মোঃআশরাফুল এক প্রতিভার অপচয়। ১০% প্রিয় লাজুক খ্যাঁক এর জন্য।
ছোটবেলা থেকেই আমি একটু ক্রীড়াপ্রেমী।
সব ধরনের খেলাধুলাই আমার ভালো লাগতো।
কিন্তু সমস্ত খেলাধুলার ভিতরে ক্রিকেট খেলা আমার অন্যরকম ভালো লাগতো।আমি ছোটবেলা থেকেই মুগ্ধ হয়ে ক্রিকেট খেলা দেখতাম।
তখন অবশ্য বাংলাদেশ দল এখনকার মতো অবস্থায় ছিলো না। তখন বেশিরভাগ সময় অন্য দলকে সাপোর্ট করতাম। যখন অন্য দলের সঙ্গে বাংলাদেশের খেলা হতো তখন দুরুদুরু বুকে অপেক্ষা করতাম এবং মনে মনে শুধু চাইতাম যেন লজ্জাজনক হার না হয়। তখন বাংলাদেশ দল ব্যাটিং করে ১৭০/১৮০ রান করলে আমরা অনেক খুশি হতাম। কেউ একজন ফিফটি মারলে আমরা সেটার অনেক প্রশংসা করতাম। বাংলাদেশ দল যদি একটু ফাইট করতে পারতো সেটা নিয়ে আমরা অনেক গর্ব করতাম।
ছবির- সোর্স
যদিও তখন কেবল আমাদের ক্রিকেটে হাতে খড়ি হচ্ছে। তখন আমাদের কোন ম্যাচ জেতানোর মত প্লেয়ার ছিল না। এই আফসোসটা খুব হোতো। প্রত্যেক দলে একাধিক তারকা ক্রিকেটার থাকতো। কিন্তু আমাদের দলে তারকা বলতে তেমন কেউ ছিলনা। একমাত্র মোহাম্মদ রফিক ছিল যাকে নিয়ে ধারাভাষ্যকাররা কিছু ভালো কথা বলতো।
এরপর ২০০১ সালে আশরাফুল নামের এক কিশোরের বাংলাদেশ দলে আবির্ভাব হলো। ওয়ানডে ক্যারিয়ারের শুরুতে তিনি খুব একটা ভালো করতে পারেননি। কিন্তু যখন তার অভিষেক হয় তখন আমরা শুনতে পেতাম যে এই ব্যাটসম্যান অত্যন্ত প্রতিভাবান। শ্রীলংকার সাথে যখন অভিষেক টেস্টে সেঞ্চুরি করে বিশ্ব রেকর্ডে নিজের নাম লেখালেন। তখন সারা বিশ্ব এই কিশোরের প্রতি আগ্রহী হয়ে উঠলো। রাতারাতি তারকা বনে গেলেন। তারপর থেকেই বাংলাদেশ ক্রিকেটে এক অন্যরকম শুরু হলো। এমন না যে বাংলাদেশ দল তারপর থেকেই ম্যাচ জেতা শুরু করলো। কিন্তু প্রতিপক্ষ দলকেও যে আক্রমনাত্মক খেলার মাধ্যমে কিছুটা সময়ের জন্য হলেও চাপে রাখা যায় সেটা আশরাফুল আসার পরেই আমরা দেখতে পেলাম।
আশরাফুল আসার পরে আমাদের মনে এই আশার সঞ্চার হলো এখন আমাদেরও এমন একজন ব্যাটসম্যান আছেন যিনি আমাদেরকে ম্যাচ জেতাতে পারেন। কিন্তু শুরু থেকেই মোহাম্মদ আশরাফুল ছিলেন অধারাবাহিক। এক ম্যাচে রান করে তো আরো তিন ম্যাচ খারাপ খেলেন। এই ভাবেই তার ক্যারিয়ারে এগিয়ে চলছিল। মাঝে মাঝেই তার প্রতিভার ঝলক দেখা যেত। কিন্তু সেটা দলের জন্য যথেষ্ট ছিল না। আশরাফুলের কাছ থেকে আমরা বেশ কিছু দুর্দান্ত ইনিংস দেখেছি। যেমন অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে তার ম্যাচ জেতানো ওয়ানডে শতক, ইংল্যান্ডের বিপক্ষে তার দ্রুত ৯২ রান, ২০০৭ বিশ্বকাপে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ৮৭ রান। যেটিতে তিনি ম্যান অফ দ্যা ম্যাচ ও হয়েছিলেন। ভারতের বিপক্ষে টেস্টে ১৫৮ রানের অনবদ্য ইনিংস। এমন আরও অনেক ইনিংস দিনে উপহার দিয়েছেন আমাদের। কিন্তু আশরাফুলের উপর আমাদের যে প্রত্যাশার চাপ ছিল সেটা তিনি পূরণ করতে ব্যর্থ হয়েছেন। এই ব্যর্থতার দায় শুধু তার একার নয়। আমাদের ক্রিকেট সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের ও এই ব্যর্থতার দায় নিতে হবে। আশরাফুলকে দেখভালের দায়িত্ব ছিল বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের। তারা সেটা ভালোমতো করতে পারেনি। সদ্য কৈশোর উত্তীর্ণ একটা ক্রিকেটারকে যেভাবে দেখভাল করা দরকার ছিল সেটা মোটেও করা হয়নি। বরং তার উপর প্রত্যাশার বোঝা চাপিয়ে দেয়া হয়েছে। যার ফলে পরবর্তীতে সে আর তাকে মেলে ধরতে পারেনি।
একটা পর্যায়ে এসে সে হতাশাগ্রস্ত হয়ে অন্ধকার পথের দিকে পা বাড়ায়। তারপর তার ক্যারিয়ারটাই ধ্বংস হয়ে যায়। স্পট ফিক্সিং এর মত জঘন্য কর্মকাণ্ডে সে নিজেকে জড়িয়ে রয়েছে ঘৃণিত এবং নিন্দিত হয়।
এখনো আশরাফুলের কথা মনে হলে বুকের ভেতর হাহাকার করে ওঠে। আজকে আশরাফুলের কোথায় থাকার কথা ছিলো আর তিনি কি অবস্থায় আছেন। আমাদের সময়ে আশরাফুল ছিলেন বাংলাদেশ দলের পোস্টার বয়। বিশ্বের ক্রিকেট মিডিয়া সব সময় তাকে নিয়ে অনেক প্রশংসা করেছে। সেই প্রশংসা আমাদের মনে আফসোস আরো বাড়িয়েছে।
আজকের মতো এখানেই শেষ করছি। পরবর্তীতে আপনাদের সাথে দেখা হবে অন্য কোন লেখা নিয়ে। সে পর্যন্ত সবাই ভাল থাকুন সুস্থ থাকুন।
![logo.png](https://steemitimages.com/640x0/https://cdn.steemitimages.com/DQmZEaz6VZmitMY1N8dSXHuT2tfgXFnDKjY8iV7jNGuNwEE/logo.png)
Support @amarbanglablog by delegating STEEM POWER.
100 SP | 250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP |
🇧🇩🇧🇩ধন্যবাদ🇧🇩🇧🇩
![](https://steemitimages.com/640x0/https://cdn.steemitimages.com/DQmeu7bMtmK6H5wsD2CFwpuo284mVAKuMo8rpv8AWFAX5pV/IMG_20210731_195547.png)
আমি রূপক। আমি একজন বাংলাদেশী। আমি বাঙালি। আমি বাংলায় মনের ভাব প্রকাশ করতে ভালোবাসি। আমি আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটিকেও ভালোবাসি।
আমার সবচেয়ে প্রিয় খেলয়ার অ্যাশ।আমার বুদ্ধি পর থেকে আমি উনার খেলা দেখি।আর উনাকে এখন মিস করি।
আমিও এ্যাশকে মিস করি। দুর্দান্ত একজন প্লেয়ার ছিল সে।
আমার ছোট বেলা থেকে আশরাফুলের খেলা অনেক ভালো লাগে। ওনাকে অনেক মিস করি। আপনি অনেক সুন্দর ভাবে উপস্থাপন করছেন। ধন্যবাদ আপনাকে
আপনাকে ধন্যবাদ।
আশরাফুল বাংলাদেশের একজন অন্যতম খেলোয়াড়।তার ব্যাটিং দেখার আগ্রহে আমি রাত জেগে অনেক খেলা দেখেছি ছোট বেলায়। যার হাতে কেরে এনেছে অনেক বড় বড় বিজয়।আমরা সবাই তো তার সম্পর্কে জানি আমরা তাকে চাই।কিন্তু বিসিবি কেন তাকে চায় না😑।ধন্যবাদ ভাই একজন তারকা খেলোয়াড়কে নিয়ে আলোচনা করার জন্য।অনেক শুভেচ্ছা রইলো ভাই।
আপনাকে ও অসংখ্য ধন্যবাদ।
আশরাফুল আমাদের এই বাংলাদেশের উজ্জ্বল ভবিষ্যতমুখী একজন খেলোয়াড় ছিলো।তার অনেক খেলার ভিডিও আমি দেখেছি ইউটিউবে। আমার কাছে মনে হয় তাকে আরেকবার সুযোগ দেওয়া উচিত।যদিও ব্যাপারটা একদম ই আবেগের জায়গা থেকে বলা।সুন্দর লিখেছেন ভাইয়া।
আপনাকে ধন্যবাদ।
আমাদের দেশের প্রতিটি ক্রিকেট প্লেয়ার এ টাইগার। তবে বিশেষ কিছু ক্ষমতা সম্পন্ন খেলোয়াড় আশরাফুল।
তার জন্য অনেক অনেক শুভকামনা
ধন্যবাদ আপনাকে।
আপনাকেও অসংখ্য ধন্যবাদ
Class প্লেয়ার তবে ধারাবাহিকতার বড্ড অভাব ছিলো। অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে ওই ম্যাচটা আমি দেখেছিলাম। দাঁতে দাঁত চেপে সেদিনের লড়াইটা সত্যিই অনবদ্য ছিলো। লেখাটা বেশ ভালো হয়েছে দাদা।
ধন্যবাদ দাদা। ওই ইনিংসটা সত্যিই অসাধারণ ছিলো।
আমার মনে আশরাফুল সবারই প্রিয় একজন খেলোয়ার।তেমনি আমার ও।আমি আশরাফুল কে ব্যাক্তিগত ভাবে অনেক মিস করি।আমার মনে পড়ে অস্ট্রেলিয়ার সাথে অ্যাশ এর খেলাটা।অস্ট্রেলিয়ার ক্যাপ্টেন সম্ভবত তখন রিকি পন্টিং তার খেলায় মুগ্ধ হয়ে করতালির মাধ্যমে বাহ বা জানিয়েছিলেন। অ্যাশকে দেখলেই আমার সেদিনের কথা মনে পরে।
যাইহোক আপনি সুন্দর ভাবে প্রিয় অ্যাশ কে নিয়ে উপস্থাপন করেছেন শুভেচ্ছা ও অভিন্দন ভাইয়া।
আমি ব্যক্তিগতভাবে আশরাফুলের কখনোই ভক্ত ছিলাম না। তার কন্সিস্টেন্সির জন্য আমার কাছে খারাপ লাগত। আমি মনে করি ভাল খেলোয়াররা বেশিরভাগ সময়ই ভাল খেলবে। তখন বাংলাদেশ আজকের মত দল ছিল না। তবে আজকের মত এমন দল এ খেললে হয়ত আশারাফুল অনেক ভালভাবে তার প্রতিভা আরো দেখাতে পারত। ধন্যবাদ।
ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য।