এ গ্লানি পুরো দেশের।
সেদিন একটি অনলাইন পোর্টালের খবর পড়তে গিয়ে হঠাৎ করে একটি হেড লাইনের উপর চোখ আটকে যায়। সেই লিঙ্কটিতে ক্লিক করে পুরো খবরটি পড়ার চেষ্টা করি। খবরটা পড়ার পরে লজ্জায় গ্লানিতে মাথা নিচু করে বসে থাকি।
এটা একটা প্রতিকী ছবি।
খবরটি ছিল একটি বেসরকারি স্কুলের প্রধান শিক্ষক রাস্তায় ফেরি করে জিনিসপত্র বিক্রি করছে। ঘটনা জানাজানি হয় যখন তারই একজন ছাত্র তার কাছ থেকে কিছু কিনতে যায়। হৃদয়বিদারক এই ঘটনাটি ছিল এমন করোনা মহামারী শুরুর পরে বাংলাদেশের সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান দীর্ঘদিন বন্ধ আছে। কিন্তু যারা সরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে চাকরি করছে তাদের কোন সমস্যা হচ্ছে না। কারণ তারা মাস গেলে নিয়মিত বেতন পাচ্ছেন। সমস্যা হচ্ছে যারা বেসরকারি স্কুলে শিক্ষকতা করেন তাদের।স্কুল বন্ধ থাকার কারণে ছাত্র-ছাত্রীরা বেতন পরিশোধ করতে পারছে না। যার ফলে স্কুল কর্তৃপক্ষ শিক্ষক-কর্মচারীদের বেতন দিতে পারছে না। এমনিতেই বেসরকারি স্কুলগুলোতে বেতন থাকে খুবই কম। এ কারণেই সেই শিক্ষক নিরুপায় হয়ে এই কাজ করতে বাধ্য হয়েছে। পরিস্থিতি যাই হোক। পরিবারের ভরণ-পোষণ তো করতে হবে।
শিক্ষকদের মতো মহান পেশায় নিয়োজিত লোকজনের দুরবস্থা বোঝার জন্য এই সংবাদটাই যথেষ্ট। জাতি গড়ার এই কারিগরেরা যখন তাদের সমস্ত শক্তি খরচ করতে হচ্ছে পরিবারের অন্য বস্ত্র বাসস্থানের জোগাড়ের জন্য। তখন তারা কিভাবে জাতি গঠনে মনোনিবেশ করবে? আজকে উন্নত বিশ্বের দিকে তাকান। শিক্ষকেরা সেখানে সর্বোচ্চ পারিশ্রমিকপ্রাপ্তদের কাতারে। একটা জাতি এমনি এমনি উন্নত জাতি হয়ে ওঠে না। একটি জাতিকে উন্নত জাতি হিসেবে যারা গড়ে দেবে তারা যখন এতটাই অবহেলিত থাকে। তখন সে জাতির ভবিষ্যৎ কি হবে সেটা ভালই বোঝা যায়।
সরকার বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার জন্য প্রণোদনার ব্যবস্থা রেখেছে বাজেটে। কিন্তু এই মহান পেশায় নিয়োজিত লোকজনের জন্য তেমন কোন পদক্ষেপ নেই। আর এই মধ্যবিত্ত শিক্ষকদের এমনই সমস্যা যে তারা না পারছে এাণের লাইনে দাড়াতে, না পারছে কারো কাছে হাত পাততে। লোকলজ্জার ভয়ে কারো কাছে বলতেও পারছে না।
যে পেশায় নিয়োজিত থেকে তাদের গর্ব করার কথা। সে পেশায় থাকার কারণে তারা সামাজিকভাবেও অনেকটা অবহেলিত থাকে। তাদের নামের সাথে দরিদ্র শব্দটা সেটে গিয়েছে। সিনেমা নাটকেও দেখেছি শিক্ষককে বলা হয় দরিদ্র স্কুল মাস্টার।
যতদিন পর্যন্ত আমরা শিক্ষকদের সর্বোচ্চ সম্মানের আসনে বসাতে না পারব। তার প্রাপ্য মর্যাদা না দিতে পারব। ততদিন পর্যন্ত নিজেদের কে সভ্য দাবি করার কোন উপায় আমি দেখিনা। দেশকে এগিয়ে নিতে হলে, দেশের সত্যিকারের উন্নয়ন করতে হলে শিক্ষকদের উন্নয়ন করাটা সবচেয়ে জরুরি। এটা আমাদের দেশের নীতিনির্ধারকেরা যত তাড়াতাড়ি বুঝতে পারবেন ততই মঙ্গল।
আজকে এখানেই শেষ করছি। আশা করি পোস্টটি আপনাদের ভালো লেগেছে। পরবর্তীতে আবার আপনাদের সাথে দেখা হবে অন্য কোনো লেখা নিয়ে। সে পর্যন্ত ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন।
Cc- @rme
Cc- @blacks
Cc- @rex-sumon
Cc- @shuvo35
🇧🇩🇧🇩ধন্যবাদ🇧🇩🇧🇩
![](https://steemitimages.com/640x0/https://cdn.steemitimages.com/DQmeu7bMtmK6H5wsD2CFwpuo284mVAKuMo8rpv8AWFAX5pV/IMG_20210731_195547.png)
আমি রূপক। আমি একজন বাংলাদেশী। আমি বাঙালি। আমি বাংলায় মনের ভাব প্রকাশ করতে ভালোবাসি। আমি আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটিকেও ভালোবাসি।
বিষয়টি নিয়ে আজও আমি আলোচনা করেছি, ঢাকায় আসার পথে সহযাত্রীর সঙ্গে। কারন এটা কেউ চিন্তা করছে না, বেসরকারী বিদ্যালয়ের শিক্ষকগুলো কি করবে, তাদের তো বেতন বন্ধ। বাস্তবতা তাদের এক কঠিন পরীক্ষার সম্মুখিন করেছে, আর এর জন্য আমরা দায়ী। খুবই দুঃখজনক বিষয়টি।
সমস্যা হচ্ছে ভাই। যাদের চিন্তা করার কথা। তারা মোটেই করছে না।
পুরো পৃথিবীর অবস্থা এখন খুবই নাজুক ভাই। আর এই রকম কঠিন পরিস্থিতি আমারও মাঝে মাঝে দেখতে হয় ।কিন্তু কিছু করার নেই ।আমি দেখেও না দেখার ভান করে থাকি কারন আমার সত্যিই কিছু করার নেই।
আসলে ভাই খুবই খারাপ লাগে যখন এগুলো দেখি।