বন্ধুদের সাথে মাওয়া ঘাটের টাটকা ইলিশ খাওয়ার অভিজ্ঞতা।১০% লাজুক খ্যাঁক এর।
গত পোষ্টে আমি আমার বন্ধুদের সাথে পদ্মা সেতু দেখতে যাওয়ার অভিজ্ঞতা আপনাদের সাথে শেয়ার করেছি। আগেই বলেছি যে উদ্দেশ্যে গিয়েছিলাম সে উদ্দেশ্য খুব একটা পূরণ হয়নি। সে জন্য কিছুটা হতাশ ছিলাম। কিন্তু মাওয়া ঘাটের বিখ্যাত ইলিশ খেয়ে সেই হতাশা কিছুটা হলেও কমেছে। আজ আপনাদের সাথে মাওয়া ঘাটের ইলিশ খাওয়ার অভিজ্ঞতা ভাগ করে নেবো।
যখন আমরা পরিকল্পনা করেছিলাম যে পদ্মা সেতু দেখতে যাবো। তখনই চিন্তা করেছি আমারা যেহেতু মাওয়া যাবোই ইলিশ না খেয়ে সেখান থেকে ফিরবো না। আমরা যখন মাওয়া ঘাটের কাছে পৌঁছলাম তখন বেলা দুটো পার হয়ে গিয়েছে। সকালে হালকা নাস্তা করে বের হয়েছিলাম। যার ফলে মাওয়া যখন পৌঁছলাম তখন পেটের ভেতর ছুঁচো দৌড়াচ্ছিল। সবারই খিদা লেগেছিলো প্রচন্ড। তাড়াতাড়ি গাড়িটা একটা জায়গায় পার্ক করে আমরা রেস্টুরেন্ট খুজতে লাগলাম।
আমাদের উদ্দেশ্য ছিল যে রেস্টুরেন্টে ভীড় কম সেখানে যাওয়া। কিন্তু প্রায় প্রতিটা রেস্টুরেন্ট লোকে-লোকারণ্য ছিলো। যেহেতু দিনটি ছিলো ছুটির দিন। কিছুক্ষণ পর একটা রেস্টুরেন্ট পেলাম যেখানে তুলনামূলক লোকজন একটু কম। রেস্টুরেন্টে ঢুকে গেলাম। তারপর খাবার অর্ডার দেয়ার পালা। আমাদের যেহেতু বেশি ক্ষুধা লেগে ছিল তাই আমরা আর আস্ত ইলিশ কিনিনি। কারণ আস্ত ইলিশ কিনতে গেলে নানান রকম ঝামেলা করতে হয়। প্রথমে ইলিশ পছন্দ করতে হয়। তারপরে দীর্ঘক্ষন তাদের সাথে দামাদামি করতে হয়। তারপর সে ইলিশ কাটার সময় কাছে দাঁড়িয়ে থাকতে হয়।
তাদের কাছে আগে থেকেই কেটে রাখা ইলিশ ছিলো। সেই ইলিশ আমরা কয়েক পিস অর্ডার করলাম। সাথে ছিল ইলিশের লেজ ভর্তা, বেগুন ভাজা, শুকনা মরিচ ভাজা, আর খিঁচুড়ি। যদিও তারা প্রথমে বলেছিল খিঁচুড়ি নেই। একথা শুনে আমরা যখন চলে যেতে উদ্যত হলাম তখন তারা বলল একটু বসেন আমরা দেখছি খিচুড়ি আছে কিনা। পরে তারা আমাদেরকে খিচুড়ি পরিবেশন করেছিলো। সাথে ছিল একটি মজাদার সালাদ। অর্ডার দিয়ে বেশ কিছুক্ষণ বসে ছিলাম। দেখি আর খাবার আসছে না।
এটা হচ্ছে সেই মজার ইলিশ মাছের লেজের ভর্তা।
এটা হচ্ছে সেই সুস্বাদু সালাদ।
আরো রয়েছে হরেক রকমের ভর্তা।
আমরা শুধু বারবার জিজ্ঞেস করছি আর কত সময় লাগবে? এর ভিতর আমি কয়েকটা ছবি তুলে নিলাম। বেশ কিছুক্ষণ পর আমাদের টেবিলে খাবার পরিবেশন করলো। যদিও সব খাবার একসাথে দেয়নি। পেটে ছিল প্রচন্ড ক্ষুধা আর সামনে ছিল খুবই মজার কিছু খাবার। সবাই ঝাঁপিয়ে পড়লাম খাবারের উপরে। খুবই মজা করে খেলাম সবাই। আমার কাছে সবচাইতে ভালো লেগেছিল ইলিশের লেজ ভর্তা। ভর্তাটা খুবই মজা হয়েছিলো। আমরা খাওয়ার সময় আমাদের ড্রাইভারকে সাথে নিয়ে গিয়েছিলাম। আমার ধারণা ছিল ড্রাইভাররা সাধারণত একটু বেশি খায়। যার ফলে আমি তাকে খাবার বেশি করে নিতে বলছিলাম। কিন্তু দেখলাম আমাদের এই ড্রাইভার খুব একটা বেশি খায় না।
খাওয়া-দাওয়া শেষ করে আমরা কিছুক্ষণ রেস্ট নিলাম। তারপর আমার এক বন্ধু বলল এখন একটু মিষ্টি খাওয়া দরকার। কিন্তু আশেপাশে কোথাও মিষ্টির দোকান পেলাম না। পরে কিছু দূর যাওয়ার পর একটা ছোটখাটো মিষ্টির দোকান পেলাম। সেখান থেকে আমরা দই, রসগোল্লা এবং কালোজাম খেলাম। অবশ্য আমি শুধু দই খেয়েছিলাম। মিষ্টিগুলো ভালো ছিলো না। আমি মিষ্টি দেখেই বন্ধুদের সাবধান করেছিলাম। মিষ্টি খাওয়ার পর ওরা বলছিল মুখ নষ্ট হয়ে গিয়েছে। এখন ঝাল কিছু খাওয়া দরকার। এভাবেই আমাদের মাওয়া ঘাটের ইলিশ খাওয়ার পর্ব শেষ হলো।
আজকের মতো এখানেই শেষ করছি। আশা করছি পোস্টটি আপনাদের ভালো লাগবে। পরবর্তীতে আপনাদের সাথে দেখা হবে অন্য কোন নতুন লেখা নিয়ে। সে পর্যন্ত সবাই ভাল থাকুন সুস্থ থাকুন।
ফটোগ্রাফির জন্য ব্যবহৃত যন্ত্র | হুয়াই নোভা ২আই |
---|---|
ফটোগ্রাফার | @rupok |
স্থান | লিংক |
Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |
🇧🇩🇧🇩ধন্যবাদ🇧🇩🇧🇩
আমি রূপক। আমি একজন বাংলাদেশী। আমি বাঙালি। আমি বাংলায় মনের ভাব প্রকাশ করতে ভালোবাসি। আমি আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটিকেও ভালোবাসি।
শ্রদ্ধেয় রূপক ভাই আশা করি যেখানে আছেন ভালো আছেন। মাওয়া ঘাটে আপনার প্রতিটি মুহূর্ত খুব অসাধারণ কেটেছে। আপনি অনেক মজা করে সুস্বাদু ইলিশ মাছ খেয়েছেন। এখানে তো অনেক আনন্দ করেছেন। এত সুন্দর পোস্ট আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য আপনাকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানাই।
ধন্যবাদ আপনাকে ভাই।
ভাইয়া,মাওয়া ঘাটে আপনার মুহূর্তগুলো খুবই আনন্দের কেটেছে। ভাইয়া, মাওয়া ঘাটে খাবারের মেনু গুলোর নাম দেখে আমার জিভে জল এসে যাচ্ছে। তবে আপনার লেখায় একটি আনকমন রেসিপির নাম দেখতে পেলাম। সেটি হচ্ছে ইলিশ মাছের লেজের ভর্তা। কখনো ইলিশ মাছের লেজের ভর্তা খাইনি।আপনি যেহেতু বলছেন ইলিশ মাছের লেজের ভর্তা অনেক সুস্বাদু হয়েছে সব রেসিপি থেকেও তাহলে অবশ্যই অনেক সুস্বাদু হবে। এমনিতেও হোটেলের খাবার একটু ভিন্ন স্বাদের করে থাকে।
ভাইয়া, আপনার লেখার মধ্যে আমার এই লেখাটি খুবই ভালো লেগেছে।
"যদিও সব খাবার একসাথে দেয়নি। পেটে ছিল প্রচন্ড ক্ষুধা আর সামনে ছিল খুবই মজার কিছু খাবার। সবাই ঝাঁপিয়ে পড়লাম খাবারের উপরে"
ধন্যবাদ,ভাইয়া।
ধন্যবাদ আপনাকে আপু।
আমিও অনেকদিন ধরে ভাবতেছি এবং বন্ধুদের নিয়ে মাওয়া গিয়ে টাটকা ইলিশ খাওয়ার পরিকল্পনা করেছিলাম কিন্তু সময় ও সুযোগের অপেক্ষায় আজও যাওয়া হয় নাই তবে আশা করছি খুব শীঘ্রই যাওয়া হবে ।আপনার এই ধরনের ভ্রমণ ও উপস্থাপনা আমার খুব ভালো লাগে আশা করছি আপনি সুন্দর একটি দিন কাটিয়েছেন।
ধন্যবাদ আপনাকে আপু।
ভাইয়া আপনি মাওয়া ঘাটে অনেক সুন্দর সময় কাটিয়েছেন।
আরো সুন্দর সুন্দর টেস্টি ইলিশ মাছের রেসিপি খেয়েছেন।
ইলিশের লেজ ভর্তা, বেগুন ভাজা, শুকনা মরিচ ভাজা, আর খিঁচুড়ি।।
দেখেই আমার জিভে পানি চলে এসেছে 😋😋😋
ধন্যবাদ আপনাকে আপু।
ইলিশ মাছের যে লেজের ভর্তা হয় এটা আমার একেবারেই জানা ছিলোনা। ইলিশ মাছে এমনিতেই অনেক কাটা থাকে। তাহলে কি কাটা বেছে এরপর লেজের ভর্তাটি করেছে ভাইয়া?
আপনার ইলিশ মাছ ভাজার প্লেটটি দেখেই এতো খেতে ইচ্ছে করছে ভাইয়া।
কাটা বেছে তারপর ভর্তা করে। খেতে খুবই মজার। আমি এর আগে কখনো খাইনি।
ভাইয়া আপনার মাওয়া ঘাটে ইলিশ খাওয়ার গল্পটি আপনি অনেক সুন্দর করে আমাদের সাথে শেয়ার করেছেন। এবং আপনি অনেক গুছিয়ে লিখতে পারেন। সবচেয়ে মজার বিষয় হলো মাওয়া ঘাটে ইলিশ খেতে গেলে সিরিয়াল দিয়ে দাঁড়িয়ে থাকতে হয় বেশ কিছুক্ষণ 2 /3 ঘণ্টা পার হয়ে যায় এমন সময় আছে। আপনারা বুদ্ধিমানের কাজ করেছেন যে ওদের কাটা ইলিশ থেকে অর্ডার করে নিয়েছেন। এখানকার ইলিশ মাছের সাথে লেজের ভর্তা বেগুন ভাজা শুকনো মরিচ ভাজা আম সালাদ খাবারগুলো খুবই টেস্টি হয়। এবং কি পরিবেশনের খুব সুন্দর করে। আপনার মাওয়া ঘাটে যাওয়ার যদিও পদ্মা ব্রিজ ভালোভাবে উপভোগ করতে পারেননি। কিন্তু পদ্মার ইলিশ খাওয়ার সময় টা খুব ভাল উপভোগ করেছেন এবং আনন্দ করেছেন বটে। আমাদের সাথে আপনার মনের ভাবগুলো শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ ভাইয়া।
ধন্যবাদ আপনাকে ভাই।
রূপক ভাই অসাধারন একটি মুহূর্ত কাটিয়েছেন দেখে বোঝা যাচ্ছে।
আর মাওয়া সেতুর ইলিশ মাছ বাংলাদেশের সেরা মাছ পদ্মা নদীর ইলিশ সেটা তো সবাই জানে যাইহোক একটা ভালো একটা মোমেন্ট শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ ভাই আপনাকে।
ধন্যবাদ আপনাকে।
আপনার সময় গুলো অনেক সুন্দর কেটেছে ভাই।দুই বছর আগে মাওয়া ঘাটে ইলিশ খেতে গিয়েছিলাম।আপনার পোস্ট দেখে তখনকার কথা মনে পড়ে গেল। আমার সবচেয়ে ভালো লাগে ইলিশের লেজ ভর্তা। শুভকামনা আপনার জন্য
ভাইয়া ইলিশ মাছ এর যে ছবি গুলো দিয়েছেন তা দেখেই জিভে জল চলে আসতেছে। খুব লোভনীয় দেখতে লাগছে। আমিও একবার খেয়েছিলাম মাওয়ার ইলিশ। অসাধারণ ছিল।
ধন্যবাদ আপনাকে আপু।