খেয়ালী মনের আলাপন সাথে ফটোগ্রাফি।

in আমার বাংলা ব্লগ2 years ago

কেমন আছেন আমার বাংলা ব্লগের বন্ধুরা? আমি ভালো আছি। আশাকরি আপনারা ও ভালো আছেন।


বেশ কিছুদিন হলো ঢাকায় এসেছি। এসেছি প্রায় দুমাস হয়ে গিয়েছে। এই দু মাস সময়ের ভেতরে রাস্তা ঘাটেই কেটেছে বেশিরভাগ সময়। প্রতিদিনই বেশ খানিকটা সময় ট্রাফিক জ্যামে কাটাতে হয়। কখনো রিকশাতে থাকি কখনো থাকি সিএনজিতে। ট্রাফিক জ্যামে আটকে থাকতে কারোরই ভালো লাগেনা। অন্য আর দশ জনের মত আমার কাছেও খুব খারাপ লাগে। কিন্তু এই শহরে থাকতে হলে আপনাকে এটা মেনে নিতেই হবে। তাছাড়া অন্য কোন উপায় নেই।

IMG_20221018_233008.jpg

তাই যখন ট্রাফিক জ্যামে বসে থাকি তখন মাঝে মাঝে চিন্তা করি যে কি করা যায়। তখন সময় কাটে না। চারপাশে মানুষের অসহায় মুখ গুলো দেখতে পাই। অনেকে অসহিষ্ণু হয়ে ওঠে আবার অনেকে হতাশ হয়ে আকাশেন দিকে তাকিয়ে থাকে। কারন এই ট্র্যাফিক জ্যাম এখন তাদের জীবনের ওতোপ্রোতো অংশ হয়ে গিয়েছে। আমিও সেদিন ট্রাফিক সিগণালে রিকশায় বসে ছিলাম। চিন্তা করছিলাম কি করা যায়? তবে আমাদের রিক্সাটা যেখানে দাঁড়িয়ে ছিল সেটা মূলত ছিল মালিবাগ রেল ক্রসিং। আমাদের রিকশা রেল লাইনটা পার হওয়ার আগেই হঠাৎ করে ট্রেন আসার সময় হয়ে গেলো। তাই রেল ক্রসিং এর দায়িত্বে থাকা রেলওয়ে লোক রাস্তা বন্ধ করে দিলো।

IMG_20221018_233034.jpg

তারপর থেকে আমি রিকশায় বসে অপেক্ষা করতে লাগলাম কখন ট্রেন চলে যাবে। রিকশায় বসে থাকতে থাকতে হঠাৎ মাথায় বুদ্ধি এলো চুপচাপ বসে না থেকে কিছু ছবি তুলি। আর ঢাকা শহরের একটা সুবিধা হচ্ছে এখানে আপনার কাছে কোন সময় সাবজেক্টের অভাব হবে না। কারণ এই শহরটিতে প্রচুর মানুষের বসবাস। সেই কারণেই এখানে নানা ধরনের মানুষ নানা রকম পেশায় নিয়োজিত রয়েছে। মানুষের জীবন যাপনে এখানে ব্যাপক বৈচিত্র রয়েছে। কেউ কেউ রয়েছে এখানে অতি ধনী। আবার দারিদ্র্যের সর্বনিম্ন স্তরে থাকা লোকটিও এখানে থাকে।

IMG_20221017_161640.jpg

আমি রিকশায় বসে রেল ক্রসিং এর বিভিন্ন রকম ছবি তুলতে লাগলাম। দু একজন লোককে দেখলাম রাস্তা বন্ধ করে দেয়ার পরও ট্রেন আসার আগেই দ্রুত দৌড়ে রেল লাইন পার হওয়ার চেষ্টা করছে। অথচ এমন কাজ করতে গিয়ে কিছুদিন পরপরই এখানে মানুষ মারা পড়ে। তারপরও তাদের টনক নড়ে না। সামান্য একটু সময় অপেক্ষা করতে তারা মোটেই রাজি নয়। অথচ তারা এটা কখনো চিন্তা করে না। যদি সে ট্রেনের নিচে পড়ে মারা যায় তাহলে তার পরিবার-পরিজনের কি হবে। তারা ভুলে যায় সময়ের থেকে জীবনের মূল্য অনেক বেশি।

IMG_20221018_233103.jpg

দ্রুত দৌড়ে পার হওয়া লোকজন যেমন এখানে দেখা যায়। তেমনি অলসভাবে রিক্সায় বসে থাকা লোকজনও দেখতে পেলাম। বেশ কিছুক্ষণ বসে থাকার পর সশব্দে ট্রেন আমাদের সামনে দিয়ে অতিক্রম করে গেলো। কেন জানিনা সেই ছোটবেলার মতো এখনো ট্রেনের চলে যাওয়া দেখতে আমার কাছে বেশ ভালো লাগে। অবশ্য ট্রেনের প্রতি একধরনের ভালোলাগা আমার ভেতরে সব সময় কাজ করে। কারণ আমি যত রকমের যানবাহনে চলেছি তার ভেতরে ট্রেনে চড়ে আমি সবচাইতে বেশি মজা পেয়েছি। অন্যান্য যানবাহনে উঠলে আমার কাছে খুবই খারাপ লাগে। তবে একমাত্র ট্রেন জার্নি আমার কাছে ভালো লেগেছে।

IMG_20221017_161648.jpg

এজন্যই হয়তো ট্রেনের প্রতি আমার এক ধরনের ভালোলাগা কাজ করে। যাই হোক ট্রেন রেল ক্রসিং পার হয়ে যাওয়ার পর রাস্তা খুলে দেয়া হলো। তারপর সবাই পরিমড়ি করে যার যার গন্তব্যস্থলে দিকে ছুটে চলতে লাগলো। আর আমার ফটোগ্রাফিও শেষ হলো। মাঝে মাঝে এমন উদ্দেশ্যবিহীন ফটোগ্রাফি করতে বেশ ভালই লাগে। কোন চাপ নেই শুধু চোখে যেটা ভালো লাগছে সেটারই ছবি তুলেছি। আশা করি ছবিগুলো আপনাদের ভালো লাগবে।

আজকের মত এখানেই শেষ করছি। পরবর্তীতে আপনাদের সাথে দেখা হবে অন্য কোন নতুন লেখা নিয়ে। সে পর্যন্ত সবাই ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন।


ফটোগ্রাফির জন্য ব্যবহৃত ডিভাইসহুয়াই নোভা 2i
ফটোগ্রাফার@rupok
স্থানমালীবাগ রেল ক্রসিং

logo.png

Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power

250 SP500 SP1000 SP2000 SP5000 SP

Heroism_3rd.png

standard_Discord_Zip.gif


break .png

Support @Bangla.Witness by Casting your witness vote


VOTE @bangla.witness as witness


witness_vote.png

OR

SET @rme as your proxy

witness_proxy_vote.png



🇧🇩🇧🇩ধন্যবাদ🇧🇩🇧🇩


@rupok

Sort:  
 2 years ago 

ঢাকায় ট্র্যাফিক জ্যামটা রীতিমত মানুষের ঘনিষ্ঠ শত্রু হিসাবে গণ্য। তবে মগবাজার রেল ক্রসিং ট্রাফিক জ্যামে বসে দারুণ দারুণ ফটোগ্রাফি করেছেন। ভাইয়া রেললাইনে পড়ে মরা মানুষগুলো একেবারেই ধৈর্য হারা। আর বিশেষ করে আমরা বাঙালিরা ধৈর্য বলতে একেবারেই জানি না। তার খেসারত দিতে হয় নিজেকেই। অসাধারণ ছিল আপনার অনুভূতিগুলো। আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য শুভেচ্ছা রইল।

 2 years ago 

ঠিকই বলেছেন। আমাদের ধৈর্যের বড় অভাব।

 2 years ago 

বাংলাদেশেই মনে হয় এইধরনের লোক বেশি পাওয়া যায় যারা ট্রেন ক্রসিং না মেনে সামনে দিয়ে দৌড় দেয়। এর জন্য অঘটন ঘটে থাকে অনেক। ঢাকা শহরের ট্রাফিক জ‍্যামে বসে থাকার অনূভুতি কিছুটা আছে সেজন্য বুঝতে পারি। কর্মব‍্যস্ত শহর। ঐরকম অবস্থায় নিম্নবৃও মানুষ গুলো বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে থাকে।।

 2 years ago 

ধন্যবাদ আপনাকে আপনার মন্তব্যের জন্য।

 2 years ago 

ধ্বংসের প্রান্তসীমায় দাড়িয়ে থাকা শহরটিতে বসতি গড়ার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছ। কিছুই বলার নাই, বাঁচতে চাইলে পালিয়ে আস, এখনো সময় আছে। আর সিনেমা দেখতে যাবা কবে জানিও।

 2 years ago 

এখানে থাকার কোন ইচ্ছে নেই। কাজ শেষ হলেই চলে আসব।

 2 years ago 

ভাইয়া ট্রাফিক জ্যামে আটকে থাকা সময়টুকু মনে হয় যেন শেষ হয় না। আর শহর এলাকার বিভিন্ন মানুষেরা বিভিন্ন কর্মের সাথে জড়িত থাকে। রেললাইন ক্রসিং এর ফটোগ্রাফি দেখতে বেশ সুন্দর দেখাচ্ছে। তবে সামনে দিয়ে রেলগাড়ি চলে যাওয়ার দৃশ্যটা দেখার মধ্যে মজাই আলাদা।

 2 years ago 

রেলগাড়ি যাওয়ার দৃশ্যটা আমার কাছেও খুব ভালো লাগে।

 2 years ago 

জি ভাই আসলে ঢাকায় চলাচল করতে হলে সবার আগে বাধা এই জ্যাম ৷ যদিও এখানে কিছু করার থাকে না ৷ কারন যে হারে জনসংখ্যা আর গাড়ি ৷ যা হোক আপনি রিক্সায় থেকে জ্যামে পড়ে গেছেন৷ আপনি বসে না থেকে খুব সুন্দর কয়েকটা ছবি তুলেছেন ৷ আর যারা কিছু না বুঝে ট্রেন আসার খুবর পেয়েও ঝুকি নিয়ে যাচ্ছে৷ তারা আসলে খবর প্রত্রিকায় দেখে কি না জানি না ৷
ভালো লাগলো ভাই ৷

 2 years ago 

অযথা বসে থেকে সময় নষ্ট না করে।সময়টা কাজে লাগানোর চেষ্টা করলাম আরকি।

 2 years ago 

ট্রেনে চড়তে আমার ও খুব ভালো লাগে।ফুরফুরে অফুরন্ত হাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে দুর্বার গতিতে ছুটে চলা যায় ট্রেনে।তবে আমরা এখানে ট্রেনের ছবি তুলতে পারিনা কারণ এটা নিয়ম বিরুদ্ধ।ছবি তুললেই টিটি এসে ধরে এবং তাকে অনেক টাকা ফাইন দিতে হয়।আমি অবশ্য যতদূর জানি বাংলাদেশের ট্রেন খুবই ধীর গতিসম্পন্ন।যাইহোক অনেকেই নিজ জীবনের কথা চিন্তা না করে আগে রেল লাইন পার হওয়ার কথাই ভাবে।ফলে নিজের জীবন বিপদে ফেলে।

 2 years ago 

অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।

Coin Marketplace

STEEM 0.19
TRX 0.16
JST 0.034
BTC 64333.84
ETH 2760.35
USDT 1.00
SBD 2.65