তীব্র তাপদাহে পদ্মার শীতল পানিতে গোসলের অভিজ্ঞতা। ১০% সাইফক্স।
আমি নদী খুবই ভালোবাসি। অনেক আগে থেকেই নদীর প্রতি একটা অন্যরকম ভাললাগা আমার কাজ করে। সেটা যে শুধু নদীর সৌন্দর্য দেখার ক্ষেত্রে তা নয়। গরমের সময়ে নদীতে গোসল করতেও আমি খুব পছন্দ করি। নদীতে গোসল করতে সবাই কম বেশি পছন্দ করে। কিন্তু আমার ক্ষেত্রে ব্যাপারটা একটু অন্যরকম। নদীতে যখন আমি গোসল করতে যাই তখন আনন্দে আত্মহারা হয়ে যাই।
শহরে থাকার কারণে নদীতে গোসল করাটা এতটা সহজ না। আবার আমি নদীতে কখনো একা গোসল করতে যাইনা। বেশ কয়েকজন বন্ধু বান্ধব জোগাড় করে তারপর গোসল করতে যাই। সেখানে শুধু গোসল করাটাই মুখ্য নয়। এই বন্ধুদের সাথে আড্ডা দেয়াটাও একটি গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার। এই নদীতে গোসল করাটা অনেক দিন আগে থেকে শুরু হয়েছে।
যখন আমি অনার্স সেকেন্ড ইয়ারে পড়ি তখন থেকে বন্ধুদের সাথে নদীতে গোসল করা শুরু। তারপর থেকে কোন বছর বোধহয় নদীতে গোসল করা বাদ পড়েনি। একটা সময় যখন স্টুডেন্ট ছিলাম তখন বছরে বেশ কয়েকবার বন্ধু-বান্ধবের বড় একটি দল নিয়ে নদীতে গোসল করতে যেতাম। কিন্তু এখন বন্ধুবান্ধব সব কর্মব্যস্ত হয়ে যাওয়ার কারণে সেভাবে আর হয়ে ওঠে না যাওয়া। তার পরেও কয়েকদিন যাবত চিন্তা করছিলাম। যেহেতু প্রচণ্ড গরম পড়েছে বাইরে। তাই এখনই নদীতে গোসল করার ভালো সময়। তাছাড়া এই সময় নদীর পানি পরিষ্কার থাকে।
তাই আমি আমার দুই বন্ধুর সাথে আলাপ করলাম নদীতে গোসল করতে যাওয়ার ব্যাপারে। দুজনেই পরিকল্পনা শোনার সাথেই রাজি হয়ে গেলো। পরে পরিকল্পনা হলো বন্ধু রাফসানের এলাকাতে যাবো। সেখানে গিয়ে আমরা তিন বন্ধু মিলে নদীতে গোসল করতে যাবো। পরদিন যথারীতি সকালে আমি আর আমার বন্ধু ফেরদৌস দুজন মিলে চলে গেলাম রাফসানের দোকানে। সেখান থেকে আমাদের সাথে যোগ দিল রাফসানের এক ছোট ভাই।
চারজনে দু'টি মোটরসাইকেলে করে রওনা দিলাম নদীর পাড়ের উদ্দেশ্যে। রওনা দেয়ার আগে আমরা কিছু হালকা খাবার কিনে নিয়েছিলাম। ঠান্ডা পানি, জুস, বিস্কিট এগুলো।খাবার কিনে নেয়ার কারণ হচ্ছে আমরা যখনই নদীতে গোসল করতে যাই কখনোই অল্প সময়ে আমাদের গোসল হয়না। দীর্ঘসময় ধরে গোসল করি। দীর্ঘসময় নদীতে গোসল করার কারণে প্রচন্ড ক্ষুধা লাগে। তখন এই খাবারগুলো খেয়ে থাকি। আর বাইরে যেহেতু প্রচন্ড রোদ তাই ঠান্ডা পানি নেয়ার প্রয়োজন ছিলো।
অল্পক্ষণের ভেতরেই আমরা নদীর পাড়ে পৌঁছে গেলাম। আমাদের মূল ইচ্ছা ছিলো নদীর ভেতরে কোন একটি ছোট্ট চরে গিয়ে নামবো। নদীর পাড়ে গোসল করতে আমার খুব একটা ভালো লাগে না। কারণ পাড়ে অনেক মানুষ গোসল করে। তবে নদীর ভেতরে যেখানে চর জেগে উঠে সেখানে পানি থাকে অনেক পরিষ্কার। সেখানে গোসল করার মজাই আলাদা।
কিন্তু নদীর পাড়ে গিয়ে একটি সমস্যার সম্মুখীন হলাম। সেখানে গিয়ে দেখি ঘাটে নৌকা আছে কিন্তু নৌকার মাঝি নেই। কিছুক্ষণ অপেক্ষা করার পর পাড়েই গোসল করা শুরু করলাম। তবে আমাদের ইচ্ছা ছিলো যদি এর ভেতর খেয়া ঘাটের মাঝি চলে আসে। তাহলে নৌকায় করে চরে চলে যাবো। কিছুক্ষণ গোসল করার পর দেখলাম মাঝি এসে উপস্থিত হয়েছে। তখন আমরা আমাদের সাথের ব্যাগ গুলো নিয়ে নৌকায় উঠে বসলাম।
অল্পক্ষণের ভেতরেই আমাদের কাঙ্খিত স্থানে পৌঁছে গেলাম। নদীতে চর পরার কারণে নদীর নাব্যতা সংকট দেখা দিয়েছে। নদীর অবস্থা দেখে মনে হলো আর কয়েক বছর পর এখানে আর নদীর অস্তিত্ব থাকবে না। তবে চরের ওখানে পরিস্কার পানি দেখে আমাদের মনটা ভাল হয়ে গেলো। সেখানে এত চমৎকার স্বচ্ছ পানি দেখে আমরা তিন বন্ধু দীর্ঘক্ষন অল্প পানিতে বসে আড্ডা দিলাম। চরে গোসল করার একটা মজা হচ্ছে সেখানে কোন কাদা নেই। পরিষ্কার ঝকঝকে বালি।
আমাদের খুব কাছেই তিনটি বাচ্চা নদীতে খেলছিল। এই বাচ্চাদের দেখে আফসোস হলো। আহারে এদের শৈশব কতোই না সুন্দর। তাছাড়াও আশেপাশে কিছু লোককে দেখতে পেলাম যারা মাছ মেরে ফিরছিল। তাদের কাছ থেকে জানতে পারলাম কাছেই একটি বিল আছে। সেই বিলে আজকে সবাই মিলে মাছ ধরতে গিয়েছিলো। তাদের ভেতর দেখলাম কেউ বেশ ভালোই মাছ পেয়েছে। আবার কেউ তেমন কিছু পায়নি।
এভাবে অনেকক্ষণ গোসল করার পর আমরা নদী থেকে উঠে আসলাম। ইতিমধ্যে দেখি বেলা তিনটা বেজে গিয়েছে। যেহেতু হালকা কিছু খাবার আমাদের সাথে ছিলো। সেটা খাওয়ার কারণে ক্ষুধা খুব একটা টের পাচ্ছিলাম না। গোসল শেষ করে তারপর সবাই যার যার বাড়ির পথ ধরলাম।
আজকের মতো এখানেই শেষ করছি। পরবর্তীতে আপনাদের সাথে দেখা হবে অন্য কোন নতুন লেখা নিয়ে। সে পর্যন্ত সবাই ভাল থাকুন সুস্থ থাকুন।
ফটোগ্রাফির জন্য ব্যবহৃত ডিভাইস | হুয়াই নোভা 2i |
---|---|
ফটোগ্রাফার | @rupok |
স্থান | লিংক |
Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |
নদীর নাম পদ্না নাম টা দেখেই আমার বড় আপছোস হচ্ছিলো সাথে করে একরাশ হিংসে।কারণ আমার রাজশাহী বিভাগে দুই দুই বার যাওয়া হয়েছে কিন্তু পদ্না পাড়ে বা কিনারা যাওয়ার সুযোগটা আমি করে নিতে পারি নাই সময় ও কর্ম ব্যস্ততার জন্য। আজ আপনার শেয়ারকৃত পোষ্টটি দেখে খুবই খারাপ লাগছিলো কবে যে আপনার মত করে পদ্না নদীতে গোসল করার সুযোগ হবে।
তবে আপনার শেয়ারকৃত পোষ্টটি অসাধারণ হয়েছে আপনার অভিঙ্গতা ও ফটোগ্রাফিগুলোর সাথে পুরোপুরিভাবেই মিল ছিলো।
ধন্যবাদ ভাইয়া আপনাকে পদ্নার শীতলতম পানিতে গোসল নিয়ে দারুণ পোষ্ট আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।
আহারে,ছেলে হইল যে কত মজা যখন যা খুশি তাই করা যায়। কি সুন্দর বন্ধুদের নিয়ে নদীতে গোসল করতে যাওয়া। আমার খুব হিংসা হচ্ছে। কি সুন্দর ক্ষধা জেনো না লাগে বিস্কুট খেয়ে নেয়।😒😒।যাই হোক ভালো ছিলো।ধন্যবাদ দিবো না।
আসলেই ছেলে হয়ে জন্মানোর কিছু সুবিধা আছে আমাদের সমাজে। এইসব ব্যাপারে মেয়েদের জন্য আফসোস হয়।
চমৎকার লাগলো বন্ধুরা মিলে নদীর পাড়ে আড্ডা দিতেন গোসল করতেন। আমারও নদী ভালো লাগে, আবার ভয় ও লাগে কারণ আমি সাঁতার জানিনা।
আমিও যে খুব ভালো সাঁতার জানি তা কিন্তু নয়। তবে হ্যাঁ কাজ চালানোর মত জানি।
ভাই আপনার নদীতে গোসল করার অভিজ্ঞতা অনেকদিন আগে থেকে। তবে আমার এখনো সৌভাগ্য হয়ে উঠেনি। নদীতে গোসল করার তো দুরের কথা, আমার এলাকার আশেপাশে কোথাও নদী আছে বলে আমার মনে হয় না। যাই হোক বন্ধু মানেই হচ্ছে আনন্দ-ফুর্তি। তবে এই কর্মব্যস্ততার জীবনে একসাথে বন্ধুবান্ধব জোগাড় করা খুব কঠিন ব্যাপার। তবুও যে আপনি কাজটা করতে পেরেছেন তার জন্য, আপনার প্রতি রইল ভালোবাসা অবিরাম।
বলেন কি? আপনি কোন এলাকায় থাকেন বলুনতো? বাংলাদেশে এমন কোন এলাকা আছে যেখানে নদী নেই? আপনার কথা শুনে খুবই অবাক হলাম।
আছে ভাইয়া,তবে আমার বাড়ি থেকে ১০০ টাকা সিএনজি ভাড়া লাগে। আমার বাড়ি দৌলখাঁড়, নাঙ্গলকোট, কুমিল্লা।
ভাই আপনার পোষ্টটি শেষ পযন্ত পরে অনেক ভালো লাগলো ৷সত্যি বলতে আমার ও নদী অনেক ভালো আর নদীতে গেলে মন শান্ত ও নিরব হয়ে যায় ৷
আপনার নদীতে কাটানো মুহূর্ত গুলো খুব ভালো লাগলো স্নান করা কিছু খাবার কিনে নিয়ে যাওয়া এছাড়াও কিছু বাচ্চাও খেলা ও স্নান করছে কিছু লোক আবার নদীতে যাচ্ছে জাল নিয়ে মাছ ধরতে ৷সব মিলে আপনার কাটানো মুহূর্ত গুলো ছিল অসাধারণ ৷ধন্যবাদ ভাই এতো সুন্দর করে শেয়ার করার জন্য
নদীতে নামার পর এতো ভালো লাগছিল যে। যা দেখছিলাম সেটাই সুন্দর লাগছিলো। চমৎকার এক অনুভূতি ছিল সেটা।
ভাই আপনি দারুন সময় কাটিয়েছেন। আসলেই পদ্মার পাড়ে এই সৌন্দর্যময় পরিবেশের মধ্যে গোসল দেওয়া খুবই ভালো লাগলো। আসলে গরমে যখন পানির পাশে যাওয়া যায় তখন গোসল দিতে খুব ইচ্ছে করে। সত্যি আপনার মুহূর্তটা আমার খুবই ভালো লেগেছে অ।নেক সুন্দর সময় পার করেছেন এবং আপনার এই পদ্মার পাড়ে গোসল করা দেখে পদ্মার পাড়ে ভ্রমণ করার ইচ্ছা আমার জাগলো। শুভকামনা রইল আপনার জন্য।
প্রচন্ড গরমের ভেতর যখন পদ্মার শীতল পানিতে গা ভেজালাম সে এক অন্যরকম অনুভূতি।
তোমার পোস্টটা আমি দেখতেই পাইনি। তাহলে আজ আর আমারটা দিতাম না। এত গোসল করলা কিন্তু একটা ফডু দিলা না। এইডা এডা কাম করলা মিয়া।
আমিও তো তাই দেখলাম। তুমি আজকেই পোস্টটা করেছো।
ভাইয়া অনেক মজা করেছেন। আমি ও আপনার মতো , নদী বা পুকুরে যাওয়ার কথা শুনলে খুশিতে আত্মহারা হয়ে পরি , তবে দুঃখের বিষয় হলো সাঁতার আমার জানা নেয় যার জন্যে ভয়ে আগাতে পারিনা। তবে আপনি কতটা মজা পেয়েছেন সেটা আপনার লিখা পড়েই বুঝতে পেরেছি। ধন্যবাদ ভাইয়া।
আসলেই অনেক মজা করেছি।
আহ এই গরমে যে এই ঠান্ডা পানিতে গোসল করতে পারবে তার জীবনে আর কি লাগে। এ যেনো শুধু শান্তি আর শান্তি। আফসোস গ্রামের দিকে এখন পুকুর গুলো ও বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে দিন দিন।
অনেকদিন হলো পুকুরে গোসল করি না,নদীতে তো কখনো হয় ই নি।শেষবার যখন গ্রামে গিয়েছিলাম সেবার ভেবেছিলাম করবো।কিন্তু কেন জানি না করা হয়নি। আসলেই এই গরমের সময় পুকুরে কিংবা নদীতে গোসল করার মজাটা একেবারেই আলাদা।
সম্পূর্ণ ভিন্ন লেভেলের অনুভূতি। এটা ভাষায় প্রকাশ করা যাবে না।
ভাই শুনেই তো লোভ লাগছে,কবে যে পারবো কে জানে।যখন আবার আমরা গ্রামে যাই তখন শহর থেকে সবাই যায়।তাই বেশি লোক থাকার কারণে সম্ভব হয়না।😞