক্যাব নিতে গেলে যাতায়াত খরচ অনেকটা বেশি হয়ে যায়। তাই একটু সাশ্রয়ী উপায়ে যাওয়া আসার জন্য সে উবারের মোটরসাইকেল সার্ভিস ব্যবহার করে।
মোটরসাইকেল কল করে সোহেল অপেক্ষা করছিলো। তবে ইদানিং সে একটি বিষয় খেয়াল করে দেখেছে। এখন মোটরসাইকেল কল করলে অনেক সময় লাগে তাদের আসতে। কারণ আগে এক সময় প্রচুর উবারের মোটরসাইকেল রাইডার ছিল। কিন্তু বিভিন্ন সমস্যার কারণে অনেকেই এই পেশা থেকে বেরিয়ে গিয়েছে। রোদ্রের ভেতর বেশ কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে থেকে সোহেলের মেজাজ কিছুটা খারাপ হয়ে গেলো। ট্রিপ ক্যানসেল করবে কিনা যখন এমন চিন্তা করছিল তখনই তার রাইডারের ফোন পেল।
ফোন দিয়ে সে সোহেলকে জানালো তার আর আসতে মাত্র ২-৩ মিনিট লাগবে। সোহেল চিন্তা করল যেহেতু কাছাকাছি এসেই গিয়েছে তাই আর ক্যানসেল করার দরকার নেই। এর ভেতরে মোটরসাইকেল চালক এসে সোহেলের সামনে দাঁড়ালো। সোহেল জিজ্ঞেস করলো আপনার নাম জামাল? ছেলেটি সোহেলকে জিজ্ঞেস করল স্যার আপনি কল করেছেন? সোহেল জানালো হ্যাঁ। তারপর মোটরসাইকেল রাইডার সোহেলের দিকে একটি হেলমেট বাড়িয়ে দিল। বলল স্যার হেলমেটটা পড়ে নিন।
যদিও এই হেলমেটগুলি পরতে সোহেলের মোটেই ভালো লাগেনা। কারণ বহু মানুষ ব্যবহার করেছে এই হেলমেটগুলি। আর বেশিরভাগ হেলমেট দিয়ে বিকট ঘামের গন্ধ থাকে। কিন্তু কিছুই করার নেই। কারণ রাস্তায় ট্রাফিক পুলিশ হেলমেট ছাড়া ধরতে পারলে জরিমানা করবে। তাই অনিচ্ছা সত্ত্বেও সোহেল হেলমেটটি পড়ে নিল। তবে হেলমেট পরতে গিয়ে সোহেল বুঝতে পারলো হেলমেটটি যত্ন করে রাখা হয়েছে। কারণ হেলমেটটিতে কোন গন্ধ নেই।
সোহেল মোটরসাইকেলে উঠে বসতে মোটরসাইকেল চলতে শুরু করলো। ছেলেটি বেশ সাবধানতার সাথে মোটরসাইকেল চালাচ্ছিল। আজকার রাইডারদের দেখা যায় অনেক রাফ ড্রাইভিং করতে। এই রাইডারের এই সাবধানে চালানো সোহেলের পছন্দ হলো। বেশ কিছু দূর যাওয়ার পরে তারা একটি জ্যামে আটকা পড়ল। যেহেতু কিছুই করার নেই তাই সোহেল রাইডারের সাথে কথা বলতে শুরু করলো। প্রথমেই রাইডার কে জিজ্ঞেস করল আপনার বাড়ি কোথায়?
রাইডার জানালো তার বাড়ি বরিশাল। সোহেল খেয়াল করেছে রাইডারের সামনের দিকে একটি ব্যাগ ঝোলানো আছে। দেখে অনেকটা ছাত্রদের ব্যাগের মতো মনে হচ্ছে। তাই সোহেল তাকে জিজ্ঞেস করল আপনি কি লেখাপড়া করেন? তখন মোটরসাইকেল চালক তাকে জানালো স্যার আমি বিবিএ তে পড়ছি ঢাকা ভার্সিটিতে। শুনে সোহেল কিছুটা অবাক হলো। (চলবে)
Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |
বর্তমানে অসংখ্য ছাএ নিজের লেখাপড়ার খরচ চালানোর জন্য বা অন্য কোনো কারণে উবারে রাইড শেয়ার ফুড পান্ডায় ফুড ডেলিভারি করে থাকে। প্রথম পর্বটা বেশ ভালো লাগল। পরের পর্বের জন্য
অপেক্ষায় থাকলাম ভাই।
অনেক সুন্দর একটি গল্প লিখেছেন ভাইয়া। রাইডারের মোটরসাইকেল চালানোর সাবধানতা এবং দুর্গন্ধ মুক্ত হেলমেট রাইডারের ভদ্রতার পরিচয় বহন করছে। রাইডার একজন ঢাকা ভার্সিটির বিবিএ এর ছাত্র জানতে পেরে আমিও সোহেল সাহেবের মত অবাক হয়ে গেলাম।