একটি স্বপ্নের অপমৃত্যু (প্রথম পর্ব)
আসাদের মা হাতে খাবার নিয়ে আসাদের রুমের দরজার সামনে দাঁড়িয়ে আছে অনেকক্ষণ হলো। একটু পর পর সে আসাদকে ডাকছে দরজা খোলার জন্য। আসাদ বাবা-মার একমাত্র সন্তান। মধ্যবিত্ত বাবা-মার সমস্ত স্বপ্ন তাকে ঘিরে। কিন্তু দুদিন ধরে আসাদ গো ধরে আছে দামি মোটরসাইকেল কেনার জন্য। তার মধ্যবিত্ত বাবার পক্ষে এত টাকা দিয়ে মোটরসাইকেল কিনে দেয়া কিছুতেই সম্ভব না। কিন্তু আসাদ এটা কোনভাবেই বুঝতে চাচ্ছেনা। এজন্য দুইদিন ধরে সে খাওয়া-দাওয়া প্রায় বন্ধ রেখেছে।
সে মাঝে মাঝে ঘর থেকে বের হয়ে বাইরে যায়। বাইরে থেকে এসে আবার দরজা আটকে ঘরের ভেতরে বসে থাকে। বাইরে থেকে যতই ডাকাডাকি করা হোক সে কিছুতেই জবাব দেয় না। তার বাবা-মা তাকে অনেক বোঝানোর চেষ্টা করেছে যে তাদের পক্ষে মোটরসাইকেলের টাকা জোগাড় করা খুব কঠিন। আসাদের বাবা যে কটা টাকা বেতন পায় সেটা তাদের খরচ হয়ে যায়। জমানো টাকা বলতে কিছুই নেই। অবশ্য গ্রামে তার সামান্য কিছু জমি আছে। কিন্তু সহায় সম্বল বলতে ওইটুকুই। তাই আসাদের বাবা সেটা বিক্রি করতে চাচ্ছে না। কিন্তু অবস্থা যেদিকে গড়াচ্ছে শেষ পর্যন্ত তাকে মনে হয় তার পৈত্রিক সূত্রে পাওয়া জমিটুকু বিক্রি করে দিতে হবে।
আসাদের বাবা-মা তাকে এত অল্প বয়সে মোটরসাইকেল চালানোর কুফল অনেক বোঝানোর চেষ্টা করেছে। কিন্তু কিছুতেই লাভ হচ্ছে না। আসাদের একই কথা যদি তাকে মোটরসাইকেল না কিনে দেয়া হয়। তাহলে সে বাড়ি ছেড়ে চলে যাবে। শেষ পর্যন্ত আসাদের বাবা বাধ্য হয়ে তাকে একটা সেকেন্ড হ্যান্ড মোটরসাইকেল কিনে দেয়ার প্রস্তাব দিয়েছিল। কিন্তু আসাদ তাতেও রাজি হয়নি। এদিকে আসাদের বাবা সকালে উঠে অফিস চলে গিয়েছে। তারপর থেকে আসাদের মা আসাদকে খাওয়ার জন্য অনেক অনুরোধ করছে। কিন্তু আসাদ রুমের দরজা আটকে ভিতরে বসে আছে। কোন সাড়াশব্দ করছে না।
আসাদের মা আসাদের জানালার পাশে গিয়ে উঁকি দিয়ে দেখছে ছেলে ভেতরে ঠিকঠাক আছে কিনা। কারণ আজকালকার ছেলেদের দিয়ে কোন ভরসা নেই। তারা যে কোন সময় যে কোন দুর্ঘটনা ঘটিয়ে ফেলতে পারে। আসাদের মা অবশ্য আসাদের বাবাকে বলেছে জমিটা বিক্রি করে ছেলেকে মোটরসাইকেল কিনে দিতে। কিন্তু আসাদের বাবা আসাদের মাকে বলেছে এই জমিটুকু ছেলের জন্য রেখে দিয়েছি। আমাদের তো সম্পত্তি বলতে আর তেমন কিছু নেই। এই জমিটুকু যদি এখন বিক্রি করে দিই তাহলে ওর জন্য কিছুই থাকবে না।
কিন্তু তাদের ছেলে কিছুতেই এই কথাটা বুঝতে চাচ্ছেনা। অবশ্য আসাদ একটা ব্যাপার বুঝতে পারছে যে তার বাবা-মা আস্তে আস্তে নরম হয়ে আসছে। সে তার বন্ধুদের সাথে মিলে পরিকল্পনা করেছে যে আর কয়েকদিন যদি এমন অভিনয় চালিয়ে যেতে পারে। তাহলে তার বাবা বাধ্য হয়ে তাকে মোটরসাইকেল কিনে দেবে। আসাদ প্রতিদিন বাড়ি থেকে বাইরে গিয়ে বন্ধুদের সাথে কিছু খাওয়া দাওয়া করে আসে। আর তাদের সাথে বিভিন্ন রকম বুদ্ধি পরামর্শ করে। তার বন্ধুদের উৎসাহেই আসাদ এমন অভিনয় শুরু করেছে। (চলবে)
ফটোগ্রাফির জন্য ব্যবহৃত ডিভাইস | হুয়াই নোভা 2i |
---|---|
ফটোগ্রাফার | @rupok |
Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |
Support @Bangla.Witness by Casting your witness vote
Support @Bangla.Witness by Casting your witness vote
VOTE @bangla.witness as witness
OR
প্রথম পর্ব পড়ে অনেকটা উপলব্ধি করতে পারলাম, যেখানে বাবা মায়েরা বাধ্য হয়েই সন্তানদের ইচ্ছা পূরণ করে। তবে লাস্টের কথাগুলো পড়ে বুঝলাম বন্ধুদের উৎসাহের কারণেই আসাদ আজকে এতদূর পর্যন্ত এগিয়ে যাচ্ছে। কথায় আছে সৎ সঙ্গে স্বর্গবাস, অসৎ সঙ্গে সর্বনাশ। যাইহোক পরবর্তী পর্বগুলো পড়ার অপেক্ষায় রইলাম। তারপর জানতে পারব পুরো ঘটনা। ভালো লাগলো ভাইয়া আজকের পর্বটি।
এ রকম ঘটনা অনেক আমদের আশে পাশে ঘটছে ৷ আসলে এটা বুঝি না কিছু কিছু মধ্যবিত্ত পরিবারের এমন কিছু ছেলে আছে যারা এমন কাজ করে ৷ যা হোক সবাই তো এক না ৷ তবে মধ্যবিত্ত পরিবারের ছেলেদের এটা বোঝা উচিত ৷ যে আমি কোন পরিবারের জন্মগ্রহণ করেছি ৷
যা হোক পরের পর্বের জন্য অপেক্ষা ৷
আসলে বাস্তবে এমনটা অনেক সময় ঘটে থাকে। আসলে অনেক ছেলে মেয়েরাই বন্ধুদের উৎসাহের কারণে এমনটা করে থাকে। আবার অনেকে আছে যারা বন্ধুদের সাথে তাল মিলানোর জন্য এমনটা করে থাকে। কিন্তু তারা বোঝে না যে সবার আর্থিক অবস্থা একই রকম না। তাই ছেলে-মেয়েদের উচিত তাদের বাবা-মার আর্থিক অবস্থা বুঝে তারপর কোন জিনিস বায়না করা বা চাওয়া। আপনার গল্পটি পড়ে ভালো লাগলো। ধন্যবাদ এই সুন্দর গল্পটি আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।