বাজেটের বিড়ম্বনা।

in আমার বাংলা ব্লগlast year

কেমন আছেন আমার বাংলা ব্লগের বন্ধুরা? আমি ভালো আছি। আশাকরি আপনারা ও ভালো আছেন।


প্রতিবছর জুন মাস আসার আগ মুহূর্তে দেশের সাধারণ মানুষের কপালে চিন্তার ভাঁজ পড়ে। কারণটা হচ্ছে প্রতি বছর জুন মাসে আমাদের দেশে বাজেট প্রণয়ন করা হয়। কিন্তু একটু বড় হওয়ার পর থেকে খেয়াল করছি সেই বাজেট কখনোই সাধারণ মানুষের জন্য সুখবর হয় না। বাজেট প্রণয়ন হওয়া মানেই দ্রব্যমূল্য আরেক দফা বৃদ্ধি পাওয়া। এই কারণে মে মাসের শুরু থেকেই মানুষের চিন্তা বাড়তে থাকে। এই বাজেট হওয়ার কথা ছিল সাধারণ মানুষের জন্য উপকারী। কিন্তু প্রতিবছরই দেখা যায় সমাজের বিশেষ কিছু লোকজন ছাড়া আর সবাই এই বাজেটের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

Polish_20230602_012148530.jpg

বাজেটে যে সমস্ত জিনিসের দাম বাড়ার প্রস্তাব করা হয় সেগুলো বাস্তবায়ন না হলেও রাতারাতি বাজারে সেগুলোর দাম বেড়ে যায়। আবার যে সমস্ত জিনিসের দাম কমানোর কথা বলা হয় সেগুলোর দাম কমতে সময় লাগে অনেক দিন। এবারের বাজেটে দেখলাম সোলার প্যানেল এবং প্রযুক্তি পণ্যের উপরে কর বাড়ানো হয়েছে। একদিকে সরকারের স্লোগান হচ্ছে ডিজিটাল বাংলাদেশ তৈরি করা। অপরদিকে প্রযুক্তি পণ্যের উপর ট্যাক্স বসানো হচ্ছে। এটা কোন ধরনের পলিসি এখন আমার মাথায় ঢুকছেনা। আবার যখন জ্বালানি সংকটের কারণে বিদ্যুৎ উৎপাদন প্রায় স্থবির হয়ে যাচ্ছে। তখন সোলার প্যানেলের উপর বাড়তি ট্যাক্স বসানো কোন ধরনের বুদ্ধির পরিচয় সেটাও বুঝতে পারছি না। আসলে বাজেটে যা হয় সেটা সাধারণ মানুষ কখনো বুঝতে পারে না। কারণ এই বাজেটটা সাধারণ মানুষের জন্য হয় না। এই বাজেটটা যারা প্রণয়ন করে তারা এবং তাদের সঙ্গী-সাথীদের কথা চিন্তা করেই বাজেট প্রণয়ন করা হয়। সাধারণ মানুষের স্বার্থ এখানে গৌণ হয়ে যায়।

আরো একটা জিনিস খেয়াল করছি। গত কয়েক বছর ধরে প্রতি বাজেটেই প্রায় সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন বাড়ছে। আর এই সুবাদে দ্রব্যমূল্য আর এক দফা লাফিয়ে বাড়ছে। অথচ চিন্তা করে দেখুন দেশের কত শতাংশ মানুষ সরকারি চাকরি করে। সামান্য এই অল্প কিছু মানুষের জন্য দেশের বাদবাকি ১৬ কোটি মানুষকে ভোগান্তি পোহাতে হয়। অল্প এই সরকারি চাকরিজীবীদের বেতন বৃদ্ধির কারণে দ্রব্যমূল্য বেড়ে যায়। আর এই ইচ্ছা স্বাধীনভাবে জিনিসপত্রের দাম বাড়ানো সম্ভব হচ্ছে বাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থার গাফিলতির কারনে। অবশ্য গত কয়েক বছর ধরে সরকার দারুন একটি বুদ্ধি করেছে। প্রথমে কিছু কিছু জিনিসপত্রের দাম অসম্ভবভাবে বাড়িয়ে দেয়া হবে। তারপর সেখান থেকে সামান্য কিছু কমিয়ে দেশের জনগণকে বোঝানো হবে দেখো তোমাদের জন্য আমরা কতটা দাম কমিয়েছি। বোকা জনগণ অনেকেই এই কর্মকাণ্ডে খুশি হয়ে যায়।

একটা সময় ছিল বাজেট নিয়ে এক ধরনের আগ্রহ কাজ করতো। কিন্তু এখন আর কোন আগ্রহ কাজ করে না বাজেট নিয়ে। যেটা কাজ করে সেটা হচ্ছে মারাত্মক ভীতি। সরকারের কোন কোন সিদ্ধান্ত আমাদের বিপক্ষে যাবে সেটা চিন্তা করে মানুষ প্রচন্ড ভীত হয়ে পড়ে এই বাজেটের আগে। জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বাংলাদেশের অবস্থা এখন খুবই খারাপ। ভয়াবহ প্রচন্ড তাপদাহে মানুষের জীবন অতিষ্ঠ। এই সময় প্রয়োজন ছিল ব্যাপক বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি গ্রহণ করা। কিন্তু বাজেটে দেখলাম সেটা নিয়ে কোন কথাই বলা হয়নি। এ থেকেই বোঝা যায় বর্তমান সরকারের কর্তা ব্যক্তিরা দেশের মানুষ কথা কতটা চিন্তা করেন। অবশ্য এটা নতুন কিছু নয়। অনেক আগে থেকেই এমনটা হয়ে আসছে। তবে এখনো আশায় বুক বাধি যে হয়তো কোনদিন জনবান্ধব সরকার আসবে। তাদের বাজেট প্রণয়ন জনগণের মনে শান্তি এনে দেবে। সেই প্রত্যাশায় পথ চেয়ে রই।

আজকের মত এখানেই শেষ করছি। পরবর্তীতে আপনাদের সাথে দেখা হবে অন্য কোন নতুন লেখা নিয়ে। সে পর্যন্ত সবাই ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন।


ফটোগ্রাফির জন্য ব্যবহৃত ডিভাইসহুয়াই নোভা 2i
ফটোগ্রাফার@rupok

logo.png

Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power

250 SP500 SP1000 SP2000 SP5000 SP

Heroism_3rd.png

standard_Discord_Zip.gif


break .png

Support @Bangla.Witness by Casting your witness vote


VOTE @bangla.witness as witness


witness_vote.png

OR

SET @rme as your proxy

witness_proxy_vote.png



🇧🇩🇧🇩ধন্যবাদ🇧🇩🇧🇩


@rupok

Sort:  
 last year 

ভাইয়া সাধারন আর মধ্যবিত্ত মানুষের কথা তাদের ভাবনাতে থাকেনা।যতই বলুক জনগন সকল ক্ষমতার উৎস। কিন্তু দেখা যায় উচ্চবিত্ত রাই সকল ক্ষমতার উৎস। এদেশের সুখ শান্তি আর কখন ই আসবে না।সাধারণ মানুষ যাই হোক কোন রকম বেঁচে যায়।মরে যায় মধ্যবিত্তরা।এই বাজেট প্রনয়ন আজ পর্যন্ত সার্বজনীন বাজেট হিসেবে দেখিনি।তাই চিন্তার রেখা সারা বছরই কপালে থাকে।আশায় শুধু বুক বাঁধাই থাকে, কাজ আর কিছুই হয়না।ধন্যবাদ আপনাকে।

 last year 

আমাদের মাথায় আসেনা সাধারণ মানুষ যারা খেটে খায় তাদের মাথায় কিভাবে ঢুকবে। এই ধরনের বাজেট কখনোই দেশের কল্যাণ বয়ে আনতে পারে না যেটা আমি মনে করি। কিছুই করার নেই শুধু চোখ আছে দেখতে হবে কান আছে শুনতে হবে।

 last year 

দেশের বিদ্যুতের ঘাটতি পূরণের ক্ষেত্রে সৌর প্যানেলের ভূমিকা বেশ গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু বর্তমান সরকার এ বছরে নতুন বাজেটের মাধ্যমে সেই সৌর প্যানেলের উপর যে অতিরিক্ত ট্যাক্স চাপিয়ে দিয়েছে সেটা নিঃসন্দেহে দেশের কল্যাণের বিপরীত দিকটায় নির্দেশ করছে। কিন্তু কিছুই করার নেই। কারণ বর্তমানে আমাদের বাংলাদেশটা এক ধরনের জিম্মি মতো হয়ে গেছে ক্ষমতাশীল দলের কাছে। তাদের মনের মাঝে যখন যেটা উদয় হচ্ছে তখন সেটাই করছে।

 last year 

আসলেই ভাইয়া এখনকার বাজেট নিয়ে বেশিরভাগ মানুষের কোনো আগ্রহ নেই। কারণ এতে করে সাধারণ মানুষের ক্ষতি হয়। অসাধু ব্যবসায়ীরা জিনিসপত্রের দাম বাড়ানোর আরো সুযোগ পায়। জনবান্ধব সরকার আদৌ আসবে কিনা তা জানা নেই। যাইহোক পোস্টটি শেয়ার করার জন্য অনেক ধন্যবাদ আপনাকে।

Coin Marketplace

STEEM 0.16
TRX 0.15
JST 0.028
BTC 55885.64
ETH 2358.26
USDT 1.00
SBD 2.31