মোহাম্মদপুর এর বিখ্যাত কাবাব খাওয়া। ১০% প্রিয় লাজুক খ্যাঁক এর জন্য।

in আমার বাংলা ব্লগ3 years ago

কেমন আছেন আমার বাংলা ব্লগের বন্ধুরা? আমি ভালো আছি। আশাকরি আপনারা ও ভালো আছেন।



কয়েকদিন আগে সন্ধ্যার সময় আপু হঠাৎ করে বলল সবাই রেডি হও আমরা বাইরে যাব কাবাব খেতে। আমি যেমন বাইরের খাবার খেতে ভালোবাসি তেমনি আমার বোন ও বাইরের খাবার পছন্দ করে। সাথে আমার ভাগ্নে তো আছেই। আমার আম্মা আবার বাইরের খাবার মোটেই পছন্দ করে না। তো আপু যখন বলল রেডী হওয়ার কথা তখন ভালই লাগছিল। কারণ গত বেশ কয়েকদিন বিভিন্ন ব্যস্ততার কারণে বাইরে কোথাও যাওয়া হয়নি।

IMG_20220209_173610.jpg

IMG_20220205_210006.jpg

কিন্তু এর ভিতরে আমার ভাগ্নে বেঁকে বসলো। সে বললো সে যাবে না। পরে আপু রাগ করার পর সেও তৈরি হলো বাইরে যাওয়ার জন্য। আমি জানতাম যে সে অবশ্যই যাবে। শুধু একটু ভাব নিচ্ছিল। কারণ সে বাইরের খাবার খাওয়ার জন্য খুবই উৎসাহী। কিছুক্ষণ পর তৈরি হয়ে আমরা সকলে রওনা দিলাম।

IMG_20220205_205954.jpg

IMG_20220205_203132.jpg

আমাদের গন্তব্য ছিল মোহাম্মদপুরের বিখ্যাত মোস্তাকিমের কাবাবের দোকান। এই রেস্টুরেন্টের খাবার অনেক বিখ্যাত। ঢাকার বিভিন্ন এলাকার মানুষ এখান থেকে কাবাব খেতে আসে। বাসা থেকে বের হওয়ার ৪০ মিনিটের ভিতরে আমরা সেখানে পৌঁছে গেলাম। তবে আমরা গুগল ম্যাপ এর লোকেশন ধরে যাওয়ার কারণে কিছু সমস্যার মুখোমুখি হয়েছিলাম। কারণ আমাদের ড্রাইভার এই জায়গাটি চেনে না। যার ফলে আপু আমাকে বলেছিল গুগল ম্যাপের লোকেশন দেখে ড্রাইভারকে ইনস্ট্রাকশন দিতে। কিন্তু আমি লোকেশন সেট করেছিলাম মোহাম্মদপুর বিহারী ক্যাম্প। যার ফলে লোকেশন অনুযায়ী যেতে-যেতে আমরা এমন একটি সরু গলিতে গিয়ে পৌঁছলাম। যেখান থেকে গাড়ি নিয়ে বের হতে আমাদের খুবই কষ্ট হয়েছে। সেই গলিটি ছিল একটি বাজারের গলি। সেই গলির দুই পাশে ছিল অসংখ্য দোকান।

IMG_20220205_203138.jpg

যাইহোক সেখান থেকে বের হওয়ার কিছুক্ষনের ভিতর আমরা সেই কাবাবের দোকানের সামনে পৌঁছে গেলাম। সেখানে এক সারিতে অনেকগুলো কাবাবের দোকান। কিন্তু এবার সেখানে পৌঁছে একটি অপ্রীতিকর ঘটনার সম্মুখীন হলাম। আমরা প্রথমে একটি জায়গায় গাড়ি পার্ক করতে গিয়েছি। সেখানে পাশের রেস্টুরেন্টের কয়েকজন দালাল এসে হাজির। তারা যখন জানতে পারল আমরা মুস্তাকিমের দোকানে বসবো। তখন তারা বলল এখানে গাড়ী পার্ক করা যাবে না। সেই কাবাবের দোকানের সামনে পার্ক করতে হবে। কি আর করা আমরা কথা না বাড়িয়ে মোস্তাকিমের কাবাবের দোকানের সামনে গাড়ি পার্ক করলাম। কারণ এই কাবাবের দোকান গুলির সামনে কোন পার্কিং লট নেই।

IMG_20220205_204357.jpg

তারপর গাড়ি থেকে নেমে সোজা সেই কাবাবের দোকানে ঢুকে গেলাম। দোকানটি অনেক জনপ্রিয় হলেও আকারে খুবই ছোট। যদিও বর্তমানে দোকানের দোতালায় অল্প কিছু লোকের বসার ব্যবস্থা করা হয়েছে। আমরা জায়গা পাওয়াতে নিচতলাতেই বসলাম। বসে আমরা মেনু কার্ড দেখছিলাম।মেনু কার্ড দেখে আমরা চিকেন চাপ, বটি কাবাব, মগজ ফ্রাই অর্ডার করলাম। সাথে ছিল অতি ক্ষুদ্র সাইজের তাদের বিখ্যাত লুচি। আর খাবার শেষে খাওয়ার জন্য অর্ডার করলাম লাচ্ছি।

IMG_20220205_204355.jpg

কিছুক্ষণ পর টেবিলে খাবার পরিবেশন করলো। যথারীতি আমি সাথে সাথে খাওয়া শুরু করলাম। কিছুক্ষণ খাওয়ার পর মনে হলো আরে ছবি তুলতে তো ভুলে গিয়েছি। তখন খাবারের কয়েকটি ছবি তুললাম। খাবারের কথা যদি বলি তাহলে স্বাদ এমন আহামরি কিছু না। সব কাবাবে প্রায় একই রকম সাদ। অল্পক্ষণেই আমরা খাওয়া শেষ করলাম। খাওয়া শেষে আমরা লাচ্ছি খেয়ে বিল পরিশোধ করে দোকান থেকে বের হয়ে গেলাম।

IMG_20220205_204353.jpg

IMG_20220205_205520.jpg

দোকান থেকে বের হয়ে সামনে দেখি একটি পানের স্টল। সেখানে বিভিন্ন রকমের পান পাওয়া যায়। আপু আমাকে জিজ্ঞেস করল যে আমি পান খাবো কিনা। আমি বললাম না আমি খাব না। কিন্তু আমার ভাগ্নে বায়না ধরল সে ফায়ার পান খাবে। যথারীতি তার আবদার পূরণ করা হলো। ফায়ার পান হল পানের উপরে বিভিন্ন মসলার সাথে কিছু একটা তারা যোগ করে তাতে আগুন ধরিয়ে দেয়। সেই আগুনসহ পানটা আপনার মুখের ভেতর পুরে দেয়া হবে। যদিও সেই আগুনে আপনার কোন ক্ষতি হবে না। আমাদের পান খাওয়া পর্ব শেষ হলে তারপর আমরা বাসার দিকে রওনা দিলাম।

IMG_20220205_205642.jpg

IMG_20220205_210103.jpg

আজকের মতো এখানে শেষ করছি। পরবর্তীতে আপনাদের সাথে দেখা হবে অন্য কোনো নতুন লেখা নিয়ে। সে পযন্ত সবাই ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন।


ফটোগ্রাফির জন্য ব্যবহৃত ডিভাইসহুয়াই নোভা ২আই
ফটোগ্রাফার@rupok
স্থানলিংক

logo.png

Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power

250 SP500 SP1000 SP2000 SP5000 SP

Heroism_3rd.png

standard_Discord_Zip.gif


🇧🇩🇧🇩ধন্যবাদ🇧🇩🇧🇩


@rupok

Sort:  
 3 years ago 

আশা করি দাদা ভালো আছেন? আপনি আপনার আপু এবং ভাগ্নি কাবাব খাওয়ার মুহূর্ত গুলো খুব সুন্দর ভাবে কাটিয়েছেন। আপনারা সবাই খুব আনন্দঘন মুহূর্ত অতিবাহিত করেছেন। আপনি এত সুন্দর দিনের অভিজ্ঞতা শেয়ার করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। ভালো থাকবেন দাদা।

 3 years ago 

ভাইয়া আপনি ভোজন রসিক সেটা জানি, তবে আবার স্বাস্থ্য সচেতনতার জন্য মাঝেমধ্যে এড়িয়ে চলেন। তবে আপু বলাতে বাইরে যাওয়ার জন্য যদিও উৎসব মুখর ছিলেন। তবে ঢাকা মোহাম্মদপুর কাবাবের কথা শুনে জিভে আমার জল পড়ে যাচ্ছে। কারণ পুরান ঢাকার কাবাব খাওয়ার মজাটাই আলাদা। আর যেমন তেমন তাদের পরিবেশন ও দারুন। আর আপনার ভাগ্নার বেঁকে বসায় এবং আপু রাগারাগি করে নিয়ে যাওয়া সত্যি সব মিলিয়ে অসাধারণ একটি পোস্ট আমাদেরকে উপহার দিয়েছেন। আর গুগল মামা কে ফলো করতে গিয়ে পড়েছেন চিপায়, অনেকটা ঝামেলা পোহাতে হয়েছিল। যাই হোক অবশেষে সুন্দর একটা মুহূর্ত কাটিয়েছিলেন। আর আমাদের সাথে এত সুন্দর করে শেয়ার করার জন্য আপনার প্রতি রইল আন্তরিক শুভেচ্ছা।

 3 years ago 

গরম গরম লুচি, কাবাব, ফায়ার পান বাহ! ভালো তো ভালো না!
ঢাকায় ঘুরে ঘুরে ভালোই ভোজন হচ্ছে তাইলে হি হি হি। কাবাব দেখে তো টেষ্ট করতে মন চাইছে ভাই। ধন্যবাদ শেয়ার করার জন্য।

 3 years ago 
ভাইয়া চমৎকার একটি দিনের অভিজ্ঞতা আমাদের মাঝে তুলে ধরেছেন আপনি আজকে। মোহাম্মদপুরের সেই নামকরা মোস্তাকিমের কাবাব সত্যি খুবই মুখরোচক। আমিও বেশ কয়েকবার সেখানে গিয়ে ছিলাম। সেখানকার খাবারের রেটিং নতুন করে দেওয়ার মতন আর কিছু নেই। এক কথায় অতুলনীয়।
 3 years ago 

আমি জানতাম যে সে অবশ্যই যাবে। শুধু একটু ভাব নিচ্ছিল। কারণ সে বাইরের খাবার খাওয়ার জন্য খুবই উৎসাহী

ঘরের ছোট গুলোর এই এক কান্ড।নিজে থেকে কিছু করলে তাদের ভাব সপ্তম আসমানে পৌঁছে যায়।🤣

আপনার বেশিরভাগ সময় ই অর্ধেক খেয়ে ছবির কথা মনে পরে।আর আমার খাওয়ার আসার আগে থেকেই মনে পরে যে ছবি তুলতে হবে।😅
আসলেই,কাবাবের স্বাদ সব জায়গায় প্রায় সেইম।

 3 years ago 

তোমার খাওয়া-দাওয়ার পোস্ট গুলো দেখে রীতিমতো আমার ভয় লাগছে। বাইরের এতসব রিচ ফুড খেয়ে কবে না অসুস্থ হয়ে যাও। তাই বলছি খাওয়া-দাওয়া কমাও। আর সময় থাকতে সাবধান হও। তেলের যে চেহারা দেখলাম তাতে যত বিখ্যাত দোকানই হোক না কেন ওইটাকে মোটেই স্বাস্থ্যকর বলা যায় না।

গরম গরম কাবাব খেতে খুবই দারুণ লাগে। বিশেষ করে কাবাব আমাদের সবার কাছেই অনেক ভালো লাগে খেতে আর আপনি সেটাই করলেন। আপনি চমৎকার একটা দিনের মুহূর্ত গুলো আমাদের মাঝে শেয়ার করলেন ভাই।আসলে পরিবারের সাথে মিলে মিশে এক সাথে খাওয়ার মজাই আলাদা। তাই আপনি ও খুবই আনন্দের সাথে সময়টা কাটিয়েছে। আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ ভাই আমাদের মাঝে এতো সুন্দর কিছু আনন্দর মুহূর্ত শেয়ার করার জন্য। অনেক অনেক শুভকামনা রইলো ভাই আপনার জন্য।

মুস্তাকিম চাপ ঘরে গিয়েছিলাম একবার 2019 সালে। অন্যান্য চাপ গুলোর চেয়ে মুস্তাকিমের চাপ অনেক সুস্বাদু। এখানকার চাপের সুনাম সারা ঢাকা শহর জানে। মুস্তাকিম চাপ ঘরের সামনেই আগুন পান ছিলো। যেটা আমি মুখে নিয়েছিলাম। আপনার পোস্টটি দেখে সেদিনের কথা মনে পড়ে গেলো। ধন্যবাদ ভাই

Coin Marketplace

STEEM 0.17
TRX 0.15
JST 0.028
BTC 57337.14
ETH 2342.62
USDT 1.00
SBD 2.35