বন্ধুর সাথে পদ্মার চরে ঘুরতে যাওয়া। ১০% প্রিয় লাজুক খ্যাঁক এর জন্য।

in আমার বাংলা ব্লগ3 years ago

কেমন আছেন আমার বাংলা ব্লগের বন্ধুরা? আমি ভালো আছি। আশাকরি আপনারা ও ভালো আছেন।


কয়েকদিন আগেই আমি আমার বন্ধুর সঙ্গে পরিকল্পনা করেছিলাম পদ্মার চরে ঘুরতে যাওয়ার। কিন্তু ওর সমস্যা হচ্ছে কোন পরিকল্পনায় সে স্থির থাকতে পারে না। যেকোনো জায়গায় ঘুরতে যাওয়ার কথা থাকলে ঠিক আগ মুহূর্তে এসে ওর কোন একটা সমস্যা আসবে। এবারও তাই হয়েছিলো। যার ফলে আমাদের যেদিন ঘুরতে যাওয়ার কথা ছিল সেদিন আর যাওয়া হয়নি।

IMG_20210916_114353.jpg

স্থান- লিংক


গতকাল রাতে ও আমাকে ফোন দিয়ে বলল আজকে আমার পাসপোর্ট অফিসে কিছু কাজ আছে। কাজ তাড়াতাড়ি শেষ হলে আজকে আমরা পদ্মার চরে ঘুরতে যাব। আমি জিজ্ঞেস করলাম কটার দিকে কাজ শেষ হবে। ও বলল আমরা এগারোটার দিকে যাবো। আমি তখন বললাম এগারোটার দিকে তো অনেক বেলা হয়ে যাবে। তখন তো রোদ মাথার উপরে চলে আসবে। ও বললো সমস্যা হবে না চলো দুজন ঘুরে আসি। তারপর দুজনে ট্রলার ঘাটে কখন দেখা করব সে বিষয়টা ঠিক করে ফোন রেখে দিলাম।

সকালে আমার ঘুম থেকে উঠতে কিছুটা দেরি হয়েছিল। তার পরেও আমি নির্ধারিত সময়ের ভিতরেই সেখানে পৌঁছে গিয়েছিলাম। গিয়ে দেখলাম ঘাটে ট্রলার আছে কিন্তু একটা সমস্যা হচ্ছে এই ট্রলারে কোন ছাউনি নেই। খোলা ট্রলার যার ফলে এই প্রচণ্ড রোদে আমাদের সমস্যা হবে। তারপরও সৃষ্টিকর্তার উপর ভরসা করে ট্রলারে চেপে বসলাম। ওঠার আগে কিছু হালকা খাবার কিনে নিয়েছিলাম।

IMG_20210916_114327.jpg

স্থান- লিংক

যথারীতি সময়মতো ট্রলার ছাড়লো। কিন্তু আমরা আগে যেই পথে চরের দিকে যেতাম এবার দেখলাম অনেকটা ঘুর পথে যাচ্ছে ট্রলার। জিজ্ঞেস করলে জানতে পারলাম আগে যেখান দিয়ে যেতো সেখানে পলি জমে চর পড়ে গিয়েছে। ফলে সেই জায়গাটা বন্ধ হয়ে গিয়েছে। সেজন্য এখন অনেকটা ঘুর পথে যেতে হয়। এর ভিতর পদ্মার পানি কমা শুরু হয়ে গিয়েছে।

IMG_20210916_123022.jpg

স্থান- লিংক

পানি কমে গেলে ট্রলার বেশিদূর যেতে পারে না। তখন চরের মানুষজনের চলাফেরা করতে অনেক সমস্যা হয়। যখন পানি বেশি থাকে তখন চরের মানুষ বাড়ির কাছাকাছি পর্যন্ত ট্রলারে করে যেতে পারে। চরের মানুষের শহরের সাথে যোগাযোগের একমাত্র মাধ্যম হচ্ছে এই ট্রলার। সেটা যেকোন প্রয়োজনে হোক। হোক সেটা বিয়ে অথবা কোন অসুস্থ রোগীর ক্ষেত্রে। সবার জন্য একই ব্যবস্থা।

IMG_20210916_121301.jpg

স্থান- লিংক

IMG_20210916_121353.jpg

স্থান- লিংক

চরের মানুষের জীবনযাত্রায় কিছু জটিলতা থাকলেও কিছু মজা ও আছে। চরের মানুষের জীবনের সবচেয়ে বড় সমস্যা হচ্ছে নদী ভাঙ্গন। এছাড়া অন্য কোন সমস্যায় তারা তেমন বিচলিত হয় না। আর সুবিধা হচ্ছে চরের মানুষজন সবকিছু টাটকা খেতে পারে। কারন পলি দ্বারা চর গঠিত হওয়ার কারণে চরের মাটি খুবই উর্বর হয়। সেখানে সব ধরনের ফসল হয়। নদীর টাটকা মাছ, নিজের ক্ষেতের টাটকা সবজি এগুলি চরের মানুষ খুব সহজেই পেয়ে যায়।

IMG_20210916_131057.jpg

স্থান- লিংক

IMG_20210916_131739.jpg

স্থান- লিংক

IMG_20210916_131342.jpg

স্থান- লিংক

চরের মানুষের জীবনে আরো একটা সমস্যা ছিলো সেখানে বিদ্যুৎ ছিলো না। কিন্তু বর্তমানে বিদ্যুৎ পৌঁছে গিয়েছে। আমরা রওনা দেয়ার কিছুক্ষণ পরেই বুঝতে পারলাম আসলে এই প্রখর রোদের ভিতর সেখানে যাওয়া ঠিক হচ্ছে না। চরে পৌঁছাতে আমাদের প্রায় এক ঘণ্টা সময় লাগলো। এই একঘন্টা সময় এর বেশিরভাগ সময়ই তীব্র রোদ সহ্য করতে হয়েছে।

যখন আমরা চরে পৌঁছলাম তখন প্রথমে ছায়াযুক্ত একটি স্থানে কিছুক্ষণ বিশ্রাম নিলাম। চরের মানুষের চলাফেরা করার জন্য তিন ধরনের যানবাহন দেখলাম। এক হচ্ছে মোটরসাইকেল, দ্বিতীয়ত অটোরিকশা আর হচ্ছে ঘোড়ার গাড়ি। ব্যবস্থাগুলো দেখে ভালই লাগলো। ঘোড়ার গাড়ি তো এখন শহরে দেখাই যায় না। আমরা বেশ কিছুক্ষণ ধরে ঘোরাফেরা করলাম।

চরে সুন্দর একটি বাড়ি আছে। বাড়িটি আমাদের এলাকার সংসদ সদস্যের। যিনি ছিলেন প্রাক্তন মন্ত্রী। রাজনৈতিক সমস্যার কারণে তিনি আর বর্তমানে এলাকায় আসেন না। বাড়িটি বর্তমানে তার একজন কেয়ারটেকার দেখাশোনা করেন। বাড়িটি খুবই সুন্দর বাড়ির পাশে একটি ঘাট বাঁধানো সুন্দর পুকুর আছে আমরা সেই পুকুর ঘাটে কিছুক্ষণ সময় অতিবাহিত করলাম।

IMG_20210916_132846.jpg

স্থান- লিংক

IMG_20210916_133056.jpg

স্থান- লিংক

তীব্র রোদের কারণে বেশিক্ষণ ধরে ঘোরাফেরা করতে পারিনি। কিছুক্ষণ ঘোরাফেরা করে প্রচন্ড পানি পিপাসা হচ্ছিল। তারপর চরের ভেতরে একটি দোকান থেকে ঠান্ডা কোমল পানীয় আর কিছু হালকা খাবার কিনে খেলাম। আরো কিছুক্ষণ ঘোরাফেরা করার পর ফিরতি ট্রলার ধরে আমরা ফিরে আসলাম।

IMG_20210916_123413.jpg

স্থান-লিংক

IMG_20210916_155156.jpg

স্থান-লিংক

IMG_20210916_155141.jpg

স্থান-লিংক

এই ছিল আমাদের আজকের ভ্রমণের অভিজ্ঞতা। আজকের মতো এখানেই শেষ করছি। আশা করি পোস্টটি আপনাদের ভালো লেগেছে। পরবর্তীতে আপনাদের সাথে দেখা হবে অন্য কোন নতুন লেখা নিয়ে। সে পর্যন্ত সবাই ভাল থাকুন সুস্থ থাকুন।

ফটোগ্রাফির জন্য ব্যবহৃত যন্ত্রহুয়াই নোভা ২আই

🇧🇩🇧🇩ধন্যবাদ🇧🇩🇧🇩


@rupok



আমি রূপক। আমি একজন বাংলাদেশী। আমি বাঙালি। আমি বাংলায় মনের ভাব প্রকাশ করতে ভালোবাসি। আমি আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটিকেও ভালোবাসি।

Sort:  
 3 years ago 

মনে হচ্ছে খুব ভালোই সময় কাটল ভাইয়া আপনার খুব সুন্দর জায়গাটা। আপনার ছবিগুলো খুবই সুন্দর দেখাচ্ছে। আপনি খুব ভালো একজন ফটোগ্রাফার। আপনার জন্য শুভকামনা রইল।

 3 years ago 

আপনাকে ও অসংখ্য ধন্যবাদ।

 3 years ago 

বন্ধুর সাথে পদ্মার চরে ঘুরতে গিয়ে খুব আনন্দের মুহূর্ত কাটিয়েছেন। আর আপনার ফটোগ্রাফি গুলো খুবই সুন্দর হয়েছে। অনেক ধন্যবাদ ভাইয়া আপনাকে আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য।

 3 years ago 

আপনাকে ও অসংখ্য ধন্যবাদ।

 3 years ago 

আমি কখনো পদ্মা নদীর পারে জাইনি। আপনার সুন্দর ফটোগ্রাফির কারনে আমার পদ্মা নদী দেখা হয়ে গেলো। অনেক সুন্দর ফটোগ্রাফি করেছেন ভাই আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ

মুহূর্তটা খুব সুন্দর উপভোগ করেছেন আপনি।ফটোগ্রাফি গুলো আপনার মনের অনুভতির প্রকাশ করেছে।সব গুলো ফটোগ্রাফি যেন কথা বলছে ।অনেক সুন্দর হয়েছে ভাই ,আপনার জন্য শুভকামনা রইলো ভাই।

image.png
ছবিটা খুব সুন্দর হয়েছে ভাই।কাশফুল দেখিনা অনেক দিন হলো।

শুভ কামনা রইলো আপনার জন্য।

নদী মাতৃক দেশ বাংলাদেশ। প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের লিলাভুমি এই নদীর চারপাশগুলো। পদ্মার চরে কাটানো আপনার সময়টা অসাধারণ ছিল। লেখার সাথে যেন ফটোগ্রাফি গুলো সুন্দর নিপুন হাতে সাজানো। অসাধারণ সব ফটোগ্রাফি। শুভ কামনা ভাইয়া।

 3 years ago 

অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে ভাই।

 3 years ago 

পদ্মার চর আমার খুব পছন্দের একটি জায়গা। আমি উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার পর এডমিশন কোচিং করার জন্য যখন রাজশাহী গিয়েছিলাম তখন মন খারাপের সময়গুলোতে পদ্মার চরে গেলেই মন ভালো হত।বন্ধুর সাথে পদ্মার চরে ঘুরতে যাওয়ার অভিজ্ঞতা আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।

 3 years ago 

ধন্যবাদ আপনাকে।

আপনার ঘোরাঘুরি কথা শুনে একধরনের লোভ হয়ে গেলো কতদিন যে কোথাও ঘুরতে যাইনি নিজেও জানিনা। শুভকামনা অবিরাম আপনার জন্য।

 3 years ago 

অসাধারণ একটি দিন কাটিয়েছেন ভাইয়া। আমার খুব ভালো লাগে নৌকায় করে ঘুরতে। ফটোসেশান অনেক ভালো হইছে। ধন্যবাদ

 3 years ago 

বন্ধুদের সাথে ঘুরাঘুরি করার মতো মজা অন্য কিছুতে বোধহয় নেয় আমার মনে হয়।পদ্মার পানি এখন নিচে নামছে এক অপুরুপ সুন্দর ভাল লাগবে এই দৃশ্য গুলো।অসংখ্য ধন্যবাদ সুন্দর মুহুর্তটি আমাদের সাথে ভাগ করে নেবার জন্য।

 3 years ago 

আপনাকে ও অসংখ্য ধন্যবাদ।

 3 years ago 

একটা ব্যাপার পড়ে খারাপ লাগলো।ওইটা হচ্ছে নদী ভাঙ্গণ। কখনো সামনাসামনি তো দেখিনি নদী ভাঙ্গতে কিন্তু টিভিতে দেখেছি।টিভি তে দেখলাম নদী ভাঙ্গার মূহুর্তটাতে কি সহজেই ঘর বাড়ি,স্কুল কলেজ মানে সবকিছুই তলিয়ে যায় পানিতে। তাও আবার নিমিষেই।
ভাইয়া আপনার ফটোগ্রাফী আমার খুব খুব খুব বেশি প্রিয়। আপনি খুব সুন্দর ফটোগ্রাফী করেন।ছবিগুলো দেখে মনেহয় একদম জীবন্ত।

 3 years ago 

আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ আপু।

Coin Marketplace

STEEM 0.18
TRX 0.14
JST 0.029
BTC 57382.38
ETH 3075.07
USDT 1.00
SBD 2.39