ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে যন্ত্রনাময় কয়েকদিন।১০% প্রিয় লাজুক খ্যাঁক এর জন্য।
বেশ কয়েকদিন পর আজ শরীরটা একটু ভালো লাগছে। গত কয়েকটা দিন আমার জীবনের উপর দিয়ে রীতিমত ঝড় বয়ে গিয়েছে। প্রতিবার ঢাকায় এসে আমি মোটামুটি ব্যস্ত সময় পার করি ঘোরাফেরা খাওয়া দাওয়ার মাধ্যমে। কিন্তু এবার ঢাকা আসার পর থেকেই হঠাৎ করে মনে হল এক ঘূর্ণিপাকের ভেতর পড়ে গেলাম।
ছবির সোর্স- লিংক
এসেই দেখি বড় বোন প্রচন্ড জ্বরে আক্রান্ত। দিন যায় আর তার অবস্থা অবনতির দিকে যাচ্ছিলো। এর ভেতর আমার মা বিদেশ থেকে দেশে ফিরে আসে। বড় বোনের অসুস্থতার জন্য মন খারাপ থাকলেও মাকে কাছে পেয়ে মন আবার কিছুটা ভালো হয়ে যায়। এর ভেতর বড় বোনকে হাসপাতালে ভর্তি করতে হলো। কয়েক দিন বাসা আর হাসপাতালে দৌড়াদৌড়ি লেগেই ছিলো।
এর ভেতর বড় বোন কয়েকদিন হাসপাতালে থাকার পর সুস্থ হয়ে বাসায় ফিরে আসলো। তখন একটু স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেললাম। চিন্তা করছিলাম কয়েকদিনের ভিতরে বাসায় ফিরে যাবো।এর ভেতর হঠাৎ করে আমার জ্বর আসলো। তখনো বুঝিনি সামনে কি ভয়াবহ সময় আমার জন্য অপেক্ষা করছে। যদিও এবার ঢাকায় আসার পর থেকেই ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হওয়ার ভয়ে ভীত ছিলাম। মনে হচ্ছিল যে কোন সময় আক্রান্ত হতে পারি। ঢাকা শহরকে নরককুণ্ড মনে হচ্ছিল। শুধু মনে হচ্ছিল কখন এই শহর থেকে পালাতে পারবো।
যেদিন সন্ধায় আমার জ্বর আসলো। তারপরের দিন সোজা ডেঙ্গু টেস্ট করতে দিলাম। তার পরদিন রিপোর্ট আসলো ডেঙ্গু পজিটিভ। কিন্তু এরই মধ্যে এই দুই দিনে আমি প্রচন্ড জ্বরে আক্রান্ত হয়ে খুবই দুর্বল হয়ে পড়েছি। সব সময় মনে হতো আমি একটি ঘোরের ভেতরে আছি। কোন কিছুই ভালোভাবে বুঝতে পারতাম না। আমার পরিবারের লোকজনেরা সব সময় আমার সেবা-শুশ্রূষাতে ব্যস্ত ছিলো।
তিন দিন পর থেকে জ্বরের তীব্রতা কিছুটা কমতে থাকলো। কিন্তু সেই সাথে শরীরে দূর্বলতা বাড়ছিলো আর সারাগায়ে চুলকাচ্ছিল। যদিও ডেঙ্গু জ্বর নিয়ে সবচাইতে ভীতিকর যে কথা শুনতাম সেটি হচ্ছে প্রচন্ড মাথা এবং শরীরে ব্যথা হয়। আল্লাহর অশেষ রহমতে আমাকে এই তীব্র ব্যথা সহ্য করতে হয়নি। এই প্রচণ্ড দুর্বল শরীর নিয়েও প্রতিদিন আমাকে টেস্ট করতে যেতে হয়েছে। একদিন টেস্ট করে আসি আর আশা করি যেন রিপোর্টটা ভালো আসে। এভাবে দিন যেতে থাকে আর আমার জ্বর কমছে থাকে।
শেষ পর্যন্ত পঞ্চম দিনে এসে আমার জ্বর চলে যায়। কিন্তু শরীরে ছিল প্রচণ্ড দুর্বলতা। সারাদিন বিছানায় শুয়ে থাকতাম আর বিভিন্ন রকম তরল জাতীয় খাবার খেতাম। নিজের ডেঙ্গু থেকে সুস্থ হলেও পরিবারের অন্য সদস্যদের নিয়ে সবসময় চিন্তায় ছিলাম। আবার কার না জানি ডেঙ্গু হয়ে যায়। বিশেষ করে আমার মা আর মেয়েকে নিয়ে বেশি চিন্তা করেছি। অবশেষে গতকালকের রিপোর্টে আমার প্লাটিলেট সংখ্যা বাড়তে শুরু করে করেছে। আজকে যে টেস্ট করেছি তার রিপোর্টে দেখলাম প্লাটিলেট সংখ্যা আরও বেড়েছে।
এ যাত্রায় মনে হয় আল্লাহর অশেষ রহমতে বেঁচে গেলাম। কিন্তু এই শহরের উপর আমার বিতৃষ্ণা এসে গিয়েছে। আমি পারতপক্ষে আর কখনো এই শহরে আসতে চাই না। আমার পরিবারের লোকজন কেও বোঝানোর চেষ্টা করছি এই শহর থেকে যত দ্রুত সম্ভব দূরে কোথাও চলে যেতে। ঢাকা শহর বিভিন্ন রকম সমস্যায় জর্জরিত হয়ে এখন ধ্বংসপ্রায়। এখানকার মানুষের মানসিক স্বাস্থ্য এবং শারীরিক অবস্থা দুটোই ভয়াবহ খারাপ। এ শহর এখন সত্যিই একটি মৃত্যুকূপে পরিণত হয়েছে। এইজন্য সবার প্রতি আমার পরামর্শ থাকবে এই শহর থেকে যত দূরে থাকতে পারবেন তত ভাল থাকবেন।
আজকের মতো এখানেই শেষ করছি। আশা করি পোস্টটি আপনাদের ভালো লাগবে। পরবর্তীতে আপনাদের সাথে দেখা হবে অন্য কোন নতুন লেখা নিয়ে। সে পর্যন্ত সবাই ভাল থাকুন সুস্থ থাকুন।
Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |
🇧🇩🇧🇩ধন্যবাদ🇧🇩🇧🇩
আমি রূপক। আমি একজন বাংলাদেশী। আমি বাঙালি। আমি বাংলায় মনের ভাব প্রকাশ করতে ভালোবাসি। আমি আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটিকেও ভালোবাসি।
আপনি খুব কষ্টের মাঝে ছিলেন এটা আপনার পোষ্ট পড়েই বুঝা যাচ্ছে।আল্লাহর অশেষ রহমতে আপনি ধীরে ধীরে সুস্থ হয়ে যাচ্ছেন এটাই অনেক বড় কিছু। আপনার জন্য অনেক অনেক দোয়া রইল আপনি যেন তাড়াতাড়ি সুস্থ হয়ে যান।
ধন্যবাদ আপনাকে আপু।
কি আর বলব ভাইয়া আমরা মানুষেরাই এই ডেঙ্গুর প্রবণতাটা বাড়িয়ে দিয়েছি। কোনরকম পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতার উপর কিছু মানুষ একদমই কোন খেয়াল রাখে না। নিজেতো নোংরা থাকে তার পরিবেশটাকে ও নোংরা রাখে।এইসব মানুষগুলোর জন্য অন্য মানুষ কে এই রোগে ভুগতে হচ্ছে। আপনার কথা শুনে খুব খারাপ লাগছে। কিন্তু আশা করছি আপনি এবং আপনার পরিবার খুব জলদি সুস্থ হয়ে যাবেন। আপনার জন্য সৃষ্টিকর্তার কাছে সুস্থতা প্রার্থনা করি।
অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে আপু।
ভাই ঢাকা কে আমরা হাতে ধরে নষ্ট করে ফেলেছি। এখন ঢাকাতে কেউ সেফ নাই। আপনার জন্য খুব খারাপ লাগলো। আন্টি আসলো কই মজা করবেন কি বিপদে পরে গেলেন। দোয়া রইল প্রিয় ভাই আমার।
ধন্যবাদ ভাইয়া।
ভাইয়া ডেঙ্গু একটি মারাত্মক ব্যাধি রোগ। আপনি অবশ্যই ভালোভাবে ডাক্তারের পরামর্শ নেবেন ও তাড়াতাড়ি সুস্থ হয়ে আমাদের মাঝে ফিরে আসবেন এই কামনাই করি। আর আপনার পুরো পরিবার যেন তাড়াতাড়ি সুস্থ হয় প্রার্থনা করি।
ধন্যবাদ আপনাকে ভাই।
আমরা এই কয়দিন অনেক মিস করেছি ভাইয়া আপনাকে। আমি তো বেশ কয়েকবার জিজ্ঞেস করেছি আপনার অবস্থা কেমন। আসলে যে যার যার জায়গায় সে সে বুঝতে পারে কঠিন অবস্থাটা কেমন কাটে। প্রথমে তো শুনলাম আপনার বোন অসুস্থ এরপর বোনের বাচ্চা এরপর আপনি। মানে আমি বুঝতে পারছি আপনার কয়েকটা দিন যে আসলে কতটা খারাপ গেছে। তবে আল্লাহর কাছে অশেষ রহমত আল্লাহর অশেষ কৃপায় আপনি এখন সুস্থ। যারা ঢাকায় থাকে তারা সবাই এই আপনার কথা গুলোই বলে।
ধন্যবাদ আপনাকে আপু।
আল্লাহর অশেষ রহমতে ভাইয়া আপনি সুস্থ হয়েছেন শুনে খুব খুশি লাগছে। ডেঙ্গু জ্বর খুব মারাত্মক একটি জ্বর শরীর,মাথা প্রচন্ড রকমের ব্যথা করে কারণ আমার একবার ডেঙ্গু জ্বর হয়েছিল। প্রচন্ড রকমের কষ্ট করেছি এই ডেঙ্গু জ্বরে। ঠিক বলেছেন ঢাকা শহর এখন মৃত্যুকূপে পরিণত হয়েছে।চারিদিকে ময়লা পানি জমে এডিস মশা উৎপন্ন হয়।তবে কি ভাইয়া, জানেন প্রতিটি শহরে এখন এই অবস্থা হয় আছে। আমি মনে করি গ্রামে থাকাটাই সবচেয়ে উত্তম।
ধন্যবাদ ভাইয়া।
ধন্যবাদ আপনাকে আপু।
আপনি ও আপনার পরিবারের সুস্থতা কামনা করছি সৃষ্টিকর্তার কাছে। আশা করি তাড়াতাড়ি সুস্থ হয়ে উঠবেন।
ধন্যবাদ আপনাকে।
পোস্টটি পড়ে বুঝতে পারলাম ভাইয়ের জীবনে ভালো রকমই সমস্যা দেখা দিচ্ছে। বিশেষ করে ভাইয়ের ডেঙ্গু জ্বর আসা সেই সাথে বোনের অসুস্থতা সাথে নানান ব্যাধিতে পুরো পরিবার জড়িত হয়ে গেছে । পোস্টটি পড়ে অনেক দুঃখ লাগছে দোয়া করি ভাই এবং তার পরিবারের জন্য যেন সুস্থ হয়ে আগের মত ফিরে আসতে পারে এবং ভালো লাগছে ভাই জ্বর থেকে ভালো হয়ে গেছে এই কথাটি শুনে দোয়া রইল ভাই আপনার জন্য।
ধন্যবাদ আপনাকে ভাই।
দোয়া করি আল্লাহ যেন আপনাকে খুব দ্রুত সুস্থতা দান করেন। আপনি বেশ কয়েক দিন অসুস্থ আছেন। খুব দ্রুত সুস্থ হয়ে আমাদের মাঝে ফিরে আসবেন।
ধন্যবাদ আপনাকে ভাই।
এডিস মশার আক্রমণ থেকে ডেঙ্গুর জীবাণু আক্রান্ত হয়।এর একমাত্র উপায় বাসার আশেপাশে ড্রেন বা স্যাঁতস্যাঁতে জায়গার ময়লা আবর্জনা পরিস্কার করা,কোথাও পানিরনজমে থাকলে তা পরিস্কার করা এবং শোয়ার সময় মশারি টাঙ্গিয়ে শোয়া।
যাইহোক আপনার সুস্থ্যতার কথা জেনে ভালো লাগলো।
আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ সুন্দর লেখার জন্য।
ধন্যবাদ আপনাকে ভাই।