পুলিশ প্লাজায় ঘোরাঘুরি।

in আমার বাংলা ব্লগ2 years ago

কেমন আছেন আমার বাংলা ব্লগের বন্ধুরা? আমি ভালো আছি। আশাকরি আপনারা ও ভালো আছেন।


আজকে সারাটা দিন বাসায় ছিলাম। শরীরটা খুব একটা ভালো লাগছিলো না। এই জন্য আর কোথাও যাইনি। বেশ কিছুদিন পর পুরো একটি দিন বসাতেই কাটালাম। অবশ্য সকালে যদি সিদ্ধান্ত নিতে পারতাম যে দিনটা বাসাতে কাটাবো তাহলে হয়তো কোথা থেকে ঘুরে আসা যেতো। কিন্তু যেহেতু ডিসিশন নিতে অনেক দেরি হয়েছে। তাই আর তেমন কোথাও ঘুরতে যাওয়া হয়নি। তবে সারাদিন বাসায় বসে কমিউনিটির বিভিন্ন কাজ নিয়ে ব্যস্ত ছিলাম। তাই দুপুরের পর থেকে মনে হচ্ছিল কোথা থেকে ঘুরে আসতে পারলে মন্দ হয় না।

IMG_20221007_170411.jpg

IMG_20221007_171058_1.jpg

এরপর থেকেই মাথার ভিতরে চিন্তা ঘুরপাক খাচ্ছিল কোথায় ঘুরতে যাওয়া যায়? ঢাকায় কোথাও ঘুরতে যাওয়ার সমস্যা হচ্ছে আপনাকে হাতে প্রচুর সময় নিয়ে যেতে হবে। না হলে আপনার ঘোরাফেরাটা হয়তো পরিপূর্ণ হবে না। তো চিন্তা করতে করতে হঠাৎ করে মনে হল কাছাকাছি আছে পুলিশ প্লাজা। এই মার্কেটটি অনেকদিন ধরেই দেখছি। কিন্তু কখনো সেখানে যাওয়া হয়নি। তাই বিকেল বেলা হুট করে সিদ্ধান্ত নিলাম পুলিশ প্লাজা থেকে ঘুরে আসি। আর এখানে যাওয়ার আরো একটি উদ্দেশ্য হচ্ছে পুলিশ প্লাজায় আমি ওয়াটার বাসে করে যেতে পারবো।

IMG_20221007_172410.jpg

IMG_20221007_171457.jpg

যেই ভাবনা সেই কাজ। আমি আসরের নামাজ পড়ে বাসা থেকে বের হলাম পুলিশ প্লাজার উদ্দেশ্যে। বাসা থেকে বের হয়ে রিক্সা নিয়ে চলে গেলাম রামপুরা ব্রিজ। সেখান থেকে রাস্তা পার হয়ে ওয়াটার বাসের রামপুরা ঘাট থেকে পুলিশ প্লাজায় যাওয়ার টিকিট কাটতে গেলাম। কিন্তু টিকিট কাটতে গিয়ে চক্ষু চড়ক গাছ। সেখানে দেখি দীর্ঘ লাইন। কিন্তু যেহেতু আগে থেকেই সিদ্ধান্ত নিয়েছি যে ওয়াটার বাসে করে পুলিশ প্লাজায় যাব। তাই চিন্তা করলাম সময় একটু লাগলে লাগুক। টিকিট কেটে লাইনে দাড়িয়ে অপেক্ষা করতে থাকি। তারপর টিকেট কেটে লাইনে দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করতে লাগলাম।

IMG_20221007_172809.jpg

IMG_20221007_172736.jpg

অবশ্য খুব বেশি সময় অপেক্ষা করতে হয়নি। মিনিট দশেক পরেই দেখি একটি ওয়াটার বাস আসছে। এই ওয়াটার বাসটি দেখে খুশি হয়েছিলাম। মনে করেছিলাম এটাতে করেই পুলিশ প্লাজায় চলে যেতে পারবো। কিন্তু আমি ভুলে গিয়েছিলাম যে আমি দীর্ঘ একটি লাইনের শেষ মাথায় দাঁড়ানো। তাই যখন ওয়াটার বাসটি এসে থামলো। সেটিতে আমার সামনের যাত্রিরা উঠতে থাকলো। কিন্তু আমি যখন গেটের কাছে পৌঁছলাম তখন যাত্রী নেয়া বন্ধ করে দিলো। তখন আর নিজের ভাগ্যকে দোষ দেয়া ছাড়া আর কি বা করার ছিলো। চিন্তা করছিলাম এতগুলি লোক উঠলো। কিন্তু ঠিক আমি ওঠার আগে যাত্রী নেয়া তারা বন্ধ করে দিলো।

IMG_20221007_172410.jpg

IMG_20221007_172720.jpg

যেহেতু অপেক্ষা করা ছাড়া আর কিছু করার নাই। তাই অপেক্ষা করতে লাগলাম। তবে বেশিক্ষণ অপেক্ষা করতে হলো না। অল্প কিছুক্ষণের ভিতরে আরও একটি ওয়াটার বাস এসে সেখানে থামল। তারপর আমি ধীরে সুস্থে সেটিতে উঠে বসলাম। এর ভিতর টুকটাক করে ছবি তুলছিলাম। ওয়াটার বাসে উঠে বসার কিছুক্ষণ পর সেটি ছেড়ে দিলো। পরে ধীরে সুস্থে পুলিশ প্লাজার দিকে এগোতে লাগলো। যদিও রামপুরা ঘাট থেকে পুলিশ প্লাজার দূরত্ব একেবারেই কম। তাই অতি অল্প সময়ের ভেতরেই আমরা পুলিশ প্লাজার ঘাটে পৌঁছে গেলাম। তারপর সেখান থেকে নেমে আমি পুলিশ প্লাজায় প্রবেশ করলাম। অবশ্য সেখানে প্রবেশ করার আগে আমি পুলিশ প্লাজার কয়েকটি ছবি তুলে নিয়েছি।

IMG_20221007_172917.jpg

IMG_20221007_173017.jpg

যেহেতু পুলিশ প্লাজায় আমি আজ প্রথম গিয়েছি। আমি তাই প্রথমে ঘুরেফিরে পুরো মার্কেটটা দেখতে লাগলাম। পুলিশ প্লাজার মার্কেটটা খুব বেশি বড় না হলেও বেশ সাজানো গোছানো ছিল। আমি প্রতিটা ফ্লোর ঘুরে ঘুরে দেখতে লাগলাম। নিচ থেকে উপরের ফ্লোর গুলিতে যাওয়ার জন্য সেখানে ক্যাপসুলি এবং স্কেলেটরের ব্যবস্থা রয়েছে। দেখতে দেখতে এক সময় আমি পুলিশ প্লাজার ফুডকোর্টে পৌছালাম। তবে দুপুরে ভারী খাওয়া দাওয়া হওয়ার কারণে খুব একটা খাওয়ার আগ্রহ ছিল না। তবে নতুন কোন জায়গায় গেলে আমি চেষ্টা করি সেখান থেকে কিছু না কিছু খাওয়ার। তাই একটি রেস্টুরেন্টে বসে তাদের মেনু দেখতে লাগলাম কি খাওয়া যায়।

IMG_20221007_173335.jpg

IMG_20221007_173139.jpg

IMG_20221007_173204.jpg

পরে মেনুতে খুজে আমি পাপড়ি চাটের অর্ডার করলাম। ইন্ডিয়ান খাবার এমনিতেই আমার ভালো লাগে। তাছাড়া এর আগে আমার পাপরি চাট খুব একটা খাওয়া হয়নি। তাই চিন্তা করলাম এখান থেকে খেয়ে দেখি খেতে কেমন লাগে। অর্ডার করার অল্প কিছুক্ষণের ভেতরেই তারা আমার সামনে পাপড়ি চাট পরিবেশন করলো। পরিবেশন করার পর খাবারটা দেখে আমার কাছে ভালই লাগছিলো। যদিও পরিমাণে খুবই কম মনে হচ্ছিল। প্রথমবার মুখে দিয়ে দেখলাম সাদটা বেশ ভালই। তারপর ধীরেসুস্থে খেতে লাগলাম। খাওয়া শেষ হওয়ার আগেই মাগরিবের আজান শুনতে পেলাম। তাই তড়িঘড়ি করে খাওয়াটা শেষ করে নামাজ পড়তে গেলাম। নামাজ পড়া শেষ হলে একবার চিন্তা করেছিলাম আবার ফুড কোর্টে গিয়ে কিছু একটা খেয়ে আসি। কিন্তু পেটে ক্ষুধা না থাকায় পরিকল্পনা বাতিল করে দিলাম। তারপর বাড়ির দিকে রওনা দিলাম।

IMG_20221007_173807.jpg

IMG_20221007_174002.jpg

IMG_20221007_174302.jpg


আজকের মত এখানেই শেষ করছি। পরবর্তীতে আপনাদের সাথে দেখা হবে অন্য কোন নতুন লেখা নিয়ে। সে পর্যন্ত সবাই ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন।


ফটোগ্রাফির জন্য ব্যবহৃত ডিভাইসহুয়াই নোভা 2i
ফটোগ্রাফার@rupok
স্থানহাতিরঝিল, পুলিশ প্লাজা

logo.png

Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power

250 SP500 SP1000 SP2000 SP5000 SP

Heroism_3rd.png

standard_Discord_Zip.gif


break .png

Support @Bangla.Witness by Casting your witness vote


VOTE @bangla.witness as witness


witness_vote.png

OR

SET @rme as your proxy

witness_proxy_vote.png



🇧🇩🇧🇩ধন্যবাদ🇧🇩🇧🇩


@rupok

Sort:  
 2 years ago 

আপনার ওয়াটার বাসে চড়ার অভিজ্ঞতা পড়ে আমারো খুব ইচ্ছে করছে ।একদিন চড়তে হবে। ঢাকার ভিতর ওয়াটার বাসে চড়তে পারা খুবই আনন্দের। ঘোরার বর্ননা সুন্দরভাবে উপস্থাপন করেছেন। আর ছবিগুলো বেশ সুন্দর বিশেষ করে পাপড়ি চাট।

 2 years ago 

ভাইয়া প্রথমে পুলিশ নামটি শুনেই ভিতরটা মোচড় দিয়ে উঠলো। কারণ পুলিশের নাম শুনলে আমি খুব ভয় পাই। বর্তমান বাংলাদেশে ডেঞ্জার কিলার পুলিশ। পরবর্তীতে দেখলাম না এটা কোন একটা প্লাজা। তবে আপনি ওয়াটার বাসে চড়ে বেশ মজাই পেয়েছেন। প্রতিনিয়ত এখন ওয়াটার বাস ব্যবহার করছে। ভোজন রসিক প্রিয় ভাইয়া পুরো মার্কেট ঘুরে খিদে লেগে যাওয়ার পর পাপড়ি কাট বেশ আনন্দে খেয়েছেন। বিবরণ শুনে বোঝা যাচ্ছে খাবারটা বেশ মজাদার। আমাদের সাথে আপনার অনুভূতিগুলো এত সুন্দর করে শেয়ার করার জন্য আপনার প্রতি রইল ভালোবাসা ও অভিনন্দন।

 2 years ago 

কিন্তু আমি ভুলে গিয়েছিলাম যে আমি দীর্ঘ একটি লাইনের শেষ মাথায় দাঁড়ানো।

ভাইয়া,অপেক্ষার সময়টা খুব দীর্ঘ হয় তাই আশার আলো যখন দেখা যায় তখন পিছনের কথা ভুলে যাওয়া হয়।তাই ঘটেছে আপনার সাথে।ভাইয়া, ওয়াটার বাস দিয়ে আপনি পুলিশ প্লাজা ঘুরতে গিয়েছেন দেখে খুব ভালো লেগেছে।আপনি দিনটা খুব আনন্দ করেছেন আপনার ফটোগ্রাফি গুলো দেখেই বুঝা যাচ্ছে।ভাইয়া, পুলিশ প্লাজা নামটা আমি নতুন শুনেছি কিন্তু নতুন হলেও প্লাজার প্রতিটা ফটোগ্রাফি দেখে মনে হচ্ছে অনেক সুন্দর এবং সাজানো-গোছানো।ভাইয়া, পুলিশ প্লাজা ফুড কোটের পাপড়ি চার্টে যে রেসিপি টা খেয়েছেন এই রেসিপি টা আমার কাছে একদম ইউনিট আর ইন্ডিয়ান রেসিপি আমার কাছে বেশি ভালো লাগে। ধন্যবাদ ভাইয়া, পুলিশ প্লাজা ঘুরাঘুরির আনন্দের মুহূর্ত গুলো আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।।

 2 years ago 

ঠিক এই জায়গাটিতে আমি গত মাসে গিয়েছিলাম।সিয়ামের বাসা খোঁজার জন্য।আপনার ফটোগ্রাফি গুলো দেখে সেই স্মৃতিগুলো মনে পড়ল। তবে পুলিশ প্লাজায় ঘোরাঘুরি করে আমারও বেশ ভালো লেগেছিল।তবে ওয়াটার বাসে করে সন্ধ্যার পরে ওই জায়গা গুলোর দৃশ্য অন্যরকম লাগে।মনমুগ্ধকর পরিবেশ।তবে দীর্ঘ লাইন উপেক্ষা করে অবশেষে যেতে পেরেছেন ধৈর্য সহকারে।সেদিনের জন্য সেটাই আপনার বড় সার্থকতা।ভালো থাকবেন সব সময়।♥♥

 2 years ago 

ভাইয়া আপনি খালি একাই ঘুরেন ঢাকাতে,একা একা ঘুরলে ভূতে ধরবে🤪🤪।যাই হোক এই ওয়াটার বাসের সবসময়ই দেখি অনেক মানুষ থাকে।যদিও আমি ওয়াটার বাসে উঠি নি।তবে আপনার তোলা ছবি দেখে আমারও খুব ইচ্ছে করছে ঐখানে যেয়ে ওয়াটার বাসে উঠার😄।খাবারের ছবিটা বেশ লোভনীয় লাগছে।পুলিশ প্লাজাও কখনও যাওয়া হয়নি।তবে মনে হচ্ছে বেশ সুন্দর। ধন্যবাদ

 2 years ago 

ভাইয়া প্রথমে আপনার সুস্থতা কামনা করছি ৷ আপনার শরীর অসুস্থ থাকার কারনে আপনি বাসায় বসে রেস্ট করে সারাদিন কমিউনিটির কাজে ব্যস্ত ছিলেন ৷ শুনে খুশি হলাম আসলে আপনার সকল মডারেটরা যে কি পরিমান পরিশ্রম করেন তা আমরা বুঝি ৷
যা হোক আপনি বিকেল পুলিশ প্লাজায় খুব সুন্দর একটি সময় অতিবাহিত করেছেন ৷ আর ঘোরাঘুরি করতে বেশ ভালোই লাগে ৷ তবে আমিও শুনেছি ঢাকায় কোথাও ঘুরতে গেলে যে পরিমানে জ্যাম ৷ যদিও আমি এখনো ঢাকা যাই নি ৷
যা হোক আপনি খুব সুন্দর একটি সময় পার করেছেন ৷ আর ফটোগ্রাফি গুলো ভালো লাগলো ৷

 2 years ago 

ভাইয়া ঘুরাঘুরি হচ্ছে মনের ঔষুধ ৷ মন যতই খারাপ থাকুক একটু ঘুরাঘুরি করলে মন ভালো হয়ে যায় ৷ বিকাল বেলা ঘুরতে বেরিয়ে ভালোই করেছেন ৷পুলিশ প্লাজায় ঘুরতে গিয়ে ওয়াটার বাসে নদী ভ্রমণ করাও হযে গেলো ৷ ঘুরাঘুরি পর খাওয়া দাওয়া সেদিন বিকালটা ভালোই কাটিযেছেন ৷ মাঝে মাঝে আবার চমৎকার চমৎকার ফটোগ্রাফিও করেছেন ৷ অনেক ভালো লাগলো পুলিশ প্লাজায় ঘুরাঘুরির গল্পটা পড়ে ৷ ধন্যবাদ আপনাকে শেয়ার করার জন্য ৷

Coin Marketplace

STEEM 0.19
TRX 0.16
JST 0.033
BTC 64373.04
ETH 2775.53
USDT 1.00
SBD 2.66