প্রকৃতির সান্নিধ্যে কিছুটা সময়।
আগের দিন ভাসমান রেস্টুরেন্ট থেকে ঘুরে এসে আমরা পদ্মার পাড়ে এসে বসেছিলাম। উদ্দেশ্য ছিল সেখানে অনেকটা সময় কাটাবো। কিন্তু কিছুক্ষণ সময় পার হওয়ার পর আমাদের এক বন্ধুর বাড়ি থেকে ফোন এলো যে তার বাচ্চা অসুস্থ। তাই তখনই আমাদের সেখান থেকে চলে যেতে হল। যার ফলে আমাদের আর সন্ধ্যার পরে পদ্মার পাড়ে সময় কাটানো হলো না। সেজন্য আমি চিন্তা করেছিলাম আগামীকাল আবার পদ্মার পরে আসবো এবং সেখানে সন্ধ্যার পরে বেশ কিছুটা সময় কাটাবো।
প্রথমে পরিকল্পনা ছিল সেখানে বন্ধু ফেরদৌস এর সঙ্গে যাওয়ার। কিন্তু ফেরদৌস ব্যক্তিগত কারণে আর পরদিন বের হতে পারেনি। কিন্তু তা বলে আমার পদ্মার পাড়ে যাওয়া থেমে থাকেনি। বিকালের কিছু আগে অন্য আরেক বন্ধু ফোন দিল পদ্মার পাড়ে যাবো কিনা সেটা শোনার জন্য। আমি তো আগে থেকেই চিন্তা করে রেখেছিলাম সেখানে যাওয়ার। তাই আমি তার বলার সাথেই রাজি হয়ে গেলাম। সে আমাকে বলল তৈরি হয়ে থাকতে। কিছুক্ষণ পর সে এসে আমার বাসা থেকে নিয়ে যাবে। আমি তৈরি হয়ে তার জন্য অপেক্ষা করতে লাগলাম।
সেই বন্ধু যথাসময়ে আমার বাসার নিচে এসে হাজির হলো। তারপর দুজনে পদ্মার পাড়ের উদ্দেশ্যে রওনা দিলাম। যাওয়ার আগে চিন্তা করেছিলাম ঈদের ছুটির শেষ হয়ে গিয়েছে। যার ফলে এখন হয়তো পদ্মার পাড়টা নিরিবিলি পাবো। কিন্তু আমি ভুলে গিয়েছিলাম যে এই মৌসুমে প্রতি শুক্রবারেই পদ্মার পাড় লোকে লোকারণ্য থাকে। পদ্মার পাড়ে পৌছে তো আমাদের চক্ষু ছানাবড়া। পুরো নদীর পাড় জুড়ে অসংখ্য মানুষজন দেখা যাচ্ছে। সেখানে রীতিমতো মেলা বসে গিয়েছে। বাচ্চাদের জন্য রয়েছে বিভিন্ন রকমের রাইড। তাছাড়া অনেক হকার চলে এসেছে নানা রকমের খেলনা নিয়ে। এগুলি দেখে আমরা কিছুটা হতাশ হলাম।
তারপরে চিন্তা করলাম যেহেতু চলে এসেছি তাই ফিরে যাওয়ার প্রশ্নই আসে না। তাই আমরা দুজন ঠিক করলাম আমরা হেটে সামনের দিকে আগাতে থাকি। যেখানে নিরিবিলি জায়গা পাবো সেখানে আমরা দুজন বসে পড়বো। শেষ পর্যন্ত একটি ফাঁকা জায়গা পেলাম যেখানে লোকজন পৌঁছেনি। সেই জায়গাটি ছিল খুবই সুন্দর এবং বেশ পরিস্কার। লোকজনের আনাগোনা কম থাকার কারণে এখানকার পরিবেশটা এখনো ভালো আছে।
আমরা দুজন সেখানে বসে গল্প করতে লাগলাম। আমাদের ঠিক পেছনে ছিলো কয়েকটি বড় বড় গাছ। সেই গাছের ছায়ায় নদীর ধারে আমরা বসে ছিলাম। সেখানে বসে আমরা বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করছিলাম আর প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করছিলাম। দুজনই কিছুক্ষণ পরপর চমৎকার প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের জন্য মুগ্ধতা প্রকাশ করছিলাম। এর ভেতর দেখতে পেলাম একটি স্পিডবোট আমাদের সামনে দিয়ে কিছুদূর চলে গেল তারপর আবার ফিরতি পথ ধরল। বুঝতে পারলাম নদীর পাড়ে আগত দর্শনার্থীদের বিনোদনের জন্য এই স্পিডবোট সার্ভিস চালু হয়েছে। বিষয়টা দেখে ভালই লাগলো। মনে মনে পরিকল্পনা করলাম কোন একদিন এসে স্পিডবোটে কিছুক্ষণ ঘোরা যাবে।
এভাবে সেখানে বসে আড্ডা দিতে কখন যে সন্ধ্যা হয়ে গিয়েছে টেরই পায়নি। গত বেশ কিছুদিন থেকে প্রচন্ড গরম পরছে। কিন্তু নদীর পাড়ে যতক্ষণ বসে ছিলাম ততক্ষণ মৃদু ঠান্ডা হাওয়া শরীর মনে এক প্রশান্তির দৌলা দিচ্ছিলো। এর ভেতর মাগরিবের আজান শুনে আমরা দুজন রওনা দিলাম মসজিদের উদ্দেশ্যে। আমার সেই বন্ধু সনাতন ধর্মাবলম্বী হওয়ায় আমি তাকে বললাম আপনি বসে থাকেন আমি নামাজ পড়ে আসি। কিন্তু তিনি আমার সাথে সাথে এগিয়ে গেলেন। পরে আমি নামাজ পড়ে বের হলে দুজন বাড়ির পথে রওনা দিলাম। আজ বেশ কিছুটা সময় নদীর পাড়ে কাটাতে পেরেছি।
যদিও আজও আমার মনোবাসনা পূর্ণ হয়নি। আমার মূলত ইচ্ছা ছিলো পদ্মার পাড়ে যেই ভাসমান রেস্টুরেন্ট আছে। সেখানে রাতের বেলা বেশ কিছুটা সময় কাটানো। কিন্তু সেই রেস্টুরেন্টে এত লোকজনের এই ভিড় দেখে আর সেখানে যেতে ইচ্ছা করলো না। চিন্তা করেছি পরে কোন একদিন সেখানে যাওয়া যাবে।
আজকের মতো এখানেই শেষ করছি। পরবর্তীতে আপনাদের সাথে দেখা হবে অন্য কোন নতুন লেখা নিয়ে। সে পর্যন্ত সবাই ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন।
ফটোগ্রাফির জন্য ব্যবহৃত ডিভাইস | হুয়াই নোভা 2i |
---|---|
ফটোগ্রাফার | @rupok |
স্থান | পদ্মার পাড় |
![logo.png](https://steemitimages.com/640x0/https://cdn.steemitimages.com/DQmZEaz6VZmitMY1N8dSXHuT2tfgXFnDKjY8iV7jNGuNwEE/logo.png)
Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |
![Heroism_3rd.png](https://steemitimages.com/640x0/https://cdn.steemitimages.com/DQmRejDSNMUFmRz2tgu4LdFxkyoZYmsyGkCsepm3DPAocEx/Heroism_3rd.png)
![standard_Discord_Zip.gif](https://steemitimages.com/0x0/https://cdn.steemitimages.com/DQmTvJLqN77QCV9hFuEriEWmR4ZPVrcQmYeXC9CjixQi6Xq/standard_Discord_Zip.gif)
পদ্মার পাড়ে খুবই সুন্দর সময় পার করেছেন ভাইয়া আসলে বন্ধুদের সাথে এরকম পরিবেশে উপভোগ করতে খুবই ভালো লাগে। প্রথম দিন আপনার বন্দুর বাচ্চার অসুস্থ হওয়ার কারণে সে চলে গেল। পরেরদিন আপনার অনেক বন্ধুর সাথে আপনি আবার ভ্রমণ করতে আসলেন। খুবই সুন্দর সময় পার করছেন ফটোগ্রাফিক অনেক ভালো লেগেছে আমার।
যে বন্ধুটি বাচ্চা অসুস্থ হওয়ার কারণে চলে গিয়েছিলো। আজকে সে আমাদের সাথে ছিল না।
নদীর পাড়ে বিকেল বেলার মিষ্টি আবহাওয়া সাথে শীতল বাতাস। মন ভাল রাখার জন্য এর বেশি আর কি প্রয়োজন। খুব ভাল লাগলো আপনার আজকের লেখা পড়ে। সাথে ছিল সুন্দর সুন্দর ফটোগ্রাফি। তবে খুব শীঘ্রই ভাসমান হোটেলে যেয়ে আমাদের বিস্তারিত জানাবেন এই অনুরোধ। আমারা না হয় দুরথেকে কখনো বেড়াতে চলে যাব।
ঠিকই বলেছেন নদীর পাড়ে বিকেল বেলার মিষ্টি আবহাওয়া সাথে শীতল বাতাস আর কি চাই?
এবার ঈদের ছুটিতে বাড়িতে গিয়ে পদ্মার পাড়ে বন্ধুদের নিয়ে কয়েকবার করে আড্ডায় মেতে উঠেছি বিকেল থেকে রাত পর্যন্ত আসলে পদ্মার পাড়ে স্নিগ্ধ হওয়া আর পানির কলতানে সময় কাটানোর মজাটাই অন্যরকম। আপনার ফটোগ্রাফি এবং উপস্থাপনা পড়ে বুঝতে পারলাম আপনিও খুব সুন্দর সময় অতিবাহিত করেছেন যদিও একটু মানুষের আনাগোনা ছিল তারপরে কিন্তু সময়টা ভালো ছিল।
সময়টা খুব চমৎকারভাবে উপভোগ করেছি। মনে হচ্ছিল আরো অনেক সময় সেখানে বসে থাকি।
প্রকৃতির সান্নিধ্যে গেলে মনটা এমনই অনেক ভালো হয়ে যায়। চারদিকে যে হারে গরম পড়েছে খোলা আকাশে নদীর তীরে গেলে অনেক বাতাস লাগে। আপনি একটি বিষয় খেয়াল করেছেন আপনার ফটোগ্রাফিতে। প্রচন্ড গরমে কুকুর পর্যন্ত পানিতে পড়েছে একটি শীতল হওয়ার অপেক্ষায়। আপনার মনোবাসনা পূর্ণ না হওয়ায় খুব খারাপ লাগছে। হতাশ হবেন না। ইনশাল্লাহ সামনের বার ভাসমান রেস্টুরেন্টে ভিজিট করতে পারবেন।
কুকুরটাকে পানিতে নামতে দেখেই ছবিটা তুললাম। এই ছবিটা থেকে বোঝা যাচ্ছে আসলে কি পরিমান গরম পড়েছিলো।