সকালের শিশির ভেজা প্রকৃতি এবং গ্রামীণ পরিবেশ। ১৯% প্রিয় লাজুক খ্যাঁক এর জন্য।

in আমার বাংলা ব্লগ3 years ago

কেমন আছেন আমার বাংলা ব্লগের বন্ধুরা? আমি ভালো আছি। আশাকরি আপনারা ও ভালো আছেন।


শীতকাল আমার সবচাইতে প্রিয় মৌসুম। একসময়ে আমি ঘুরে বেড়াতে সবচাইতে বেশি পছন্দ করি। এসময়ের ঘোরার সবচাইতে মজা হচ্ছে এই সময়ে যতই ঘোরাফেরা করি সহজে ক্লান্তি আসে না। আমি যেহেতু প্রতিদিন সকালে হাঁটতে বের হই। তাই এমনিতেও আমার বেশ ঘোরাফেরা করা হয়ে যায়। আজ সকালে যখন হাঁটতে বের হলাম তখন আগে থেকেই পরিকল্পনা করে রেখেছিলাম যে আজ গ্রামের দিকে হাঁটতে যাব। সাধারণতো আমি শহরের প্রধান সড়কে হাঁটাচলা করি। তাই চিন্তা করলাম আজ শীতের সকালের গ্রামবাংলা দেখে আসি। যেই ভাবা সেই কাজ। বাসা থেকে বের হয়ে হাঁটতে হাঁটতে চলে গেলাম গ্রামের দিকে। এটা আগেও অনেকবার আমি বলেছি। এখন কোন কিছু পছন্দ হলেই আমি তার ছবি তোলার চেষ্টা করি। আজও আমি বেশ কিছু ছবি তুলেছি। সেই ছবিগুলি আপনাদের সাথে আমি শেয়ার করছি।

দেখা হয় নাই চক্ষু মেলিয়া

ঘর হতে শুধু দুইপা ফেলিয়া

একটি ধানের শিষের উপর

একটি শিশির বিন্দু

IMG_20211203_080312.jpg

IMG_20211203_080037.jpg

IMG_20211203_075912.jpg

IMG_20211203_075842.jpg

লোকেশন- লিংক

শীতের সকালে আমার সবচাইতে প্রিয় একটি দৃশ্য হচ্ছে ঘাস লতাপাতার উপর জমে থাকা শিশির বিন্দু। এই শিশিরবিন্দুর ওপর যখন সকালে সূর্যের আলো এসে পড়ে তখন এক অন্যরকম দৃশ্যের অবতারণা হয়। এই দৃশ্য দেখে মনটা অন্যরকম এক ভালোলাগায় অভিভূত হয়ে যায়। শিশির ভেজা ঘাসের উপর হাটতে খুবই ভালো লাগে। যদিও এখনকার মানুষ খালিপায়ে হাটতে মোটেই পছন্দ করে না। কিন্তু আমরা আমাদের শৈশবে মাঠে-ঘাটে খালি পায়ে দৌড়ে বেড়িয়েছি। সকালবেলার শিশির ভেজা প্রকৃতি সকলেই পছন্দ করে। আর এই দৃশ্য দেখতে হলে গ্রামে যাওয়ার বিকল্প নেই।

IMG_20211203_080444.jpg

লোকেশন- লিংক

ধান রোপনে ব্যস্ত কৃষক। কিছুদিন আগেও এখানে অনেক পানি ছিল। এখন নদীর এই অংশ শুকিয়ে যাওয়ায় স্থানীয় কৃষকেরা এইজায়গাটাতে ধান রোপনের কাজে ব্যবহার করছে। এই সমস্ত জায়গায় ফসলের ফলন ভালো হয়। কারণ এসব জায়গায় প্রচুর পলি জমে। আর পলিমাটি ফসল উৎপাদনের জন্য খুবই উপযোগী। বাংলাদেশে এই সময়ে সমগ্র দেশব্যাপী এই ধরনের জায়গায় ধান চাষ হয়।

IMG_20211203_080859.jpg

লোকেশন- লিংক

একটি দেশী মোরগ। একটা সময় গ্রামাঞ্চলে প্রত্যেক বাড়িতে হাঁস-মুরগী পালন করত। কিন্তু এখন সেই গ্রামীণ সংস্কৃতি বিলুপ্তপ্রায়। এখন গ্রামের লোকজন ও ব্রয়লার মুরগি খেতে অভ্যস্ত হয়ে গিয়েছে। একটা সময় গ্রামের মানুষজন এটা চিন্তাও করতে পারত না। কিন্তু এখন তারা পুরোপুরি ফার্মের মুরগির উপর নির্ভরশীল হয়ে পড়েছে। যার ফলে দেশি মুরগির যোগান প্রায় নেই বললেই চলে। সেজন্য দেশী মুরগী হয়ে পড়েছে এখন অত্যন্ত দামী।

IMG_20211203_075307.jpg

লোকেশন- লিংক

শীতের কাপড় পরানো একটি ছাগল খাবার খেতে ব্যস্ত। একসময় বাংলাদেশের প্রত্যেকটি গৃহস্থবাড়িতে গরু ছাগল হাঁস মুরগি পালন করত। এখন এটা অনেক কমে এসেছে। তবে এখনো অনেকে বাড়িতে গরু ছাগল পালন করে। কারণ এই গরু ছাগল থেকে তাদের বাৎসরিক একটা বাড়তি ইনকাম হয়। এই গৃহস্থ তার পালিত প্রাণীদেরকে যে যথেষ্ট যত্নে রাখে তা এই ছাগলটি দেখে বোঝা যাচ্ছে।

IMG_20211203_100458.jpg

লোকেশন- লিংক

ভোরবেলার জনশূন্য গ্রামীণ রাস্তা। গ্রামীন রাস্তা গুলো সাধারণত এমনিতেও কোলাহলমুক্ত হয়। আর ভোর বেলায় লোকজন রাস্তায় থাকে না বললেই চলে। এই ধরনের রাস্তায় চলাচল করতে আমার সবসময়ই ভাল লাগে।

IMG_20211203_075159.jpg

লোকেশন- লিংক

একটি গ্রামীণ মসজিদ। যদিও এখন গ্রামে অনেক সুন্দর সুন্দর পাকা মসজিদ দেখা যায়। কিন্তু এই গ্রামের মসজিদ সেই আগের মতই আছে। মসজিদটি দেখে মনে হচ্ছে অতিসম্প্রতি নির্মাণ করা হয়েছে।

IMG_20211203_080719.jpg

লোকেশন- লিংক

এটা একটি রাস্তার পাশের জংলি ফুল গাছ। আমরা এটাকে বলি ঢোল কলমি ফুল। এ ধরনের গাছ রাস্তার পাশে এমনিতেই হতে দেখা যায়। আগে শহরেও এ ধরনের গাছ দেখা যেত। কিন্তু এখন আর দেখা যায় না। তবে গ্রামাঞ্চলে এখনো এই ধরনের জংলি ফুল গাছ দেখতে পাওয়া যায়।

IMG_20211203_080341.jpg

লোকেশন- লিংক

মাঠের পাশে গ্রামের একটি বাড়ি। গ্রামের বাড়িগুলোর এই ব্যাপারটা আমার কাছে খুবই ভালো লাগে। প্রত্যেকটা বাড়ির আশেপাশেই পর্যাপ্ত খোলা জায়গা থাকে। শহরে আমরা যারা বসবাস করি তারা এই জিনিসটা প্রচন্ড ভাবে মিস করি।

IMG_20211203_075951.jpg

লোকেশন- লিংক

নদীর পাড়ের রাস্তা। এই রাস্তা দিয়ে প্রতিদিন অসংখ্য মানুষ যাতায়াত করে। বিশেষ করে যারা পদ্মা নদী দেখতে আসে। যদিও এই শীতকালে নদীর সৌন্দর্য অনেকটাই কমে যায়।

IMG_20211203_075759.jpg

লোকেশন- লিংক

একটি নিরিবিলি গ্রামীণ রাস্তা। একপাশে দেখা যাচ্ছে বাঁশ ঝাড়। গাছপালার ফাঁক দিয়ে সকালের সোনা রোদ এসে মাটিতে পরশ বুলিয়ে দিচ্ছে। এ দৃশ্য দেখতে কার না ভালো লাগে?

IMG_20211203_075615.jpg

লোকেশন- লিংক

শিশির সিক্ত ঘাস। সারারাত কুয়াশায় ভিজে তার কিছুটা নিজের গায়ে ধারণ করে আছে। দেখতে কি অপূর্ব লাগছে। অবশ্য এই সৌন্দর্য উপভোগ করতে হলে আপনার ভেতর একটা অন্যরকম সৌন্দর্যবোধ থাকতে হবে। কারন অনেকেই আছে এই ঘাস মাড়িয়ে চলে যাচ্ছে। কিন্তু ফিরেও তাকাচ্ছে না এই সৌন্দর্যের দিকে।

আজকের মতো এখানেই শেষ করছি। পরবর্তীতে আপনাদের সাথে দেখা হবে অন্য কোন নতুন লেখা নিয়ে। সে পর্যন্ত সবাই ভাল থাকুন সুস্থ থাকুন।


ফটোগ্রাফির জন্য ব্যবহৃত যন্ত্রহুয়াই নোভা ২আই
ফটোগ্রাফার@rupok

logo.png

Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power

250 SP500 SP1000 SP2000 SP5000 SP

Heroism_3rd.png

🇧🇩🇧🇩ধন্যবাদ🇧🇩🇧🇩


@rupok


Polish_20211012_184119287.jpg

আমি রূপক। আমি একজন বাংলাদেশী। আমি বাঙালি। আমি বাংলায় মনের ভাব প্রকাশ করতে ভালোবাসি। আমি আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটিকেও ভালোবাসি।

Sort:  
 3 years ago 

ভোরের শিশির ভেজা ঘাসের উপর খালিপায়ে হাঁটতে পারা যেন আরেকটি ভালো লাগা। শীতের সকালে নদীতে কৃষকের ধান রোপন করার বিষয়টি আমার খুব ভালো লেগেছে ।কত কষ্ট করে তারা তাদের ধান রোপন করছে। সকালবেলা উঠোনে মোরগ, গ্রামের পাকা রাস্তা বিশেষ করে আমরা যখন শীতের সকালে প্রাইভেট পড়তে যেতাম তখন কুয়াশার চাদরে ঢাকা পুরো রাস্তায় কিছু দেখা যেত না আমাদের বেশ ভয় করত যদিও দল বেধে যেতাম। আপনার এলাকায় হয়তো নদীর পাশে তাই আপনি শীত ,বর্ষা সবকিছুই দারুণভাবে উপভোগ করেন। ইতিপূর্বে আপনি যতগুলো ফটোগ্রাফি পোস্ট করেছেন তার মধ্যে সবথেকে আজকের পোস্টটি আমাকে ভিন্নরূপ বিভিন্ন ধারণা প্রদান করেছে । কেননা এই পোষ্টের মধ্য দিয়ে আপনি বেশ কয়েকটি গল্প আমাদের মাঝে তুলে ধরেছেন। আপনার ফটোগ্রাফি গুলো সত্যি অসাধারণ হয়েছে সাথে বিবরণ গুলো। ছবি কথা বলে তা এই পোষ্টের মাধ্যমে ফুটে উঠেছে।

 3 years ago 

অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে আপু।

 3 years ago 

ভাইয়া আপনার মতো আমার কাছে ও শীতের দিন অনেক বেশি ভালো লাগে , বিশেষ করে এই কুয়াশার মুহূর্ত গুলো , চারিদিকে ঝাপসা আলোয় ঢেকে থাকে, আপনার পাঁচ নম্বর ছবিটা আমার কাছে অসাধারণ লেগেছে। কি অসাধারণ রূপ গ্রামের। আর কি মায়া ছাগলের জন্যে শার্ট পড়িয়ে রেখেছেন তাকে,বিষয়টা খুবই ভালো লেগেছে। অনেক ধন্যবাদ ভাইয়া অনেক সুন্দর সুন্দর ছবি গুলো আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্যে।

 3 years ago 

ভাইয়া এতো সুন্দর শীতের মুহূর্ত শেয়ার করেছেন, মন চাচ্ছে কোনো এক গ্রাম থেকে ঘুরে আসি। ঘাসের উপর খালি পায়ে কখনও হাটা হয়নি, শিশির ভেজা সবুজ প্রকৃতি কখনও এভাবে স্পর্শ করা হয়নি। আপনার পোস্ট টি মন ছুয়ে গেলো একেবারেই। আর সেই সাথে কবিতা টি এবং ফটোগ্রাফি গুলো।

 3 years ago 

একবার শিশির ভেজা ঘাসের উপর হেঁটে দেখুন। একটা অন্যরকম অনুভুতি হবে। ধন্যবাদ আপনাকে।

 3 years ago 

একবার শিশির ভেজা ঘাসের উপর হেঁটে দেখুন। একটা অন্যরকম অনুভুতি হবে। ধন্যবাদ আপনাকে।

 3 years ago 

গ্রাম কি জিনিস জানিনা ভাইয়া। কখনও যাওয়া হয়নি কেউ নেই। একটা আফসোস থেকে গেলো লাইফে।তবে চেস্টা করবো কোনো একদিন যাওয়ার। ধন্যবাদ ভাইয়া আপনাকেও।

 3 years ago 

ভাই আপনার পোস্টটি বলে আমার খুবই ভালো লেগেছে কারণ আমি প্রতিদিন সকাল ভোর বেলায় উঠে মাঠের পুকুরে যায়। আর পুকুরে যাওয়ার সময় শিশির ভেজা ঘাসের উপর দিয়ে যেতে আমার অনেক ভালো লাগে। ভাইয়া আপনি আপনার পোস্টে শীতকালীন সকালের গ্রামীন পরিবেশের সুন্দর একটি চিত্র তুলে ধরেছেন। ভাই আপনার জন্য অনেক অনেক শুভকামনা রইল।

 3 years ago 

বহুদিন পর মনে হয় শিশির ভেজা ঘাস, পাতা দেখলাম। সত্যিই খুব দারুণ লেগেছে আমার কাছে। আর ছাগলকে শীতের কাপড় পরানোর আমার কাছে খুব চমৎকার লেগেছে। আসলে ভালোবাসা গুলো এমনই হয়। তার মালিক তাকে ভালোবাসে বলেই হয়তো এতোটা যত্ন নিচ্ছে। ছবিগুলো সত্যিই খুব সুন্দর ছিল ভাইয়া।

 3 years ago 

ভাইয়া আপনার প্রতিটি ফটোগ্রাফি অসাধারণ হয়েছে। বিশেষ করে দেশি মোরগটি দাঁড়িয়ে আছে এই ছবিটি আমার অনেক ভালো লেগেছে। আবার একটি ছাগল শীতের জামা পরেছে সেটা দেখে খুবই ভালো লাগলো। আসলে শীতকালে গৃহপালিত পশু বা প্রাণীদের শীতের হাত থেকে রক্ষা করতে তার মালিকরা এই ব্যবস্থা করে। গ্রাম অঞ্চলে গেলে এই দৃশ্যগুলো বেশি দেখতে পাওয়া যায়। আপনি অনেক সুন্দর করে প্রতিটি ফটোগ্রাফি এবং এর সাথে বর্ণনা উপস্থাপন করেছেন। সবমিলিয়ে খুবই সুন্দর হয়েছে। আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ জানাচ্ছি ভাইয়া দারুন কিছু ফটোগ্রাফি আমাদের মাঝে উপস্থাপন করার জন্য।

 3 years ago 

শুরুতেই ধন্যবাদ জানাই গ্রাম বাংলাকে তুলে ধরার জন্য। আসলেই অনেক ঐতিহ্য ভুলতে বসেছিলাম। আপনার ছবিগুলো দেখে অনেক কিছুই মনে পড়ে গেল। বিশেষ করে ছাগলের জামা পড়ানো। মনে আছে যখন ছোট ছিলাম আমাদের নানু বাসায় ছাগল পালত। শীতকাল আসলেই ছাগলকে এমন জামা পড়ানো হত যেন ঠাণ্ডা না লাগে। নানুদের গ্রাম ছবির মত সুন্দর ছিল। শীতের সকালে হাঁটতে বের হতাম আর খেজুরের রসের কথা না বললেই না। আপনার ছবি থেকে সেই পুরনো ভালবাসা আবার অনুভব করলাম।

 3 years ago 

ধন্যবাদ আপনাকে আপু।

Coin Marketplace

STEEM 0.19
TRX 0.16
JST 0.030
BTC 68559.31
ETH 2695.07
USDT 1.00
SBD 2.73