ঐতিহ্যবাহী জসিম পল্লী মেলা ভ্রমণের অভিজ্ঞতা ( তৃতীয় পর্ব)। ১০% সাই-ফক্স।
এর আগে দুটি পোস্টে আপনাদের সাথে মেলার বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করেছি। আজ মেলার সবচাইতে গুরুত্বপূর্ণ একটি অংশ আপনাদের কাছে তুলে ধরবো। মেলায় যে সমস্ত দর্শনার্থীরা আসে তারা মেলার বিভিন্ন জিনিস ঘুরে ফিরে দেখার পর কিছু কিনুক অথবা না কিনুক। কিন্তু মেলার মুখরোচক খাবার তাদের খেতেই হবে। যার ফলে মেলার খাবার দাবারের ব্যাবস্থাটা সবচাইতে ব্যবসাসফল হয়ে থাকে।
যে সমস্ত মানুষ মেলায় আসে তাদের সবাই মেলা থেকে কিছু না কিছু অবশ্যই খেয়ে থাকে। একটা সময় এই ধরনের মেলার মূল আকর্ষণ থাকতো দেশীয় বিভিন্ন রকম খাবার দাবার। বিভিন্ন রকমের আচার এবং ভাজাপোড়া। কিন্তু এখন সেগুলোর পাশাপাশি বার্গার স্যান্ডউইচ এগুলোও পাওয়া যায়। মানুষের খাদ্যাভাসে যে পরিবর্তন এসেছে মেলায় আসলে সেটা বোঝা যায়। যদিও আমার মেলা থেকে খাবার খাওয়ার অভিজ্ঞতা খুব একটা সুখকর নয়। মেলা থেকে যে সমস্ত খাবার-দাবার কিনেছিলাম তার কোনোটাই আমার কাছে খেতে ভালো লাগেনি।
তবে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে একটি স্টলের ব্যবস্থা করা হয়েছিলো। যেখানে অনলাইন উদ্যোক্তারা বাড়িতে প্রস্তুত করা খাবার নিয়ে এসেছিলো বিক্রি করতে। সেখানকার খাবারের মানটা আমার কাছে মোটামুটি ভালোই লেগেছে। আর তাদের আরো একটা জিনিস আমার কাছে ভালো লেগেছে সেটা হচ্ছে তাদের পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা। তাদের প্রতিটা খাবার প্লাস্টিক দিয়ে মোড়ানো ছিলো। যেখানে মেলার বাদবাকি সব খাবার একদম উন্মুক্তভাবে রেখে দেয়া ছিলো। মেলায় প্রচুর দর্শনার্থী আসার কারণে প্রচুর ধুলোবালি উড়ছিলো। তাই এই ধরনের খোলা খাবার খেতে আমার ইচ্ছা করছিলো না।
আর সবচাইতে বেচাকেনা বেশি হয় যে খাবারের সেটা হচ্ছে চটপটি ফুচকা। যদিও বেশির ভাগ দোকানের চটপটি-ফুচকা মোটেও ভালো না। অনেকে মেলায় খাবারের দোকান দেয় সিজনাল ব্যবসা হিসেবে। কোনরকমে রান্না করতে পারে এমন একজনকে বাবুর্চি হিসেবে ধরে এনে বসিয়ে দেয়। যার ফলে এ সমস্ত দোকানের খাবার মোটেও ভাল হয় না। তারপরও বেশিরভাগ খাবারের দাম নেয়া হয় অত্যাধিক বেশি। এতকিছুর পরও মেলায় আসলে সকলেই কিছু না কিছু খায়।
মেলায় দ্বিতীয় দিন যখন গেলাম তখন সাথে পরিবার নিয়ে গিয়েছিলাম। সেদিন মেলা থেকে বেশ কিছু খাবার কিনে এনেছিলাম। অবশ্য মেলাতে থাকা অবস্থায়ও হালকা কিছু খাওয়া হয়েছিলো। মেয়ে বার্গারের দোকান দেখে সেখান থেকে বার্গার খাওয়ার জন্য গো ধরে। অগত্যা কি আর করা তাকে নিয়ে বার্গার খাওয়া হলো। যদিও বার্গার টি ছিলো সেই স্বাস্থ্যসম্মত দোকানের। সেখান থেকে আমি চকলেট মুজ খেয়েছিলাম। সাদ মোটামুটি ভালই ছিলো।
ফেরার সময় আমরা মেলা থেকে বেশ কিছু খাবার কিনে ছিলাম। কিন্তু বাসায় এসে খাবারগুলো খেয়ে খুবই হতাশ হলাম। কোন খাবারই ভালো নয়। মেলা থেকে যে দেশীয় ঐতিহ্যবাহী মিষ্টি জাতীয় খাবার গুলি কিনেছিলাম তার কোনটাই ভালো ছিলো না। কেমন যেনো সব নরম হয়ে গিয়েছিলো। একটি দোকান থেকে কাবাব কিনেছিলাম। সেটাও খেতে ছিল একদম জঘন্য। সবকিছু মিলিয়ে এবারের মেলার খাওয়া-দাওয়ার পর্বটা খুবই খারাপ হয়েছে।
আমার মতে শহরের ভালো হোটেল রেস্টুরেন্ট গুলির উচিত মেলায় স্টল ওপেন করা। তাহলে সেখান থেকে মানুষ ভাল মানের খাবার খেতে পারবে। তাতে তাদের ব্যবসাও ভালো হবে। ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলায় দেখেছি বিভিন্ন ফাস্টফুড শপগুলো তাদের আউটলেট ওপেন করে মেলাতে। সেখানে প্রচুর বেচাকেনা হয়। আমাদের এই মেলায়ও সেটা হলে সকল দর্শনার্থীদের জন্য ভালো হবে।
আজকের মতো এখানে শেষ করছি। পরবর্তীতে আপনাদের সাথে দেখা হবে অন্য কোন নতুন লেখা নিয়ে। সে পর্যন্ত সবাই ভাল থাকুন সুস্থ থাকুন।
ফটোগ্রাফির জন্য ব্যবহৃত ডিভাইস | হুয়াই নোভা 2i |
---|---|
ফটোগ্রাফার | @rupok |
স্থান | অম্বিকাপুর |
Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |
ঐতিহ্যবাহী জসিম পল্লী মেলা ভ্রমণের অভিজ্ঞতাটি বেশ চমৎকার ছিলো। খুব সুন্দরভাবে মেলার ঐতিহ্য আমাদের সামনে তুলে ধরেছেন।
আশা করি ভাইয়া, ভালো আছেন ?ঐতিহ্যবাহী জসিম পল্লী মেলা ভ্রমণের মুহূর্তগুলো খুব সুন্দর ভাবে অতিবাহিত করেছেন আপনার ফটোগ্রাফি গুলো দেখে খুব ভালো লাগলো। এত অসাধারণ মেলার অভিজ্ঞতা আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য আপনাকে অন্তরের অন্তস্থল থেকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানাই।
আসলস মেলার কয়েকটা খাবার বাদে সবকটাই খেতে হয় জঘন্য।তাই আমি আচার,আইসক্রিম এসব ছাড়া বেশি কিছু কখনো কিনি না খাবারের জিনিষ।বা প্যাকেটজাত খাবার।এসব ই কিনি।
ভাই এসব মেলায় আসলে মানুষ যেমন দেখতে যায় তেমনি ভাবে কিন্তু এই খাবার গুলো খুব উপভোগ উপভোগ করে খেয়ে থাকে। আর এই খাবারগুলো আসলে ভালই লাগে। আর চটপটি এবং ফুসকা এগুলো বেশি চলার কারণে এগুলো আসলে সবারই পছন্দ আপনি এই জসীম পল্লীমেলার ভ্রমণের অভিজ্ঞতা আবার আমাদের সাথে বেশ চমৎকার ভাবে উপস্থাপন করেছেন। আর দারুন কিছু ফটোগ্রাফি শেয়ার করেছেন।
কোথাও মেলা হচ্ছে শুনলে, এখনও ইচ্ছা করে গিয়ে জিলাপি খাই। আপনার পোস্টের টাইটেল পড়েও জিলাপি খেতে এসেছিলাম।😁
সময়ের পরিবর্তনে মানুষের খাদ্যাভাসেরও পরিবর্তন হয়েছে। মেলায় তো আগে শুধু জিলাপী, আচার, ঝালমুড়ি এসব পেতাম এখনও আরও কতো কি পাওয়া যায়। মেলাতে চটপটি এতোটাও ভালো লাগেনা। বাহিরের ছোট শপে চটপটি খেতে ভীষণ মজার হয়ে থাকে।
হরেক রকম মানুষের জন্য হরেক রকম খাবার। আচার গুলো দেখে জিহ্বায় পানি চলে আসলো। আমি যদি মেলায় যেতাম প্রথম আর কিছু না কিনলেও আচার কিনতাম। ঐতিহ্যবাহী মেলায় ঐতিহ্যবাহী ফুচকা চটপটি খাকবেই। যাক সব কিছু দেখে অনেক ভাল লাগলো,ধন্যবাদ ভাইয়া।
ভাইয়া, একদম ঠিক কথা লিখেছেন আমরা অনেক সময় মেলায় গেলে জিনিসপত্র কিনি বা না কিনি কিন্তু মেলা থেকে মুখরোচক খাবারগুলো খেতে চাই।তবে ভাইয়া, বেশিরভাগ মেলার খাবার সুস্বাদু হয়না অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে খাবারগুলো রাখা হয় সেজন্য মেলায় গিয়ে তেমন একটা খাওয়া হয় না। ভাইয়া, প্রশাসনের পক্ষ থেকে যে রেস্টুরেন্ট দিয়েছে মেলাতে সেটা আশা করি খাবারের মান ভালো খাবারগুলোর সুস্বাদু এবং পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন হবে।ভাইয়া, আপনি একদম ঠিক কথা বলেছেন এসব মেলাতে ভালো ভালো রেস্টুরেন্ট থেকে খাবারের দোকান দেওয়া দরকার। ভাইয়া,আপনার এই পোষ্টের মাধ্যমে জসিম পল্লী মেলা দেখতে পেয়ে সত্যিই অনেক ভালো লাগছে। ধন্যবাদ ভাইয়া।।
আসলে মেলার ভাজাপোড়া সময়ের সাথে সাথে গুনগত মান পরিবর্তন হয়েছে।ছবিগুলোতে বেশ লোভনীয় লাগছে।মাঝে মাঝে খাবার কিনে এনে,বাড়িতে হতাশ হতে হয়। ভালো লাগলো।ধন্যবাদ
টাকা দিয়ে খাবার কেনার পর বাসায় এসে যখন দেখি খেতে মোটেও ভালো লাগছে না। তখন প্রচন্ড মেজাজ খারাপ হয়।